নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
বাংলাদেশের অভিবাসীদের অনেক বড় বাজার সৌদি আরব। সেখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শ্রমিক কর্মরত। দীর্ঘদিন সৌদি আরবে অভিবাসী শ্রমিক নেয়া বন্ধ থাকলেও শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পরে নতুন করে সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের বাজার খুলে দেয়া হয়। এতে করে দেশটির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির পর থেকে সৌদি আরব বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে সৌদি প্রবাসীরা তাদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি, আকামা নবায়ন ও সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকেটের দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছেন। প্রবাসীরা তাদের কর্মস্থলে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন কিন্তু কোথাও তারা এর সদুত্তোর পাচ্ছে না।
৩০ সেপ্টেম্বর অনেকের সৌদি আরব যাওয়ার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সৌদি আরব ভিসার মেয়াদ ২৪ দিন বাড়িয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হলেও বাস্তবে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সৌদির পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে তারা এজেন্টের মাধ্যমে আবেদন করার কথা বলেছেন।
করোনায় দেশটির অর্থনীতি দূর্বল হওয়ার কারণে তারা বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ছাটাইয়ের পরিকল্পনা নেয়। আর সেই কৌশলের অংশ হিসেবেই বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসার মেয়াদ বাড়ান, আকামা নবায়নসহ সৌদি আরবে যাওয়া নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে।
সৌদি দূতাবাসের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দেশটি চাইছে অন্তত ২০ থেকে ২৫ হাজার বাঙালি যেন সৌদিতে ফিরতে না পারে। এতে করে তাদের অর্থ সাশ্রয় হবে। কিন্তু সৌদির এই পলিসি বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য মরা বাঁচার লড়াই। করোনায় অনেক শ্রমিক দেশে আসার পর এখন প্রায় নিঃস্ব। অন্যদিকে এতো শ্রমিক বেকার হলে দেশের কর্মসংস্থান এবং রেমিট্যান্সের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদিও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আগেই ধারণ দিয়েছিল যে, করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে বড় ধরনের ধস নামবে। সেই পূর্বাভাসে প্রথম ধাক্কাটা আসছে সৌদি আরব থেকে। সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে আসলে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে এটা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তারা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করে যাচ্ছেন কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করছে না। কিন্তু এই অবস্থায় বাংলাদেশে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার অভিবাসী সৌদিতে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত তারা সৌদি যেতে না পারলে বাংলাদেশের জন্য একটা বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশ বিমানের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে ১৬ মার্চে বাতিল হওয়া ফ্লাইটের টিকিট নতুন করে ইস্যু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ১৭, ১৮, ১৯, ২০ মার্চ এভাবে তারিখ ধরে ধরে সিরিয়ালি টিকিট নতুন ইস্যু করা হবে। সৌদি আরবে ১ অক্টোবর থেকে বিমানের বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতির জন্য আবেদন করেছে বিমান। তবে এখনো অনুমতি পায়নি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।