নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২১
বাংলাদেশ গত ১৪ এপ্রিল থেকে থেমে থেমে লকডাউন চলছে নানা রকমের লকডাউন। কখনো কঠোরতম লকডাউন, কখনো আবার শিথিল লকডাউন। এ সমস্ত লকডাউন না মানছে মানুষ, না মানছে করোনা। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ৩০ শতাংশের আশেপাশে। আর মৃত্যুর হার ২০০ ওপরে যেন স্থিতিশীল হয়ে আছে। অর্থাৎ এই লকডাউনে করোনা কমছে না। সাধারণত বলা হয়, একটি এলাকায় যখন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে লকডাউন করা হয়। লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের চলাফেরা বন্ধ করা, যেন সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে। সামাজিক সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য লকডাউনই একমাত্র সমাধান। এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে। কিন্তু তাই যদি হবে তাহলে ১৪ এপ্রিল থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত লকডাউনেই তো করোনা সংক্রমণ কমার কথা। কিন্তু তা কমছে না। কমছে না এই কারণে যে, যেভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে তা সমন্বয়হীন, জগাখিচুড়ি এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। যার ফলে মানুষ এসব লকডাউন মানছে না। এই লকডাউন না মানার ফলে করোনাও কমছে না। আবার এই সমস্ত লকডাউনে ক্ষতি হচ্ছে অর্থনীতির। ধুকে ধুকে চলছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানাগুলো, নানারকম সংকটে পড়েছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা। যেমন- ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউনে বিভিন্ন দোকানপাট শপিংমল বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল গণপরিবহন। এই সময় পর্যটন খাতও প্রায় পুরোটা সময় বন্ধ ছিল। ফলে এই লকডাউনে এই সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষ এক গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। এদের অনেকেই এক গভীর অনিশ্চয়তায় এবং অর্থনৈতিক দৈন্যতাকে বরণ করে নিয়েছে। বাংলাদেশের গত বছরের মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বেসরকারি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে তার শিক্ষকরা এখন বেতন-ভাতার অভাবে অন্যান্য পেশা বেছে নিয়েছেন। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেকে গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী বেঁচে থাকার জন্য তাদের অমানবিক কাজকর্মও করতে হচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় আমরা অর্থনীতিতে প্রণোদনা দেই না কেন একটি গভীর সংকট ক্রমশ বাড়ছে।
ব্র্যাকের গবেষণায় বলা হচ্ছে, দেড় কোটি নতুন দরিদ্র তৈরি হয়েছে যদিও সরকার এই তথ্য অস্বীকার করেছে। অবশ্য সরকারের কাছে হালনাগাদ এ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত নেই। সরকার এটিকে মানে না মানে অর্থনৈতিক সংকটে যে নিম্ন আয়ের এবং মধ্যবিত্ত মানুষ দিশেহারা তা বলাই বাহুল্য। থেমে থেমে লকডাউন, আধা লকডাউন, আধা সবকিছুর ফলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো মুখে থুবড়ে পড়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫০ থেকে ২০ শতাংশ লোকবল কমানো হয়েছে। বেসরকারি খাতে চাকরিজীবী অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। এর ফলে তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। ফলে বাংলাদেশে এমন একটি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে কোনটাই হচ্ছেনা। এই যে লকডাউন বারবার করে ঘোষণা করা হচ্ছে, তার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে এটি বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যেমন কোন কাজে দিচ্ছে না, তেমনি অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রেও হোঁচট খাচ্ছে। আর এজন্যই সাধারণ মানুষ মনে করেন যে, আমাদেরকে সুনির্দিষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। লকডাউনের লুকোচুরি গল্পকে আমাদের বাক্সবন্দী করতেই হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কি সত্যি সত্যি লকডাউন চাই কিনা। সত্যি সত্যি লকডাউন চাইলে লকডাউনের মত লকডাউন দিতে হবে। আর যদি না চাই তাহলে লকডাউনকে লকডাউন করে আমাদের স্বাস্থ্যবিধির উপর জোর দিতে হবে। মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বিষয়গুলোকে সামনে এনে আমাদের করোনা মোকাবেলা করতে হবে। তা না হলে এখন যেভাবে এই লকডাউনের খেলা চলছে তা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য আত্মঘাতী হিসেবে বিবেচিত হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।