নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩০ পিএম, ১২ এপ্রিল, ২০২১
প্রথম দফা লকডাউন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। মানুষ লকডাউন মানে নি। বরং রাস্তায় তীব্র যানজট লকডাউনকে রীতিমত তামাশায় পরিণত করেছে। এরকম বাস্তবতায় সরকার দ্বিতীয় দফায় আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত আজ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে লকডাউন এর যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে সেখানে বেশ কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যেমন এই প্রজ্ঞাপনের (ক) তে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সহ সকল বিমান চলাচল, নৌ চলাচল, রেল চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এই প্রজ্ঞাপনে। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে যে প্রথম দফায় লকডাউন যেমন ব্যর্থ হয়েছিলো, দ্বিতীয় দফায় লকডাউনও কি শেষ পর্যন্ত লেজেগোবরে হবে, নাকি এটি সফল হবে। ইতিমধ্যে এই লকডাউনের সাফল্য নিয়ে চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানারকম প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যেমন, আগে থেকে লকডাউন ঘোষণা দেওয়ার ফলে গত দুইদিনে ঢাকার বাইরে লোকজন ছুটে যাচ্ছেন। উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে ঢাকা ত্যাগের বিভিন্ন পয়েন্টগুলোতে। এর ফলে সারাদেশে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
বিশেষ করে ঢাকা থেকে লোকজন যেভাবে গ্রাম-গ্রামান্তরে চলে যাচ্ছেন, এতে কারোনা সারাদেশে সংক্রমিত হওয়ার কি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এবারের লকডাউনেও শিল্প-কলকারখানাগুলো খোলা রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে নিজস্ব পরিবহনে শিল্প-কলকারখানাগুলোর শ্রমিকদেরকে আনা নেয়া করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে শ্রমঘন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি। মিরপুরে যেমন গার্মেন্টস আছে, রামপুরায় গার্মেন্টস আছে, এই সমস্ত গার্মেন্টস কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে থাকেন।
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, যেখানে যত সস্তায় তারা বাড়ি ভাড়া পান বা মেস পান, সেখানে সেভাবেই তারা থাকে। এই পরিস্থিতিতে কারখানাগুলো কিভাবে শ্রমিকদের পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে সেটি আরেকটি বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে।
তৃতীয়ত, এখন পর্যন্ত ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে অস্পষ্টতা রয়েছে। বলা হয়েছে যে, বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শিল্পকারখানা যদি খোলা থাকে, বাজার যদি খোলা থাকে এবং পণ্য পরিবহন যদি খোলা থাকে, তাহলে ব্যাংক বন্ধ কিভাবে রাখা হবে সেটি একটি প্রশ্ন। এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে অস্পষ্টতা রয়েছে। আর তাছাড়াও এখানে মানুষকে ঘরে রাখার চিন্তা থেকে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে সেটা কতটুকু সফল হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ এখানে বাজার খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাবারের দোকান দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত এই লকডাউন কি ৫ এপ্রিলের লকডাউন মত হবে কিনা সেটি দেখার বিষয়।
তবে সরকার বলছে, এবার তারা কঠোর হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে লকডাউন নিয়ে একটা নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তারা মনে করছে যে সামনে রোজা, ঈদ এই অবস্থায় লকডাউন তাদের জন্য একটা দুর্বিষহ অবস্থার তৈরি করতে পারে। প্রথম দফায় লকডাউন যেমন মানুষ মানে নি। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে যেমন বেরিয়ে এসেছে, এবারও সেটি হয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।