নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে। যেকোনো সময়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি ঘোষিত হতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই তিনি এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলবেন এবং তার পরপরই সার্চ কমিটি গঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে। বর্তমান বিদায়ী নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল এবং আগামী নির্বাচন কমিশনও যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত হচ্ছে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত। যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে একটি আইন প্রণীত হওয়া দরকার। একই বক্তব্য দিয়েছে জাতীয় পার্টি। কিন্তু একটি আইন প্রণয়নের যে প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়া স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়। অন্যদিকে বিএনপিও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে তাকিয়ে আছে। বিএনপির গত ছয় দিনের বৈঠকে প্রধান বিষয় ছিল নির্বাচন এবং সেখানে তারা নির্বাচন কমিশন গঠন কিভাবে হয় সেটির পর নতুন করে আন্দোলন শুরু করার চিন্তা ভাবনা করছে বলে জানা গেছে। বিএনপি বলছে যে, যদি নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে বিএনপির মতামত না নেয়া হয় এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত না হয় সেক্ষেত্রে নির্বাচন নির্বাচন কমিশন নিয়েই বিএনপি আন্দোলন করবে।
তবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সদস্য কারা থাকতে পারেন এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় সুশীল সমাজও একটি ভূমিকা রাখে। এর আগে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বর্তমান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে নানা রকম অভিযোগ করেছিল। কাজেই নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সুশীল সমাজের একটি ভূমিকা থাকতেই পারে, বিশেষ করে তাদের মতামত থাকতে পারে। সুশীল সমাজের পছন্দের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন আলী ইমাম মজুমদার। তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন ওয়ান-ইলেভেনের সময়। আর এই কারণে সুশীল সমাজের সঙ্গে তার একটি সখ্যতা রয়েছে। তবে আলী ইমাম মজুমদার আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কারোরই পছন্দের ব্যক্তি নন। তবে তিনি নিরপেক্ষ একজন মানুষ হিসেবে পরিচিত।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগ প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে একজন আমলাকেই চান এবং বিচারপতিদের চেয়ে আমলাদের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনটিই বেশি কার্যকর বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন। আর সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পছন্দ সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। বিশ্ব ব্যাংক থেকে ফিরে এসে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার ব্যাপারে তাদের তেমন রিজার্ভেশন নেই। বিএনপি মনে করে যে, শুধু একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নয় পুরো নির্বাচন কমিশনের অবয়বটি দেখার বিষয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে বিএনপির পছন্দ একজন বিচারপতি। বিশেষ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে কাউকে বেছে নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন। তবে বিএনপির নেতারা সবসময় বলছেন যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশন গঠনের আলাপ-আলোচনাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, তারা খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রপতি সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করবেন। রাষ্ট্রপতি যেন সকলের মতামতের ভিত্তিতে কাজ করেন সেটি নিশ্চিত করার জন্য তারা অনুরোধ করবেন। পাশাপাশি বিএনপি মনে করছে যে, শেষ পর্যন্ত যদি সার্চ কমিটি গঠিত হয় তাহলে সার্চ কমিটি যেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যাপারে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়, সে ব্যাপারেও তারা আহ্বান জানাবে। বিএনপি মনে করছে যে, যদি সার্চ কমিটি গঠিত হয় তাহলে সেটি হবে প্রথম ফাঁদ। সার্চ কমিটিতে কারা থাকেন তার উপর নির্ভর করবে আসলে কি ধরনের নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। তবে নির্বাচন কমিশন নিয়েই রাজনীতিতে প্রথম উত্তাপ ছড়াবে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।