নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
নানা ঘটনা আর বাক বদলের মধ্য দিয়ে শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছে ২০১৯। বিশ্বরাজনীতিতে বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত এ বছর অর্থনীতিতেও ছাপ ফেলেছে। দরজায় যখন ২০২০ কড়া নাড়ছে, তখন বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা। বিশ্বের অন্তত ১১ টি বড় অর্থনীতির দেশে মন্দার আভাস ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যা ২০০৯ সালের পর আরেকটি বৈশ্বিক মন্দার হাতছানি দিচ্ছে। এ দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেন, ইতালি, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, মেক্সিকো, ব্রাজিল, সিঙ্গাপুর ও হংকং ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৯ এ বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৩.২ শতাংশ। যা ২০০৯ সালের পর সর্বনিম্ন। আর ২০২০ সালেও প্রবৃদ্ধি থাকবে ৩ এর ঘরে। ব্যাংক অব আমেরিকাও একটি বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধসহ বেশ কিছু কারণে বিশ্বজুড়ে শিল্পোৎপাদন কমেছে, করপোরেট আস্থা কমেছে, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিও কয়েক বছরে সর্বনিম্ন। এ অবস্থায় ২০০৯ এর পর ২০২০ এ বিশ্বে আরেকটি মন্দার কবলে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর বিজনেস ইকোনমিস্ট (এনএবিই) এক জরিপে জানিয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র মন্দায় পড়তে যাচ্ছে। যার ফলে আক্রান্ত হবে গোটা বিশ্ব। বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আক্রান্ত হয়েছে। আর ইউরোপের অর্থনীতিতে আচড় কাটছে ব্রেক্সিট ইস্যু। অন্যদিকে সৌদি-ইরান উত্তেজনার প্রভাব পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ জার্মানিকে বলা হয় ইউরোজোনের প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বান্ডেজ ব্যাংক ইতিমধ্যেই মন্দার সতর্কতা জারি করেছে। বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধে রপ্তানি কমেছে জার্মানির। এতে করে পুরো ইউরোপের অর্থনীতিই কৌশলগতভাবে মন্দায় পড়তে যাচ্ছে। এ অবস্থায় মন্দা এড়াতে বার্লিনকে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
ইউরোজোনের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ ইতালির উৎপাদনশীলতাও এ বছর কমেছে। উচ্চ বেকারত্ব ও ব্যাপক সরকারি ঋণের পাশাপাশি দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। দেশটি গত বছর মন্দায় পড়েছিল। এবারও একই অবস্থা। তাছাড়া ইতালির অনেক পণ্য জার্মানি যায়, ফলে জার্মানির মন্দা ইতালিকেও ভোগাবে।
ইউক্রেন সংকটকে ঘিরে আমেরিকা ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দরপতনে কয়েক বছর যাবৎই নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে রাশিয়া। এ বছরও অবস্থা বদলানোর কোনো ইঙ্গিতই মিলছে না।
বিশ্ব অর্থনীতির আরেক শক্তিধর দেশ দক্ষিণ কোরিয়া এ বছরের প্রথমভাগে একটি মন্দা এড়াতে সক্ষম হয়েছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি ০.৪ শতাংশ সংকুচিত হয়। সৌভাগ্যবশত দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে ১.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ফেরে। কিন্তু বহির্বিশ্বে পণ্যের চাহিদা কমার পাশাপাশি জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে সংকটে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএনজি জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির ইলেকট্রনিকস রপ্তানি প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।
অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী মেক্সিকোও। দেশটির সেবাখাতে আয় কমেছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি ০.২ শতাংশ সংকুচিত হয়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে মন্দা এড়ানো গেলেও দেশটিতে বিনিয়োগ ও ব্যাবসায়িক আস্থা কমেছে।
লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক দেশ ব্রাজিলে শিল্পোৎপাদন কমার পাশাপাশি বেকারত্ব বেড়েছে ব্যাপকভাবে। দেশটির অর্থনীতি ০.২ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ২০২০ এ দেশটির অর্থনীতি বড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিঙ্গাপুর ও হংকং ছোট অর্থনৈতিক দেশ হলেও এখনো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এ দেশগুলোও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভুগছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে ৩.৩ শতাংশ সংকুচিত হয়। আর হংকংয়ে টানা কয়েক মাসের বিক্ষোভের ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।
অর্থনীতির আরেক পরাশক্তি ভারত চলতি বছরের শুরু থেকেই ধুঁকছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) গত বুধবার প্রকাশিত রিপোর্টে জানিয়েছে ভারতের অর্থনীতি মন্দার মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এডিবি জানায়, আগামী অর্থবছরে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি পাঁচ দশমিক এক শতাংশের আশেপাশে থাকবে। ভারতে বেকার সমস্যা আগামী বছর আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আভাস মিলছে। এ অবস্থায় ২০২০ সালে ভারতের অর্থনীতি বড় চাপের মুখে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বের এই বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মন্দার ধাক্কা ছোট দেশগুলোর ওপরও পড়বে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে ২০২০ সালটা বৈশ্বিক মন্দার হুমকি নিয়েই আসছে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখতে মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা বাংলাদেশের জন্য সম্পদ। মূলত, তাদের পাঠানো কষ্টার্জিত অর্থে সচল রয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের লেনদেনের সুবিধার্থে টাকায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলে ধরা হলো-
মন্তব্য করুন
চলতি অর্থবছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। আর এটিই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা। এই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ১১টি প্রকল্প
অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও অনুমোদন পাচ্ছে আরো ৩০টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল
১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চলতি অর্থবছরের ৮ম একনেক সভা অনুষ্ঠিত
হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের
জন্য এরই মধ্যে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংশোধন এবং নতুন উন্নয়ন প্রকল্প
প্রস্তাব ১১টি।
এর বেশির ভাগই নতুন প্রকল্প। সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে চারটি।
অর্থাৎ নতুন প্রকল্প রয়েছে সাতটি। এর বাইরে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ৩০টি
প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করা হবে।
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভায় যেসব প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থানীয় সরকার বিভাগের। এই বিভাগের
রয়েছে তিনটি প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী
অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়) এবং অবকাঠামো, উন্নত
দক্ষতা এবং তথ্যে অ্যাকসেসের মাধ্যমে দুর্বলদের জন্য স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা (পোভার্টি)
(১ম সংশোধিত)।
এ ছাড়া একটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা
হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স,
আগারগাঁও, ঢাকায় স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি তৃতীয়
বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর বাইরেও একনেক সভার অবগতির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবিত ৩০টি প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ সংশ্লিষ্ট ১৪টি, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৯টি, শিল্প
ও শক্তি বিভাগের একটি এবং কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ছয়টি প্রকল্প।
একনেক জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে আরও কিছুটা কমেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন স্থির হয়েছে ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গণনায় তা দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে। এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।