নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০৬ এপ্রিল, ২০২০
বাংলাদেশে চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে জ্যামিতিক হারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ যেকোনো সময়ে মহামারীতে প্রবেশ করবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাংলাদেশের মহামারীতে প্রবেশ একটি সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিমতও রয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করছেন যে বাংলাদেশ অনেকগুলো সুযোগ মিস করেছে। সীমিত আকারে করোনাভাইরাসকে রেখে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বেরিয়ে আসতে পারতো। কিন্তু সেই সুযোগ বাংলাদেশ হাতছাড়া করেছে নানা কারণে। তবে এখনো বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তাদের মতে, এরই মধ্যে বাংলাদেশে সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে এবং রোগের বিস্তৃতি হয়েছে। তারপরেও আমরা যদি এখনো চেষ্টা করি তাহলে এই মহামারীর সংক্রমণ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের কথা বলে, তাদের মতামত নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদনটি। যেখানে আমরা দেখাতে চাই যে বাংলাদেশের এখনো সুযোগ রয়েছে, এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশকে কি করতে হবে।
প্রথমত, সামাজিক সংক্রমণ বন্ধ করতে হবে। যেকোনো মহামারী ঠেকানোর সবচেয়ে বড় শর্ত হলো কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিক সংক্রমণ ঠেকানো। আর এজন্য বাংলাদেশকে এখন সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে সামাজিক সংক্রমণের দিকে। যে সমস্ত এলাকাগুলোতে সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে, সেগুলোকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। অন্তত তিন সপ্তাহ সেই এলাকাগুলোকে আলাদা করে রাখতে হবে। অন্য এলাকার মানুষ যেন সেখানে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐ এলাকার প্রতিটি মানুষের রক্তপরীক্ষা করা, তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হবে, তাদের চিকিৎসারও ব্যবস্থা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে আরও কিছুদিন কঠোর লকডাউনে যেতে হবে। এরকম ঢিলেঢালা, ছাড়যুক্ত সাধারণ ছুটি নয়, বরং কঠোর বাধ্যতামূলক লকডাউন, এবং প্রয়োজনীয় সবকিছুই বন্ধ করে দিতে হবে। এখনকার সাধারণ ছুটিতে যে সমস্যাগুলো হচ্ছে যে কেউ ব্যাংকের অজুহাতে, কেউ বাজার বা চিকিৎসার অজুহাতে ঘরের বাইরে হচ্ছে। আসলে যে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার প্রয়োজন ছিল, সেটা হচ্ছে না। তাই অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে আরও কিছুদিনের জন্য হলেও বাংলাদেশকে কঠোরভাবে লকডাউন, কারফিউ যে ভাষাই আমরা বলি না কেন তার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে লোকজন কিছুতেই ঘরের বাইরে বেরোতে না পারে।
তৃতীয়ত, করোনা পরীক্ষার পরিধি দ্রুত বাড়াতে হবে। এখন বাংলাদেশে করোনা মহামারী ঠেকাতে হলে দ্রুত পরীক্ষা ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। কারণ যত পরীক্ষা করা হবে তত করোনার ব্যাপ্তি সম্পর্কে আমরা জানতে পারবো এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো। কাজেই প্রতিটি এলাকায় দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে দ্রুত, সম্ভব হলে আগামী ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেশের মধ্যে দ্বৈবচয়ন পরীক্ষা চালানো দরকার। এ পরীক্ষার মাধ্যমে সংক্রমিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা দরকার এবং যারা আক্রান্ত তাদেরকে আলাদা করা দরকার। কাজেই পরীক্ষার ব্যাপ্তি যদি আমরা না বাড়াই তাহলে আমরা দীর্ঘমেয়াদী একটা সংকটের দিকে যাবো বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। পরীক্ষার ব্যাপ্তি বাড়াতে পারলে আমরা দ্রুতই মহামারীর ঝুঁকি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো।
চতুর্থত, সংক্রমিত ব্যক্তিদের এবং তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আলাদা করতে হবে। যারা সংক্রমিত হয়েছেন এবং যারা সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করে আলাদা করতে হবে। তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইন নয়, তাদের জন্য আলাদা বিশেষ কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে তারা অন্যদের সংক্রমিত করতে না পারে। আমরা দেখেছি যে, উপমহাদেশে হোম কোয়ারেন্টাইন ফলপ্রসূ নয়। বরং হোম কোয়ারেন্টাইনের চেয়ে যদি সরকারের নির্ধারিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়, সেখানে যদি আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকদের রাখা হয়- সেটি বেশি ফলদায়ক হবে।
পঞ্চমত, স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দীপ্ত করতে হবে। এখনো এই করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে আমাদের সম্মুখ সমরের যোদ্ধা হলেন আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, নার্স সহ হাসপাতালের কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এখন পর্যন্ত তাদেরকে আমরা মোটিভেটেড করতে পারিনি, তাদেরকে উদ্দীপিত করতে পারিনি, তাদের জড়তা কাটাতে পারিনি। করোনা মোকাবেলায় পৃথিবীর সবদেশগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীরা যে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেই দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে অনুসরণ করতে হলে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দীপ্ত করতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনো ধমক দিয়ে নয়, সমালোচনা করে নয়, বরং তারা ‘ফ্রন্ট রানার’ এই বোধটা তাদের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে হবে।
এই কাজগুলো যদি আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত করতে পারি তাহলে হয়ত আমরা আমাদের শেষ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারবো। আমাদের হাতে সময় অনেক কম, এখনই আমাদেরকে শেষ চেষ্টা করতে হবে যেন আমরা করোনা মহামারী ঠেকাতে পারি।
মন্তব্য করুন
ভারতের নির্বাচন বাংলাদেশ লোকসভা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
চিকিৎসক ও রোগীর সুরক্ষায় জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালকসহ অন্যান্য চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও অংশ নেন কুমিল্লা–৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, চান্দিনা আসনের সংসদ সদস্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. তাহসীন বাহার, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার প্রমুখ।
আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, আমি যেমন চিকিৎসকদের মন্ত্রী, তেমনি রোগীদেরও। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করতে সংসদে বিল উত্থাপন করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে চিকিৎসা নিরুৎসাহিত করতে দেশে চিকিৎসকদের আরও বেশি সেবা মনোভাবী হওয়ার অনুরোধ জানান। স্থানীয় সংসদ সদস্যের দাবির প্রেক্ষিতে কুমিল্লায় একটি ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণেরও প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।
এর আগে সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সেনাবাহিনী প্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ
মন্তব্য করুন
নৌ বাহিনী র্যাব কমান্ডার খন্দকার আল মঈন
মন্তব্য করুন
‘কেউ ভয় পাবেন না। অল্প পানিতে মাছ তিরতিরায়। ধৈর্য ধরেন, আমার চেয়ে বড় খারাপ লোক এ জেলাতে হয় নাই, হবেও না।’ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষে জনসংযোগ করতে গিয়ে এমন ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন বহুল আলোচিত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু তাহেরের ছেলে এএইচএম আফতাব উদ্দিন বিপ্লব। এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।