নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৯ পিএম, ০২ জানুয়ারী, ২০২০
অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়ে গেছে এশিয়ার দুই পরাশক্তি চীন এবং ভারত। দুই দেশের অর্থনীতিই এখন নিম্নমুখী। বিশ্ব অর্থনীতিও মহামন্দার আশঙ্কায় ঠক ঠক করে কাঁপছে। বাংলাদেশও এর বাইরে থাকছে না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছাড়া অর্থনীতির সব সূচকই এখন নেতিবাচক ধারায় নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, যেসব সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলে অর্থনীতির গতি সঞ্চার হয়, সেই সূচকগুলো এখন নিম্নমুখী। আর যেসব সূচক নিম্নমুখী হলে অর্থনীতির ভিত শক্ত হয়, সেগুলো এখন ঊর্ধ্বমুখী। গত ১০ বছরে দেশের অর্থনীতি তরতর করে এগিয়ে প্রবৃদ্ধির নতুন রেকর্ড গড়েছে। এ বছর এর উল্টো পিঠ দেখার শঙ্কার কথা জানাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের দেশে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এত দিন আমদানি বাড়ার একটা প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। তবে এখন সেটাও কমেছে। শিল্প খাতের প্রধান উপকরণ মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানিও কমে গেছে। রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও একই চিত্র।
গত বছরের অক্টোবরে ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা ২০১৮ সালের অক্টোবরের চেয়ে ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। গত অক্টোবর মাসের ১ থেকে ২৮ অক্টোবর সময়ে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ২২ শতাংশ। অথচ ২০১৮ সালের এ সময়ে ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
গত বছর জুলাই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৯৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগস্ট শেষে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৯ কোটি ডলার। আর সেপ্টেম্বর শেষে এটি দাঁড়িয়েছে ৩৭১ কোটি ৭০ লাখ ডলারে। বৈদেশিক বাণিজ্যে স্থবিরতার কারণে কমে গেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। ২০১৯ এর ৩০ সেপ্টেম্বরের তুলনায় আগের বছরের একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ২০১৭ সালের গত ২২ জুন অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এরপর প্রতিবারই আকু’র বিল শোধের পর রিজার্ভ নেমে আসে। ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়নি। কিন্তু গত ১৪ নভেম্বর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। কমে গেছে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি। শুধু তাই নয়, কমে গেছে রাজস্ব আদায়ও। মূল্যস্ফীতি এখন উর্ধ্বমুখী। ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বাড়ছে ভয়ঙ্করভাবে। পতন হতে হতে একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে দেশের পুঁজিবাজার। এ অবস্থায় একটি মন্দা আসন্ন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
তবে আশার কথা হলো, সারা বিশ্বেই যখন অর্থনৈতিক মন্দাভাব বিরাজ করছে, তখন বাংলাদেশের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো। ভারত ও চীনের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। ২০০৮ সালে যখন বিশ্বমন্দা এসেছিল তখনও ভালো অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর এবার মহামন্দার শঙ্কা যখন প্রবল, তখন আগাম প্রস্তুতি নিয়ে যথাযথ উদ্যোগের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
চলতি অর্থবছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। আর এটিই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা। এই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ১১টি প্রকল্প
অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও অনুমোদন পাচ্ছে আরো ৩০টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল
১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চলতি অর্থবছরের ৮ম একনেক সভা অনুষ্ঠিত
হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের
জন্য এরই মধ্যে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংশোধন এবং নতুন উন্নয়ন প্রকল্প
প্রস্তাব ১১টি।
এর বেশির ভাগই নতুন প্রকল্প। সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে চারটি।
অর্থাৎ নতুন প্রকল্প রয়েছে সাতটি। এর বাইরে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ৩০টি
প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করা হবে।
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভায় যেসব প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থানীয় সরকার বিভাগের। এই বিভাগের
রয়েছে তিনটি প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী
অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়) এবং অবকাঠামো, উন্নত
দক্ষতা এবং তথ্যে অ্যাকসেসের মাধ্যমে দুর্বলদের জন্য স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা (পোভার্টি)
(১ম সংশোধিত)।
এ ছাড়া একটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা
হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স,
আগারগাঁও, ঢাকায় স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি তৃতীয়
বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর বাইরেও একনেক সভার অবগতির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবিত ৩০টি প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ সংশ্লিষ্ট ১৪টি, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৯টি, শিল্প
ও শক্তি বিভাগের একটি এবং কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ছয়টি প্রকল্প।
একনেক জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন বা দশ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণের স্থিতিছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন (১০ হাজার ৬৪ কোটি) ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। দেশের মোট বিদেশি ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার। বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার।