নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ০৪ মে, ২০২১
নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ নিজেদেরকে ডবল ইঞ্জিন ঘোষণা করেছিল এবং ডবল ইঞ্জিন দিয়ে দিদিকে পশ্চিমবাংলা থেকে হটাতে চেয়েছিল বিজেপি সরকার। আর তাদের পাশে ছিলো নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে সুবিধা দিতে ৪৫ দিনব্যাপী করোনার মধ্যে নির্বাচন করেছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচন হয়নি বিজেপি যখন পুরো নির্বাচনে হিন্দুত্ববাদকে সামনে তুলে ধরেছে তখনও নির্বাচন কমিশন চোখ বন্ধ করেছিল। আর যখন মমতা ব্যানার্জি হিন্দু মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে তখন নির্বাচন কমিশন তাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
সর্বশেষ নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়েও যে নাটক হয়ে গেল তাতে স্পষ্ট হলো যে, মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবাংলার নির্বাচনে দুইদিকে সংগ্রাম করেছেন। প্রথমত, ভয়ঙ্কর সরকারের বিরুদ্ধে। যে সরকার অত্যন্ত ক্ষমতাবান, যার টাকার কোন অভাব নেই এবং প্রশাসন থেকে সবকিছু যার নিয়ন্ত্রণে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশন। যে নির্বাচন কমিশন বিজেপি সরকারের অন্ধ সমর্থক এবং যাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ওঠে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে। এছাড়াও মমতা ব্যানার্জিকে আরো কিছু অদৃশ্য শত্রুর মুখোমুখি হতে হয়েছিল নির্বাচনে। কর্পোরেট মিডিয়া পুরোটাই ছিলো বিজেপির দখলে এবং তারা পুরো নির্বাচন জুড়ে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ বন্দনা করেছিল। পশ্চিমবাংলার প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক বিজেপির বিজ্ঞাপনে পরিণত হয়েছিল। আর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মহল তারা যেন বিজেপিকে জেতানোর জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছিল। এইসব শক্তির বিপরীতে মমতা ব্যানার্জির একটি শক্তি ছিলো, তা হলো জনগণ। পশ্চিমবাংলার জনগণের প্রতি তার আস্থা ছিল এবং তিনি জনগণের সঙ্গেই সংযুক্ত হতে পছন্দ করেন। এই নির্বাচনে তাই বিজয়ী হয়ে তিনি অনেক কিছু প্রমাণ করে দিলেন।
১. তিনি দেখালেন যে কেন্দ্রীয় সরকার যত ক্ষমতাবান শক্তিশালী হোক না কেন তারা জনগণের চেয়ে শক্তিশালী নয়।
২. নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে নির্বাচনে কিছু কারচুপি করা যায় কিন্তু তা জনগণের শক্তির কাছে পরাস্ত হতে বাধ্য।
৩. কর্পোরেট মিডিয়া যতই পক্ষপাতমূলক খবর পরিবেশন করুক না কেন মাঠে তার প্রভাব খুব কম পড়ে।
৪. বড় বড় ব্যবসায়ীরা যতই তাদের স্বার্থের জন্য একটি দলকে সমর্থন দিক না কেন জনগণ যেটা ভাবে সেটাই হয়।
৫. জনগণ শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে না। রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব হলো জনগণের এই সিদ্ধান্তকে যেন ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়।
আর মমতা ব্যানার্জি সেই কাজটিই করেছেন। পশ্চিমবাংলা নির্বাচনের পর বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অনেক কিছুই শেখার আছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রথমত, বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সবসময় ভোট কারচুপি বলে আর্তনাদ করে তারা মমতা ব্যানার্জীর কাছ থেকে শিখতে পারে যে নরেন্দ্র মোদির মতো প্রচণ্ড ক্ষমতাশীল প্রধানমন্ত্রী যে নির্বাচনে সরাসরি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন, যে নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়, সেই নির্বাচনেও বিজেপি জিততে পারেননি। মাটি কামড়ে যদি কেউ শেষ পর্যন্ত থাকে তাহলে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ কারচুপি করতে পারেনা। বাংলাদেশেও অনেকেই নির্বাচন কমিশন নিয়ে নানারকম কথাবার্তা বলার চেষ্টা করে নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাত নিয়ে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাত অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বড় বাধা নয় সেটা পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন আরেকবার প্রমাণ করে দিলো।
মিডিয়ার পক্ষপাতের কথাও বলা হয়। সেটিও মমতা ব্যানার্জীর কাছ থেকে শিখতে পারে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো। মমতা ব্যানার্জি একটা বিষয় শিখিয়ে দিয়েছেন তার এই নির্বাচনে, সেটি হলো মানুষের শক্তির উপর আস্থা। মানুষের শক্তি সবচেয়ে প্রবল এবং পরাক্রমশালী, অন্য কোন কিছু নয়। এটি যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর শিখবে, তখন বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিশ্চয়ই আরো শক্তিশালী হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।