নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০১৭
হাওরের কান্না শেষ হতে দিলো না তার আগেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার ভয়াবহতা। দেশের ১৭ জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকায় খাবার, সুপেয় পানি ও ওষুধের জন্য চলছে হাহাকার। সরকার থেকে ত্রাণ গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
এ পর্যন্ত বন্যাদূর্গত এলাকায় চাল, শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, নগদ অর্থ দেওয়া হলেও এবারের ত্রাণ ব্যবস্থায় রয়েছে সামঞ্জস্যহীনতা। বন্যা কবলিত এলাকায় চাল আছে, কিন্তু রান্না করার মূল উপকরণ ম্যাচ বা দিয়াশলাইয়ের ব্যবস্থা নেই। সরকারের ত্রাণ তালিকায় নেই এই উপকরণ।
এদিকে, শুকনা খাবার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে চিড়া, মুড়ি। যা খুব একটা খুশি করতে পারছে না দূর্গত মানুষদেরকে। শুকনো খাবারের সঙ্গে প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। আর এসব খাবার বুড়ো- শিশুদের জন্য হজমযোগ্য না হওয়ায় খাবারের অভাব থেকেই যাচ্ছে।
এছাড়া বন্যায় পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, কলেরা, জ্বর, নিউমোনিয়া, পেটের পীড়া ও চর্মরোগসহ না না রোগ আক্রমণ করছে। এর জন্য স্যালাইন ও ঔষুধের প্রয়োজন থাকলেও নেই এর সরবরাহ। ঔষুধ দেওয়া হলেও স্যালাইন এখনো পর্যন্ত বিতরণ করা হয়নি।
বিগত বছরের বন্যার সরেজমিন ঘাটলে দেখা যায়, ১৯৮৮,১৯৯৮ এর মতো বড় বড় বন্যায়, নৌকায় নৌকায় খিচুড়ি রান্না করে দূগর্তদের দেওয়া হতো। সরকার থেকে শুকনা খাবার গুড়, মুড়িসহ রুটিও দেওয়া হয়েছিলো। বিশুদ্ধ খাবার পানির পর্যপ্ত সরবরাহ করা হয়েছিলো। বন্যার পরে যাবতীয় সব প্রয়োজনীয় জিনিসও পেয়েছিলো সাধারণ মানুষ।
তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী ক্ষয়-ক্ষতির দিক দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের বড় বন্যা হচ্ছে ১৯৯৮। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুব সফলভাবে বন্যাকে মোকাবেলা করা হয়েছিলো।
কিন্তু এ বছরের বন্যায় রোগ ব্যাধির অন্যতম কারণ বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। আর রান্না ঘর ডুবে যাওয়া, জ্বালানি কাঠ ও লাকড়ির সংকটে নিত্যপ্রয়োজনীয় রান্না ও পানি ফোটানোর পর্যাপ্ত সুযোগও পাচ্ছেন না বন্যার্তরা। তাই খাবার পানি বিশুদ্ধ করার জন্য এ সময় প্রয়োজন বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। আর এ সব কিছুই অপর্যাপ্ত।
এছাড়া বন্যা উপদ্রুত কয়েকটি জেলায় ৩ থেকে ৫ দিনেও সরকারি ত্রাণের দেখা পাননি। যেখানে পৌঁছেছে, সেখানেও চাহিদার তুলনায় পরিমাণ অপ্রতুল।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের (এনডিআরসিসি) হিসাবে, ১৭ জেলার ৮৬ উপজেলার ২০ লাখ ৬৮ হাজার ৭১৮ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ৪২১ ইউনিয়নে পানিবন্ধি পরিবারের সংখ্যা হচ্ছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ১০৫টি। ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩১ হাজার ৬৬৩টি। আর আংশিক ক্ষতি হয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার ২৯৫টি। এরই মধ্যে সাতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ হাজার ৩৬১টি গবাদিপশু মারা গেছে। ১ হাজার ৪৮০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির তোড়ে ৬৫৩ কিলোমিটার বাঁধ ও ২৪টি ব্রিজ ভেঙে গেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়েরর তথ্যের ভিত্তিতে, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যার কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, চিলমারী, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াবান্দি, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, এলাসিন, কালাইঘাট, অমলশীদ, শেওলাসহ কয়েকটি অঞ্চলে নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/টিআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বিএসএমএমইউ
মন্তব্য করুন
রাজার ভুটান ভুটান তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত
মন্তব্য করুন
ভালো চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মির শিকার চট্টগ্রামের চার তরুণ। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। আর সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মিদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের হাতে জিম্মি চার তরুণ হলেন- আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে ওয়াসিম, একই এলাকার মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন, আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন। এদের বয়স ১৯ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
অপহৃতদের স্বজনরা জানান, রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম লিবিয়ায় নিয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে ফেব্রুয়ারিতে জনপ্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেন। ওই তরুণরা ১৬ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ায় পৌঁছেন। লিবিয়ায় তাদের সংঘবদ্ধ একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাদের নির্যাতন করা শুরু হয়। মানব পাচার চক্র এরপর নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো শুরু করে পরিবারের সদস্যদের কাছে।
স্বজনরা জানান, চট্টগ্রামের জহিরুল ভুক্তভোগীদের টুরিস্ট ভিসায় প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। সেখানে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার বাসিন্দা মো. মিজান নামে এক লোকের হাতে ওদেরকে তুলে দেয়া হয়। মিজান তিনদিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেয়। সাতদিন পর দুবাই থেকে মিসর হয়ে লিবিয়ায় নিয়ে মিজান ওই চার তরুণকে অন্য দালালের হাতে তুলে দেয়।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন জানান, অপহৃতদের স্বজনদের কাছ থেকে তারা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিবিয়া বাংলাদেশি জিম্মি নির্যাতন ভিডিও মুক্তিপণ
মন্তব্য করুন
ভালো চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মির শিকার চট্টগ্রামের চার তরুণ। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। আর সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মিদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।