নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। এ নিয়ে সরকারের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনে আলোচনা হলো বেশ কদিন। কিন্তু এরপরে চাপা পড়ে গেল। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যেহেতু বিধান করা হয়েছে সেহেতু প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতেই হবে কিন্তু কবে হিসাব দেওয়া হবে, কিভাবে হিসাব দেওয়া হবে কিংবা এই হিসেব আদৌ জনসমক্ষে প্রকাশিতে হবে কিনা এ নিয়ে এখনো ধুম্রজাল রয়েছে। বরং ইস্যুটিকে ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা চলছে বলে কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি প্রথম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সফরে যান এবং সেখানে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন যে, দুর্নীতি কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এখন বেতন অনেক বাড়ানো হয়েছে। কাজেই যারা দুর্নীতি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী সরকারের আড়াই বছরের মাথায় জনপ্রশাসন দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে আবার আবার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন এবং তিনি বলেন যে, দুর্নীতি করলে কোনোভাবেই তা বরদাস্ত করা হবে না। এর মধ্যেই সরকার ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরিবিধির আলোকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পদের হিসাব দেওয়ার ব্যবস্থা পুনরায় প্রবর্তন করেন। অবশ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে যে, এটি পুনরায় প্রবর্তন করা হয়নি। ১৯৭৯ সালের বিধান কখনো রহিত ছিল না। কিন্তু এটি প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা দেখা হতো না। এখন এটি প্রতিপালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে জুন মাসে কিন্তু তারপরও এখন পর্যন্ত আমলাদের সম্পদের হিসেবের ক্ষেত্রে কি হল তা প্রকাশ হয়নি।
ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের ১১ জন সাংবাদিক নেতার ব্যাংক একাউন্ট চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে যে, যখন পেশাজীবীদের ব্যাংকের বিবরণী চাওয়া হচ্ছে তখন আমলাদের নয় কেন। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন অভিযোগ করেছিলেন যে, তারা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে কানাডায় বেগম পাড়ায় বাড়ি বেশি আমলাদের। তিনি বলেছেন যে, আগে আমরা মনে করতাম যে রাজনীতিবিদদের বোধহয় সেখানে বাড়িঘর বেশি। কিন্তু এখন আমরা দেখছি যে আমলাদের বাড়িঘরই বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায় যে, বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ যখন উঠে তখন প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে খুব নিবিড়ভাবে অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া যার সর্বশেষ উদাহরণ হলো শাহেদ কেলেঙ্কারি। রিজেন্ট হাসপাতালের সাথে চুক্তির ঘটনায় স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেছিলেন যে, তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক অনুরোধে তিনি এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু মামলার চার্জশিট যখন দুর্নীতি দমন কমিশন অনুমোদন করলো তখন সেখানে আসাদুল ইসলামের নাম ছিল না। শুধু এটিই প্রথম ঘটনা নয়, এর আগে দুর্নীতি এবং এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত আমলারাও বিচারের বাইরে থেকে গেছেন। একাধিক সচিবের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। দুর্নীতি দমন কমিশন এই জালিয়াতি তথ্য প্রমাণ পেয়েছিল কিন্তু তাদেরকে শুধুমাত্র চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই আমলারা বিচারের ঊর্ধ্বে থেকে যাচ্ছেন, এক ধরনের দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে যখন আমলাদের সম্পদের হিসেব চাওয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তখন বিভিন্ন মহলের মধ্যে একটি উৎসাহ তৈরি হয়েছিল যে, সরকার হয়তো স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর অগ্রগতি অন্ধকারেই রয়ে গেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত আমলাদের চাপে এই ঘোষণা কি বন্ধ হয়ে গেল কিনা সে প্রশ্ন উঠেছে আরো কারো কারো মধ্যে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।