নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০১ জুন, ২০২০
করোনার পিক সময়ে বাংলাদেশ ঝুঁকি নিয়েই অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য সব খুলে দিয়েছে। খুলে দেওয়ার আজ দ্বিতীয় দিন কাটলো। আজকের দিনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো গণপরিবহন চালু হয়েছে। মানুষের মধ্যে আগের চেয়ে বেশি আতঙ্ক দেখা দিচ্ছে। নিজের সচেতনতা, যেটিকে গত কয়েক দিনে মানুষ তোয়াক্কা করেনি, তার দিকে এখন নজর দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। মানুষ কিছুটা সচেতনভাবেই চলাফেরা করছে। মাস্ক ব্যবহার করছে, গ্লাভস ব্যবহার করছে। অনেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী পিপিই ব্যবহার করেও রাস্তায় বেরুচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো যে, সরকার কি আবার লকডাউন দেবে? নাকি এভাবেই চলবে জীবন?
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এটি নির্ভর করবে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের পরিস্থিতির উপর। আগামী ৭ থেকে ১০ দিন যদি পরিস্থিতির তেমন কোনো গুরুতর অবনতি না হয়, তাহলে আস্তে আস্তে অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য এভাবেই অভ্যস্ততা তৈরি করা হবে।
বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য দীর্ঘদিন লকডাউন বা সবকিছু বন্ধ রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটা করোনার চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন সরকারের নীতি নির্ধারকরা। এজন্য সরকার একটু ঝুঁকি নিয়ে হলেও সব খুলে দিয়েছে। তবে সরকারের একাধিক সূত্র বলছে যে, সরকার ১৫ জুন পর্যন্ত সব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং করোনার পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটির উপর নজর রাখবে।
বাংলাদেশে আগামী কয়েকদিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন অর্থবছরের শেষ সময় চলছে এবং জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হবে আগামী ১১ জুন। অর্থবছরের শেষে সরকারের একটা বড় ধরনের আর্থিক মীমাংসার প্রশ্ন জড়িত থাকে। আর এ কারণেই সরকার সবকিছু খুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। এখন প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে যে করোনা পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতিতে সবকিছু খুলে দেওয়ার পরিনাম কী হবে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, সবকিছু খুলে দেওয়ার পরিনাম ভালো হবে নাকি খারাপ হবে সেটা বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। অন্তত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের আগে বোঝা যাবে না যে, বাংলাদেশে এই খুলে দেওয়ার ফলাফল কী হলো। বরং অনেকেই মনে করছে যে, খুলে দেওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা বেড়েছে। এখন মানুষ বুঝতে পেরেছে যে, তার সুরক্ষা তার নিজের হাতে। জীবন জীবিকার জন্য মানুষকে সুরক্ষিত থাকতে হচ্ছে। এর ফলে সবচেয়ে লাভজনক হচ্ছে যেটি, তা হলো অর্থনীতির গতি সচল হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, যদি বাংলাদেশে আগামী ১০ থেকে ১৫ দিন করোনার এই ধারাই থাকে, তাহলে সরকার আবার নতুন করে লকডাউন বা নতুন করে সবকিছু বন্ধের পথে যাবে না। পরিস্থিতির যদি গুরুতর অবনতি হয়, বিশেষ করে যদি মৃত্যুর হার অনেক বেশি বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে সরকার নতুন চিন্তা ভাবনা করতে পারে এবং কিছুদিনের জন্য লকডাউন দিতে পারে।
অবশ্য সরকার সবকিছু খুলে দিলেও অনেকগুলো সতর্কতা অবলম্বন করছে। বিশেষ করে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনও খুলে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন ধরনের সমাবেশ ও জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ রয়েছে। তাছাড়া সরকারি অফিস আদালতগুলোতে কাজকর্ম শুরু হলেও সেটি করা হয়েছে সীমিত আকারে। এই প্রেক্ষাপটেই মনে করা হচ্ছে যে, সরকার আসলে করোনার সঙ্গে বসবাস করতেই আগ্রহী। আবার লকডাউন করতে চায় না সরকার।
আবার লকডাউন করার কতগুলো নেতিবাচক দিকও রয়েছে। ১৫ দিন পর যদি আবার সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন মনে করা হবে যে, সরকার একের পর এক স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে আবার তা পরিবর্তন করছে। এ ধরনের ধারণাগুলো যেন জনমনে তৈরি না হয়, এ কারণেই সরকার মনে করছে যে পরিস্থিতির যদি খুব বড় অবনতি না হয়, তাহলে এভাবেই আস্তে আস্তে সবকিছু স্বাভাবিক হবে। আর যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয়, তাহলে সীমিত অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হবে ১৫ জুনের পর।
সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া গেছে যে, সরকার খুব আশাবাদী যে জুনের শেষ নাগাদ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হবে। আর তাই এখন যদি সবকিছু আবার নতুন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন সরকারের উপর নতুন করে একটা রাজনৈতিক নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হবে। যেটির ভার সরকার বহন করতে চায় না। আর এ কারণেই মনে করা হচ্ছে যে, সহজেই আবার সরকার লকডাউনের সিদ্ধান্তে ফেরত যাবে এমন ভাবার তেমন কোনো কারণ নেই, যদি না পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।