নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০৭ পিএম, ১৩ অগাস্ট, ২০১৭
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হার সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল রাতে এই বৈঠক হয়েছে।
ষোড়শ সংশোধনী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বাতিল হওয়াকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তোলপাড়।এই নিয়ে বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে। এমন সময় ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম শীর্ষ নেতার সঙ্গে বিচার বিভাগের শীর্ষ ব্যক্তির এমন সাক্ষাৎ নিয়ে জনমনে ব্যাপক আগ্রহ। সবার প্রশ্ন একই, কী কথা হলো তাঁদের মধ্যে?
গতকাল শনিবার রাত ৮ টা ১০ মিনিটে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বৈঠক হয়। এর আগে ওই দিনই সন্ধ্যায় ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতিকে ফোন করেন। ওই সময় প্রধান বিচারপতি তাঁকে নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণ জানান।
জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের মধ্যেকার নৈশ্যভোজে আর অপর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
নৈশভোজের কী আলোচনা হয়েছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। একন্তই ব্যক্তিগত কিছু কথা হয়েছে।’
বৈঠকের বিস্তারিত এর বেশি কিছু জানাননি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
অবশ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে আলোচনার অন্যতম বিষয় ষোড়শ সংশোধনী বাতিল পরবর্তী দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। বিচারের রায় নিয়ে আলোচনা হলেও এর সমালোচনা নিয়ে অনুযোগ করেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতির অনুযোগ, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় অনেকে না পড়েই অনেকে সমালোচনা করেছেন। রায়ের কোথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমানকে নিয়ে অশোভন কিছু বলা হয়নি। বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরেছে এই রায়ে।
ষোড়শ সংশোধনীর বিষয়ে সংসদের তুমূল আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি অন্য বিচারপতিদের সঙ্গে বসবেন বলে জানা গেছে। ওই আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব সংসদে পাস হয়। এটিই ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবীর এক রিট আবেদনে হাই কোর্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে। চলতি বছরের ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগও ওই রায় বহাল থাকে। চলতি আগস্টের ১ তারিখে ষোড়শ সংশোধনী ‘অবৈধ’ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট।
ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশের পর থেকেই জনমনে এর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। জাতীয় সংসদে রায়ের তীব্র সমালোচনা হয়। অনেক মন্ত্রী-এমপি প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করে।
ষোড়শসংশোধনী বাতিলের প্রতিবাদে বাঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের ডাকে আজ বেলা একটায় সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে আইনজীবীরা। আগামী ১৬ ও ১৭ আগস্ট দিনের একই সময়ে এই কর্মসূচি পালিত পলিত হবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।