নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৯ জুলাই, ২০১৭
শরীরটা একদম ভালো নেই। দুটি কিডনীই প্রায় অকেজো। সপ্তাহে তিনদিন ডায়লাইসিস নিতে হয়। রাজনীতি নিয়েও তাঁর এক রাশ হতাশা। বিএনপির আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়া কোনো কর্মসূচিতে তাঁকে অংশ নিতে দেখা যায় না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত স্টাফদের চোটপাটে বিরক্ত, ক্ষুদ্ধ। বেগম জিয়ার লন্ডন সফরের আগে স্থায়ী কমিটির সভা ডেকেছিলেন। সেই সভায় উপস্থিত হয়ে বোমা ফাটিয়েছেন, বলেছেন ‘আমাদের খামোখা বৈঠকে ডাকার দরকার কী? পিয়ন, দারোয়ানরাই তো এখন বিএনপি চালায়’। তরিকুল ইসলাম, বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। এখন বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির ৬ নম্বর সদস্য।
এক সময় চরমপন্থার রাজনীতিতে ঝুঁকেছিলেন। শ্রেণী সংগ্রামের মাধ্যমে শ্রেণী শত্রুকে খতম করার যুদ্ধে নেমেছিলেন। যশোর অঞ্চলে পরিচিতি পেয়েছিলেন ‘গলাকাটা পার্টির’ নেতা হিসেবে। তাঁর সশস্ত্র ক্যাডারদের ভয়ে তটস্থ থাকতো যশোরের লোকজন। জিয়ার ডাকে বিএনপিতে যোগদান। জিয়ার মৃত্যুর পর তরিকুল খালেদা জিয়ার অন্যতম আস্থাভাজন নেতায় পরিণত হন। দুই দফায় মন্ত্রীত্ব করেন। বিএনপিতে বাম থেকে আসা নেতা কর্মীদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয় তিনি। ওয়ান-ইলেভেনে তাঁকে সংস্কারবাদী বানানোর জোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সারা দেননি। ওয়ান ইলেভেনে তিনি বলেছিলেন ‘খালেদা জিয়া একাই যদি বিএনপিতে থাকে তাহলে সেটাই হলো আসল বিএনপি’। তাঁর এই উক্তির পরদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওয়ান ইলেভেনের পর তাঁকে সাম্ভাব্য মহাসচিব ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু এসময় তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে অবস্থান নিলে দলে কোনঠাসা হয়ে যান। বিএনপির দক্ষিণপন্থীরা তাঁর পিছনে উঠে পড়ে লাগে।
বেগম জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস ছিল তরিকুলের শিষ্য। শিমুল বেগম জিয়ার ঘনিষ্ট হলে অনেকেই নিশ্চিত ছিল তরিকুলই বিএনপির মহাসচিব। কিন্তু শিমুল বিশ্বাস তরিকুলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ফলে, জামাতপন্থীদের চাপ আর নিজের শিষ্যের বিশ্বাসঘাতকতায় তাঁকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে থাকতে হয়।
২০১৪ সালে দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন নির্বাচন প্রশ্নে। তরিকুল ছিলেন নির্বাচনে যাবার পক্ষে। তিনি গণভবনের আমন্ত্রণে সাড়া দেবার জন্যও বেগম জিয়াকে অনুরোধ করেছিলেন। বেগম জিয়ার সম্মতি লাভে ব্যর্থ হয়ে বলেছিলেন ‘আপনি কি চাকর-বাকরদের কথা শুনে রাজনীতি করবেন?’ ২০১৪ আন্দোলন ব্যর্থ হবার পর দলে তরিকুলের কদর বাড়ে। কিন্তু দলের চেয়ারপারসন সিদ্ধান্ত নেন, শিমুল বিশ্বাস আর মারুফ কামালের কথা শুনে। এতেই ক্ষুদ্ধ হয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেন। আনুষ্ঠানিক বৈঠকে তিনি সব সময় ‘পিয়ন-দারোয়ান’ দের ইঙ্গিত করে কথা বলার জন্য তিনি বিখ্যাত। বিএনপিতে তাই নিঃসঙ্গ তরিকুল। তবে অনেকেই ফিসফাস করে তরিকুলের কথারই প্রতিধ্বনি করে। বিএনপি চালাচ্ছে কি তাহলে, পিয়ন দারোয়ানরাই?
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।