নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ এএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০২০
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। অর্থনীতিতে বাংলাদেশ বর্তমানে ৪১ তম দেশ এবং দ্রুত বর্ধনশীল দেশে পঞ্চম। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সময় পাকিস্তান বাংলাদেশকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত করে। পাকিস্তান চেয়েছিল স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমরা যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারি। স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সচল করেন।
দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে নির্ভীক শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দারিদ্র্য দূরের লড়ায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার, শিল্প বিকাশে নয়া উদ্যোগ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রদান, কৃষির আধুনিকায়নে সমন্বিত কর্মসূচী গ্রহণ, সমবায় চেতনা বিকাশে শুরু করেছিলেন কর্মযজ্ঞ। মানুষের মনের ভেতরে প্রবেশ করে তাদের প্রণোদনার মাধ্যমে গড়ে তুলেছিলেন এক যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি।
১৯৭২ সালে আমাদের অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর আমাদের রিজার্ভে তখন কোন বৈদেশিক মুদ্রাও ছিল না। শতকরা আশি ভাগের মতো মানুষ দরিদ্র ও ক্ষুধার্ত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বৈপ্লবিক নেতৃত্বের কল্যাণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত অবকাঠামো এবং সত্যিকার অর্থে কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান না থাকা সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।
দেশের ভেতরে ও বাইরে বেশ কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে তখন খাদ্যশস্যের ভয়াবহ সঙ্কট চলছিল। ওই সময়টায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও খাদ্যের সঙ্কটের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জও বঙ্গবন্ধুর সরকারকে মোকাবেলা করতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু পোষণ করতেন, দেশের একটি মানুষও হতদরিদ্র থাকবেনা। চ্যালেঞ্জের মুখে বঙ্গবন্ধু এর বাস্তবায়ন করেন।
স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। স্বাধীনতা পর বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত পাট ও পাটজাত পণ্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে পাটজাত দ্রব্যের জনপ্রিয়তা ও বাণিজ্য কমতে থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মুর্ছে পরেনি।
এরপর থেকে বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্প বিশ্বের বৃহত্তম শিল্পের মধ্যে অন্যতম এবং দেশের অর্থনীতি পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। পোশাক শিল্প (রপ্তানি) থেকে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে থাকে।
জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। সেই পর্যায় থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এই উত্তরণপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক নিচে পাকিস্তান। ২০১৯/২০ অর্থ বছরে (৩০ জুন) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে৷ পরবর্তী অর্থ বছরে তা বেড়ে ৩ শতাংশ হতে পারে। যেখানে পাকিস্তানে ২০১৯/২০ অর্থ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৪ শতাংশ৷ পরবর্তী অর্থবছরে তা বেড়ে ৩ শতাংশ হতে পারে৷
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত তথ্যানুসারে বাংলাদেশ সবজি, ধান ও আলু উৎপাদনে বিশ্বে যথাক্রমে ৩য়, ৪র্থ ও ৭ম। এছাড়াও মাছে ৪র্থ, আমে ৭ম, পেয়ারায় ৮ম এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে ১০ম। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষির অবদান ১৬.৬ %।
২০২০সালে বিশ্ব মন্দা স্বত্তেও বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ছিল ২৫০০ কোটি মার্কিনডলার যা ২০১৯ সালে ছিল ১৯০০ কোটি মার্কিনডলার । ২০১৮, ২০১৭, ২০১৬ ও ২০১৫ সালে রেমিট্যান্স এসেছে যথাক্রমে ১,৫৫৩, ১,৩৫৩, ১,৩৬১ ও ১,৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার।
২০২০-২১ সালে বাংলাদেশের বাজেটের আকার ৫,৬৮,০০০ কোটি টাকা। এ থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন কোথায় গিয়ে দাাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা করবে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনার মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে। এজন্য সরকারের ধারাবাহিকতা, শক্ত নেতৃত্ব, সময় উপযোগী সিদ্ধান্তের ভূমিকা রয়েছে।
করোনার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে সবখাতেই কমবেশি প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ সারা বিশ্বের নিকট ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনার শুরুতেই সরকার অর্থনৈতিক প্যাকেজগুলো ঘোষণা করেছিলো তার একটা বড় প্রভাই ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত টিকিয়ে রাখা, শ্রমিকদের বেতনের ব্যবস্থা খুবই দ্রুততার সঙ্গে করতে পারা। একদিকে করোনা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে অন্যদিকে শিল্প কারখানা পর্যায়ক্রমে খুলে অর্থনীতির চাকাকে সচল করেছে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুস
মন্তব্য করুন
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে চলমান
অর্থনৈতিক সংকট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২.৩০
শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও গত
অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। আগের বছর ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪১.৬৫
শতাংশ।
অর্থবছরের বাকি আছে আর তিন মাস থাকলেও এই সময়ের মধ্যে শতাংশের হিসাবে বাস্তবায়ন করতে হবে ৫৭.৭০ শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় করতে হবে এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এই সময়ের মধ্যে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন
পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে
এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থবছরের ছয় মাসে যেখানে অর্ধেকও বাস্তবায়ন
হয়নি, সেখানে মাত্র তিন মাসে কী করে ৫৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়
ও বিভাগকে জবাবদিহির আওতায় না আনলে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন কোনো অর্থবছরেই সম্ভব হবে
না।
আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি এডিপি
বাস্তবায়ন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির চলতি অর্থবছরে একটি প্রকল্পের
আওতায় বরাদ্দ ছিল ছয় কোটি ১৯ লাখ টাকা। ৯ মাসে তারা ব্যয় করেছে পাঁচ কোটি ৯৯ লাখ টাকা,
যা শতাংশের হিসাবে ৯৬.৮৫ শতাংশ। আর শতাংশের হিসাবে বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকলেও টাকা খরচে
এগিয়ে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিভাগটির ২৬৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪২
হাজার ৯৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
অর্থবছরের ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা
শতাংশের হিসাবে ৪৬.০৩ শতাংশ। এডিপি বাস্তবায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ
বিভাগ। চলতি অর্থবছরে তাদের বরাদ্দ ছিল ২৪২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে ৩৩
কোটি ৭২ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসাবে ১৩.৮৯ শতাংশ।
বিদ্যুৎ বিভাগের এডিপি বাস্তবায়নের হার ৬৩.৮৭ শতাংশ। বরাদ্দ ছিল
৩০ হাজার ৬৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ১৯ হাজার ২০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৮০৩ কোটি ৪৫ লাখ
টাকা। ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ১৭৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৪০.১৯ শতাংশ। পানি
সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ১১৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে সাত
হাজার ৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৫৩.৯৮ শতাংশ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ১৯২ কোটি
৭৫ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে চার হাজার ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন হার ৩২.৯৯ শতাংশ।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ৫০.৯২ শতাংশ। তাদের বরাদ্দ ছিল ৪৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বিপরীতে ৯ মাসে ব্যয় করেছে ২৩৪ কোটি ছয় লাখ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ২৪.৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা বিভাগের
বাস্তবায়ন হার ৩৮.৫৬ শতাংশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৪.৪২ শতাংশ। ইআরডির ৭১.৬৭ শতাংশ,
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২৩.৭৯ শতাংশ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৩১.৬৭ শতাংশ, অর্থ বিভাগের
৫০.০৮ শতাংশ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৩.৬৯ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৪৯.৯১ শতাংশ,
সেতু বিভাগের ৪৬.৬৮ শতাংশ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯.৪৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন কম হওয়ার বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বাস্তবায়ন হার বেশি। আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বসছি। যেসব প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আছে তাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প শেষ করছি। প্রকল্প পরিচালক দক্ষতা বাড়াতেও উদ্যোগ নিচ্ছি।’
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপি বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে
শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে ঢাকায় এসেছে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি মিশন। মিশনটি
গত ডিসেম্বর নাগাদ দেওয়া বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়ন ও সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে
আজ বুধবার থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে বসবে।
এসব বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাত
ও রাজস্ব সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেবে পর্যালোচনা দলটি বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা
গেছে।
আইএমএফ-এর এই প্রতিনিধি দলটি শুরুর দিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ
ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে বৈঠক করবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক,
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ কয়েকটি
সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। দলটি ঢাকায় থাকবে ৮ মে পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ এরই মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের
কাছে শতাধিক প্রশ্ন পাঠিয়েছে। সফররত মিশনটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার
জন্য জ্বালানি ভর্তুকি, সরকারি ঋণ, আসন্ন বাজেট ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর
পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করবে।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশের কর রাজস্ব জিডিপির অনুপাত ৮ থেকে
৯ শতাংশ। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচিতে রাজস্ব খাতে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আইএমএফ
প্রতিনিধি দল এ সফরে ব্যাংকিং খাতে বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব, ব্যাংক কোম্পানি আইন
বাস্তবায়নসহ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবে।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের
বৈঠকের এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক
কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেছিলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভের খুব বেশি উন্নতি হয়নি। আইএমএফ গত
বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। এরই মধ্যে
দুই কিস্তিতে ১১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মে মাস নাগাদ তৃতীয়
কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হতে পারে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট
সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেওয়ার কথা।
প্রাথমিকভাবে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত
সময়ে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা
দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভের উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশের
অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তা কমিয়ে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়। এর পরও বাংলাদেশ
লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫৮ মিলিয়ন ডলার পিছিয়ে ছিল।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন,
আইএমএফের ঋণের ১০টি শর্তের ৯টি পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাই ঋণের পরবর্তী কিস্তি
পেতে কোনো অসুবিধা হবে না। জানা গেছে, তৃতীয় কিস্তির জন্য নির্ধারিত ছয়টি পরিমাণগত
লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রিজার্ভ ছাড়া পাঁচটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গত
বছরের ডিসেম্বরে কর রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০
কোটি টাকা। সরকার এরই মধ্যে এটি পূরণ করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা।
আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূতকরণ বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।
এর আগে গত তিনদিন পূর্বে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন দাম নির্ধারণের তিন দিন না যেতেই এবার আবারও স্বর্ণের দাম কমালো দেশের বাজারে স্বর্ণের মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে বাজুস। এদিন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৯ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫৬৬ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৭৬ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে ক্রেতাদের। কারণ বাজুসের নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে এক লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ টাকা।
স্বর্ণ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বাজুস
মন্তব্য করুন
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে প্রভাব পড়েছে চলমান অর্থনৈতিক সংকট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২.৩০ শতাংশ। আর টাকার হিসাবে ব্যয় হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যদিও গত অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপি বাস্তবায়ন বেড়েছে। আগের বছর ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪১.৬৫ শতাংশ।
ব্যাংক একীভূত হওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ভাবে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয় বলে মনে করছে ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রক এই প্রতিষ্ঠানটি। আর এটি দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্পষ্টীকরণ বিজ্ঞপ্তি করেছে।
চলতি মাসে তিন দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।