আজ ১০ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। ওই বছরেরই ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলায় এই সরকার শপথ নেয়। এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বৈদ্যনাথ তলার নামকরণ করেন ‘মুজিবনগর’। সেই থেকে কলকাতায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিবনগর’ সরকার হিসেবেই পরিচিত পায়।

এই সরকারের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে প্রবাসী সরকারের এক অধ্যাদেশে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সদ্যপ্রয়াত রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি গোপন স্থানে মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরে তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন।

 মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা হলেন-এম মনসুর আলী (অর্থ বাণিজ্য ও শিল্প) এবং এএইচএম কামরুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষি)। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি খন্দকার মোশতাক আহমদ (পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ) মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পর ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দীন আহমদ একটি বেতার ভাষণ দেন।