নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
সরকার পতনের একটি ‘জুডিশিয়াল ক্যু’ চেষ্টা ভেস্তে গেছে। ফাঁস হয়ে গেছে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা। ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটেছে। বিএনপি, প্রধান বিচারপতি, যুদ্ধাপরাধী এবং সুশীল সমাজের একাংশ যৌথভাবে এই বিচারিক ক্যু এর নীলনকশা প্রণয়ন করেছিল। কিন্তু সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ায় এবং জন জাগরণের সৃষ্টি হওয়ায় পরিকল্পনা বানচাল হয়ে যায়। মূলত: ষড়যন্ত্রের মূখ্য কুশীলব বিচারপতি সিনহা পিছু হটেন।
ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত আপিল নিয়েই ষড়যন্ত্র গড়ে ওঠে। এই আপিলের রায় লেখায় প্রধান বিচারপতিকে সরাসরি সহায়তা করেন ড. কামাল হোসেন। রায়ের লক্ষ্য ছিল তিনটি। প্রথমত, রায়ের মাধ্যমে বর্তমান সংসদকে অবৈধ ঘোষানার পথ করে দেওয়া। দ্বিতীয়ত, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং তৃতীয়ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন। এজন্যই রায়ের ভেতর অপ্রাসঙ্গিক ভাবে ওই বিষয় গুলো আনা হয়েছিল। বিএনপিপন্থী দুজন আইনজীবী, এই রায় হবার পর তিনটি আলাদা রিট প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন তৈরিই হয়েছিল। রিভিউ এ পরবর্তী তিন মেয়াদের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তনের সংশোধনী দেওয়ার নীলনকশা ছিল। দ্বিতীয় রিট হতো, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করার। এ সংক্রান্ত একটি রিট হাইকোর্ট বেঞ্চ খারিজ করেছিল। এটা আপিল বিভাগে নিয়ে এসে দ্রুত নিষ্পত্তিরও সব আয়োজন করা হয়েছিল। ষড়যন্ত্র ছিল এরকম,আপিল বিভাগ এই সংসদকে অবৈধ বলবে এবং তিন মেয়াদের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করবে। ফলে, বর্তমান সংসদ বাতিল হয়ে যাবে, বর্তমান সরকারও অবৈধ হয়ে ক্ষমতা হারাবে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে গঠিত হবে ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকার’, এই সরকার কয়েক বছর দেশ চালাবে। ‘আওয়ামী লীগ’ হটাও এই চিন্তা থেকে বেগম জিয়া ও তারেক জিয়া এই ষড়যন্ত্রে সায় দেন। ড. কামাল হোসেন এবং ব্যরিস্টার আমীর উল ইসলাম ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মাঠে নামেন। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ও দেওয়া হয়। কিন্তু চক্রান্তকারীরা বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি ভাবতেও পারেননি, রায়ের পর আওয়ামী লীগ এবং সরকার এভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে। এরপরই তিনি ভয় পেয়ে পিছু হটেন। তাঁর সঙ্গে এনিয়ে যোগাযোগকারী দুই আইনজীবীকে তিনি একটু পরে কাজ এগুনোর পরামর্শ দেন।
বেগম জিয়া লন্ডনে গিয়ে সরকার পতনের অপেক্ষা করতে থাকেন। এদিকে, আপিল বিভাগের অন্য বিচারপতিরা দুরভিসন্ধি বুঝতে পেরে দৃঢ় অবস্থান নেন। তাঁরা প্রধান বিচারপতিকে ‘রাজনৈতিক বিতর্ক’ থেকে আদালতকে দূরে রাখার পরামর্শ দেন। আপিল বিভাগের একজন প্রধান বিচারপতিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘তাঁর দুরভিসন্ধির অংশীদার অন্য বিচারপতিরা নেবেন না। সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি উদ্ধারে প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কের উর্ধ্বে থাকার পরামর্শ দেন। প্রধান বিচারপতি বুঝতে পারেন, আপিল বিভাগে তিনি একা হয়ে গেছেন। তাঁর ওপর সহকর্মী বিচারপতিদেরই আস্থা নেই। এ অবস্থায় ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে রিট গুলো এলে অন্য বিচারপতিরা তাঁর সঙ্গে সহমত হবেন না। বিশেষ করে, আইন সচিবের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি রিটে, হাইকোর্টে আইন সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্থগিত করলে, আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি প্রধান বিচারপতির মতের বাইরে গিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন। এভাবেই আপিল বিভাগের নিয়ন্ত্রণ হারান এস কে সিনহা। বাধ্য হয়ে তিনি আত্নসর্মপন করেন। ভেস্তে যায় ষড়যন্ত্র।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
যুদ্ধের বাকি দিনগুলোর মতো এদিনও পাক বাহিনীর তাণ্ডবলীলা চলছিল। অন্যদিকে বাঙালীরাও তাদের যৎসামান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাক বাহিনীকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ঢাকায় নৃশংস গণহত্যার রেশ কাটেনি; শহর ছেড়ে গ্রামের পথে মানুষের ঢল। যারা পারছেন, সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পথচারীদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়েছে।
একাত্তরের ২৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে বিছিন্নভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাগুলি হয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রাজশাহী এবং সিলেটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় উদ্বেগে পড়ে হানাদারেরা।
সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে হেলিকপ্টারে করে তেজগাঁও বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। রাতে সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে তাকে করাচি নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর সহচর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ঢাকা থেকে ফরিদপুর পৌঁছান।
২৯ মার্চ রাতে ঢাকায় একশর মত বাঙালি ইপিআর সদস্যকে পাকিস্তানি সেনারা প্রেসিডেন্ট হাউস থেকে তিনটি দলে ভাগ করে রমনা কালীবাড়ির কাছে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
১৯৭১ সালের এদিন রাত দেড়টার দিকে আইনসভার সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে কুমিল্লার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় সেনারা। তাকে ও তার ছেলে দিলীপ কুমার দত্তকে আর কখনো পাওয়া যায়নি।
বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে ‘বিপ্লবী’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। এদিন স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে তিন বেলায় তিনটি অধিবেশন প্রচার করা হয়। মুক্তিকামী জনতার বাতিঘরের রূপ নেয় এই বেতার কেন্দ্র।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। হামলায় শহীদ হন একজন মুক্তিযোদ্ধা। সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনীর অ্যামবুশে নিহত হয় পাক বাহিনীর একটি দল।
মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভৈরব ও নরসিংদীর মধ্যে রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
চুয়াডাঙ্গায় থেকে মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ইপিআর, আনসার, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বাহিনী কুষ্টিয়ায় পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলা করে। পাকিস্তানি বাহিনী মর্টার, মেশিনগান নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালালে মুক্তি বাহিনী তিনভাগে ভাগ হয়ে আক্রমণ চালায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের সফল অভিযানে ৪০ জন পাকিস্তানি সৈন্য পাবনা থেকে গোপালপুরের পথে নিহত হয়। জীবিতদের অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে রাজশাহীর দিকে যাওয়ার পথে প্রাণ হারায়।
ময়মনসিংহে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল ব্যাটালিয়নের অফিসার এবং সৈনিকদের টাউন হলে একত্রিত করে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেজর কে এম সফিউল্লাহ।
পাকিস্তানি বাহিনী চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাইরে এসে মেডিকেল কলেজ ও নিকটবর্তী পাহাড়ে সমবেত হয়। সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানিরা প্রথম আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী সেই আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয়।
বিদ্রোহ মুক্তিযুদ্ধ সেনাবাহিনী
মন্তব্য করুন
বিএসএমএমইউ অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জাহিদ মালেক টিপু মুনশি ড. এ কে আব্দুল মোমেন
মন্তব্য করুন
যুদ্ধের বাকি দিনগুলোর মতো এদিনও পাক বাহিনীর তাণ্ডবলীলা চলছিল। অন্যদিকে বাঙালীরাও তাদের যৎসামান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাক বাহিনীকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ঢাকায় নৃশংস গণহত্যার রেশ কাটেনি; শহর ছেড়ে গ্রামের পথে মানুষের ঢল। যারা পারছেন, সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পথচারীদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক আজ দায়িত্ব নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, অধ্যাপক, নার্স সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন দিয়ে বরণ করে নেন। এটি একজন উপাচার্যের জন্য বড় প্রাপ্তি। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উপাচার্য হয়েছেন তারা কেউ এরকম রাজসিক অভ্যর্থনা পাননি। তাকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ অনেক উঁচুতে উঠে গেছে।