নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০১ অগাস্ট, ২০২০
ঢাকা মেডিকেল কলেজে করোনাকালে ডাক্তারদের থাকা-খাওয়ার বিল নিয়ে বড় দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। শুধু ঢাকা মেডিকেলই নয়, এর বাইরে রাজধানীর সরকারি মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ আরও অন্তত ডজনখানেক হাসপাতালের বিরুদ্ধে ডাক্তারদের থাকা-খাওয়ার বিল নিয়ে মোটা দাগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অথচ কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নার্সসহ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বরাবরই তাদের মানহীন হোটেলে রাখা ও নিম্নমানের খাবার দেওয়ার কথা বলছেন। হোটেল নির্বাচনে বৈষম্য নিয়েও তাদের মধ্যে অসন্তোষও ছড়িয়েছে।
এমন বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত সরকারী চিকিৎসকদের দামী তারকা হোটেলে থাকার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে সরকার। কতগুলো নির্দিষ্টি সরকারী স্থাপনায় তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে জানানো হয়, ঢাকা মহানগরের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫দিন কর্মকালীন পৃথক অবস্থানের জন্য-বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস একাডেমি (BCSAA), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজমেন্ট (BIAM), জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি (NAPD), ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব এডুকেশনাল ম্যানেজমেন্ট (NAEM), টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (TTC) ও জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (NILG) এ অবস্থান করতে পারবেন।
আর ঢাকা মহানগরের বাইরে সব জেলা ও উপজেলার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে অবস্থিত বিভিন্ন সরকারি ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য এমন ব্যবস্থা করা হবে।
চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী যারা কর্তৃপক্ষের নির্ধারণ করা স্থাপনায় অবস্থান করবেন তাদের যাতায়াতের জন্য আবশ্যিকভাবে (প্রাপ্যতা সাপেক্ষে) বিআরটিসির যানবাহন ব্যবহার করতে হবে এবং এরূপ ক্ষেত্রে যানবাহনের ভাড়া পরিশোধের জন্য বিআরটিসির কাছ থেকে প্রাপ্ত বিলের ভিত্তিতে বরাদ্দ দাবি করতে হবে। যেখানে বিআরটিসির যানবাহন নেই সেখানে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রিকুইজিশনকৃত অথবা ভাড়ায় যানবাহন ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণভাবে একাধারে ১৫ দিনের বেশি দায়িত্ব পালন করবেন না। প্রতি মাসে ১৫ দিন দায়িত্ব পালন শেষে পরবর্তী ১৫দিন তারা সঙ্গনিরোধ ছুটিতে থাকবেন। চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৫দিন কর্মকালীন পৃথক অবস্থানের জন্য বিশেষ ভাতা ও খাবারসহ আবাসনের সুবিধা পাবেন।
কোভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ঢাকা মহানগরীর চিকিৎসকরা দৈনিক দুই হাজার ও ঢাকার বাইরের চিকিৎসকেরা এক হাজার ৮০০ টাকা করে ভাতা পাবেন। এছাড়া ঢাকার নার্সরা এক হাজার ২০০ ও ঢাকার বাইরের নার্সরা এক হাজার এবং ঢাকার অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ৮০০ ও ঢাকার বাইরের ৬৫০ টাকা করে দৈনিক ভাতা পাবেন। কেউ এক মাসে ১৫ দিনের বেশি ভাতা পাবেন না। প্রাপ্যতা অনুসারে ওই বিশেষ ভাতা ভ্রমণ ও দৈনিক ভাতা আহরণের পদ্ধতিতে উত্তোলন করতে পারবেন।
এতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে দৈনিক ভাতার হিসেবে সরকারের কাছে বরাদ্দ দাবি করবে। বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে আবাসিক সুবিধা গ্রহণ না করে দৈনিক ভাতা গ্রহণকারীদের পরিশোধিত অর্থ বাদ দিয়ে বাকি অর্থ দিয়ে বিভিন্ন আবাসিক স্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও যানবহনের জন্য দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ সম্ভব না হলে প্রকৃত খরচের হিসাবসহ অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দাবি করা যাবে।
তবে এ উদ্যোগে দুর্নীতি কতটা কমবে তা নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন। বরং এতে লুটপাট নতুন করে আরও বাড়বে বলেও অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, শুরুতে কোভিড হাসপাতালে রোগীর যে ভিড় ছিল, এখন তা অনেকাংশেই কমে এসেছে। অধিকাংশ হাসপাতালে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ শয্যা দিনের পর দিন ফাঁকা পড়ে থাকছে। এ অবস্থায় হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই আগের মতো এত বেশি ডাক্তার-নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীকে ডিউটি করতে হচ্ছে না। কোনো কোনো হাসপাতালে চিকিৎসকরা মাসে ৫-৭ দিন দায়িত্ব পালন করছেন। কোথাও কোথাও এ ডিউটি আরও কমে এসেছে। এ অবস্থায় চিকিৎসক-নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের গড়ে ১৫ দিনের থাকা-খাওয়ার বিল দেওয়া হলে অনেকে ডিউটি না করেও এ বিল নেবে। বেশ কিছু হাসপাতাল থেকে এমন অভিযোগ পাওয়াও গেছে। ডিউটি না করেই সরকারী সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন তারা।
তবে অনেক চিকিৎসক এই উদ্যোগকে সাধুবাদও জানিয়েছেন, তাদের মতে সরকার থেকে নির্ধারিত কি সুবিধা তারা পাচ্ছেন সঠিকভাবে তা জানতেন না। এই পরিপত্রের মাধ্যমে সেটা তারা সঠিকভাবে জানতে পারলেন।
মন্তব্য করুন
বিএসএমএমইউ অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জাহিদ মালেক টিপু মুনশি ড. এ কে আব্দুল মোমেন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক আজ দায়িত্ব নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, অধ্যাপক, নার্স সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন দিয়ে বরণ করে নেন। এটি একজন উপাচার্যের জন্য বড় প্রাপ্তি। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উপাচার্য হয়েছেন তারা কেউ এরকম রাজসিক অভ্যর্থনা পাননি। তাকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ অনেক উঁচুতে উঠে গেছে।