নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১
টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় বছর পার করেছে। একটি সরকারকে মূল্যায়নের জন্য দুই বছর যথেষ্ট সময়। এই দুই বছর সরকার অনেক কঠিন পথ অতিক্রম করেছে। বিশেষ করে করোনা সংক্রমণ সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে এবং করোনা সংক্রমণের ফলে পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গত দুই বছরে যদি সরকারের কার্যক্রমগুলো মূল্যায়ন করা যায় তাহলে সরকারের ৫ টি বড় ধরনের ইতিবাচক সাফল্য দেখা যায় এবং এই সাফল্যের মূল কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১. অর্থনৈতিক সফলতা: সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো করোনা পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো করোনা সংক্রমণের সময় সবকিছুতে লকডাউনের নীতি গ্রহণ করেনি। বরং ঝুঁকি নিয়েছিল। লকডাউনে না গিয়ে বাংলাদেশ স্বাভাবিক নীতি গ্রহণ করেছিল। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যতিক্রম দেশ, যেখানে খুব কম সময়ের জন্য সবকিছু বন্ধ রেখেছিল। এক্ষেত্রে সরকারের প্রধান লক্ষ ছিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যেন সচল থাকে সেইদিকে লক্ষ রাখা। সেটি সরকার অত্যন্ত সাফল্যের সাথে করেছে। দেখা যাচ্ছে যে, করোনার সময় যে দেশগুলো অর্থনীতিতে ভালো করেছে সেই দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
২. পদ্মা সেতু দৃশ্যমান: পদ্মা সেতু সরকারে বড় একটি চ্যালেঞ্জ এবং সাফল্য। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য যে বিশাল উদ্যোগ নিয়েছিল তা এখন আর কোন স্বপ্ন নয়, বরং বাস্তবতা। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের উন্নয়নের একটি মাইলফলক। এছড়াও মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল সহ আরও অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।
৩. রোহিঙ্গাদের ভসানচরে স্থানান্তর: গত কয়েকবছর ধরে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাদের ভার বহন করছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সংকট এখন বাংলাদেশের একক সংকটে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের একটা নিরাপদ আশ্রয় দেয়া সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। বিশেষ করে ভসানচরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা বিশ্বের আপত্তি ছিল। কিন্তু এসমস্ত আপত্তি উপেক্ষা করে সরকার যেভাবে রোহিঙ্গাদেরকে ভসানচরে নিয়ে গেছে সেটি একটি বড় ধরনের সাফল্য।
৪. করোনা মোকাবেলা: বাংলাদেশে যখন করোনা শুরু হয় তখন মনে করা হয়েছিল বাংলাদেশ করোনায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। যেহেতু বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ এবং এদেশের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা বেশী। করোনার সময় যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হয় সেগুলোর ব্যাপারে এক ধরণের অনীহা ছিল মানুষের মধ্যে। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে বিশ্বের যে দেশগুলো করোনায় মোকাবেলায় সফল হয়েছে সে দেশগুলোর তালিকায় অবশ্যই বাংলাদেশ এগিয়ে। প্রথমত, বাংলাদেশে মৃত্যুর হার কম। দ্বিতীয়ত, আক্রান্তের হারও কম। এর ফলে বাংলাদেশ করোনায় মোকাবেলায় যে সফল দেশগুলো আছে, সেই সফল দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে প্রতীয়মান।
৫. দুর্নীতি বিরোধী অভিযান: বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে বলেছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করবে। গত এক বছরেও সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান দেখিয়েছে। বিশেষ করে করোনা সংকটের সময় যেসব দুর্নীতি, অনিয়মগুলো হয়েছে সেগুলো কঠোরভাবে দমন করার জন্য সরকার যা যা করার দরকার সবকিছুই করেছে। যেমন- রিজেন্টের সাহেদ, সাবরিনা, জেএমআই এর আব্দুর রাজ্জাক, সম্প্রতি পিকে হালদার সহ এমন সব চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে।
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।