নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৬ পিএম, ০৭ মে, ২০২০
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস হানা দেওয়ার অর্থাৎ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ২ মাস হলো আজ। এই দুই মাসের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে দেশে চলছে সাধারণ ছুটি বা লকডাউন। যেকোনো দেশে এক দু’দিন সবকিছু বন্ধ থাকলেই বিশাল আর্থিক ক্ষতি হয়ে যায়, আর এত সময় ধরে সেটা চললে ক্ষতির পরিমাণটা যে আকাশচুম্বী হবে, তা খুব সহজেই অনুমান করা যায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, অর্থনীতি হলো একটা দেশের শিরদাঁড়ার মতো। যে দেশের অর্থনীতি যত শক্তিশালী, সে দেশের শিরদাঁড়া তত মজবুত। আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও সে দেশ সহজে মাথানত করে না। আর বিশ্ব পরাশক্তিগুলোও সেই দেশকে সমঝে চলে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশের এই শিরদাঁড়াটাই একটু একটু করে মজবুত হচ্ছিল। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তড়তড় করে এগিয়ে যাচ্ছিল এদেশ। আর বিশ্ব নতুনভাবে বাংলাদেশকে চিনতে বাধ্য হচ্ছিল। কিন্তু করোনার আঘাতে বাংলাদেশের সেই শিরদাঁড়াটাই কি নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে? হলে সেটা কতটা, সেটাই একটু দেখে নেওয়া যাক-
কৃষি, সেবা ও শিল্প খাত
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতিটি খাত গত দু মাসে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মোটা দাগে- কৃষি, সেবা এবং শিল্প খাতে ভাগ করা হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেব অনুযায়ী, দেশের অর্থনীতিতে এখন সেবা খাতের অবদান প্রায় ৫০ শতাংশ। এছাড়া শিল্পখাত ৩৫ শতাংশ এবং কৃষির অবদান এখন ১৪ শতাংশের মতো।
কৃষি মৎস ও প্রাণিসম্পদ খাতে অর্থনৈতিক অবরুদ্ধ অবস্থার কারণে প্রতিদিন ২শ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে, শিল্প খাতে অনুমিত ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ১শ ৩১ কোটি টাকা। আর সেবা খাতে, প্রতিদিনের ক্ষতি হচ্ছে ২০০০ কোটি টাকা।
ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বেহাল দশা
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৮০ লক্ষ শিল্প উদ্যোগ আছে। এর মধ্যে ৯৮ শতাংশই হচ্ছে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নিজস্ব হিসেবে সারাদেশে ৫৬ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানে দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা।
পোশাক রপ্তানি
বাংলাদেশে করোনা হানা দেওয়ায়র পর যেই খাতটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে সেটা হলো তৈরি পোশাক শিল্প খাত। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, করোনাভাইরাস বিস্তারের সময় থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত, অর্থাৎ গত দুইমাসে তাদের তিনশ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাংলাদেশ এই খাতে স্থায়ীভাবে পঙ্গু হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনায় ভিয়েতনাম অনেক ভালো অবস্থানে আছে। আর চীনেরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, এরকম অবস্থায় বাংলাদেশের অনেক বড় ক্রেতারা ভিয়েতনাম, চীন এমনকি ভারতেও চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রবাসী আয়
করোনায় গার্মেন্টস শিল্পের ক্ষতি নিয়ে অনেক কথাবার্তা হলেও প্রবাসী আয় নিয়ে তেমন কোনো কথা হচ্ছে না। কিন্তু এই খাতটি করোনার ফলে মহাসংকটে পড়তে যাচ্ছে বলের মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এপ্রিলে বাংলাদেশে প্রবাসীরা টাকা পাঠিয়েছেন গেলো বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ ভাগ কম। ফলে প্রায় আড়াই বছর পর প্রবাসী আয় নেমে আসে বিলিয়ন ডলারের নিচে। দেশের আমদানি, রপ্তানি মুখ থুবড়ে পড়েছে আরো আগেই। সাম্প্রতিক তথ্য উপাত্ত বলছে, আশংকাজনক ভাবে কমছে অর্থনীতির বড় শক্তি প্রবাসী আয়ও। করোনার কারণে এ বছরের প্রথম ৩ মাসে দেশে ফিরে এসেছিলেন প্রায় ৭ লাখ বাংলাদেশি। হিসাব বলছে, বাকি যে ৯৩ লাখের মত প্রবাসী বিভিন্ন দেশে রয়ে গিয়েছেন, কমেছে দেশে তাদের টাকা পাঠানোর পরিমাণও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এ বছরের প্রথম ২ মাসেও প্রবাসী আয় এসেছিল গেল বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। তবে এপ্রিলে যা কমেছে প্রায় ৩৫ ভাগ। এসেছে ৯৫ কোটি ডলারের মতো। গেল বছরের একই সময়ে যা ছিলো ১৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।
বেকার হবে দেড় কোটি
করোনার কারণে অভ্যন্তরীণ ও রফতানিমুখী দুই ধরনের অর্থনীতিতেই স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে। এই স্থবিরতার প্রভাব অচিরেই গিয়ে পড়বে চাকরির বাজারে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস কারণে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিশ্বে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ তাদের পূর্ণকালীন চাকরি হারাতে যাচ্ছেন। আর বাংলাদেশে এই সংখ্যাটা দেড় কোটি হতে পারে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই দেড় কোটি মানুষ চাকরি হারালেও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে অন্তত ৫ কোটি মানুষ (প্রতি পরিবারে গড়ে ৪ জন করে সদস্য)।
করোনায় বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতির হিসেব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের জানিয়েছে সাধারণ ছুটির প্রথম একমাসে দেশের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ১ লাখ ২ হাজার ৩শ কোটি টাকা। যা দৈনিক কমপক্ষে ৩৩০০ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮.২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাংক এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে প্রবৃদ্ধি কমে ২-৩ শতাংশে নেমে আসবে। তারা বলছে, এই মহামারি যদি দীর্ঘ সময় ধরে চলে এবং সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তাহলে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হবে যা বাংলাদেশে -৫.২ পর্যন্ত হতে পারে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে এটাই স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দাম নির্ধারণের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা। ভালো মানের স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও কমানো হয়েছে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম। সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের নতুন দাম হবে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা যা এতদিন ছিল ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।
এদিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
গত ৮ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমিয়েছিল বাজুস। যা ওইদিনই বিকেলে কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী আজ ৭টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ৮০ হাজার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে
(ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে
লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম
ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০
কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকালে বেশ কিছু ভালো কোম্পানির শেয়ারের
দাম কমেছে। ডিএসইতে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে এগিয়ে রয়েছে ওষুধ ও রাসায়নিক, প্রকৌশল,
ভ্রমণ, খাদ্য, সিরামিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো।
এ সময় লেনদেনে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রাসায়নিক খাতের কোম্পানি এশিয়াটিক
ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। দেড় ঘণ্টায় এটির ১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। লেনদেনে দ্বিতীয়
অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন সন লিমিটেড।
এ সময় এটির ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তৃতীয়
অবস্থানে থাকা ভ্রমণ খাতের কোম্পানি বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার
শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনটি সূচকই নিম্নমুখী ছিল। এদের মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে, ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ ছাড়া ডিএস ৩০ সূচক ২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকার।
মন্তব্য করুন
বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে
চাচ্ছেন না সরকারি বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে
একীভূত হওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
একই দাবিতে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
সরকারি বলে স্বীকারই করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
গভর্নরকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলেন, দেশের ক্ষুদ্র শিল্পে অর্থায়নের লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে
বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হয়, যা ১৯৯২ সালে শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন
ব্যাংক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে এটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক
হিসাবে সরকারি আর্থিক সেবা দিয়ে আসছে, যা ২০১৫ সালে পুরোপুরি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক
ব্যাংক হিসাবে রূপান্তরিত হয়। বেসিক ব্যাংক প্রথম দিকে সরকারি খাতের ব্যাংক হিসাবে
অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করেছে এবং সরকারকে বিপুল অঙ্কের মুনাফা
দিয়েছে, যা অন্যান্য ব্যাংকের কাছে ছিল উদাহরণ। শেষের দিকে এসে ব্যাংকটি দুর্ঘটনার
শিকার হয়। বেসিক ব্যাংকে অন্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের অনুরূপ চাকরি বিধিমালা
অনুসরণ করা হয়, যা বেসরকারি মালিকানার ব্যাংকের সঙ্গে পুরোপুরিভাবেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের গ্রেড নির্ধারণ
এবং বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রদান করা হয়।
পাশাপাশি বলবৎ রয়েছে কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের
পেনশন সুবিধা। এছাড়া, বেসিক ব্যাংকে নিয়োগ ও পদন্নোতিতে সম্পূর্ণরূপে সরকারি ব্যাংকের
অনুরূপ বিধিবিধান অনুসরণ করা হয়। এছাড়া বেসিক ব্যাংকে ১২তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীগণের
স্থায়ী চাকরি বিদ্যমান রয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বেসিক ব্যাংকে
সরকারি শ্রম অধিদপ্তর অনুমোদিত ও রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) কার্যক্রম
চলমান রয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যাংকিং
খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত একীভূতকরণের পদক্ষেপকে বেসিক ব্যাংকের
কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি টেলিভিশন, অনলাইন
ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের বরাতে জানতে পারি যে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী
ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাষ্ট্র মালিকানাধীন
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক মার্জারের
পরিকল্পনা করা গ্রহণ করা হয়েছে, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, বেসরকারি মালিকানাধীন সিটি
ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক মার্জারের বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে
তা একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অযৌক্তিক।
যেখানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ
ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক অন্য দুটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন
ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হতে চলেছে সেখানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে কেন বেসরকারি
খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে মার্জারের আলোচনা চলছে? মার্জার প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই বৈষম্য
কাম্য নয়। এ ধরনের বৈষম্যনীতি পরিহার করে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট
ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মার্জার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে অন্য একটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের
সঙ্গে মার্জারের জন্য আবেদন জানানো হয়।
দেশের অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের ন্যয়
শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা
পরিচালক এবং সিইও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উল্লিখিত বিষয়গুলোর সঙ্গে
বেসরকারি কোনো ব্যাংকের সামঞ্জস্যতা নেই। ইতোমধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অনেকেই
সরকারি ব্যাংকের পদোন্নতির অধীনে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের
গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা
পরিচালক পদে পদায়নের পর কয়েক মাস আগে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি হিসাবে নিয়োগ
দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রূপালী ব্যাংক ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে দুজনকে ডিএমডি হিসাবে, একজনকে
জনতা ব্যাংকে এবং দুজনকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে জিএম হিসাবে পদায়ন করা হয়।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বেসিক
ব্যাংকেরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি নন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও
নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, বেসিক সরকারের কোনো ব্যাংক অর্ডারের দ্বারা
স্থাপিত ব্যাংক নয়। সোনালী ব্যাংকের যেমন ব্যাংক অর্ডার আছে, বেসিকের তেমন নেই। একটা
আইন দ্বারা কিন্তু সোনালী, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত। বেসিক ব্যাংক কোনো আইন
দিয়ে প্রতিষ্ঠিত নয়। সরকার যেমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ড করে, তেমনি বেসিকেরও
শেয়ার হোল্ড করে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি আর বেসিকের মধ্যে
পার্থক্য হচ্ছে সরকার যেটা রেভিনিউ থেকে দেয় সেটাই কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠান আছে সরকারের কমার্শিয়াল কাজের জন্য স্টাবলিস্ট করা। বেসিকও তেমন একটা প্রতিষ্ঠান।
বেসিক স্পেশালাইজ একটা ব্যাংক ছিল যেটা একটা বিশেষ উদ্দেশ্য গঠন করা হয়েছিল। এটা কিন্তু
ব্যাংক হিসাবে সরকারের আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয়।
একীভূতকরণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত উচ্চ
আদালতে: ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। তিনি বলেন, এটা একটা লং টার্ম প্রসেস। এটা
পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া অতিক্রম হতে হবে। বেশকিছু পদক্ষেপের পর
চূড়ান্তের বিষয় আছে। এখানে আইনগত বিষয় আছে, অডিটের বিষয় আছে। মার্জারের বিষয়ে সর্বশেষ
সিদ্ধান্ত হবে আদালতে।
তিনি আরও বলেন, এসব প্রক্রিয়া শেষ না
হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে। মার্জারের আলোচনা বা প্রক্রিয়া চলমান
থাকা অবস্থায় কোনো দুর্বল ব্যাংক যদি সবল হয়, সে যদি চায় তারা মার্জারে যাবে না তবে
চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মার্জারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারবে। কোনো কারণে ব্যাংক
যদি একীভূত না হয়, তবে সেই ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।
পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অডিটর নিয়োগ করেছি। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করবে। এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এজন্য ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করতে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান রহমান রহমান হক’কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে।
একীভূত বেসিক ব্যাংক সিটি ব্যাংক
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চাচ্ছেন না সরকারি বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই দাবিতে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি বলে স্বীকারই করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।