নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২৪ জুলাই, ২০২১
সার্ক অঞ্চলে এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা। সার্কের প্রধান দুই দেশের নেতারাই যখন টলটলায়মান, তাদের তীব্র সমালোচনা এবং জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী সেই সময়ে নানা রকম সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জনপ্রিয়তা অটুট ভাবে ধরে রেখেছেন। শুধু দেশে জনপ্রিয়তা নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি প্রশংসিত এবং একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রমাণিত। এই বাস্তবতাই করোনাকালীন সময়ে এই অঞ্চলের ঐক্য এবং সম্প্রীতি ধরে রাখার জন্য অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি সার্ক অঞ্চলের বিভিন্ন সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে উপহার হিসেবে আম পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের আমি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং সারা বিশ্বে আদৃত। আর সেই আম উপহার পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশের এক কূটনৈতিক জাগরণ তৈরি করতে চেষ্টা করছেন। অনেকেই বলতে পারেন যে, আম পাঠানো স্রেফ সৌজন্যতা। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর কাছে আম পাঠানো একটি অথিতিপরায়ণতার লক্ষণ মাত্র। বাংলাদেশ অথিতিপরায়ণ জাতি হিসেবে পরিচিত। বাঙ্গালীরা সবসময় ভালো মন্দ প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিলিয়ে নেয়। সেই চিরাচরিত অভ্যাসটাকে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় অভ্যাসে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ে পালা-পার্বণে প্রতিবেশীদেরকে নানারকম উপহার দেয়। এই প্রতিবেশীদের যে পক্ষপাত বিচার তিনি করেন না, সকলকে তিনি সমান চোখে দেখেন সেটি সার্ক অঞ্চলের প্রায় সব সরকার প্রধানের কাছে পাঠানোর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা প্রমাণ করলেন। বাংলাদেশ `সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়` এই পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করে যেটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সার্ক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভক্ত। আর একারণেই সার্ক যেভাবে কার্যকর হওয়া উচিত ছিল তা কার্যকর হয়নি। আর এই বিভক্তির মূল কারণ হিসেবে রয়েছে ভারত এবং পাকিস্তানের বৈরী সম্পর্ক। দুই দেশের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক পর্যায়ে ছিল না। আর বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিসেবে পরিচিত। কারণ, বাংলাদেশের ৩০ লাখ শহীদের রক্ত, তিন লাখ মা-বোনের ইজ্জত, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা কোনদিন ভুলতে পারবে না। কাজেই পাকিস্তানের সঙ্গে কখনোই একটি স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে না। তারপরও যদি পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করত, বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনা যদি বুঝিয়ে দিত তাহলে পরিস্থিতি হয়তো অন্যরকম হলেও হতে পারতো, কিন্তু পাকিস্তান কখনই সেটা করেনি।
তবে লক্ষণীয় ব্যাপার যে, ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশ পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ইতিবাচক ফলাফল দৃশ্যমান হচ্ছে। বিশেষ করে ইমরান খান একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন। তাদের মধ্যে কথা বিনিময় হয়েছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এইসব বিষয়গুলোকে অনেক ইতিবাচক মনে করেন। তবে পাকিস্তান তার ভুল রাজনীতি এবং বাংলাদেশ নিয়ে ভুল কৌশল থেকে এখনও সরে আসেনি। পাকিস্তান এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র এবং সব সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। এরকম বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আম পাঠিয়ে প্রমাণ করলেন যে, অতীতে পাকিস্তান যাই করুক না কেন বাংলাদেশে যে সার্ক অঞ্চলের প্রত্যেকটি দেশকে নিয়ে এগুতে চায় এই বার্তাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিলেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, শেখ হাসিনার এই আতিথেয়তা, মহানুভবতা, উদারতা কি সব রাষ্ট্রগুলো বুঝবে? এই আম কূটনীতি কতটুকু সফল হবে? কূটনৈতিক মহল মনে করছে, আম কূটনীতি সফল ব্যর্থতার বিষয় নয়। আম কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একটি বার্তা দিলেন। তাহলো বাংলাদেশ সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ রাখতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ সকলকে নিয়ে ভালো থাকতে চায়। এই আম কূটনীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বিশ্বনেতা হিসেবে নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।