নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৭ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০১৭
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন থামছেই না। গাজিপুরে যেতেই, রাস্তার পাশে চোখে পড়ে বালু উত্তোলনের মহা উৎসব। শুকনো নদী থকে ক্রেন দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে, উত্তোলন করা হচ্ছে টন কে টন বালু। একের পর এক ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে বালু ব্যবসায়ীরা। বালু বোঝাই ট্রাকের ওজনের কারণে ক্ষয় হচ্ছে রাস্তা, ঝুঁকিপূর্ন হচ্ছে এতে রাস্তা ঘাট ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হলেও নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বিহীন দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ঢগায় রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বালি ব্যবসায়ীরা আর এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই।
রাজধানীর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে এরকম বালু উত্তোলনের কাজ বেড়েই চলছে দিন দিন। এতে রাস্তার পাশে এ ধরনের বালু বিক্রির একাধিক গদি হওয়ায় বাতাস আসলেই বালু উড়ে এসে পথযাত্রীদের নাকে মুখে ঢুকছে। রাস্তার ওপর তিন স্থরের বালু জমে আছে গাড়ি চলার সময় বালু বাতাসে উড়ে গাড়ীর যাত্রী ও পথচারীদের গায়ে এসে পড়ে কাপড় চোপড় নোংরা হচ্ছে। এতে যেমন সমস্যা হচ্ছে পথযাত্রীদের তেমনি ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশেরও।
শুধু গাজিপুরেই নয়, আরও অনেক যায়গায় এমন বালু উত্তলোনের কাজ বাড়ছে। এতে মদদ দিচ্ছে কারা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
গাজিপুর, কাপাসিয়া উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে শীতলক্ষ্যা নদী। দুই পারের মানুষের যাতায়াতের জন্য নদীতে ফকির মজনু শাহ সেতু নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের যানবাহনও চলাচল করছে। কিন্তু বালু উত্তোলনের ফলে এই সেতু হুমকির মুখে। অনেক ক্ষেত্রে এই কাজ বৈধ থাকলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই বালু উত্তলোনের কাজ অবৈধভাবেই হয়ে থাকে। এতে বাধা দেওয়ার মত কেউ নেই, কেননা এর পেছনে কোনো না কোন প্রভাবশালী ব্যাক্তির হাত থেকেই যায়।
প্রশাসনের নাকের ডগায় যত্রতত্র বালুসন্ত্রাসীদের এসব কর্মকাণ্ড কেউ দেখেও না দেখার ভান করছে। বালু তোলায় বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগো উঠছে হরহামেশাই। তবুও সরকার নীরব।
শুধু রাজধানীর আশেপাশেই অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের ড্রেজার মেশিনে ছেয়ে গেছে দেশের প্রত্যন্ত অনেক এলাকায়। এলাকা ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলা। প্রায় অর্ধশত অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে প্রতিদিন ১২লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন ও ভরাট করায় পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এতে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে বাড়িঘর, হাট-বাজার, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ সরকারি-সরকারী নানা স্থাপনা।
অভিযোগ আছে, এ কাজে, বালু ব্যবসায়ীরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাসিক চুক্তির ভিত্তিতে টাকা দেওয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টিতে তারা বৈধতা পেয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।
এদিকে, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৮১০ মিটার দৈর্ঘ্য সালটিয়া বাজার-দেওয়ানগঞ্জ বাজার সেতুর নিচ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে সেতুটি।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সেতুর দুই কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিধানকে পাত্তা না দিয়েই সেতুর নিচে ভাসমান ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে বালু ব্যবসায়ীরা।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এলজিইডির অর্থায়নে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮১০ মিটার দৈর্ঘ্য পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের উপর সালটিয়া বাজার-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-হাজিগঞ্জ বাজার সেতু নির্মাণ করা হয়। এটি এলজিইডি নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ সেতু।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বালু উত্তোলনকারী কেউ কেউ ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলনের শর্ত না মেনে বালু তুলছেন কেউ বা আবার ইজারা ছাড়াই অবৈধ প্রক্রিয়ায় মাসের পর মাস প্রতিদিন দৈনিক শ্রমিকদের দিয়ে লাখ লাখ ট্রাক বালু তুলে বিক্রি করছেন। এতে শুধু সেতু নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীও, সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙ্গন। ধসে পড়ছে নদীর পাড়। আবার, বালু তোলার কারেণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ব্রিজ-কালভার্ট।
এব্যাপারে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, আর ড্রেজার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছে না। কারা একাজে মদদ দিচ্ছে? অথচ এসব মহল থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাহলে কেন সরকার এদিকে দৃষ্টি দিচ্ছে না?
বাংলা ইনসাইডার/আরএস/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।