নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২১ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
নতুন করে আরও তিনটি ব্যাংক অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক তিনটি হলো বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগামী পর্ষদ সভায় ব্যাংক তিনটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদ সভায় নতুন তিন ব্যাংকের কার্যক্রম চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দেশে এই নিয়ে ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৬২টি। এখন কথা হলো, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের কর্মকাণ্ড কতোখানি আস্থাশীল আর আমরা জনগণ ব্যাংকের ওপর কতোটা ভরসা করতে পারছি?
সাম্প্রতিক সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ডুবতে বসা ফারমার্স ব্যাংক নিয়ে তোলপাড় চলেছে। এজন্য ব্যাংকটির নাম আর লোগো পরিবর্তনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়। লক্ষ্য ছিল গ্রাহকদের আস্থা ফেরানোসহ নিজেদের আমূল পরিবর্তন।
এ বছরের জানুয়ারিতে রাজধানীতে জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে ৬৫৭টি ভুয়া রপ্তানি বিলের বিপরীতে ১ হাজার ২শ’ ৯৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আসে ক্রিসেন্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে। কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগই এই অভিযোগ আনে। এছাড়াও, গত বছরের অক্টোবরে তদন্ত শুরু করার পর জনতা ব্যাংকের শাখা থেকে এই গ্রুপটির বিরুদ্ধে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায় দুদক। এখানেও জড়িত দেশের স্বনামধন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক।
এদিকে, ব্যাংকের ১২০০ কোটি টাকা লুটে নিয়ে বিসমিল্লাহ গ্রুপ গোপনে তাদের মালিকানা হাতবদল করে। ব্যাংকের এতোগুলো টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে রাজধানীর তিনটি থানায় মামলাও হয়। দুদকের নাকের ডগা দিয়ে এই কাজটি হয় জনতা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের মাধ্যমে। পরে ঋণ জালিয়াতি ফাঁস হওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করে।
এক সময়ের আদর্শ রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক দেউলিয়ার পথে নামে। গত ৮-৯ বছরে বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানির নামে আট হাজার কোটিরও বেশি টাকা পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে এই ব্যাংকের নামে। ব্যাংকটিকে বাঁচাতে বার বার জনগণের করের টাকাও দেওয়া হচ্ছে। গতবছর জুন মাসে ব্যাংকটিকে মূলধন ঘাটতি পূরণে এক হাজার কোটি টাকাও দেয় সরকার। আর গত ৪ বছরে বেসিক ব্যাংকের লোকসান হয়েছে ২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা।
আর সেই হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের নামের কথা আমরা তো এখনো ভুলে যাইনি। বিভিন্ন শীর্ষ মহলের আর্থিক স্বার্থের কারণেই হলমার্ক গ্রুপ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিপুল পরিমাণ ঋণ পেয়েছে, তা এখন বিভিন্ন সূত্রে বেরিয়ে আসে।
একটি দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর থেকে যখন জনগণের আস্থা আর আগ্রহ হারায়, তখন সেটা অর্থনীতির জন্য চরম হুমকিজনক হয়। তখন মানুষ নিজের অর্থ নিজের কাছে রাখতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। কেননা অর্থনৈতিক বিষয়ে মানুষ কখনো ঝুঁকি নিতে চায় না। যে ব্যাংক সুরক্ষা দিতে পারে, তার অবস্থাটা যদি এই হয় তবে ভরসার জায়গাটা শূন্যের কোঠায় চলে যায়। সারাবিশ্ব, দেশ এখন ডিজিটাল হচ্ছে, ই-ট্রেন্ডিং এগিয়ে যাচ্ছে তখন ব্যাংকের এই দৈন্যদশা মেনে নেওয়ার মতো না।
মানুষ কষ্টে উপার্জিত অর্থ যখন ব্যাংকে রাখতেই দ্বিধায় ভুগছে, ব্যাংকিং সেক্টরের এই বিপর্যয়ের মুখে তেমন কোনো পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়াই নতুন আরও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন কেন, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে। নতুন ব্যাংক তিনটি কেন, কার স্বার্থে, এর ফলে ঠিক কার উপকার হচ্ছে, এটা কতোটুকু প্রয়োজন- এই প্রশ্নগুলো বার বার ঘুরেফিরে আসছে। স্বয়ং সরকারও মনে করে এতো ব্যাংক মোটামুটি নিষ্প্রয়োজন। এতো ব্যাংকের নামে এতো কেলেঙ্কারির অভিযোগ, সেগুলোর প্রভাব যে সাধারণ জনগণের ওপরেও বর্তায়- সে দায় দায়িত্ব কে নেবে সেটাই প্রশ্ন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কথা জানিয়ে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে।
এর আগে ৯ এপ্রিল অর্থমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বলেছিলেন, তাঁরা বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চান না। বেসিক ব্যাংক শতভাগ রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। সরকারি এই ব্যাংককে বেসরকারি একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার খবরে তাঁরা ‘আতঙ্কগ্রস্ত’।
বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্তে আতঙ্কগ্রস্ত হয়েছেন বেসিক ব্যাংকের আমানতকারীরা। তাঁদের কেউ কেউ বেসিক ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিতে শুরু করেছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই আমানত বেশি সরিয়ে নিচ্ছে।
বেসিক ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে পাঁচ কার্যদিবসে ব্যাংকটি থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আমানত তুলে নেওয়া হয়েছে। আমানত তুলে নিতে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটিকে চিঠি দিয়েছে। এতে তীব্র তারল্যসংকটে পড়েছে ব্যাংকটি। এর ফলে বেসিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো নগদ জমা (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে পারছে না।
বেসিক ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকটিতে আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা, যা কমে এখন ১২ হাজার কোটি টাকায় নেমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণ ছিল ১২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণই ৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা বা ৬৪ শতাংশ।
বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) এ এম মোফাজ্জেল বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে সোনালী, জনতার মতো আমরাও রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক। এ কারণে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা আমাদের ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছে। বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার খবরে তারা টাকা তুলে নিতে শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, এ জন্যই সরকারি কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সরকারের কাছে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিচালনা পর্ষদ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে এটাই স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দাম নির্ধারণের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা। ভালো মানের স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও কমানো হয়েছে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম। সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের নতুন দাম হবে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা যা এতদিন ছিল ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।
এদিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
গত ৮ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমিয়েছিল বাজুস। যা ওইদিনই বিকেলে কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী আজ ৭টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ৮০ হাজার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে
(ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে
লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম
ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০
কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকালে বেশ কিছু ভালো কোম্পানির শেয়ারের
দাম কমেছে। ডিএসইতে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে এগিয়ে রয়েছে ওষুধ ও রাসায়নিক, প্রকৌশল,
ভ্রমণ, খাদ্য, সিরামিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো।
এ সময় লেনদেনে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রাসায়নিক খাতের কোম্পানি এশিয়াটিক
ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। দেড় ঘণ্টায় এটির ১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। লেনদেনে দ্বিতীয়
অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন সন লিমিটেড।
এ সময় এটির ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তৃতীয়
অবস্থানে থাকা ভ্রমণ খাতের কোম্পানি বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার
শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনটি সূচকই নিম্নমুখী ছিল। এদের মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে, ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ ছাড়া ডিএস ৩০ সূচক ২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকার।
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।