নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ০১ অগাস্ট, ২০২১
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলায় যারা দণ্ডিত হয়েছেন তাদের মধ্যে পাঁচ খুনি এখনো পলাতক। ছয়জন খুনি পলাতক ছিল। এদের মধ্যে খুনি মাজেদ দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে থাকার পর বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এখনো যে পাঁচ খুনি পলাতক রয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন খুনি আব্দুর রশিদ, রাশেদ চৌধুরী, নূর চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম এবং রিসালদার মোসলেম উদ্দিন। এদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান করছেন এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। আর নূর চৌধুরী কানাডাতে অবস্থান করছেন। এ সম্পর্কেও সরকার মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু বাকি তিনজন খুনি কোথায় আছেন তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা যায়নি। যদিও কিছুদিন আগে রিসালদার মোসলেম উদ্দিনকে ভারতে আটক করা হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যে সমস্ত খুনিদের অবস্থান জানা গেছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছে।
বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী ১৯৯৬ সালে ব্রাজিল থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যায় এবং সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের চেষ্টা করলে তার আবেদন ২০০৪ সালে মঞ্জুর হয়। এরপর মার্কিন ডিপার্টমেন্টে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এর বিরুদ্ধে আপিল করে। দু`বছর আইনের লড়াইয়ের পর ২০০৬ সালে রাশেদ চৌধুরীর পক্ষে রায় দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চেয়ে অন্তত সাতবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ এবং ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিঠি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আর গত বছরের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এটর্নি জেনারেল রাশেদ যদি রাজনৈতিক আবেদন মঞ্জুর সংক্রান্ত কাগজপত্র পুনর্বিবেচনার জন্য চেয়ে পাঠিয়েছিলেন, বিভিন্ন আইনজীবীর কাছে এ বিষয়ে মতামত চেয়েছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো সমাধান হয়নি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এ ব্যাপারে সরকারকে আরো বেশি চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটি নিয়ে প্রচারণা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি নূর চৌধুরী ১৯৯৮ সাল থেকে কানাডায় অবস্থান করছেন। এই সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কানাডাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে নূর চৌধুরী এবং তার স্ত্রীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কানাডার আদালত। এখন কোন স্ট্যাটাস ছাড়াই কানাডায় অবস্থান করছেন নূর চৌধুরী। কিন্তু সমস্যা হলো যে কানাডায় মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ। আর এ কারণেই নূর চৌধুরীকে ফেরত দেয়া হচ্ছে না বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার থেকে এ ব্যাপারে আরও তৎপর উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি আব্দুর রশিদ এখন কোথায় আছেন সে সম্বন্ধে কোনো সুস্পষ্ট ধারণা নেই। তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে খুনি আব্দুর রশিদ এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন এবং পাকিস্তানি পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন। শরিফুল হক ডালিম ১৯৯৫ সালে কেনিয়ায় অবস্থানকালে অবসরে যান। বর্তমানে তার অবস্থান সম্পর্কে অনেকে নিশ্চিত না থাকলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে শরিফুল হক ডালিম এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ভারতে আছেন কিনা সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। ভারতে না থাকলে তার অবস্থান সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা দেখি যে প্রতিবছর আগস্ট মাস এলেই তাদের এই খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার নিয়ে বিভিন্ন রকম তৎপরতা হয়। কিন্তু এরকম মৌসুমি তৎপরতায় এই আত্মস্বীকৃত দণ্ডিত খুনিদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এজন্য একটি সুনির্দিষ্ট এবং সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।