নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৭ অক্টোবর, ২০২০
ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একজন এমপির দ্বন্দ্ব এখন আলোচনার শীর্ষে। এনিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। প্রথমে বিষয়টিকে মনে করা হয়েছিল, মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের দ্বন্দ্ব। কিন্তু সময় যতোই গড়াচ্ছে ততোই এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক মেরুকরণ দৃশ্যমান হচ্ছে। এটি নিছক একটি নির্বাচনী দ্বন্দ্ব নয় বরং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রশাসনকে ব্যবহারের একটি প্রতীক।
ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা কাজী জাফর উল্লাহ। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য। আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশ্বস্ত এবং ঘনিষ্ঠ হিসেবও তার পরিচিতি আছে। অন্যদিকে, ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের কেউ নন। কিন্তু তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আত্মীয়। তারা ঐতিহ্যগতভাবেই আওয়ামী পরিবারের সন্তান।
নিক্সন চৌধুরীর বাড়ী মাদারীপুর হলেও, তিনি ফরিদপুর-৪ আসনে নির্বাচন করছেন, গত দুই মেয়াদে। নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের হেভীওয়েট প্রার্থী কাজী জাফর উল্ল্যাহকে হারিয়ে দেন পরপর দুবার। কাজী জাফর উল্লাহর আওয়ামী লীগের ভরা মৌসুমে পরাজয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকেই হুমকির মুখে ফেলেছে। আর এজন্য তার আসন পুনরুদ্ধারে তিনি সব সময়ই মরিয়া।
চরভদ্রাসনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে তিনিই আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেন। কিন্তু জয়ী হবার জন্য ঐ প্রার্থী নিক্সন শিবিরে যোগদেন। এটাই জাফর উল্লাহকে ক্ষুদ্ধ করে। ঐ নির্বাচনে ‘বিশ্বাসঘাতক’কে হারাতে তিনি সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেন। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক, এসময় কাজী জাফরউল্লাহর পক্ষাবলম্বন শুরু করেন। প্রশাসনের সেখানে যেভাবে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করার কথা ছিলো, তা করেনি এমন অভিযোগ এসেছে স্থানীয় পর্যায়ে থেকে। প্রশাসনের পক্ষপাতের কারণেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে মনে করেন স্থানীয় জনগণ। এরপর নিক্সন চৌধুরীর ক্ষোভকে নিয়ে মাঠ প্রশাসন যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতেও রাজনৈতিক ইন্ধ আছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
ফরিদপুরের এই ঘটনা সারাদেশে আওয়ামী লীগের প্রতীক চিত্র বলেই মনে করছেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রশাসনের অতিরাজনীতিকরণের জন্য, বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে প্রশাসন এক পক্ষ হয়ে পরছেন। মাঠ প্রশাসনে অধিকাংশ স্থানেই প্রশাসন তার নিরপেক্ষতা হারিয়ে রাজনৈতিক পোষাক ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তারা এক পক্ষের দিকে ঝুঁকে পরছেন। রাজনৈতিক বিরোধ, প্রশাসনিক মদদে বিস্তৃত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন ‘প্রশাসরে কারণে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব বড় হচ্ছে। তা মেটানো কঠিন হয়ে পরছে। ফরিদপুর তার একটি উদাহরণ মাত্র।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।