ইনসাইড বাংলাদেশ

ঈদের পরেই সবথেকে ভয়ঙ্কর হবে করোনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৩ মে, ২০২০


Thumbnail

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, কোথায় শেষ হবে ইত্যাদি নিয়ে কোন প্রক্ষেপণ এবং পূর্বাভাসই যেন মিলছে না। একের পর এক পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব এবং লক ডাউন না করলে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোন প্রক্ষেপণই সঠিক হবে না। বরং পরিস্থিতি দিনের পর দিন ভয়াবহ হবে, একটি চূড়ান্ত সীমার পর আরেকটি নতুন চূড়ান্ত সীমা শুরু হবে এবং এই পরিস্থিতি কখন শেষ হবে তা বোঝার উপায় নেই। কারণ বাংলাদেশে যখন করোনা পরিস্থিতি চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছিল ঠিক সেই সময় সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছিল। বিশেষ করে রাস্তাঘাট, দোকানপাট ইত্যাদি উন্মুক্ত করে দেওয়ার ফলে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে, কেউ কেউ ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছে, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হচ্ছে এবং দোকানপাটে কেনাকাটা করছে, বাজারহাট করছে। ফলে প্রতিদিনই নতুন নতুন সংক্রমণের শঙ্কা তৈরি হচ্ছে, প্রতিদিনই নতুন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কাজেই বাংলাদেশ সম্পর্কে পূর্বে যে প্রেডিকশন করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশে হয়তো করোনা পরিস্থিতি থাকবে মে মাসের শেষ পর্যন্ত এবং জুন মাসে আস্তে আস্তে দেশ স্বভাবিক হওয়া শুরু করবে। তবে চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, সেই ধারণাটি এখন ক্রমশ ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। এই ভুল প্রমাণের পেছনে তারা একাধিক কারণ দেখাচ্ছেন। তারা মনে করছেন যে-

প্রথমত; আগে যে প্রক্ষেপণটি করা হয়েছিল তখনকার বাস্তবতা, সাধারণ ছুটি বা লকডাউনকে মাথায় রেখে। কিন্তু এপ্রিল মাস থেকে ক্রমশ লকডাউন শিথিল হয়ে গেছে এবং মে মাসে এসে সাধারণ ছুটি বা লকডাউন বলতে কিছুই নেই। বরং গার্মেন্টস খুলে গেছে, দোকানপাট খুলে গেছে, মানুষ এখন ঈদের ছুটিতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে বাংলাদেশে নতুন করে আবার করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যেটা হয়তো আবার ২১ দিন বা ৩/৪ সপ্তাহের ভেতর চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাবে।

দ্বিতীয়ত; তারা মনে করছেন যে, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের যে ভৌগলিক অবস্থা ছিল, সেটা ছিল ঢাকাকেন্দ্রিক। মূলত অর্ধেকের বেশি আক্রান্ত রোগীই ছিল ঢাকার। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক দিক ছিল। কারণ আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতাসহ যা কিছুই থাকুক না কেন, তা হলো ঢাকাকেন্দ্রিক। আর ঢাকার বাইরে এই করোনা ছড়িয়ে পড়লে আমাদের একটি ভয়াবহ ট্রাজেডিতে পড়তে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কেননা ঢাকার বাইরে সাধারণ চিকিৎসারই অপ্রতুলতা রয়েছে, করোনা চিকিৎসা তো বটেই। আর এই বাস্তবতায় ঢাকা করোনার হটস্পট থাকবে এবং আস্তে আস্তে ঢাকাকে করোনা মুক্ত করার মাধ্যমে আমরা করোনা সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসবো বলে আমাদের চিকিৎসকরা আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু এখন যে লাখ লাখ মানুষ ঢাকার বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছেন তার ফলে পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই সমস্ত লোকরা ঢাকার বাইরে চলে যাবেন। তারা ওই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে দিতে পারেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন এখন দেখা যাচ্ছে যে প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত। কাজেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ কিংবা তথ্য গোপন করে শুধুমাত্র ঈদের জন্য যারা ঘরমুখো হচ্ছেন তাদের অনেকেই করোনায় সংক্রমিত এবং তারা দ্রুত গ্রামে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এটা যদি গ্রামে ছড়িয়ে দেয় তাহলে এত ভয়ংকর অবস্থা নেবে।

এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আটজন বিশেষজ্ঞের একটি প্যানেল প্রক্ষেপণ করেছিল যে বাংলাদেশে ৫০ থেকে ৬০ হাজার করোনা সংক্রমণ হবে। সেই প্রক্ষেপণ এখন ভুল প্রমানিত হচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে আক্রান্তের সংখ্যা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এখন লকডাউন শিথিল এবং সব কিছু শিথিল করার ফলে আমাদের দ্বিতীয় ধাপে করোনা সংক্রমণ শুরু হবে। দ্বিতীয় ধাপের করোনা সংক্রমণ আবার ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে চুড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছবে। অর্থাৎ আগামী জুনে গিয়ে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।

কোন কোন বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে এখন যে সংক্রমণ হবে সেই সংক্রমণের ফলে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় যেটি চিকিৎসকরা মনে করছেন যে আমাদের সীমিত চিকিৎসা সুযোগ রয়েছে কাজেই যখনি আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ অতিক্রম করবে তখনি আমাদের ভয়ংকরভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে।

সারা বিশ্বের তথ্য বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি যে, যারা আক্রান্ত তাদের মধ্যে ৮০ ভাগ এমনিতেই সুস্থ হয়ে যান, ২০ভাগ জটিল অবস্থায় যান। অর্থাৎ, বাংলাদেশের যদি ১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় তাহলে ২০ হাজার মানুষকে চিকিৎসা দিতে হবে। এই ২০ হাজার মানুষকে চিকিৎসা দেয়ার মত বাস্তব পরিস্থিতি আমাদের নেই।

আবার মোট আক্রান্তের মধ্যে ৫ শতাংশ মানুষ গুরুতর আক্রান্ত হয়। অর্থাৎ ১ লাখ মানুষ যদি আক্রান্ত হয়ে তার মধ্যে ৫ হাজার মানুষের আই সি ইউ, ভ্যান্টিলেশন ইত্যাদি লাগবে। অথচ আমাদের বাংলাদেশে এখন সব হাসপাতাল মিলিয়ে করোনা চিকিৎসার জন্য ৪০০-র কম আই সি ইউ আছে।

এই অবস্থায় আমাদের করোনা পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে কি ভয়াবহ অবস্থা অপেক্ষা করছে তা বলাই বাহুল্য। চিকিৎসকরা মনে করছেন ঈদের পর করোনা কমবে না বরং জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ শুরু হবে এবং আমরা আরেকটি সর্বোচ্চ সীমার জন্য অপেক্ষা করবো। তখন এই পরিস্থিতিটি ভয়াবহ হবে আমাদের সকলের জন্যই।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধের দাবি

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতরসহ বেশ কয়েকটি ছুটির সমন্বয়ে টানা ২৬ দিন ছুটি কাটিয়ে রোববার (২১ এপ্রিল) খুলছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরো বাড়ার শঙ্কায় তিন দিনের জন্য সারাদেশে হিট অ্যালার্ট দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এমন এক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে, যখন দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৭ দিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলুর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মানুষজনকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করছে প্রশাসন। এরমধ্যে স্কুল-কলেজ খুললে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা আগামী ৭ দিনের জন্য বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছেন অভিভাবকরা।

বছরের শুরুতে প্রকাশিত ছুটির তালিকা অনুযায়ী— ১০ মার্চ থেকে প্রাথমিক ও মাদরাসায় এবং ১১ মার্চ থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি শুরুর কথা ছিল। শিখন ঘাটতি পূরণে মাধ্যমিকে ১৫ দিন ছুটি কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে রমজানের শুরুতে প্রায় দুই সপ্তাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু ছিল। আর রমজানের প্রথম ১০ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হলে দফায় দফায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আসে। সর্বশেষ আপিল বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—ছুটি সমন্বয় করে রোজায় ১৫ দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার পক্ষে রায় দেন। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী— প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০ দিনের ছুটি কমানো হয়।

একইভাবে সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও মাদরাসায়ও ছুটি কমিয়ে রমজানের শুরুর দিকে প্রায় দুই সপ্তাহ ক্লাস চালু রাখে সরকার। তবে ছুটি শেষে রোববার থেকে পুরোদমে চালু হচ্ছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।


তীব্র তাপপ্রবাহ   শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   বন্ধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা

প্রকাশ: ১১:৫৩ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের নয়টি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৪ মাস ১০ দিন পর দানবাক্স খুলে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এখন চলছে গণনার কাজ।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় ৪ মাস ১০ দিন পর এ দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ৪ মাস ১০ দিন পর শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। এবার দিন বেশি হওয়ায় একটি ট্রাংক দেওয়া হয়েছিল। পরে মসজিদের দোতালায় এনে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়েছে। তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হলেও এবার রমজানের কারণে ৪ মাস ১০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে।

টাকা গণনা কাজে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহুয়া মমতাজ, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা আনোয়ার পারভেজসহ মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ মোট ২২০ জনের একটি দল অংশ নিয়েছেন। 


পাগলা মসজিদ   দানবাক্স   কিশোরগঞ্জ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মাঠ ছাড়তে নারাজ এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরও উপজেলা নির্বাচনের মাঠ থেকে এখনই সরতে রাজি নন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা। নানা কৌশলে ভোটের মাঠে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্ট এমপি-মন্ত্রীরাও তাদের পক্ষে সামনে আনছেন নানা ‘যুক্তি ও অজুহাত’। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলা বা সরাসরি তার কাছ থেকে নির্দেশনার অপেক্ষাও করছেন অনেকেই। এছাড়া নানাভাবে সময়ক্ষেপণ করতে চাইছেন তারা। বোঝার চেষ্টা করছেন দলের অবস্থান শেষ পর্যন্ত কতটা কঠোর হয়। এর পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান তারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে আওয়ামী লীগের। বিএনপির ভোটে না আসার ঘোষণার মধ্যে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে ক্ষমতাসীন দল এমন সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এর পরই আলোচনায় আসে নির্বাচনে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব বিস্তার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করা নিয়ে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যেতে হুমকি, তুলে নেওয়া এবং প্রচারণায় বাধা দেওয়াসহ নানা অভিযোগও ওঠে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। শুরু থেকেই এমপি-মন্ত্রীদের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার বা প্রার্থীদের সমর্থন না দেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু দলের কোনো নির্দেশনাই তোয়াক্কা করছিল না তারা।

জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলায় নিজেদের বলয়ের নেতাকর্মী, আত্মীয়স্বজনদের নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন কিছু এমপি ও মন্ত্রী। এতে নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টিকে আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ও আত্মীয়রা যাতে নির্বাচন থেকে সরে যায়, সেজন্য দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় এখনো দুদিন বাকি থাকায় দলের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার এ সিদ্ধান্তকে অমান্য করলে খেসারত হিসেবে বহিষ্কারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগ। সিদ্ধান্ত মেনে নিলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে বলেও জানিয়েছেন নীতিনির্ধারকরা।

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ১৫০টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেড় ডজনেরও বেশি উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়রা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। বাকি তিন ধাপের নির্বাচনেও অনেক মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘আমরা চাই উপজেলা নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ও নিকটাত্মীয়রা নির্বাচনে অংশ নিলে ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রভাবিত করার শঙ্কা থাকে। সেজন্য নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে তাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। কেউ এই আদেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এমপি বা মন্ত্রিত্ব পদে আঁচ পড়বে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না—এটা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত। দলীয় সভাপতির সিদ্ধান্ত অমান্য করলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, তাদের খেসারত দিতে হবে। যারা সিদ্ধান্ত মেনে নেবে, তাদের দল পুরস্কৃতও করবে।

গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির কার্যালয়ে এক অনির্ধারিত বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দলীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে তাদের নিকটাত্মীয় ও পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না হতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রী-এমপিরা যেন খবরদারি করতে না পারে, সেজন্য দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা এই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার জন্য দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও শাজাহান খান, নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজনকে তাৎক্ষণিক বৈঠক থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।

নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী সুবর্ণচর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী, টাঙ্গাইল-১ আসনের এমপি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই ধনবাড়ি উপজেলায়, মাদারীপুর-২ আসনের এমপি ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান সদর উপজেলায়, নাটোর-৩ আসনের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব সিংড়া উপজেলায়, নরসিংদী-২ আসনের এমপি আনোয়ার আশরাফ খানের শ্যালক শরিফুল হক পলাশ উপজেলা, বগুড়া-১ আসনের এমপি শাহদারা মান্নানের ভাই ও ছেলে দুই উপজেলায়, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুপাতো ভাই ইসরাফিল হোসেন সদর উপজেলায়, কুষ্টিয়া-৩ আসনের এমপি মাহাবুব-উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়া সদরে, পাবনা-৩ আসনের মো. মকবুলের বড় ছেলে রাসেল পৌরসভার মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।

এ ছাড়া নোয়াখালী-৬ আসনের এমপি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশীক আলী হাতিয়া উপজেলায়, পিরোজপুর-১ আসনের শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই নূর ই আলম নাজিরপুর উপজেলায়, বরিশাল-১ আসনের আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোট ছেলে আশিক আব্দুল্লাহ আগৈলঝাড়া উপজেলায়, মৌলভীবাজার-১ আসনের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের ভাগনে শোয়েব আহমদ বড়লেখা উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের দুই চাচাসহ তিনজন প্রার্থী হয়েছেন। বরিশাল-৬ আসনের এমপি আব্দুল হাফিজ মল্লিকের ভাই বাকেরগঞ্জ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন।

এদিকে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে নিজ পুত্রের বিষয়ে অনড় এমপি একরাম চৌধুরী। তার অনুসারীরা ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও তারা তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না। দলীয় নীতিনির্ধারকদের নির্দেশ অমান্য করে একরামের ছেলে শাবাব চৌধুরী এখনো প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম সেলিম এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ খান সোহেলকেও নানা হুমকি দিচ্ছেন একরাম। সোহেলকে তার কার্যালয় থেকে বের হতে দেবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিসহ এমপি একরামের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চরম ক্ষুব্ধ বলেও জানা গেছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এমপি সুজনের পরিবারে তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এমপি সুজনের মেজো চাচা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ও তার ছোট ছেলে আলী আফসার রানা এবং আরেক ছোট চাচা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে জানা গেছে।

কুষ্টিয়া-৩ আসনের এমপি ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের ভাই আতাউর রহমান আতাও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘আমাকে নির্দেশ করে বলা হয়নি যে, নির্বাচন করতে পারব না। আমি বর্তমান চেয়ারম্যান। আমাকে উদ্দেশ করে বলা হলে আমি বিবেচনা করব, যেহেতু আমি দলের রাজনীতি করি।’

নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোর একই মনোভাব পোষণ করছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ইসরাফিল হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্যে বলেছেন আমি সেই ক্যাটাগরিতে পরি না। সেজন্য আমি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। আমি পরপর দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান।’

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই হারুনার রশিদ হিরাও অনড় অবস্থানে আছেন। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না—এ রকম কোনো বার্তা আমার কাছে এখনো আসেনি।’

এ বিষয়ে শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং ভোট প্রদান করা একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। আমার সে অধিকার তো কেউ ক্ষুণ্ন করতে পারে না। এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা নির্বাচন অংশগ্রহণ করতে না পারলে তো এখানে আর নির্বাচনই থাকে না। ঘোষণাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, সেটিও ভাবার বিষয়। আমি আশা করছি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব।’

বগুড়া-১ আসনের এমপি সাহাদারা মান্নানের ছোট ভাই ও সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনহাদুজ্জামান লিটন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। লিটন বলেন, ‘এমপির স্বজন ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা এখনো পাইনি। এমপি আমার বোন হতে পারে, আমি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ভোট করছি। এমপি বোনের পরিচয়ে নয়। এজন্য সরে দাঁড়াব না।’

মাদারীপুর-২ আসনের এমপি ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান কালবেলাকে বলেছেন, ‘এই উপজেলায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আমার ছেলে ও আমার এক ভাই। দলের সিদ্ধান্তে সরে যেতে হলে এই উপজেলায় তো নির্বাচনই হবে না। দলের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিমন্ত্রী আহত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দেখতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। নিজের আত্মীয় হলেও ছাড় দেওয়া হবে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

‘এখনো কিছু জায়গায় প্রার্থী অনড় রয়েছেন, তা শিগগিরই প্রত্যাহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘শ্যালকের বিরুদ্ধে অভিযোগকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা জুনাইদ আহমেদ পলক আমাকে জানিয়েছেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণাও দিয়েছেন প্রার্থী।’


উপজেলা নির্বাচন   এমপি-মন্ত্রীর স্বজন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কুতবদিয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা


Thumbnail

কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ঈদ পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবরের হামলার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিন ও এশিয়া টেলিভিশনের কুতুবদিয়া উপজেলা প্রতিনিধি এবং কুতুবদিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মিজানুর রহমান।

 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

 

জানা যায়, কুতুবদিয়া দ্বীপের কৈয়ারবিল মলমচর এলাকায় একটি অসহায় পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলাসহ তাদের ‘লাশের মাংস খুঁজে পাওয়া যাবে না’ প্রকাশ্যে এমন হুমকি প্রদানের একটি ভিডিও বাংলাদেশ প্রতিদিন ও এশিয়া টেলিভিশনের প্রতিনিধি মোঃ মিজানুর রহমানের হাতে পৌঁছায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশে জন্য ভিডিওটি যাচাই-বাছাই করতে জড়িতদের সাথে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যোগাযোগ করলে মিজানুরকে হুমকি দেন সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর।

 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ক্যামেরা, মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়।  

 

হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের নজর আলী মাতবর পাড়ার মৃত আবুল কাশেম মাতবরের তিন পুত্র, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, তার দুই ভাই আজমগীর মাতবর ও মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম। এছাড়া তাদের পুত্র আরিফ বিন রিনাস, সানজো রাকিব, মোঃ মোজাহিদ, মোঃ নিহাল উদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জন হামলায় অংশ নেয়।

 

আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমান বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হঠাৎ কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন।

 

সাংবাদিক আব্বাস সিদ্দিকী বলেন, ‘হঠাৎ মিজানুর রহমানের ওপর হামলা দেখে আমরা কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাই। অবস্থার অবনতি হলে রাত ১২ টার পর আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে কুতুবদিয়া থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’ 

 

কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো গোলাম কবির বলেন, ‘সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

সাংবাদিক মিজানের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম এরশাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিন উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ বেলাল, অর্থ সম্পাদক জাহেদ হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শামসুল আলম শ্রাবণ,পাঠাগার সম্পাদক রমজান আলী সিকদার, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসমিন মুন্নী নির্বাহী সদস্য শাকের বিন ফয়েজ  ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিবৃতি প্রদান করেন।

 

আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের যথাযথ আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রেফতার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।


সাংবাদিকের উপর হামলা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তিন ধর্ষকের হাতে স্ত্রীকে তুলে দিলেন স্বামী

প্রকাশ: ১০:২৭ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কুমিল্লায় মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে ‘মাদক কারবারির’ হাতে তুলে দিয়েছেন স্বামী। ওই ব্যক্তির নাম আবুল খায়ের। পরে ওই নারীকে ফসলি জমির গভীর নলকূপের ঘরে নিয়ে ওই তিনজন ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় ওই স্বামী আবুল খায়েরসহ ৪ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) জেলার বরুড়া উপজেলার শাকপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ভুক্তভোগী নারী থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ধ্যায় এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করে বরুড়া থানা পুলিশ। তারা হলেন বরুড়া উপজেলার শাকপুর এলাকার মাদক কারবারি নূরু, মনির ও মহিন।

বরুড়া থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, শাকপুর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে আবুল খায়ের একজন মাদকাসক্ত। বুধবার একই এলাকার মাদক কারবারি নূরু, মনির ও মাহিনের কাছে মাত্র ৫ হাজার টাকায় স্ত্রীকে বন্ধক রেখে মাদকের টাকা নেন স্বামী আবুল খায়ের। পরে ওই নারীকে ফসলি জমির গভীর নলকূপের ঘরে নিয়ে পালাক্রমে ‘ধর্ষণ’ করেন নূরু, মনির ও মাহিন।

এ ঘটনা পর ভুক্তভোগী নারী তার বাবার বাড়ি এলাকা মুরাদনগর চলে যান। পরে শুক্রবার ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারের লোকজন নিয়ে বরুড়া থানায় এসে অভিযোগ জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে।
ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।


কুমিল্লা   ধর্ষণ   স্ত্রী   স্বামী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন