নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২৭ নভেম্বর, ২০২০
জামালপুর দুই আসন থেকে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফরিদুল হক খান। জামালপুর থেকে এর আগেও একজন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দু`জন প্রতিমন্ত্রীর এই জামালপুরে মূল নেতা হলেন মির্জা আজম, তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং পরিচিত মুখ। একবার মাত্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ২০১৪-১৮ মেয়াদে। এছাড়া তিনি সরকারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবী পাননি কখনো। কিন্তু নিজের যোগ্যতায় এবং পরিশ্রমের কারণে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তিনি একটি সম্ভাবনাময় নাম, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকার কারণে এবং এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচীতে দায়িত্ব পালন করার কারণে আওয়ামী লীগের তরুণদের মধ্যে যেমন তিনি জনপ্রিয়, তেমনি এলাকায় তিনি ক্রমশ অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছেন। জামালপুরে থাকলেও এই দুই মন্ত্রী মির্জা আজমের ওপর নির্ভরশীল। দুই মন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে মির্জা আজমের সঙ্গে পরামর্শ করেন। দুই মন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করে তাদের নেতা মির্জা আজমের দোয়া চেয়েছেন। মির্জা আজমও তাদেরকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন সহ বিভিন্ন রকম কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
এই ঘটনাটি একটি বিষয়ে স্পষ্ট করেছে তা হলো, টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমশ মন্ত্রিসভার চেয়ে দলকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। দলের নেতারা ক্রমশ মন্ত্রীদের চেয়ে ক্ষমতাবান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় চেয়েছিলেন দল এবং সরকারকে আলাদা করতে। আর এ কারণেই দলকে শক্তিশালী করতে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। জাতির পিতার যে আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। প্রথমদিকে ১৯৯৬ সালে তিনি এটি করতে পারেননি। তখন সরকার এবং দল একাকার হয়ে গিয়েছিল। তখন সরকারের সব হেভীওয়েট নেতারাই মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কাজেই রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ক্রমশ সরকার নির্ভর হয়ে পড়েছিল। যেটির নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতার বাইরে থাকে তখন। ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রথম সরকার এবং দলকে আলাদা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। ধাপে ধাপে এগুতে এগুতে তিনি আজকের আওয়ামী লীগ এবং সরকারকে মোটামুটি আলাদা করে ফেলেছেন। এর মধ্যে সরকারে কয়েকজন মাত্র মন্ত্রী রয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগের নেতা আবার মন্ত্রিসভা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া যারা রয়েছেন তারা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি ও হাসান মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।
এই মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে এনামুল হক শামীম, মহিবুল চৌধুরী নওফেল, খালেদ মাহমুদ চৌধুরীসহ প্রতিশ্রুতিশীল নেতারা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। শুধু এই দল এবং সরকারকে আলাদা করা না। খুব পরিকল্পিত ভাবেই দলকে ক্ষমতাবান করছেন এবং দলকে এমন একটায় নিয়ে যেতে চাইছেন যেখানে দল সরকারের ওপর জবাবদিহিতা করতে পারে।
সাম্প্রতিক করোনার সময় এই বিষয়টি সুস্পষ্ট ভাবে উঠেছে। জামালপুরের যে মডেল এই মডেলটি সারা দেশে অনুসরণ করা হচ্ছে। অনেক অনুষ্ঠানগুলোতে এখন দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী নন, এমপি নন কিন্তু দলের নেতা, তিনি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকছেন। বিভিন্ন নীতি নির্ধারনি বিষয়ে মন্ত্রীদেরকে পরামর্শ দিচ্ছেন। এই চেক ইন বালেন্সটি আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। আওয়ামী লীগে এখন, সরকারে নেই, এমন কি সংসদে নেই, এমন প্রভাবশালী নেতার সংখ্যা কম নয়। এসমস্ত নেতারা দেলে গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠছেন। দলের অঙ্গিকার এবং দলের আদর্শনীতি যেন সরকারের মধ্যে প্রতিফলিত হয় সে ব্যাপারে তাদের নজরদারি এবং বক্তব্য বাড়ছে। এর ফলে সরকার এবং দলের মধ্যে চেক ইন ব্যালেন্স তৈরি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।