নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ অগাস্ট, ২০১৮
‘চামড়ার বাজার ধসের কয়েকটি কারণের মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ট্যানারি মালিকরা তিন চার বছর যাবত বকেয়া পরিশোধ করছে না। চামড়া ব্যবসার নিয়ম হলো প্রতি কোরবানির ঈদের সময় ট্যানারি মালিকরা আমাদের সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে দিবে। ঈদের পর থেকে আবার নতুন করে তাঁদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু হবে। এবছর মাত্র দুইটা ট্যানারি শতভাগ পাওনা পরিশোধ করেছে। ১০ টা ট্যনারির কেউ ২০% কেউ ৫০% টাকা দিয়েছে। বাকি ট্যানারিগুলো এবছর কোন টাকাই দেয় নাই।’
চামড়ার বাজার এমন ধসের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা ইনসাইডারকে একথা বলেন চামড়া আড়তদারদের সংগঠন হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।
কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে এবছর। বিগত ৩০ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া। কোরবানির পশুর চামড়া বেচাকেনায় সারা দেশে প্রায় একই পরিস্থিতি দেখা গেছে। লক্ষাধিক টাকার গরুর চামড়া এবছর হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়নি। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এ বছর চামড়ার ধস নিয়ে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
বর্তমান চামড়ার বাজার ধসের কারণ কি বলে মনে করছেন?
চামড়ার বাজার ধসের মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ট্যানারি মালিকরা আমদেরকে তিন চার বছর যাবত বকেয়া পরিশোধ করছে না। আমাদের চামড়া ব্যবসার নিয়ম হলো প্রতি কোরবানির ঈদের সময় ট্যানারি মালিকরা আমাদের সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে দিবে। ঈদের পর থেকে আবার নতুন করে তাদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু হবে। এবছর মাত্র দুইটা ট্যানারি শতভাগ পাওনা করেছে। ১০টা ট্যনারির কেউ ২০% কেউ ৫০% টাকা দিয়েছে। বাকি ট্যানারিগুলো এবছর কোনো টাকাই দেয় নাই আমাদেরকে। আমরা পাইকারি কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা অনেকেই পুঁজির অভাবে চামড়া কিনতে পারি নাই। যেহেতু পুঁজির অভাব তাই আমাদের মধ্যে এবছর চামড়া কেনার প্রতিযোগিতাও ছিল না প্রতিবছরের ন্যায়। কাঁচা চামড়ার পাইকারি ব্যবসায়ীদের যার কাছে যে পরিমাণ সীমিত টাকা ছিল তারা চামড়া কিনে ফেলার পর, তাদের আর চামড়া কেনার চাহিদা না থাকার কারণে চামড়ার দাম কমে যায়। এই সুযোগে আবার অনেক ট্যানারি মালিকরা নিজেরাই অনেক কম দামে সরাসরি চামড়া কিনে নিয়ে গেছেন।
ট্যানারি মালিকদের কাছে আপনাদের বকেয়া চাইলে তাদের বক্তব্য কি?
ট্যানারি মালিকরা আমাদেরকে টাকা না দেওয়ার কারণ বলছে, আমাদের কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের টাকা, ব্যাংকের টাকা এবং তাদের নিজস্ব পুঁজি সাভারে নতুন ট্যানারি স্থাপন করতে, ট্যানারির নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে তারা সব টাকা ব্যয় করে ফেলছে। তাই তাদের কাছে টাকা নেই, সেই কারণেই আমাদেরকে তারা বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে পারছেনা। যেটাই হোক মূল কথা হলো পুঁজির অভাবেই আজকে চামড়া শিল্পের এই অধপতন।
কোরবানির ঈদের আগে চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার কারণে কাঁচা চামড়ার ব্যবসার উপর কি কোনো প্রভাব পড়ছে?
পাঁচ-ছয় বছর আগে কখনো চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হত না। ওপেন মার্কেট থাকত। সবাই যে যার মত চামড়ার মান অনুযায়ী চামড়া কেনা বেচা করত। দেশি ট্যানারি মালিক বলেন আর বিদেশি ক্রেতা বলেন সবাই কিন্তু এক দামে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করে না। আবার সব পণ্যের মানও এক নয়। সরাসরি পশুর চামড়া ক্রয় করে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তারা একনজর দেখেই চামড়াটি কোনো কোয়ালিটি ও কত ফুট হবে তা বুঝতে পারে না। আমরা যারা দীর্ঘদিন এই চামড়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা কিন্তু একবার দেখেই বলে দিতে চামড়াটি কোন গ্রেডের এবং কত স্কয়ার ফুট হবে। আমরা সেভাবেই দাম নির্ধারণ করতে পারি কিন্তু মৌসুমী ব্যবসায়ীরাতো তেমন অভিজ্ঞ না। চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার কারণে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চামড়া শিল্পের বর্তমান এই অধপতন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু করণীয় আছে বলে, আপনি কি মনে করেন?
চামড়া শিল্প অনেক বড় একটা সেক্টর। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গার্মেন্টস শিল্পের পরেই চামড়া শিল্পের অবস্থান। বাণিজ্য, শিল্প, এবং অর্থ মন্ত্রণালয় এই তিন মন্ত্রণালয় এই চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো যদি চামড়া শিল্পের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করার চেষ্টা করে তাহলে ভালো হয়। এছাড়াও চামড়া শিল্পে সরকার ও ব্যাংকের যে বিনিয়োগ ট্যানারি মালিকরা তা সঠিকভাবে ব্যবহার করছে কি না তার তদারকি করা দরকার। ট্যানারি মালিকদের চামড়া শিল্পের উন্নয়নে কি কি প্রয়োজন সেগুলোও দেখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই সম্ভাবনাময় এই শিল্পের বিকাশ হবে।
চামড়ার দামে ধস ও ব্যবসায়ীদের বাকি পরিশোধ না করার বিষয়ে কথা বলার জন্যে ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদের সঙ্গে গতকাল শনিবার একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি আজ সকালে সময় দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু আজ রোববার সকাল থেকে তাঁর মোবাইলে একাধিকবার কল ও মেসেজ দিলেও তিনি কল ধরেননি এবং মেসেজেরও কোনো উত্তর প্রদান করেননি।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখতে মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা বাংলাদেশের জন্য সম্পদ। মূলত, তাদের পাঠানো কষ্টার্জিত অর্থে সচল রয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের লেনদেনের সুবিধার্থে টাকায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলে ধরা হলো-
মন্তব্য করুন
চলতি অর্থবছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। আর এটিই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা। এই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ১১টি প্রকল্প
অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও অনুমোদন পাচ্ছে আরো ৩০টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল
১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চলতি অর্থবছরের ৮ম একনেক সভা অনুষ্ঠিত
হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের
জন্য এরই মধ্যে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংশোধন এবং নতুন উন্নয়ন প্রকল্প
প্রস্তাব ১১টি।
এর বেশির ভাগই নতুন প্রকল্প। সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে চারটি।
অর্থাৎ নতুন প্রকল্প রয়েছে সাতটি। এর বাইরে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ৩০টি
প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করা হবে।
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভায় যেসব প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থানীয় সরকার বিভাগের। এই বিভাগের
রয়েছে তিনটি প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী
অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়) এবং অবকাঠামো, উন্নত
দক্ষতা এবং তথ্যে অ্যাকসেসের মাধ্যমে দুর্বলদের জন্য স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা (পোভার্টি)
(১ম সংশোধিত)।
এ ছাড়া একটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা
হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স,
আগারগাঁও, ঢাকায় স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি তৃতীয়
বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর বাইরেও একনেক সভার অবগতির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবিত ৩০টি প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ সংশ্লিষ্ট ১৪টি, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৯টি, শিল্প
ও শক্তি বিভাগের একটি এবং কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ছয়টি প্রকল্প।
একনেক জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সাথে একীভূত করার মধ্য দিয়ে ব্যাংকিং খাতে যে সঙ্কট তা নিরসনের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রহণ করেছে তার অংশ হিসাবে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক একটি শক্তিশালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে। এই ব্যাংকটির অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত দুর্বল এবং খেলাপি ঋণে ব্যাংকটি প্রায় দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ব্যাংকটির আর্থিক সঙ্কট এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যে, গত মাসে তারা তাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বেতন দিতে পারেনি। তিন শতাধিক কর্মচারী এই ব্যাংকে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই ব্যাংকটিকে একীভূত করার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলেই একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে আরও কিছুটা কমেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন স্থির হয়েছে ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গণনায় তা দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে। এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।