নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ১৩ অগাস্ট, ২০১৯
বছরে প্রায় ২২ থেকে ২৪ কোটি বর্গফুট চামড়ার যোগান আসে কোরবানির ঈদে জবাই করা পশুর চামড়া থেকে। যা গড় হিসাবের প্রায় ৬০ শতাংশ। এসব চামড়ার ২০ শতাংশ ব্যবহার হয় জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য তৈরীতে। চাহিদা বেশি থাকা সত্ত্বেও গত সাত বছরে ধাপে ধাপে কমেছে চামড়ার দাম। ২০১৩ সালে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। সেই চামড়ার দাম চলতি বছর ২০১৯ সালে এসে রাজধানী শহর ঢাকার জন্যে নির্ধারণ করা হয়েছে গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪৫-৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা। ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। তবে সরকার নির্ধারিত এসব মূল্য উপেক্ষা করে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে চামড়া আরও কমমূল্যে কেনারও সত্যতা পাওয়া গেছে।
এক হিসেবে দেখা গেছে রাস্তা থেকে টোকানো প্লাস্টিকের বোতল পথ শিশুরা বিভিন্ন ভাঙ্গারির দোকানে বিক্রি করে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা। এসব বোতল আবার কখনো ১৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়। সেক্ষেত্রে তিন কেজি প্লাস্টিকের বোতল বিক্রি করে কেনা যাবে এক বর্গফুট গরুর চামড়া আর ছাগলের চামড়া কেনা যাবে দুই বর্গফুট।
গত ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছর ২০১৯ সাল, এই সাত বছরে ধাপে ধাপে কমেছে চামড়ার দাম। ২০১৩ সালে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ছিলো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর ছাগলের চামড়ার দাম ছিলো ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ২০১৪ সালে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ছিলো ৭০ থেকে ৭৫ টাকা আর ছাগলের চামড়ার দাম ছিলো ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ২০১৫ সালে এসে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা আর ছাগলের চামড়ার দাম ছিলো ২০ থেকে ২৫ টাকা। ২০১৬ সালে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ছিলো ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ছাগলের চামড়ার দাম ছিলো ১৮ থেকে ২০ টাকা। এরপর ২০১৭-১৮ সালে গরুর চামড়ার দাম ছিলো প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে শুধু ২০১৮ তে এসে ছাগলের চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে ২ টাকা বেড়ে হয়েছিলো ২২ টাকা। তবে, ২০১৯ সালে এসে চামড়ার দরপতনে রেকর্ড গড়েছে। এবার প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা আর ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। অভিযোগ আছে সরকার নির্ধারিত এইসব চামড়ার দাম উপেক্ষা করে প্রান্তিক পর্যায়ে আরো কমদামে পশুর কাঁচা চামড়া কিনেছে ফড়িয়ারা।
কেন এই দরপতন?
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে লাভের আশায় যারা মৌসুমি চামড়া ব্যবসা করেন তাদের অনভিজ্ঞতার কারণে বিক্রেতারা চামড়ার সঠিকমূল্য পাচ্ছেন না। আবার যারা মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী তাদের সাথে আড়ৎদারদের সমন্বয় না থাকার কারণে এই প্রান্তিক ব্যবসায়ীরাও লাভে চামড়া বিক্রি করতে না পাড়ায় সব থেকে কম দাম পাচ্ছেন বিক্রেতারা। আরো বিশদভাবে বলতে গেলে, যেদিন মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া কেনেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা সেদিনই বিক্রি করতে না পারলে হতাশ হয়ে পড়েন এবং পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়ে যান। অথচ এই চামড়া যদি তারা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে সর্বচ্চ ১৫ দিন রাখতে পারেন তাহলেই লোকসানের মুখে পড়তে হবে না তাদের। এই পদ্ধতি অবলম্বন করলেই বাজারের পুঁজি নেই এমন অজুহাতে মধ্যসত্ত্বভোগীরা তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে কম দামে চামড়া কিনতে পারবেন না।
আবার কিছু সুত্র বলছে, কেন চামড়ার দাম এত কম সেটা অনেক জটিল সমীকরণ। মৌসুমি ব্যবসা হওয়ার কারণে এই চামড়ার ব্যবসাটা নিয়ন্ত্রণ হয় গুটিকয়েক মানুষের ইচ্ছের উপর। সরকারিভাবে জোরালো কোন তদারকির ব্যবস্থা না থাকায় চামড়া ব্যবসায় গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিণ্ডিকেট আর এই সিন্ডিকেটের ইচ্ছার উপরেই নির্ভর করে চামড়ার দাম বাড়বে না কমবে।
এদিকে চামড়ার দাম এত কম হওয়ার কারণ হিসাবে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কম বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ট্যানারী ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন।
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও লোক মুখে আলোচনা হচ্ছে চামড়াজাত পণ্যের দাম এত বেশি হলেও চামড়ার দাম এত কম কেন? এ বিষয়ে গত বছর একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার ও লেদার সামগ্রী প্রস্তুতকারক সমিতির তৎকালীন সভাপতি "কাঁচামালের সঙ্গে তৈরি হওয়া পণ্যের দাম মেলানো যাবে না। বিশেষ করে চামড়ার মতো কাঁচামাল অনেক হাত ঘুরে আমাদের কাছে আসে। এখন যে চামড়াটা আপনি তিনশো টাকায় বিক্রি হয়েছে বলছেন, সেটা কিন্তু আমাদের কাছে তখন সেটা দর অনেক বেড়ে যায়। আমরা সরকারি রেট অনুযায়ীই কিনছি।"
এর সঙ্গে সেটাকে প্রসেস করার, কারখানার, শ্রমিক খরচ যোগ হবে বলে তিনি বলছেন।
``এরপর সেই প্রসেসড চামড়াটা আরেকজন কিনে নিয়ে দেশী বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডারমতো সেটা দিয়ে জুতা, স্যান্ডেল বা ব্যাগ তৈরি করবে। তার কাছ থেকে সেসব ব্রান্ড এসব পণ্য কিনে নিয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করে। কারণ আন্তর্জাতিকভাবেই মনে করা হয়, কয়েকগুণ বেশি দাম না ধরা হলে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন না।`` তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ``একজোড়া জুতা বিদেশে রপ্তানি করা হয় হয়তো ১৪ বা ১৬ ডলারে, কিন্তু সেটাই হয়তো বায়ার তার দোকানে বিক্রি করছে ৮০ বা একশো ডলারে।``
সেখানেও তাদের অনেক খরচ রয়েছে বলে তিনি বলছেন। বিজ্ঞাপন, দোকানের খরচ, কর্মী ব্যয় এবং অনেক সময় জুতা বা পণ্য অবিক্রীত থেকে যায়, এসব খরচও সেখানে যোগ হয়।
তৈরি পোশাকসহ এ ধরনের সব ব্যবসাতেই এ ধরনের নিয়ম অনুসরণ করা হয় বলে তিনি বলছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুস
মন্তব্য করুন
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে চলমান
অর্থনৈতিক সংকট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২.৩০
শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও গত
অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। আগের বছর ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪১.৬৫
শতাংশ।
অর্থবছরের বাকি আছে আর তিন মাস থাকলেও এই সময়ের মধ্যে শতাংশের হিসাবে বাস্তবায়ন করতে হবে ৫৭.৭০ শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় করতে হবে এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এই সময়ের মধ্যে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন
পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে
এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থবছরের ছয় মাসে যেখানে অর্ধেকও বাস্তবায়ন
হয়নি, সেখানে মাত্র তিন মাসে কী করে ৫৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়
ও বিভাগকে জবাবদিহির আওতায় না আনলে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন কোনো অর্থবছরেই সম্ভব হবে
না।
আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি এডিপি
বাস্তবায়ন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির চলতি অর্থবছরে একটি প্রকল্পের
আওতায় বরাদ্দ ছিল ছয় কোটি ১৯ লাখ টাকা। ৯ মাসে তারা ব্যয় করেছে পাঁচ কোটি ৯৯ লাখ টাকা,
যা শতাংশের হিসাবে ৯৬.৮৫ শতাংশ। আর শতাংশের হিসাবে বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকলেও টাকা খরচে
এগিয়ে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিভাগটির ২৬৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪২
হাজার ৯৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
অর্থবছরের ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা
শতাংশের হিসাবে ৪৬.০৩ শতাংশ। এডিপি বাস্তবায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ
বিভাগ। চলতি অর্থবছরে তাদের বরাদ্দ ছিল ২৪২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে ৩৩
কোটি ৭২ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসাবে ১৩.৮৯ শতাংশ।
বিদ্যুৎ বিভাগের এডিপি বাস্তবায়নের হার ৬৩.৮৭ শতাংশ। বরাদ্দ ছিল
৩০ হাজার ৬৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ১৯ হাজার ২০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৮০৩ কোটি ৪৫ লাখ
টাকা। ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ১৭৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৪০.১৯ শতাংশ। পানি
সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ১১৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে সাত
হাজার ৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৫৩.৯৮ শতাংশ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ১৯২ কোটি
৭৫ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে চার হাজার ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন হার ৩২.৯৯ শতাংশ।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ৫০.৯২ শতাংশ। তাদের বরাদ্দ ছিল ৪৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বিপরীতে ৯ মাসে ব্যয় করেছে ২৩৪ কোটি ছয় লাখ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ২৪.৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা বিভাগের
বাস্তবায়ন হার ৩৮.৫৬ শতাংশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৪.৪২ শতাংশ। ইআরডির ৭১.৬৭ শতাংশ,
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২৩.৭৯ শতাংশ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৩১.৬৭ শতাংশ, অর্থ বিভাগের
৫০.০৮ শতাংশ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৩.৬৯ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৪৯.৯১ শতাংশ,
সেতু বিভাগের ৪৬.৬৮ শতাংশ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯.৪৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন কম হওয়ার বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বাস্তবায়ন হার বেশি। আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বসছি। যেসব প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আছে তাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প শেষ করছি। প্রকল্প পরিচালক দক্ষতা বাড়াতেও উদ্যোগ নিচ্ছি।’
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপি বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে
শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে ঢাকায় এসেছে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি মিশন। মিশনটি
গত ডিসেম্বর নাগাদ দেওয়া বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়ন ও সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে
আজ বুধবার থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে বসবে।
এসব বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাত
ও রাজস্ব সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেবে পর্যালোচনা দলটি বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা
গেছে।
আইএমএফ-এর এই প্রতিনিধি দলটি শুরুর দিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ
ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে বৈঠক করবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক,
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ কয়েকটি
সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। দলটি ঢাকায় থাকবে ৮ মে পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ এরই মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের
কাছে শতাধিক প্রশ্ন পাঠিয়েছে। সফররত মিশনটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার
জন্য জ্বালানি ভর্তুকি, সরকারি ঋণ, আসন্ন বাজেট ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর
পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করবে।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশের কর রাজস্ব জিডিপির অনুপাত ৮ থেকে
৯ শতাংশ। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচিতে রাজস্ব খাতে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আইএমএফ
প্রতিনিধি দল এ সফরে ব্যাংকিং খাতে বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব, ব্যাংক কোম্পানি আইন
বাস্তবায়নসহ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবে।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের
বৈঠকের এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক
কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেছিলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভের খুব বেশি উন্নতি হয়নি। আইএমএফ গত
বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। এরই মধ্যে
দুই কিস্তিতে ১১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মে মাস নাগাদ তৃতীয়
কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হতে পারে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট
সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেওয়ার কথা।
প্রাথমিকভাবে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত
সময়ে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা
দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভের উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশের
অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তা কমিয়ে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়। এর পরও বাংলাদেশ
লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫৮ মিলিয়ন ডলার পিছিয়ে ছিল।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন,
আইএমএফের ঋণের ১০টি শর্তের ৯টি পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাই ঋণের পরবর্তী কিস্তি
পেতে কোনো অসুবিধা হবে না। জানা গেছে, তৃতীয় কিস্তির জন্য নির্ধারিত ছয়টি পরিমাণগত
লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রিজার্ভ ছাড়া পাঁচটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গত
বছরের ডিসেম্বরে কর রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০
কোটি টাকা। সরকার এরই মধ্যে এটি পূরণ করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা।
আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূতকরণ বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
এর আগে গত তিনদিন পূর্বে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন দাম নির্ধারণের তিন দিন না যেতেই এবার আবারও স্বর্ণের দাম কমালো দেশের বাজারে স্বর্ণের মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে বাজুস। এদিন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৯ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫৬৬ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৭৬ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে ক্রেতাদের। কারণ বাজুসের নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে এক লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ টাকা।
স্বর্ণ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বাজুস
মন্তব্য করুন
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে চলমান অর্থনৈতিক সংকট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২.৩০ শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও গত অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। আগের বছর ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪১.৬৫ শতাংশ।
ব্যাংক একীভূত হওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ভাবে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয় বলে মনে করছে ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রক এই প্রতিষ্ঠানটি। আর এটি দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্পষ্টীকরণ বিজ্ঞপ্তি করেছে।
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।