নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২০
করোনা ভাইরাসের আগমন ঘটতে না ঘটতেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, ২০০৮ সালের পর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মন্দার কবলে পড়তে পারে এই করোনা ভাইরাসের কারণে। যদিও কিছু অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, করোনা ভাইরাসের আগে থেকেই বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল। করোনা ভাইরাসের প্রকোপে তা প্রকট হতে পারে। বাংলাদেশে এক যুগ পর একটি অর্থনৈতিক সংকট দৃশ্যমান হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হয়েছে তার ৫ টি প্রকরণ রয়েছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। প্রকরণগুলা হলো;
ব্যাংকগুলোতে তারল্যের সংকট
কিছুদিন ধরেই ব্যাংকগুলো অর্থসংকটে ভুগছিল এবং খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা। ব্যাংকিং খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ফলে ব্যাংকিং খাত এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এর ওপরে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ব্যাংকগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক করে দিতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। ব্যাংকগুলোর এই নাজুক অবস্থা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অভিবাসী রেমিটেন্স কমেছে
করোনা ভাইরাসের কারণে গত এক মাসে ব্যাপকভাবে অভিবাসী রেমিটেন্স কমেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। এই করোনা ভাইরাস যদি আরো এক মাস বা তারও বেশি সময় দীর্ঘ হয় তাহলে বাংলাদেশের রেমিটেন্সের ওপর এটি একটি বড় আঘাত আনতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাতগুলোর অন্যতম হলো বৈদেশিক রেমিট্যান্স।
গার্মেন্টস এবং রপ্তানি আয়ে স্থবিরতা
করোনা ভাইরাসের কারণে ইতিমধ্যে গার্মেন্টস খাতসহ রপ্তানি আয়ে একটা স্থবিরতা তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের বাজার বাংলাদেশ হারাতে বসেছে। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনেকগুলো অর্ডার ইতিমধ্যে বাতিল হয়েছে। আরো কিছু অর্ডার বাতিল হতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। এরফলে বাংলাদেশে গার্মেন্টস এবং রপ্তানি আয়ে যদি এই সংকট দীর্ঘমেয়াদি হয় তাহলে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বমন্দার প্রভাব
করোনা ভাইরাসের কারণে ইতিমধ্যেই বিশ্বমন্দা শুরু হয়ে গেছে। অধিকাংশ বড় দেশের শেয়ার মার্কেটের টালমাতাল অবস্থা। অধিংকাশ দেশগুলো তাদের দেশের নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা দিতে গিয়ে যে অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে তার প্রভাব উন্নত দেশগুলোতেও পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাঝারি শিল্পের সংকট
করোনা ভাইরাসের কারণে ইতিমধ্যেই ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের সংকট দেখা দিয়েছে। স্থবির একটা অবস্থা তৈরী হয়েছে। ৮ মার্চের পর থেকে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটায় ঝোক বাড়িয়েছে। ফলে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের যে একটি চাঞ্চল্য ছিল তা থেমে গেছে। এটা যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় তাহলে বেকারত্বসহ চাকরি থেকে ছাটাই এবং তারল্য সংকটের মধ্যে পড়বে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। এটির প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে পড়তে বাধ্য। কারণ বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প আমাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি।
এছাড়াও আমাদের পর্যটনশিল্প, বিমান ও পরিবহন খাত, রেস্তোরা ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংকট তৈরী হবে। এই সংকট সামষ্টিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে। সামষ্টিগতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি নেতিবাচক অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এটা মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশে কি প্রস্তুতি সেটাও খুব দ্রুতই জনসম্মুখে প্রকাশ করা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এতে জনগন আশ্বস্ত হবে এবং এখন থেকেই এই অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলার কৌশল বের করা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখতে মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা বাংলাদেশের জন্য সম্পদ। মূলত, তাদের পাঠানো কষ্টার্জিত অর্থে সচল রয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের লেনদেনের সুবিধার্থে টাকায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলে ধরা হলো-
মন্তব্য করুন
চলতি অর্থবছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। আর এটিই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা। এই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ১১টি প্রকল্প
অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও অনুমোদন পাচ্ছে আরো ৩০টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল
১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চলতি অর্থবছরের ৮ম একনেক সভা অনুষ্ঠিত
হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের
জন্য এরই মধ্যে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংশোধন এবং নতুন উন্নয়ন প্রকল্প
প্রস্তাব ১১টি।
এর বেশির ভাগই নতুন প্রকল্প। সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে চারটি।
অর্থাৎ নতুন প্রকল্প রয়েছে সাতটি। এর বাইরে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ৩০টি
প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করা হবে।
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভায় যেসব প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থানীয় সরকার বিভাগের। এই বিভাগের
রয়েছে তিনটি প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী
অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়) এবং অবকাঠামো, উন্নত
দক্ষতা এবং তথ্যে অ্যাকসেসের মাধ্যমে দুর্বলদের জন্য স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা (পোভার্টি)
(১ম সংশোধিত)।
এ ছাড়া একটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা
হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স,
আগারগাঁও, ঢাকায় স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি তৃতীয়
বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর বাইরেও একনেক সভার অবগতির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবিত ৩০টি প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ সংশ্লিষ্ট ১৪টি, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৯টি, শিল্প
ও শক্তি বিভাগের একটি এবং কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ছয়টি প্রকল্প।
একনেক জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন বা দশ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণের স্থিতিছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন (১০ হাজার ৬৪ কোটি) ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। দেশের মোট বিদেশি ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার। বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার।