নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১০ এএম, ১২ অক্টোবর, ২০১৭
সোমবার দুপুর। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই হয়ে ছেড়েছে লঞ্চ। ভিড়বে মঙ্গল মাঝির ঘাটে। তবে শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার মাঝির ঘাটে যাওয়া সবার প্রধান উদ্দেশ্য নয়।
স্থানীয়রা বাদে অন্যদের প্রায় সবারই উদ্দেশ্য দৃশ্যমান পদ্মাসেতু একনজর দেখা। অবশ্য ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার একটু পরই সবার উদ্দেশ্য এক হয়ে যায়। সবার আলোচনার বিষয় হয়ে যায়, দৃশ্যমান পদ্মাসেতু।
লঞ্চ ছাড়ার পর আলোচনায় প্রধান্য পায়, ‘ইলিশ মাছ ধরা নিষেধ’ বিষয়টি। কারণ তা নদীর দুই পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। আবার যারা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছেন, তারা শহুরে পরিবেশে বেড়ে ওঠা সন্তানদের পদ্মার চরজুড়ে কাশফুল দেখাচ্ছেন। কেউ নদীর ঢেউ দেখাতে দেখাতে পদ্মাকে ঘিরে নিজের শৈশবস্মৃতি থেকে বলতে শুরু করেন। আবার কেউ সন্তানকে বাস্তবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে বইয়ে পড়া পাল তোলা নৌকার সঙ্গে।
অবশ্য সব বিষয় থেমে যায় ‘পদ্মাসেতু কতদূর প্রশ্নে’? যারা এখানকার নিয়মিত যাত্রী, তারা বুঝে নিচ্ছেন, যে স্প্যান বসানোর ফলে পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হয়েছে, তা আর কতক্ষণ পর দেখা যাবে- তাই জানতে চাচ্ছেন প্রশ্নকারীরা। পাশের যাত্রী হিসেবে ধারণাও দেন নিয়মিত যাত্রীরা। তাতেই সব বিষয়ে আলোচনা থেমে বিষয় হয়ে যায় একটিই, তা হচ্ছে পদ্মাসেতু।
তবে দূর থেকে দৃশ্যমাণ পদ্মাসেতু দেখেই বেঁধে যায় একরকম হুলস্থুল। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, সেলফি তুলছেন কেউ কেউ। অবশ্য নিয়মিত যাত্রীরা নিবৃত করতে আশ্বাস দিচ্ছেন উৎসাহীদের। বললেন ওই স্প্যানের পাশ দিয়েই যাব আমরা, পরে কাছ থেকে ছবি নিতে পারবেন। তবে পদ্মার উত্তাল ঢেউ উত্তেজিত করে তোলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে। প্রায় চিৎকার করে তারা বলে যাচ্ছিলেন, নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ, এভাবে ছোটাছুটি করবেন না, ছোট লঞ্চ, বড় বিপদ ঘটতে পারে।
শুধু কর্তৃপক্ষ নন, বিরক্তি প্রকাশ করলেন জাজিরা থানার পূর্ব নাওডোবার বাসিন্দা কাফিলা খাতুনও। সত্তোরোর্ধ এই নারী বলছিলেন, এমন দাপাদাপি না করে আল্লাহ আল্লাহ করেন, যেন ভালোয় ভালোয় সেতুর কাজটি সম্পন্ন হয়। তাঁর সঙ্গে ভিন্নভাবে একমত হলেন আহম্মেদুল আজিজ স্বপনসহ তার সঙ্গীরা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাঁরা। বললেন, এই সেতু নির্মাণে বাধা দিতে বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্ত হয়েছে। এখনো চলছে হয়ত গোপনে। তাই ব্রিজটিতে সাধারণের চলাচল শুরু না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমএএম/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।