ইনসাইড বাংলাদেশ

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর অবদান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:৪০ পিএম, ০৮ মার্চ, ২০২১


Thumbnail

জাতীয় মুক্তির ঐতিহাসিক সংগ্রামের প্রথমভাগে সংগ্রাম কমিটি গঠন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার, চট্টগ্রামে অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র চালু, সম্মুখ সমরের জন্য স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ ও তাঁদের প্রশিক্ষণের জন্য বারতে প্রেরণ, ভারতে প্রবাসী সরকারের হয়ে শরণার্থী ব্যবস্থাপনা এবং প্রবাসী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ইউরোপ আমেরিকায় জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহে অসামান্য অবদান রাখা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর অবদান:

১। প্রাদেশিক ও গণপরিষদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা: ১৯৭০ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রামের আনোয়ারা-পটিয়া আসন থেকে আখতারুজ্জামান চৌধুরী প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন এবং গণপরিষদ সদস্য হিসেবে তিনি সংবিধানের অন্যতম স্বাক্ষরকারী।

২। তাঁর বাসভবনকে সংগ্রাম কমিটির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার: মুক্তিযুদ্ধের আগে অসহযোগ আন্দোলনের সময় তাঁর পাথরঘাটাস্থ বাসভবন (চট্টগ্রাম মহানগর) জুপিটার হাউস থেকে সংগ্রাম কমিটির কর্মকাণ্ড পরিচালনা তথা সংগ্রাম কমিটির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। একারণে পরবর্তীতে পাক হানাদার বাহিনী তাঁর বাসভবন তথা জুপিটার হাউজে অগ্নিসংযোগ করে।

৩। তাঁর বাসভবনস্থ সাইক্লোস্টাইল মেশিনে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র ছাপানো: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রামে আসার পর আখতারুজ্জামান বাবুর বাসভবন তথা জুপিটার হাউজ থেকে তাঁর নিজস্ব সাইক্লোস্টাইল মেশিনে স্বাধীনতার ঘোষণা সাইক্লোস্টাইল করে তা কালুরঘাটস্থ অস্থায়ী বেতারকেন্দ্রে, ভারতে এবং বিভিন্ন স্থানে প্রচারের করা হয়।

৪। চট্টগ্রামে অস্থায়ী বেতারকেন্দ্র চালু: পঁচিশ মার্চ রাতে ঢাকা বেতার কেন্দ্র শত্রুরা দখলে নিলে চট্টগ্রামে একটি অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র চালুর বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ কবি বেলাল মোহাম্মদকে নিয়ে ২৬ মার্চ সকালে আখতারুজ্জামান চৌধুরীর পাথরঘাটাস্থ জুপিটার হাউজে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় স্বাধীনতার ঘোষণাটি রেডিওর মাধ্যমে জনগণকে জানানো প্রয়োজন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের কালুরঘাটে অস্থায়ী বেতারকেন্দ্র  চালু করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয়।

৫। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মেসেজ ভারতে প্রেরণ: পঁচিশে মার্চ রাতে প্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মেসেজটি কিভাবে ভারতে পৌঁছানো যায় সে বিষয়ে আলোচনার জন্য আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবন ‘জুপিটার হাউজে’ জহুর আহমেদ চৌধুরী, আখতারুজ্জামান চৌধুরী ও এমআর সিদ্দিকি এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আখতারুজ্জামান চৌধুরীর নিকটাত্মীয় ও আনোয়ারা নিবাসী রামগড় থানার ওসি আব্দুল মান্নান চৌধুরীর মাধ্যমে সীমান্তের অপর পাড়ের সাবরুম থানার ওসি মি. মুখার্জীর নিকট পৌঁছানো হবে। সে মোতাবেক ২৬ মার্চ সকাল দশটার দিকে রামগড় থানার ওসি সীমান্ত পেরিয়ে সাবরুম থানার ওসির হাতে মেসেজটিসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা করে তাঁকে অনুরোধ করেন, যাতে তা দ্রুত ত্রিপুরা--কলকাতা হয়ে দিল্লীতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন।

৬। চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহীদ তাঁর আপন ছোটভাই বশিরুজ্জামান চৌধুরী: মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ আখতারুজ্জামান চৌধুরীর আপন ছোটভাই বশিরুজ্জামান চৌধুরী। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ বশিরুজ্জামান চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত ইপিআর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে জীপযোগে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দিয়ে শহরে পৌঁছলে চেরাগী পাহাড়ের পশ্চিমে মোমিন রোডের মোড়ে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে কয়েক বন্ধুসহ শহীদ হন। শোকাহত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ছোট ভাইয়ের লাশ দাফন করে যুদ্ধপরিস্থিতি জানার জন্য ছুটে যান কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে।

৭। মুক্তিযুদ্ধের জন্য স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ ও গণসংযোগ: ছোটভাইয়ের মৃত্যু-পরবর্তী শোক মুহ্যমান আখতারুজ্জামান চৌধুরী আনোয়ারা-পটিয়ায় মুক্তিযুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ব্যাপক গণসংযোগ ও সমাবেশ করেন এবং ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে উপর্যুপরি বৈঠক করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করণে কর্মসূচি ও দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। 

৮। দক্ষিণ চট্টগ্রামে আঞ্চলিক পরিষদ ও আনোয়ারা-পটিয়ায় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠনে ভূমিকা: ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ আনোয়ারা ও পটিয়ায় স্বাধীনতা আন্দোলন বেগবান করার জন্য আতাউর রহমান খান কায়সারের সভাপতিত্বে ‘স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় যার অন্যতম সদস্য ছিলেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সকল এমএনএ, এমপিএ ও নেতৃবৃন্দের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে চট্টগ্রামে মুক্তিসংগ্রাম সংগঠন ও পরিচালনার জন্য আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হয়, যার অন্যতম সদস্য ছিলেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু।

৯। বিপুল পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবক/মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ভারতের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গমন: এরপর তিনি আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়ার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে ধোপাছড়ি সীমান্তপথে ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথে মিজো বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে আব্দুল নবী নামের সেনাবাহিনীর এক সুবেদার শহীদ হন। অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সাতদিন পায়ে হেঁটে ভারতের দেমাগ্রীতে পৌঁছান। তথায় ভারত সরকার কর্তৃক পরিচালিত মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্পে সাথীদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে ১৬ এপ্রিল কলকাতাস্থ বাংলাদেশ মিশনে যান।

১০। কলকাতায় প্রবাসী সরকারে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটিতে দায়িত্ব পালন: এপ্রিল মাসে ভারতে অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ‘কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর/কমিটি’-এর সদস্য হিসেবে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশী শরণার্থী শিবির ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করা এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জন্যে বিশাল অঙ্কের অর্থের যোগান দিয়েছিলেন তিনি।

১১। প্রবাসী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে লন্ডন সফর: কলকাতায় কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অফিসিয়াল প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিটেনে যান। ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবু সাঈদ চৌধুরীর সাথে একাধিক পদযাত্রা, সাংবাদিক সম্মেলন ও জনসভায় বক্তৃতা প্রদান করেন। বিশেষ করে লন্ডনের হাইড পার্কে আবু সাঈদ চৌধুরী, ফণী ভূষণ মজুমদার ও আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বক্তৃতা দারুণ প্রভাব ফেলে। এ সময় লন্ডন সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশের যুদ্ধ পরিস্থিতিসহ দেশে বিদেশে জনমত গঠনে সর্বশেষ অবস্থা অবহিত করেন।

১২। প্রবাসী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকা সফর: যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষে অক্টোবরের শেষের দিকে আমেরিকায় যান। সেখানে তিনি মার্কিন সিনেটর, কংগ্রেস সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা ও সভা-সমাবেশ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা চালান। বাংলাদেশে গণহত্যা বন্ধ করার জন্য জনাব চৌধুরী সরাসরি আমেরিকার ফার্স্ট-লেডি প্যাট নিক্সনের সাথেও দেখা করেন।

১৩। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসনে ব্যক্তিগত অর্থ ব্যয়: আমেরিকা থেকে লন্ডন হয়ে পুনরায় ভারতে এসে প্রবাসী সরকারের অধীনে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে জড়িয়ে পড়েন। এভাবেই তিনি পরিবার ও পারিবারিক ব্যবসা বাণিজ্য ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাস অতিবাহিত করেন। মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক তৈরি, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ও পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন ‘বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ’কে সংগঠিত করণ ও দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের নিঃস্বার্থভাবে বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। 

মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ১৯৬৪ সালে দেশে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধিকার আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন। পারিবারিক ব্যবসা বাণিজ্য ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করার জন্য সর্বস্ব দিয়ে অংশগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহীদ তাঁর সহোদর ছোট ভাই বশিরুজ্জামান চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে চট্টগ্রামে দৃঢ় ভিত্তি দানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের অবিসংবাদিত এই ত্যাগী নেতা জীবনব্যাপী দলের সাধারণ মানুষ ও দলের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে বিপুল অর্থ ব্যয় করে যান। পাশাপাশি তাঁর মেধা ও শ্রম দিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে তিনি পারিবারিক ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণে মনোনিবেশ করেন। অসাধারণ মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে তিনি একের পর এক সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়তে থাকেন। তাঁর গড়ে তোলা ব্যাংক, বীমা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বগুণের কারণে চট্টগ্রাম চেম্বার, এফবিসিসিআই এবং ওআইসি চেম্বারের সভাপতি এবং প্রথমবারের মত বাংলাদেশের কোন প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ’৭৭ জাতি গ্রুপ’ এর ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন, আজীবন নিজস্ব তহবিল দিয়ে দলকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান, দলকে চট্টগ্রামে এবং জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্বদান (প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসেবে) ব্যাংক, বীমা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং ব্যবসায়ী নেতা ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে আখতারুজ্জামান চৌধুরী সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। আমৃত্যু তিনি দেশের মানুষ ও দেশের কল্যাণে নিজের অর্থ, মেধা ও শ্রম অকাতরে নিবেদন করে গেছেন।

মাননীয় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী-এর পিতা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এবছর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২১ অর্জন করেছেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেলেন অপহৃত সেই দেলোয়ার

প্রকাশ: ১০:৪৬ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আলোচিত আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেন পাশা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ এ ঘোষণা দেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে নাটোরের সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সিংড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন দেলোয়ার হোসেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্ধারিত তারিখে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বিজয়ে আনন্দ প্রকাশ করে দেলোয়ার হোসেনের ভাই মজিবুর রহমান বলেন, আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলাম। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হব, এমনটা কখনোই ভাবিনি। তাই শুধু এটুকুই বলব, আমি মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়েছি। জুলুমের পতন হয়ে ন্যায়ের বিজয় হয়েছে। 

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় দেলোয়ার হোসেন পাশা ও তার দুই ভাইকে অপহরণ ও মারধর করে বাড়ির কাছাকাছি ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দেলোয়ারের ভাই মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা করেন। সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেলের সহযোগীরা অপহরণ ও মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লুৎফুল হাবিব রুবেল চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

নাটোর   সিংড়া উপজেলা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মিরপুরে ছাদ থেকে লাফিয়ে ট্রান্সজেন্ডার নারীর আত্মহত্যা

প্রকাশ: ০৯:৩৮ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর মিরপুরে একটি ছাত্রী হোস্টেলের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার নাম রাদিয়া তেহরিন উৎস (১৯)। তিনি মিরপুর বাংলা কলেজের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী ছিলেন।

জানা গেছে, রাদিয়ার গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম সাইফুল ইসলাম। পড়াশোনার পাশাপাশি বিউটিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন।

মৃত্যুর পর তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা বলছেন, রাদিয়া তেহরিন উৎস আসলে আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ সমাজ ও সমাজের মানুষেরা তাকে হত্যা করেছে। মানুষের জীবনকে যে বা যারা অসহনীয় করে তুলেছেন। শরীফ শরীফা ইস্যু যারা দাঁড় করিয়েছেন। নিয়মিত বুলি করছেন। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী তারা প্রত্যেকেই।

মুনতাসির রহমান নামে একজন ফেসবুকে লাইভে এসে বলেন, রাদিয়া তেহরিন উৎস একজন ট্রান্সউইমেন। হোস্টেলের ৬ তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। এটা আত্মহত্যা নয়, এটা হত্যা। এর পিছনে দায়ী পরিবার, সমাজ, দেশে বিরাজমান ট্রান্সফোবিয়া, ঘৃণা, হয়রানি, আক্রমণ। এর দায় আপনাদের নিতে হবে।

এদিকে, মৃত্যুর আগে রাদিয়া তেহরিন উৎস ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আমি আজ রাতে সুইসাইড করতে যাচ্ছি। আমার সোশাল মিডিয়ার একাউন্টগুলো ডিলিট করার খুব চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। আমার ফোনের সব লক খুলে গেলাম, কেউ ফোন পেলে আমার সব একাউন্ট ডিলিট করে দেবেন দয়া করে।

জানা গেছে, সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে মিরপুর ১০ মহুয়া মঞ্জিল ব্যতিক্রম মহিলা হোস্টেলের ৬তলা থেকে ছাত্রী রাদিয়া লাফিয়ে নিচে পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিরপুর মডেল থানার এসআই মাইনুল ইসলাম জানান, রাদিয়া তেহরিন ব্যতিক্রম হোস্টেলে থেকে মিরপুর বাংলা কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে (বাংলা বিভাগ) পড়াশোনা করতেন।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, আজকে ব্যতিক্রম মহিলা হোস্টেলের ছয়তলা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যান রাদিয়া। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। মৃত্যুর কারণসহ বিস্তারিত ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ট্রান্সজেন্ডার নারী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৫ প্রার্থীর জয়

প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে  চেয়ারম্যান হিসেবে সাতজনসহ বিভিন্ন পদে মোট ২৬ জন  বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

সোমবার প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের তথ্য জানান।

ইসির কর্মকর্তারা জানান প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। 

বাগেরহাট সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মাদারীপুরের শিবচরে ও ফেনীর পরশুরামে চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া বালিয়াডাংগি (ঠাকুরগাঁও) উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; হাকিমপুরে (দিনাজপুর) মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; সাঘাটায় (গাইবান্ধা) চেয়ারম্যান; বেড়া (পাবনা) উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; সিংড়ায় (নাটোর) চেয়ারম্যান; কুষ্টিয়া সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান; বড়লেখায় (মৌলভীবাজার) মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সন্দ্বীপে (চট্টগ্রাম) ভাইস চেয়ারম্যান; কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান; রোয়াংছড়িতে (বান্দরবান) চেয়ারম্যান; কাউখালীতে (রাঙ্গামাটি) ভাইস চেয়ারম্যান; চুয়াডাঙ্গার ডামুড়হুদায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একক প্রার্থীরা।

প্রথম ধাপে দেড়শ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় তিন পদে সোমবার ভোটের মাঠ থেকে সরে যান ১৯৮ জন প্রার্থী।

দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোট রয়েছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৪৮৫ উপজেলার ভোট হবে চার ধাপে।

উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এমপি একরামুলকে বহিষ্কারের দাবি জেলা আওয়ামী লীগের

প্রকাশ: ০৯:১৪ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর অন্যায় আচরণ ও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ সংসদ সদস্য পদ স্থগিত চেয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে নোয়াখালী প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে অন্য উপজেলা থেকে এনে সুবর্ণচর উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে প্রার্থী করিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। একই সঙ্গে প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে অরাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন। অবিলম্বে তার সংসদ সদস্য পদ স্থগিত ও দল থেকে বহিষ্কার দাবি করেন। এ সময় ভোট না দিলে উন্নয়ন না করার যে বক্তব্য দিয়েছেন এমপি একরামুল করিম চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তার এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরী সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভা মেয়র শহিদ উল্যা খান সোহেল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন প্রমুখ।

মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে

প্রকাশ: ০৮:৩৭ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তথাকথিত ও ভুঁইফোড় মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো: সেলিম রেজা।

মঙ্গলবার (, ২০২৪ এপ্রিল) জয়পুরহাট জেলার মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মানবাধিকার সচেতনতা সৃষ্টি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জয়পুরহাটে 'জেলা মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও সুরক্ষা কমিটি'র মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

সেলিম রেজা বলেন, তথাকথিত ও ভুঁইফোড় মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। এ  ছাড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো নাম ব্যবহার করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন ভুয়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করে আসছে এবং মীমাংসার নামে সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ আদায় করছে। এসব সংগঠন থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মানবাধিকার শব্দটি ব্যবহার করে ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোই মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

তিনি বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের চালানো গণহত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় ইতিহাস। ১৯৭৫ এর আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচার বন্ধ করা ছিল ইতিহাসে বর্বরোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত।


 অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের মাননীয় সার্বক্ষণিক সদস্য মো: সেলিম রেজা। কমিশনের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন 

সভায় আরও উপস্থিতি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মোঃ আশরাফুল আলম ও উপপরিচালক এম. রবিউল ইসলাম, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিগণ, শিক্ষক, মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। 


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন