নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৫ পিএম, ২২ জুন, ২০২১
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেছেন, আদালত প্রাঙ্গণে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে কোনোভাবেই কাম্য নয়, কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
মঙ্গলবার (২২ জুন) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে মতবিনিময় সভায় নাছিমা বেগম এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ভালোবাসার সম্পর্ক থাকার পর প্রতারণা বা অন্য কোনো কারণে মামলা করে, তারপর আপস হয়। আসামি জামিনে বের হলে আদালত প্রাঙ্গণেই বিয়ের ঘটনা ঘটে। বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আলামত পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। মামলাটিও শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করা যায় না।
প্রচলিত আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞা পরিবর্তন, বিচারের দীর্ঘসূত্রতার পেছনের কারণগুলোও কমিশনের পক্ষ থেকে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান নাছিমা বেগম।
সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য সাবেক জেলা জজ জেসমিন আরা বেগম বলেন, ধর্ষণের ঘটনার ৮০ শতাংশই প্রেম, প্রতারণা বা বিয়ের প্রলোভনে সম্মতির মাধ্যমে ঘটছে। আর ২০ শতাংশ ঘটছে জবরদস্তির মাধ্যমে। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের সময় বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন আছে।
নিজের ৩১ বছরের বিচারকজীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে জেসমিন আরা বেগম বলেন, ‘আমার আদালতে দেখেছি এবং আট বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়েও প্রায় সবার মতামত হচ্ছে, ধর্ষণের ৮০ শতাংশই ঘটছে প্রেমসহ অন্যান্য কারণে। আর এই ঘটনাগুলোতে একসময় সব সাক্ষী পাওয়া গেলেও ভিকটিম আর সাক্ষ্য দিতে আসেন না। মামলা আপস করে ফেলেন। আইন অনুযায়ী, ভিকটিমকেই বিচার চাইতে হয়।’
জেসমিন আরা বেগম বলেন, ইংল্যান্ডেও সম্মতিতে এ ধরনের ধর্ষণকে ‘রোমিও–জুলিয়েট রেপ’ বলে আলাদাভাবে দেখা হয়। বাংলাদেশে রোমিও–জুলিয়েট নাম না দিয়ে অন্যভাবেও ঘটনাগুলো দেখা দরকার।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় ইনকোয়ারি কমিটির আহ্বায়ক জেসমিন আরা বেগম বলেন, ছেলে শিশুরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের বিষয়টিও নজরে আনতে হবে। বিবাহিত নারী, যৌনকর্মীসহ যে কেউ ধর্ষণের শিকার হতে পারেন। স্বামীর মাধ্যমেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এই বিষয়গুলো তলিয়ে দেখার পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনায় মিথ্যা মামলা হচ্ছে, সেই মিথ্যা মামলাগুলোকেও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
ওয়েবিনারে জাতীয় ইনকোয়ারি কমিটির সার্বিক দিক তুলে ধরেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় বিশেষজ্ঞ আবুল হোসেন। তিনি এর আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টি সেক্টরাল কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আবুল হোসেন জানান, জাতীয় ইনকোয়ারি কমিটি পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে অনুসন্ধানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের কারণ, ধরন, চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করার পাশাপাশি তা মোকাবিলা বা সমস্যা সমাধানেরও সুপারিশ দেওয়া হবে। আইন বা নীতিতে কোনো পরিবর্তন, সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা–ও দেখবে এ কমিটি।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের নারী ও শিশু অধিকারবিষয়ক সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন সুপারিশ দেন।
ধর্ষণের ৮০ শতাংশই প্রেম বা অন্যান্য কারণে ঘটছে, এ বিষয়ে গবেষণা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন। তিনি বলেন, গবেষণার সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া এ ধরনের তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা ঠিক নয়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগমও যেকোনো তথ্য-উপাত্ত গবেষণার ভিত্তিতে প্রকাশের বিষয়টিতে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ধারণা করা হয়েছিল, করোনায় মানুষ ভয় পাবে। নারী নির্যাতনের মতো ঘটনাগুলো বন্ধ রাখবে। তবে ঘটেছে উল্টোটা। অতীতের চেয়ে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে মোবাইল ফোনে পা ভেঙে
ফেলার হুমকি দিয়েছেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে
কেন্দ্র করে এ হুমকি দেন এমপি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দেওয়া কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। গত
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে হুমকির ওই কল রেকর্ডটি ভাইরাল হয়।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম জুম্মান আহমেদ লিছন। তিনি বরগুনা
জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
৩১ সেকেন্ডের ওই কল রেকর্ডটিতে জেলা ছাত্র লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
জুম্মান আহমেদ লিছনকে উদ্দেশ করে সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকুকে বলতে শোনা যায়, ‘এ
তুমি ফেসবুকে কী লিখছো মোর সম্পর্কে? তোমার এতখানি অডাসিটি? ভাবোকি নিজেরে? তাজমহল
সাহিত্য চো... না! ঠ্যাং ভাইঙ্গা...দিমু, তুই চেনো আমারে? তুই তাজমহল ল্যাহো, আমি ওহানে
গেছি একটা দলের প্রোগ্রামে, পৌরসভার প্রোগ্রামে। আমার সম্পর্কে নেগেটিভ লেখো? তোর রাজনীতি
আমি... ভরে দেব। তুই চেনো আমারে? বেশি বাড়ছো তোরা, অসভ্য।’
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুম্মান আহমেদ লিছন বলেন,
‘ভুল বোঝাবুঝির জন্য এমনটা হয়েছে। তাকে যে পোস্টের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে সেটি সুপার
এডিট করা। তবে একজন সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে একজন ছাত্রলীগ
কর্মীকে যেভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে, সেটা কাম্য নয়।
এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনে সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও
তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন,
আমি ঢাকায় যাচ্ছি, এসে মিটিং ডেকে আমাদের মতামত দেব।
মন্তব্য করুন
বান্দরবানের রুমায় সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের
(কেএনএফ) হাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে চট্টগ্রামে বদলি করা
হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্ধার হওয়ার পর বান্দরবানের রুমা শাখা থেকে বিশেষ বিবেচনায়
তাকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বান্দরবানের রুমা শাখার সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ) নারায়ন
দাশকে শাখাটির ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে সোনালী ব্যাংক। সোনালী
ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রীতি কুসুম চাকমার সই করা এক নোটিশে তাদের বদলি
করা হয়।
ওই নোটিশ অনুযায়ী, বান্দরবানের রুমা শাখার নেজাম উদ্দীনকে কর্ণফুলী
শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র অফিসার) ও যুগ্ম-জিম্মাদার (সাধারণ) করা হয়েছে। কর্ণফুলী শাখার
ম্যানেজার মু. রেজাউর রহমানকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) চট্টগ্রামের কে. বি বাজার শাখায়
এবং কে. বি বাজার শাখার
ম্যানেজার হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) প্রিন্সিপাল অফিস, পটিয়ার
(চট্টগ্রাম) প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে
ডাকাতির চেষ্টা করে পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ। তখন ব্যাংকের ভল্ট খুলতে
না পেরে হামলাকারীরা ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ৪ এপ্রিল তাকে
উদ্ধার করা হয়।
মন্তব্য করুন
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের
অনেক স্বপ্ন। এই স্বপ্নটি আমাদের দেখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি শুধু স্বপ্ন দেখাননি, আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর এখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি
মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ক্ষুধা,
দারিদ্র্য মুক্ত দেশ গড়ে তুলেছি। শিক্ষা,সংস্কৃতি, ক্রীড়া, উন্নয়নসহ সকল দিকে বাংলাদেশ
এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এতকিছুর পরেও কিছুটা ভয় আমাদের আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে
যে পক্ষটি বিরোধিতা করেছে, যারা চেয়েছে, আমরা কখনও স্বাধীন না হই, যারা রবীন্দ্রনাথকে
নিষিদ্ধ করেছিল, নজরুলকে খণ্ডিত করেছিল, আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল,
তারা এখনও বসে নেই। তারা তাদের চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারা আমাদের ধর্মের অপব্যাখ্যা
দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
দীপু মনি বলেন, এর থেকে উত্তরণে সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ প্রয়োজন।
সমাজ-সংসার, ব্যক্তিজীবনে এই জাগরণ প্রয়োজন। ধর্মের খণ্ডিত অপব্যাখ্যা দিয়ে একটি জাতিকে
সংস্কৃতি চর্চা থেকে দূরে সরিয়ে রাখলে সে জাতি কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা বাঙালি
এটিই আমাদের পরিচয়। আমাদের এই পরিচয়কে খণ্ডিত করার অপচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে হবে। সংস্কৃতি
আর রাজনীতি যখনই হাতে হাত মিলিয়ে রাজপথে হেঁটেছে, তখনই আমাদের অধিকার আদায় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী, যুব লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাড. জাফর ইকবাল মুন্না, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক গোপাল চন্দ্র সাহা, আনন্দধ্বনি সঙ্গীত শিক্ষায়তনের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
পাবনার আমিনপুরের কাজিরহাট ফেরিঘাটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চিনিবোঝাইসহ
১২ ট্রাক জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় চালক ও হেলপারসহ ২৩ জনকে আটক করা
হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের আটক করা
হয় বলে নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় চিনিবোঝাই
ট্রাকগুলো সিলেটের জয়ন্তপুর সীমান্ত হয়ে ঢুকে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছিল। মানিকগঞ্জের আরিচা
ও পাবনার কাজিরহাট ঘাট হয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে। গোপন সংবাদের
ভিত্তিতে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল ডিবি। এসব ট্রাকে অন্তত আড়াই শতাধিক টন চিনি আছে
বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভারতীয় চিনিবোঝাই ট্রাকগুলো আরিচা পার হয়ে পাবনার
কাজিরহাট ঘাটে এলে ডিবি পুলিশ আটক করে। এ সময় তারা মালামালের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
এরপর এগুলো জব্দ করা হয় এবং ২৩-২৪ জনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্তের পর আরও বিস্তারিত
তথ্য জানানো হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন