নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০২০
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটি সরকারকে হঠানোর জন্য জঙ্গীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এমন তথ্য দিচ্ছেন এসমস্ত দেশের কূটনীতিকরা। এ সমস্ত দেশের কূটনীতিকদের গোপন আনঅফিসিয়াল নোট থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে,সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ওয়াশিংটনের জন্য যে আনঅফিসিয়াল নোট তৈরি করেছে তাতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের কথা বেলা হয়েছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখন দক্ষিণপন্থী উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে গোপনে হাত মিলিয়েছে। তাদেরকে সামনে রেখে দেশে একটি আন্দোলনের পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। আর এজন্যই বাংলাদেশ আবারও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস কর্তৃক প্রণিত ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হলিআর্টিসানের ঘটনার পরপরই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান করে এবং সাঁড়াশি অভিযানের কারণে জঙ্গীদের নেটওয়ার্ক এবং কর্মক্ষমতা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। জঙ্গি সংগঠনগুলো অধিকাংশই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এই জঙ্গী সংগঠনগুলোকে আবার সক্রিয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে, তারা আবার নতুন করে সক্রিয় হচ্ছেন। তাদের অর্থায়ন করা হচ্ছে এই অর্থায়ন পেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের ছায়াতলে থাকতে পেয়ে তারা আবার নতুন করে সক্রিয় হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানায় আবার অভিযানে বিপুল অস্ত্র, গোলাবারুদ পাওয়া যাচ্ছে।
মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে উদৃত করে বলেছেন, যে সমস্ত জঙ্গি সংগঠনগুলোর উত্থানের পেছনে রয়েছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মদতে এবং পৃষ্ঠপোষকতা। গত ১ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতিতে নানারকম সংকটে ভুগছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক যৌক্তিক আন্দোলন করার শক্তি ও সমর্থন তারা হারিয়ে ফেলেছে। মার্কিন দূতাবাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এসময় বিএনপি একটি সেকুলার আহবায়ক করে ঐক্যফ্রন্ট করেছিল। কিন্তু -জামায়াতের সঙ্গে সমান্তারাল সম্পর্ক রাখার কারণে ওই জোট ধোপে টিকেনি। ফলে এখন বিএনপি আবারও দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দিকে হাত বাড়াচ্ছে। আর বিএনপি মনে করছে যে বাংলাদেশ যদি একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায়, তাহলে সরকারকে চাপে ফেলা যাবে। আর এরকম পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য জঙ্গি সংগঠনগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে মার্কিন দূতাবাস আশঙ্কা করছে, এর ফলে বাংলাদেশে আবার মৌলবাদের উত্থান ঘটছে।
বিশ্বে বাংলাদেশের যে অসম্প্রদায়িক এবং সেকুলার ইমেজ রয়েছে তা ক্ষুন্ন হতে পারে। বিশেষ করে হলি আর্টিসানের পর বাংলাদেশ যেভাবে জঙ্গিবাদ দমনে সারা বিশ্বে একটি রোল মডেল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে মার্কিন দূতাবাস আশঙ্কা করছেন। একইভাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মৌলবাদীদের আস্ফালন এবং ভাস্কর্য বিরোধী অবস্থানকে ক্রমশ্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, হঠাৎ করেই বাংলাদেশের জঙ্গিবাদীরা সাহস পাচ্ছে, শক্তিপাচ্ছে এবং অর্থ পাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই শক্তি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জামিন দেয়া হচ্ছে বলে তারা আশা করছেন তাঁরা মনে করছেন যে বাংলাদেশের কিছু এই শক্তি, অর্থ মুল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো থেকে দেয়া হচ্ছে বলে তারা আশংঙ্কা করছে। তারা মনে করছেন বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থী ধারার রাজনীতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক একটি প্রধান দল এই জঙ্গীবাদের উত্থানের পিছনে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন। এটি যদি হয় তাহলে বাংলাদেশে সামনের দিনগুলোতে একটি অসনি সংকেতের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।