নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ২৮ মে, ২০২০
সাধারণ ছুটি শেষে আগামী ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে খুলছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। মাস্ক পরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই নির্দেশনা দেয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে অফিস খোলা থাকবে।
একই সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা ১৩ দফা নির্দেশনাও কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধ ও পরিস্থিতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে দেশের সার্বিক কার্যাবলি এবং জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৫, ৬, ১২ ও ১৩ জুনের সাপ্তাহিক ছুটি এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবারা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষার ১৩ নির্দেশনায় যা আছে-
১. দফতরের বাইরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।
২. অফিস চালু করার আগে অবশ্যই প্রতিটি অফিস কক্ষ, আঙিনা, রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৩. প্রত্যেক মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রবেশ পথে থার্মাল স্ক্যানার, থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করাতে হবে।
৪. অফিস পরিবহনগুলো অবশ্যই জীবাণুনাশক দিয়ে শতভাগ জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনে বসার সময় ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সবাইকে মাস্ক (সার্জিক্যাল মাস্ক অথবা তিন স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক, যা নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখবে) ব্যবহার করতে হবে।
৫. সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার ব্যবহার করা যাবে। কাপড়ের মাস্ক সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে আবার ব্যবহার করা যাবে।
৬, যাত্রার আগে এবং যাত্রাকালে পথে বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৭. খাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) বজায় রাখতে হবে।
৮. প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. অফিসে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
১০. কর্মস্থলে সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং ঘন ঘন সাবান পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
১১. কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সাধারণ নির্দেশনাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করে দিতে হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১২. দৃশ্যমান একাধিক স্থানে ছবিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
১৩. কোনো কর্মচারী অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
মার্চের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী প্রথম ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রমে অবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। তবে এখনও করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি নেই।
ছুটি আর না বেড়ে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিতভাবে খুলছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। একই সঙ্গে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনও (বাস, লঞ্চ ও ট্রেন) চালু হবে ওইদিন থেকে।
মন্তব্য করুন
দেশে গত এক বছরে আমদানি হয়নি কোনো বিদেশি সিগারেট। অথচ মহানগর থেকে
শুরু করে জেলা, উপজেলাসহ সারা দেশেই বিভিন্ন ধরনের বিদেশি সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। দেশে
এসব সিগারেট আসে চোরাই পথে। তার পরও আগের চেয়ে অনেক সহজলভ্য।
বিদেশি সিগারেট চোরাই পথে আসার কারণে এগুলোর বিক্রির বিপরীতে জাতীয়
রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কোনোরকম রাজস্ব পায় না। সে জন্য দেশের বাজারে অবৈধ উপায়ে বিদেশি
সিগারেট বিপণন বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকদের সহায়তা চেয়েছে এনবিআর।
সম্প্রতি এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
চিঠিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চোরাচালান প্রতিরোধের অংশ হিসেবে অবৈধভাবে আসা সিগারেট
বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের আধা সরকারি পত্র পাঠানোর অনুরোধ
জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআরের মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বিভাগের প্রথম সচিব শাহীনুর
কবীর পাভেল এই চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসকদের উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধের
বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের অনুমোদন আছে’।
এ বিষয়ে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সিগারেট
এনবিআরের জন্য রাজস্ব আদায়ের একটি অন্যতম বড় খাত। অবৈধভাবে আসা বিদেশি সিগারেটের কারণে
আমরা স্থানীয় বাজার থেকে কাঙ্ক্ষিত হারে শুল্ক-কর পাচ্ছি না।’ তবে এখন পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ
বিভাগ কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না, তা জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।
এনবিআরের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আদায়ের খাত হচ্ছে সিগারেট। সংস্থাটির
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এই খাত থেকে প্রতিবছর শুল্ক-কর মিলিয়ে ৩৫ হাজার
কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হয়। পুরো সিগারেটের বাজারের আকার ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রতিবেদন অনুসারে, গত
২০২২-২৩ অর্থবছরে অবৈধভাবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি শলাকা বিদেশি সিগারেট দেশে এসেছে। এতে
এনবিআরের প্রায় ৭৯০ কোটি টাকার সমপরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
এনবিআরের ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত এক বছরে বিদেশ থেকে কোনো
সিগারেট আমদানি হয়নি। তার পরও ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা, উপজেলাসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের
বাজারেও ডানহিল, ট্রিপল ফাইভ, ইজি, মন্ড, অরিসসহ বিভিন্ন ধরনের বিদেশি সিগারেট পাওয়া
যায়। এসব বিদেশি সিগারেট দেশের উচ্চ মূল্যস্তরের সিগারেটের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
এতে রাজস্ব হারাচ্ছে এনবিআর।
তবে এনবিআর মনে করে, এভাবে অবৈধ পথে আনা সিগারেট বাজারে বিক্রি করলে তা চোরাচালান হিসেবে গণ্য হয় এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া ব্যান্ডরোলবিহীন কিংবা জাল ব্যান্ডরোল যুক্ত সিগারেট বা বিড়ি তৈরি, মজুত, সরবরাহ, বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই স্থানীয় পর্যায়ে সিগারেট খাত থেকে রাজস্ব সুরক্ষার জন্য এসব বিদেশি সিগারেটের বিপণন বন্ধে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্সের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে এনবিআর।
এনবিআর ডানহিল ট্রিপল ফাইভ ইজি অরিস মন্ড সিগারেট
মন্তব্য করুন
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে টাকা গণনা এখনো চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত
করে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী
মহুয়া মমতাজ প্রথম আলোকে বলেন, এবার অন্যবারের তুলনায় টাকা বেশি হবে। তাই গণনার কাজ
শেষ হতে রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বাজতে পারে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাগলা মসজিদের ৯টি দানসিন্দুক
ও ১টি বড় স্টিলের ট্রাংক ৪ মাস ১০ দিন পর খুলে ২৭ বস্তা টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার
ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে। এদিন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত গণনায় ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পাওয়া
গেছে।
জেলা শহরের নরসুন্দা নদীতীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই মসজিদে আছে ৯টি
লোহার সিন্দুক। তবে এবার রোজা ও ঈদের কারণে সিন্দুকগুলো আগেই পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সপ্তাহ
দুয়েক আগে দুটি সিন্দুকের সমান আকারের আরও একটি স্টিলের ট্রাংক যোগ করা হয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ
জানিয়েছে, সাধারণত তিন থেকে সাড়ে তিন মাস পরপর দানসিন্দুক খুললেও এবার পবিত্র রমজান
ও ঈদ উপলক্ষে কিছুটা দেরিতে, অর্থাৎ ৪ মাস ১০ দিন পর খোলা হয়েছে। তাই এবার সর্বোচ্চ
২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল দানবাক্সগুলো। তখন ২৩ বস্তার
মধ্যে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া
গিয়েছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অসংখ্য মানুষ টাকা ছাড়াও পাগলা মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি,
গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বলে জানায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল
কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের উপস্থিতিতে দানসিন্দুক ও ট্রাংক
খোলা হয়। প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্দুক ও ট্রাংক থেকে ২৭টি বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে
ঢালা হয়। বেলা ১১টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় গণনার কাজ চলছিল। মাদ্রাসার প্রায়
দেড় শতাধিক খুদে শিক্ষার্থী, ব্যাংকের অর্ধশত কর্মী এবং মসজিদ কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সদস্য মিলে প্রায় আড়াই শ লোক টাকা গণনা করছেন। গণনা শেষে মোট টাকার পরিমাণ
জানানো হবে।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন,
ছয়তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি বড় আকারের
প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তাতে মসজিদ-মাদ্রাসা মিলিয়ে অর্ধলাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায়
করতে পারবেন। একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। সেটির
জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রকৌশলীদের। তাঁরা যাচাই-বাছাই করে নকশা চূড়ান্ত
করে দিলেই আগামী মাস থেকে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ
ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় চার বছর জেলখাটা সেলিম প্রধান। শুধু তাই নয়, ক্যাসিনো–কাণ্ডে
গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধান এবার
উপজেলা নির্বাচন করছেন।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে সেলিম প্রধানের গণসংযোগের কিছু ভিডিও
চিত্র ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উৎসুক্য তৈরি হয়েছে।
তবে উপজেলা পরিষদ আইন বলছে, কোনো নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে
দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত
না হলে কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার এবং থাকবার যোগ্য
হবেন না।
এ বিষয়ে সেলিম প্রধান বলেন, দুদকের মামলায় আপিল ও সাজা স্থগিত করতে
তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। তাই নির্বাচন করতে তাঁর আইনগত কোনো বাধা নেই।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার
করে র্যাব। এরপর তাঁর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি–বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ
বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে
অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে প্রথম অনলাইন ক্যাসিনো চালু করেন।
তিনি গুলশান ও বনানীতে পি ২৪ এবং টি ২১ অনলাইন নামে অনলাইনে ভিডিও গেম খেলার প্ল্যাটফর্ম
চালু করেন। পরে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সেগুলোকে অনলাইন ক্যাসিনোয় রূপান্তর করেন। ওই
অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান কেন্দ্র ছিল ফিলিপাইনে।
সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ছাড়াও ঢাকার গুলশান থানায়
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ
আইনে তিনটি মামলা হয়। বিচারাধীন এসব মামলায় জামিনে রয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের করা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত।
তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদণ্ড
দেন আদালত। ইতিমধ্যে তাঁর সাজাভোগ শেষ হওয়ায় এবং বাকি মামলায় জামিন পাওয়ায় গত বছরের
অক্টোবরে মুক্তি পান তিনি। সাজার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে যে আপিল করেছেন, সেটা শুনানির
অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে, ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার
ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তির
দুই বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সাজা স্থগিত থাকলেও
নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না; যদি সাজা উপযুক্ত আদালতে বাতিল না হয়।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অতীতে সাজাপ্রাপ্ত হলেও আপিল করে নির্বাচন করতে পারতেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এখন মনে হয় না সেলিম প্রধান নির্বাচন করতে পারবেন। খালেদা জিয়াও এ কারণে নির্বাচন করতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাচন ক্যাসিনো সেলিম প্রধান
মন্তব্য করুন
এবার দেশেরে বাজারে কমলো সোনর দাম। প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম ১০
হাজার ২৭৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ হাজার ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হিসেবে ২২ ক্যারেটের
এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড
প্রাইস মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য
জানানো হয়।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার
নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা আজ থেকেই কার্যকর হবে।
সোনার দাম পরিবর্তন হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপা ১ হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
কিছুদিন পূর্বেও যে শসা বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছিল সেই শসা বর্তমানে মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। এমন পরিস্থিতিতে শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ছেন চাষিরা। শনিবার (২০ এপ্রিল) ময়মনসিংহের গৌরীপুরের বাজারগুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিন উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, খেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে খেতেই ফেলে দিচ্ছেন, কেউবা খেত থেকে শসা তুলছেনই না।
উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রথম দিকে ৮০-৯০ টাকা মণ বিক্রি করলেও এখন খেতেই যাই না। বর্তমানে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নাই। খেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে, পচতেছে।
মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। পরে ২ টাকা দরে এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ বিক্রি করেছি। বাজারদরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা খরচ তোলাই দায় হয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে শসা ১শ টাকা মণ কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণ। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণ প্রতি আড়তদারকে দিতে হয় ২০ টাকা, লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা, বস্তা ক্রয় করতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না, লোকসান গুণতে হচ্ছে।
ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২-৩ লাখ করে লস হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরে কৃষকরা অধিক পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছে এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। তাই দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। এতে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।
মন্তব্য করুন