নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৭ এএম, ১৭ অক্টোবর, ২০২১
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাস এবং অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি সারাবিশ্বে তুলে ধরতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
গতকাল শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ভবনে `বাংলাদেশ ১৯৭১ : শোক ও সকাল`- শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি আলোকচিত্রী মার্ক রিবুর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন তোলা বাছাইকৃত ৫০টি আলোকচিত্র নিয়ে মাসব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাঙালির সুদীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত আলোকচিত্র খুঁজে বের করে আমাদের নতুন প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে। এসময় তিনি এই প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
মার্ক রিবুর দুর্লভ এই আলোকচিত্রগুলো সংগ্রহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, বিভিন্ন দেশে অনুসন্ধান করে আমাদের মুক্তিসংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত ও দুর্লভ আরও আলোকচিত্র ও ভিডিওচিত্র খুঁজে পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্বশান্তি এবং শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের কথা উল্লেখ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোতে স্থাপিত মুজিব কর্ণারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ সারাবিশ্বের মানুষ আরও ভালোভাবে জানতে পারবে।
উদ্বোধনের পর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য বইতে উল্লেখ করেন, মার্ক রিবুর তোলা এই ছবিগুলো মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির ত্যাগ, সংগ্রাম ও দৃঢ়চিত্তের প্রতিচ্ছবি। এই আলোকচিত্রগুলো মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ঘটনা জানার পাশাপাশি গবেষণায় অনুপ্রেরণা যোগাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জ্যঁ মারা সু, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, ডা. সারওয়ার আলী এবং সারা যাকের উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি সোম থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মন্তব্য করুন
যুদ্ধের বাকি দিনগুলোর মতো এদিনও পাক বাহিনীর তাণ্ডবলীলা চলছিল। অন্যদিকে বাঙালীরাও তাদের যৎসামান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাক বাহিনীকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ঢাকায় নৃশংস গণহত্যার রেশ কাটেনি; শহর ছেড়ে গ্রামের পথে মানুষের ঢল। যারা পারছেন, সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পথচারীদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়েছে।
একাত্তরের ২৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে বিছিন্নভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাগুলি হয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রাজশাহী এবং সিলেটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় উদ্বেগে পড়ে হানাদারেরা।
সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে হেলিকপ্টারে করে তেজগাঁও বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। রাতে সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে তাকে করাচি নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর সহচর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ঢাকা থেকে ফরিদপুর পৌঁছান।
২৯ মার্চ রাতে ঢাকায় একশর মত বাঙালি ইপিআর সদস্যকে পাকিস্তানি সেনারা প্রেসিডেন্ট হাউস থেকে তিনটি দলে ভাগ করে রমনা কালীবাড়ির কাছে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
১৯৭১ সালের এদিন রাত দেড়টার দিকে আইনসভার সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে কুমিল্লার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় সেনারা। তাকে ও তার ছেলে দিলীপ কুমার দত্তকে আর কখনো পাওয়া যায়নি।
বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে ‘বিপ্লবী’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। এদিন স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে তিন বেলায় তিনটি অধিবেশন প্রচার করা হয়। মুক্তিকামী জনতার বাতিঘরের রূপ নেয় এই বেতার কেন্দ্র।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। হামলায় শহীদ হন একজন মুক্তিযোদ্ধা। সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনীর অ্যামবুশে নিহত হয় পাক বাহিনীর একটি দল।
মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভৈরব ও নরসিংদীর মধ্যে রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
চুয়াডাঙ্গায় থেকে মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ইপিআর, আনসার, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বাহিনী কুষ্টিয়ায় পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলা করে। পাকিস্তানি বাহিনী মর্টার, মেশিনগান নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালালে মুক্তি বাহিনী তিনভাগে ভাগ হয়ে আক্রমণ চালায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের সফল অভিযানে ৪০ জন পাকিস্তানি সৈন্য পাবনা থেকে গোপালপুরের পথে নিহত হয়। জীবিতদের অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে রাজশাহীর দিকে যাওয়ার পথে প্রাণ হারায়।
ময়মনসিংহে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল ব্যাটালিয়নের অফিসার এবং সৈনিকদের টাউন হলে একত্রিত করে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেজর কে এম সফিউল্লাহ।
পাকিস্তানি বাহিনী চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাইরে এসে মেডিকেল কলেজ ও নিকটবর্তী পাহাড়ে সমবেত হয়। সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানিরা প্রথম আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী সেই আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয়।
বিদ্রোহ মুক্তিযুদ্ধ সেনাবাহিনী
মন্তব্য করুন
বিএসএমএমইউ অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জাহিদ মালেক টিপু মুনশি ড. এ কে আব্দুল মোমেন
মন্তব্য করুন
যুদ্ধের বাকি দিনগুলোর মতো এদিনও পাক বাহিনীর তাণ্ডবলীলা চলছিল। অন্যদিকে বাঙালীরাও তাদের যৎসামান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাক বাহিনীকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ঢাকায় নৃশংস গণহত্যার রেশ কাটেনি; শহর ছেড়ে গ্রামের পথে মানুষের ঢল। যারা পারছেন, সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পথচারীদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক আজ দায়িত্ব নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, অধ্যাপক, নার্স সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন দিয়ে বরণ করে নেন। এটি একজন উপাচার্যের জন্য বড় প্রাপ্তি। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উপাচার্য হয়েছেন তারা কেউ এরকম রাজসিক অভ্যর্থনা পাননি। তাকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ অনেক উঁচুতে উঠে গেছে।