নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ২১ জুলাই, ২০২১
ঈদের আগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ঈদের মধ্যে জঙ্গি সন্ত্রাসী হামলার কোনো শঙ্কা নেই, সরকার প্রস্তুত রয়েছে। এর আগেও বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদীরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার, তারা সংগঠিত নয় এবং বড় ধরনের কোনো হামলা করার মতো তাদের শক্তি-সামর্থ্য কোন কিছুই নেই। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের নতুন করে উত্থানের শঙ্কা রয়েছে এবং বাংলাদেশের জঙ্গিবাদী সংগঠনগুলো এখনো বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, নিঃশেষ হয়ে যায়নি বরং তারা নতুন করে সংঘটিত হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী রাজনীতির একটা বড় ধরনের উত্থান ঘটারও আশঙ্কা কেউ কেউ উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কেন বাংলাদেশে এখনও জঙ্গিবাদের শঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ব্যাপারে সরকারের শূন্য সহিষ্ণুতা নীতির পরও কেন এখনো বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের কথা বলা হয় -এটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা একাধিক কারণ দেখছেন। এর মধ্যে যে কারণগুলো প্রধান কারণ সেগুলো হলো:
১. মূল ধারার রাজনীতির ব্যর্থতা: বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর এবং গত এক দশকে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো সীমাহীন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জাতীয় সংসদে বিরোধী দল নেই বললেই চলে। দেশের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দাবি করা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি কেবল তাদের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এবং চিকিৎসার দাবিতেই সীমাবদ্ধ। কোন যৌক্তিক কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন করার শক্তি সামর্থ্য এবং আদর্শিক ভিত্তি বিএনপির নেই। এরকম একটি রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে একটা এক ধরনের অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটে, এটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে একটি স্বতঃসিদ্ধ ধারণা। আর এই কারণেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের শঙ্কা করা হচ্ছে।
২. অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্বলতা: বাংলাদেশে মনে করা হয়েছিল যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর বাম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তিগুলো শক্তিশালী হবে, তারা সংঘবদ্ধ হবে এবং অসাম্প্রদায়িক একটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক চেতনা দ্বারা বিকশিত হবে। অনেকেরই আকাঙ্ক্ষা ছিল, প্রত্যাশা ছিল যে বাংলাদেশের রাজনীতি হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে এবং যে দল সরকারে থাকুক যে দল বিরোধী দলে থাকুক তারা সকলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করবে। কিন্তু বাম দলগুলো জন আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বরং তারা নিজেরাই অনুকূল পরিবেশে নিজেদেরকে বিকশিত করতে পারেনি। আর এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে বলে মনে করছেন অনেকে।
৩. আফগানিস্তানের ঘটনা: সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে দেওয়ার পর এখন তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করে নিচ্ছেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান আবার একটি তালেবান রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এই তালেবান রাষ্ট্র হিসেবে আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের বড় ধরনের শঙ্কা তৈরি হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তারা মনে করছেন যে, এটি বাংলাদেশই জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করবে এবং তারা জঙ্গিবাদী বিভিন্ন তৎপরতায় আফগানিস্তানের সাহায্য সহযোগিতা নিবে। এর আগে যখন আফগানিস্তানে তালেবানদের উত্থান ঘটেছিল তখন বাংলাদেশ থেকে বহু সন্ত্রাসী মৌলবাদী গোষ্ঠী আফগানিস্তানে গিয়েছিল এবং তারা সেখানে সশস্ত্র সংগ্রাম করেছে। সেখান থেকে ফিরে আসার পর এখন তারা জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
আর এরা এখন নতুন করে প্রাণ শক্তি পাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়াও বাংলাদেশে যে ধর্মান্ধ মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা এবং একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলগুলোর সঙ্গে মৌলবাদী গোষ্ঠীর গোপন যোগাযোগ ইত্যাদি নানা কারণেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান রয়েছে। মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো যত দুর্বল হয়ে যাবে ততো বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ এবং উগ্রবাদী রাজনীতির বিকশিত হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
মন্তব্য করুন
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আমার
পরিবার ও আমার নামে অসত্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সবাইকে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বেনজীর আহমেদ
বলেন, ’আপনারা জানেন যে আমি প্রায় দুই বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এই অবসরকালীন
সময়ে আমি নিরিবিলি জীবন কাটাচ্ছি। চাকরিকালীন সময় বিগত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত
আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক অবিরত এবং ক্রমাগত অপপ্রচার এবং ব্যক্তিগত
চরিত্রহননের অপচেষ্টার শিকার হয়েছি।’
আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে
এক ভিডিও বার্তায় দৈনিক কালেরকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে এসব কথা বলেন বেনজীর আহমেদ।
তিনি জানান, সম্প্রতি পত্রিকায় আমি এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে
কিছু খুবই আপত্তিজনক, মানহানিকর, অসত্য এবং বিকৃত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই সংবাদের
সূত্র ধরে অন্যান্য কতিপয় আউটলেট একই রকমের সংবাদ পুনরাবৃত্তি ক্রমে পরিবেশন করেছে।
তবে দেশের মূলধারার প্রিন্ট এবং মিডিয়া এই অসত্য, মানহানিকর এবং বিকৃত সংবাদ পরিবেশনে
কোন আগ্রহ দেখায়নি। এজন্য মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি আমি এবং
আমার পরিবারের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
বেনজীর আহমেদ বলেন, গোপালগঞ্জের পারিবারিক কৃষি খামারের ভূমির পরিমাণ
যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। জমির সকল তথ্য ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ আছে। এছাড়া আমার
পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্রসহ বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যা আমাকে মারাত্নকভাবে
ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।
চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনে নিজের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি
বলেন, ‘চাকরি জীবনে ব্যক্তিগতভাবে আমি ঘুষ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। পুলিশ
কমিশনার এবং র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে জনগণের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাঠামোগত
প্রশাসনিক এবং অপারেশনাল সংস্কার বা রিফর্মের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। জুনিয়র পদগুলোতে
পদোন্নতিতে যে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, সেখানেও পদোন্নতি বিধিমালা ব্যাপক সংস্কার করে
দুর্নীতিমুক্ত পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছি। আমার পুরো ক্যারিয়ারে আমি পুলিশের অভ্যন্তরীণ
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, আমার অবসরের পর আমাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণের অপচেষ্টা
অত্যন্ত হতাশাজনক এবং দুঃখজনক।’
বেনজীর আহমেদের পারিবারিক ব্যবসা ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উল্লেখ
করে বলেন, ‘বিগত ১০ বছর ধরে আমাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রকাশ্যে এবং সর্বসম্মুখে পরিচালিত
হয়ে আসছে। এখানে গোপন বা আড়াল করার কোনও সুযোগ নেই। ঢাকার কাছে বিঘার পর বিঘা কোন জমি
নেই। পূর্বাচলে ৪০ কাঠা জমির উপর ডুপ্লেক্স বাড়ি নেই। পূর্বাচলে সেই কথিত ডুপ্লেক্স
বাড়ির পাশে একই জায়গায় আরও ১০ বিঘা জমিও নেই।’
তিনি বলেন, ‘মগবাজার কেন, রমনা, সিদ্ধেশ্বরী এর আশপাশে আমাদের ফ্ল্যাট
বা অ্যাপার্টমেন্ট কিছুই নেই। আনন্দ হাউজিংয়ে একটি প্লট বুকিং দেই এবং কিস্তির মাধ্যমে
ধীরে ধীরে এই টাকা পরিশোধ করি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আইজিপি থাকা অবস্থায় পূর্বাচলে ফারুক মার্কেটের
পেছনে ১০ কাঠার একটি প্লট কিনেছি। যার বাজার মূল্য ২২ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। কিন্তু
আমি আইজিপি কিংবা র্যাব ডিজি থাকাকালীন কোনও প্লট কিনিনি। ২০০১ সালে রাজউক বরাবর আবেদন
করে আমি একটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ পেয়েছি। নিজের এবং পারিবারিক অর্থের প্রয়োজন হওয়ায়
আমি প্লটটি বিক্রি করেছি। পূর্বাচলে বর্তমানে আমাদের কোনও প্লট বা বাড়ি কিছুই নেই।
রূপগঞ্জে আমাদের কোনও জমি নেই।
তিনি আরও বলেন, আমার এবং পরিবারের ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের সম্পত্তির
তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। বেতন ভাতার হিসাব কাল্পনিক এবং ভুল।
ভাওয়াল রিসোর্ট, বনানীতে ইউনিক রিজেন্সি হোটেল, কক্সবাজারের বেস্ট
ওয়েস্টার্ন এবং হোটেল রামাদায় বেনজীরের পরিবারের মালিকানা আছে, বলে প্রচার করা হয়েছে
উল্লেখ করে বলেন, ‘এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আমাদের কোনও মালিকানা বা বিনিয়োগ নেই। পদ্মা
ব্যাংক এবং ক্যানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনও মালিকানা বা বিনিয়োগ নেই। সিঙ্গাপুরে
অর্ধশত কোটি টাকার সোনার ব্যবসা, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় জমি কিনেছি মর্মে যা বলা
হয়, সেটাও অসত্য।’
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে
দাবি করে সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশ করে কালেরকণ্ঠ। এরপর থেকেই বেশ আলোচনা চলছে তাকে নিয়ে।
সম্প্রতি প্রকাশিত দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি)
ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
জাতীয় ওই দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন
প্রকাশ করে, যেখানে তার নানা অর্থ সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের
মধ্যে রয়েছে, গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন
পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি
কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার
বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের
দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস
ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল
জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে
২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
মন্তব্য করুন
হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় জেলায় তিনজনের মৃত্যু
হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) তাদের মৃত্যু হয়।
পাবনা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান, পাবনায়
তীব্র গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত সুকুমার দাস (৬০) পাবনার শহরের
শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
এদিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত
হয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি দর্শনা থানার সীমান্তসংলগ্ন ঠাকুরপুর
গ্রামের আমির হোসেন ছেলে ও ঠাকুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার
দামুড়হুদায় হিটস্ট্রোকে মর্জিনা খাতুন (৬০) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে
৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একইসঙ্গে তীব্র তাপ প্রবাহ শুরু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। এই দাবদাহে জেলায় হিট অ্যালার্ট জারি করে মাইকিং করা হচ্ছে সপ্তাহজুড়ে।
মন্তব্য করুন
চলমান তীব্র দাবদাহের ফলে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় হিট স্ট্রোকে
একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম জাকির হোসেন। আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭ টার দিকে
মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়।
নিহত জাকির দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর
গ্রামের আমির হোসেন ছেলে। তিনি পেশায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন।
নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, ‘রোদ গরমে মাঠের ধান মরার অবস্থা।
ধানের জমিতে সেচ (পানি) দেয়ার জন্য জাকির সকাল ৭ টার দিকে মাঠে যায়। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক
পর খবর পাই সে মাঠে স্ট্রোক করেছে। মাঠে থাকা অন্য কৃষকরা তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক
জামিনুর রহমান জানান, আজ শনিবার সকাল ৯ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি
সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৮ শতাংশ এবং বেলা ১২ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা
ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। বিকেল ৩ টায়
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রির ঘরে দাঁড়ায়।
মন্তব্য করুন
শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ শুরু হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম ক্রিকেট লীগের উদ্বোধন করেন।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোক্তাদিরুল আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত, জেলা ক্রীড়া অফিসার ধীরেন্দ্র চন্দ্র সরকারসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী খেলায় সবুজসেনা স্পোর্টিং ক্লাব ও সাইকা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এ ক্রিকেট লীগে মোট ৫ টি দল অংশগ্রহণ করছে।
শেরপুর প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়াম
মন্তব্য করুন
চলমান দাবদাহে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার (২১ এপ্রিল) থেকে ৭ দিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে এ সিদ্ধান্তের কথা সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে পৃথকভাবে জানানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি সাতদিন বাড়ানোর জন্য আমরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দিয়েছি। তারা এ সংক্রান্ত নোটিশ শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি সাতদিন বাড়ানো হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে ক্লাস শুরু হবে।
তিনি জানান, শিক্ষার্থী সুরক্ষা ও অভিভাবকদের দাবির কথা বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এক বিবৃতিতে জানায়, তীব্র তাপদাহে শিশু কিশোরদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় প্রাথমিক স্কুলের ছুটি ২১ এপ্রিলের পরিবর্তে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি থাকবে। ২৮ এপ্রিল থেকে ক্লাস শুরু হবে। এ সময় সরকারি স্কুল, শিশুকল্যাণ ও টাস্ট্রের স্কুলগুলো ও উপানুষ্ঠাানিক শিক্ষা ব্যুরো স্কুল ছুটি থাকবে।
এর আগে সকালে এক বিবৃতিতে আপাতত অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এতে জানানো হয়, দেশজুড়ে বহমান দাবদাহের দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নজর রাখছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
এদিকে শুক্রবার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কয়েকটি জেলায় হিট অ্যালার্ট জারি করার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৭ দিন বাড়ানোর দাবি জানান অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটি বলছে, দেশের বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মানুষজনকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করছে প্রশাসন। এর মধ্যে স্কুল কলেজ খুললে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই দেশের সব স্কুল-কলেজ- মাদরাসা আগামী ৭ দিনের জন্য শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন