নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪২ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০১৭
বন্যা কিংবা যে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। এর মধ্যে সন্তানসম্ভবা ও স্তন্যদানকারী মা এবং তিন বছরের কম বয়সী শিশুরা চরম ঝুঁকিতে থাকে।
বর্তমানে বন্যাকবলিত ১৭ জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি, এদের মাঝে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী এবং শিশু। সরকার থেকে ত্রাণ গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। চিকিৎসক ও সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, দুর্যোগকবলিত নারী-শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, দরকারি খাবার ও ওষুধ নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। দুর্যোগকবলিতদের মাঝে চালসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী যৎসামান্য বিতরণ করা হলেও নারী- শিশুদের বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত থাকে।
এ পর্যন্ত বন্যাদূর্গত এলাকায় চাল, গম, চিড়া, শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, নগদ অর্থ দেওয়া হলেও, এখনো ত্রাণ ব্যবস্থায় রয়েছে সামঞ্জস্যহীনতা। বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে শিশুখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে আশ্রয় নেওয়া শিশুদের খাবার দিতে পারছেন মা-বাবারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দুর্গত এলাকার শিশুদের জন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি।
বন্যায় প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম বড়দের সঙ্গে শিশুরাও প্রায় না খেয়ে রয়েছে। বানভাসি বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র। ফলে অন্য কোনো স্থান থেকে শিশুদের জন্য খাবার কিনেও আনতে পারছেন না তাঁরা। ফলে শিশুরা অনেকটাই অর্ধহার–অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণের চাল বিতরণ করা হলেও শিশুদের জন্য কোনো খাবার বিতরণ করা হয়নি এখনো।
বাংলাদেশের নারীর সংখ্যা ৭কোটি ১০ লাখ ৬৪ হাজার। আর বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতেও নারীর সংখ্যাই বেশি, তবুও তাঁদের সুরক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। জানা গেছে, গত ৩ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বন্যাকবলিত ১৩ জেলায় ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চার হাজার মেট্রিক টন চাল, এক কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ এবং ৯ ধরনের খাবারের সমন্বয়ে সাড়ে ১৮ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে এসব খাবারের মাঝে নেই শিশু খাদ্য, নারীদের বিশেষ প্রয়োজনের দিকেও নজর দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক এনজিও সেভ দ্য চিলড্রেনের সিনিয়র ম্যানেজার সৈয়দ মতিউল আহসান বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নতুন কিছু না, তবুও ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় কোনো সময়ই নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ রাখা হয় না। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে দেখা গেছে নারী, পুরুষ, শিশুদের এক সঙ্গে উচু জায়গায় রাখা হয়েছে, এতে তাঁদের সুরক্ষার কথা ভাবা হয় নি। এসময় শিশুরা পাচারের শিকার হতে পারে, নারীরা নিপীড়নের শিকার হতে পারে, কিন্তু এগুলো ভাবা হয় না।’
ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে মতিউল আহসান বলেন, ‘বিভিন্ন এনজিও ত্রাণ বিতরণের সময় নারীদের কথা আগে বিবেচনা করে থাকে। ফলে এসময় ত্রাণ আনতে যাওয়া, বহন করার ক্ষেত্রে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের ত্রাণ ব্যবস্থাপনা কখনোই নারী ও শিশু বান্ধব না।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সুপরিকল্পিত কর্মসুচি না থাকায় সব দুর্যোগকালীন সময় নারী ও শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। আইলা-সিডরের সময়ও নারী-শিশুদের নিরাপত্তার কথা কেউ ভাবেনি, এখনও ভাবা হয় না।
বাংলা ইনসাইডার/ আরএ
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ছোট ভাইয়ের পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের বিএনপি নেতা আকমল হোসেন, স্ত্রী খাদিজা খাতুন ও মফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এদের অত্যাচারে এলাকার নিরীহ ও অসহায় মানুষেরা আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাগবাটি ইউনিয়নের রাঙ্গালিয়াগাঁতী পশ্চিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে হাকিম হোসেন সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্তে ভাইদের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। পুর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাঙ্গালিয়াগাঁতী গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আকমল হোসেন (৪২), তার স্ত্রী মোছা: খাদিজা বেগম (৩৫) ও আবুল হোসেনের ছেলে মফিজ (৩৮) দেশীয় অস্ত্র রামদা ও লাঠি সোঁটা নিয়ে হত্যার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে মোঃ হাকিম হোসেনকে এলো-পাথারী মারপিট করে। পরের দিন সকালে এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী হাকিম হোসেন বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধে আমার বড় ভাই বিএনপি নেতা সন্ত্রাসী আকমল দেশীয় অস্ত্র রামদা নিয়ে এসে আমাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় আমি বাড়ি থেকে বের হতে না চাইলে আমার মাথা লক্ষ্য করিয়া রামদা দিয়ে কোপ মারে। আমি সরে দাড়ালে কোপটি আমার পায়ের আঙ্গুলে আঘাত পেয়ে রক্ত বের হতে থাকে। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে এই হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের জোড়দাবী করছি।'
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আকমল হোসেন বলেন, ‘ভাইদের টাকায় আমাদের মা ওমরা হজ পালন করে। সেই টাকা ও জমি সংক্রান্তের জেরে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটী হয়েছে। এখানে মারপিট ও হত্যার হুমকির বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের আলোকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।