নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪০ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০১৭
ঢাকা কাঁপছে চিকুনগুনিয়া জ্বরে। আলোচনা-সমালোচনায় বিদ্ধ ঢাকার দুই মেয়র। সমালোচকরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের মশানিধন অভিযানের ব্যর্থতা আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচেতনতার অভাবে মহামারি রুপ ধারণ করেছে চিকুনগুনিয়া। চিকুনগুনিয়ার হাত থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে দুই সিটি করপোরেশন শুরু করেছে জনসংযোগ আর প্রচারণা। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুলেছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সচেতন হয়েছেন নগরবাসী?
ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিকুনগুনিয়ার জনসংযোগ আর প্রচারণার আগেই বহু মানুষ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। শেষ পর্যায়ে এসে বেশিরভাগ মানুষই এখন চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন। এই বাস্তবতার চিত্র ফুটে উঠেছে বাংলা ইনসাইডারের সরেজমিন প্রতিবেদনে।
ধানমণ্ডি-২৭ এর রিকশাচালক মো. জয়নাল আবেদীনকে চিকুনগুনিয়ার কথা বললে প্রথমেই সে কিছুই জানেনা বলেন। পরে মশার জ্বরের কথা বলতেই তিনি জানান, ‘মানুষের কাছে শুনতাছি শরীরে নাকি জ্বর উঠতাছে, হাড় কামড়ায়। শুনতাছি খালি নাপা খাইতে হবে। মানুষের কাছে শুনে শুনে জানতে পারছি।’ চিকুনগুনিয়ার কোনো প্রচারণা তাঁর চোখে পড়েনি বলে জানায় জয়নাল।
একই এলাকার সবজি বিক্রেতা দুলাল জানান, ‘আমাগো চিকুনগুনিয়া হইছে, আমরা শুধু নাপা ট্যাবলেট খাইছি। লেবু, ডাব, টক এগুলো খাইছি। ডাক্তার দেখাইতে কোনো হাসপাতালে যাই নাই। বাড়ির পাশে ডাক্তারের দোকানে দেখাইছি। ডাক্তার কইছে কোনো ওষুধ নাই। শুধু নাপাটাই দিছে। আর কিছু দেয় নাই। আমার মনে হয় বেশি ওষুধ খাইছে যারা তারাই ভোগতাছে বেশি।’ নিজে জ্বরে ভোগার পরই চিকুনগুনিয়া সর্ম্পকে জেনেছেন বলে জানান দুলাল।
ধানমণ্ডি লেকের পাশে বাদাম বিক্রি করেন লিটন। তিনি জানান, ‘আমার জ্বর হয় নাই। তয় অনেকের হইছে। যাগো হইছে তারা সবাই ভোগছে। একজনের হইছিল হ্যায় পরে ব্রাক্ষণবাড়িয়া চইলা গেছে। আমাগো বাসায় আমরা ৮/৯ জন একলগে থাকি। অর্ধেকেরই জ্বর হইছে। হ্যারা সবাই ভাগছে। কেন জ্বর হইছে তা কইতে পারি না।’ চিকুনগুনিয়া কীভাবে ছড়ায় সে সর্ম্পকে কিছুই জানা নেই তাঁর।
লেকেরই আমড়া বিক্রেতা আতিকুল জানায়, ‘আমিও জ্বরে ভুগছি। ডাক্তার কি যেন নাম কইছে ভুইল্লা গেছি।’ একটা ফার্মেসি থাইকা ৪০০ টাকার জ্বর আার মাথাব্যথার ওষুধ খেয়েছেন বলে জানান তিনি।
বাড্ডার গৃহকর্মী মাজেদা জানান, ‘আমি যে মেসে রান্না করি হেই মেসের স্যারেগো অনেকের জ্বর হইছে। হ্যাগো কাছে হুনছি, চিকনাগুইন্না জ্বরের কতা। আর টিভিতে দেইক্কা জানছি মশার কামড়ে হয় এই জ্বর। আমার জ্বর অইলে কি করমু?’
নিরাপত্তাকর্মী শাহ আলম চিকুনগুনিয়ার কথা আগেই জানতেন। ঈদের তিন চারদিন আগে তিনিও জ্বরে পড়েন। জ্বর কমলেও শরীরে হাড়ের ব্যথা এখনো যায়নি তাঁর। এখনো অনেকটা খুঁড়িয়ে হাটেন তিনি। ডাক্তার দেখিয়েছেন একটি হাসপাতালে। ডাক্তার ওষুধ দিলেও তিনি ওষুধ খাননি। কেনো ওষুধ খাননি জিজ্ঞেস করলে জানান, ‘এমনিতেই নাকি কমে যায় শুনলাম। বেশি ওষুধ খাওয়া ভালো না। আরও কিছুদিন দেখবো।’
চিকুনগুনিয়া নিয়ে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ জনসংযোগ আর প্রচারণা করেছে। তবে তাতে যত মানুষ সচেতন হয়েছে তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সচেতন হয়েছে নিজেরা চিকুনগুনিয়ায় ভুগে। আবার অনেকে জেনেছেন স্বজন ও বাড়ির অন্যদের ভুগতে দেখে। তাই প্রচারণা নয়, চিকুনগুনিয়ার ব্যাপকতা আর ভোগান্তিতেই ভুক্তভোগিরা সচেতন হয়েছে। চিকুনগুনিয়া নিজেই নিজের প্রচারণা করেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এএন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন
মন্তব্য করুন
জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান
মন্তব্য করুন
গাজা এখন জ্বলছে ইসরায়েলি নিধনে। মুসলমানরা মধ্যপ্রাচ্যে এক দুর্বিষহ রমজান পালন করছে। মানুষের আর্তনাদ এবং আহাজারি, শিশুদের ওপর বর্বরোচিত হামলা সমস্ত মানবতার সীমা লঙ্ঘন করেছে। অমানবিক এবং পৈশাচিকতায় ইসরায়েল এমন বীভৎস তান্ডব তৈরি করেছে যে তাদের মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের ওপর বিরক্ত। সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়নি। অথচ এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পরপরই ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও তারা গাজায় হামলা চালাবে।
জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান। সরকারের গৃহীত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সকল স্টেকহোল্ডাদেরে এগিয়ে আসতে তিনি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জলবায়ু সহনশীল মৎস্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য গবেষণার উপর বিশেষ জোর দিতে হবে।