নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩০ এএম, ০৭ অক্টোবর, ২০১৭
ঈসমাইল পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। চাকরি করেন একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অফিস করে বাসায় ফিরতে হয় ঈসমাইলকে। সপ্তাহে একদিন ছুটি থাকলেও ছেলে-মেয়েকে সময় দেওয়া, বাসার টুকটাক কাজ করেই দিনটি চলে যায়। ঈসমাইলের স্ত্রীও দীর্ঘদিন ধরে চার দেয়ালে মধ্যে আবদ্ধ থাকতে থাকতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঈসমাইলও দীর্ঘদিন ধরে ভাবছিলেন ঢাকার বাইরে কোথাও ঘুরে আসতে পারলে নিজেও একটু স্বতিবোধ করতে পারতেন। কিন্তু পরিবার নিয়ে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাওয়া মানেই অনেক টাকার ব্যাপার। মাস শেষে যে বেতন পায় তা দিয়ে বাসা বাড়া, সংসার, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচেই শেষ হয়ে যায়।
ঈসমাইল তাঁর এক বন্ধুর কাছে বিষয়টা শেয়ার করেন। বন্ধু তাঁকে পরামর্শ দিয়ে বলেন,‘আরে বন্ধু তুমি তো ব্যাংক থেকে ট্রাভের লোন নিতে পার’। ঈসমাইল তার বন্ধুর কথা মত কয়েকটা ব্যাংকে গিয়ে ট্রাভেল লোন সম্পর্কে খোঁজ খরব নেয়। খোঁজ খরব নিয়ে তার সুবিধামত ব্যাংক থেকে ট্রাভেল লোন নিয়ে তার পরিবার সহ ঘুরতে যান।
এভাবে যারা ঈসমাইলের মত স্বল্প বেতনের চাকরিজীবী অথবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলো ভ্রমণ ঋণের ব্যবস্থা করছে। ট্রাভেল লোনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাংকেরই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। ট্রাভেল নোন পেতে চাইলে আপনাকে নিয়মগুলো জানতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ব্যাংক কীভাবে লোন সুবিধা দিচ্ছে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড
ডাচ- বাংলা ব্যাংক ২০০৭ সালের জুন মাস থেকে ট্রাভেল লোন সুবিধা দিচ্ছে। মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতন হলেই চাকরিজীবীরা ট্রাভেল লোন পেতে পারেন। লোন দেওয়া হয় ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। মেয়াদ ১-৪ বছর। সুদের হার ১৭ দশমিক ৫। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে স্যালারি সার্টিফিকেট, ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আইডি কার্ড প্রদান করতে হবে।
ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ব্যবসার বয়স হতে হবে ন্যূনতম ৩ বছর। আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট, পাসপোর্টের ফটোকপি। এছাড়াবিজনেস রিলেটেড অন্যান্য কাগজপত্রও জমা দিতে হবে।
যোগাযোগ: সেনাকল্যাণ ভবন (৪র্থ তলা), ১৯৫ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা। ফোন: ৭১৭৬৩৯০-৯৩
প্রাইম ব্যাংক
চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণির জন্যই ট্রাভল লোন দিচ্ছে প্রাইম ব্যাংক। এজন্য ভ্রমণের দিন তারিখ সব কিছু ঠিকঠাক করে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে এই কোটেশন নিয়ে গ্রাহক প্রাইম ব্যাংকের ট্রাভেল লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সর্বনম্ন ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা ট্রাভেল লোন হিসেবে প্রদান করে প্রাইম ব্যাংক। চাকরিজীবীদের আবেদনপত্রের সঙ্গে অফিস আইডি,পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হবে। লাগবে দুজন গ্যারান্টারও। ব্যবসায়ীদের আবেদনপত্রের সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট, ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে। ঋণের মেয়াদ ১-৩বছর।
যোগাযোগ : হেড অফিস : ২৯ রাজউক এভিনিউ, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। ফোন : ৯৫৫৪৪৬১, ৭১৬০৮৯৭, ওয়েব : www.primebank.com
ব্র্যাক ব্যাংক
চাকরিজীবীদের জন্য ট্রাভেল লোনের ব্যবস্থা করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। কিছু শর্ত সাপেক্ষে পাওয়া যাবে ট্রাভেল লোন। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মাসিক বেতন হতে হবে ১৫ হাজার টাকা।আবেদনপত্রের সঙ্গে পে স্লিপ অথবা ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ভিসা, পাসপোর্টের ফটোকপি প্রদান করতে হবে। সাধারণত ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ট্রাভেল লোন দেয়ব্র্যাক ব্যাংক। লোনের মেয়াদ ১২-৩৬ মাস। সুদের হার ১৫-১৭ ভাগ।
যোগাযোগ : ১০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (২য় তলা), বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন : ৮৮৩৬৬৪৭, ৮৮৩৬০৮৮
দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড
সিটি ব্যাংকের আলাদাভাবে ট্রাভেল লোন সার্ভিস না থাকলেও যে কেউ শর্তপূরণ সাপেক্ষে পার্সোনাল লোন হিসেবে ট্রাভেল লোন পেতে পারেন। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকাপর্যন্ত পার্সোনাল লোন দিয়ে থাকে সিটি ব্যাংক। মেয়াদ ১২ থেকে ৬০ মাস। সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো গ্যারান্টর প্রয়োজন হয় না। প্রসেসিং ফি ১ ভাগ। চাকরিজীবীদেরক্ষেত্রে বর্তমান চাকরিতে ৬ মাসসহ ১ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ২ বছর এবং পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে ১ বছর। ন্যূনতম মাসিক আয়- চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ হাজার টাকা,পেশাজীবীদের জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ৩০ হাজার টাকা। আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
যোগাযোগ : দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড, জীবন বীমা টাওয়ার, ১০ দিলকুশা, ঢাকা-১০০০। ফোন : ৯৫৬৫৯২৫-৩৪। ওয়েব : www.thecitybank.com
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক
সিটি ব্যাংকের মতো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকও আলাদাভাবে ট্রাভেল লোন প্রদান করে না। তবে যে কেউ পার্সোনাল লোন নিয়ে ট্রাভেল করতে পারেন। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকাবেতন হলে পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। লোন পাবেন সর্বোচ্চ বেতনের ১৫ গুণ। সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা লোন প্রদান করে থাকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।আবেদনপত্রের সঙ্গে চাকরিজীবীদের অবশ্যই আইডি কার্ড, ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সেলারি সার্টিফিকেট এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমাদিতে হবে।
যোগাযোগ: স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ৬৭ গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১, ঢাকা। ফোন : ৮৮৩৩০০৩। ওয়েব : www.standardchartered.com/bd
আইএফআইসি ব্যাংক
আইএফআইসি ব্যাংকে হলিডে ঋণ ছুটির দিন পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে দেশ-বিদেশে কাটাতে আইএফআইসি থেকে হলিডে ঋণ নিতে পারেন। সহজ শর্তে আইএফআইসি ব্যাংকে সর্বোচ্চ তিন লক্ষটাকা ঋণ দেয়া হয়। ১২ থেকে ৩৬ মাসের সহক কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করা যাবে। যোগাযোগ ৯৫৬৩০২০, ৯৫৬২০৬০, ৯৫৬২০৬২, ৯৫৬২০৬৮। ফ্যাক্স: ৮৮০-২-৯৫৬২০১৫ ৮৮০-২-৭১৬১৬৪৪।বিস্তারিত: info@ificbankbd.com
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড
৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ট্রাভেল লোন দিয়ে থাকে অন্যতম বেসরকারি ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড। এ সুযোগ ব্যবসায়ী এবং চাকরিজীবী উভয় শ্রেণীর জন্যই উন্মুক্ত। নির্দিষ্ট শর্তপূরণ করেযে কেউ ইস্টার্ন ব্যাংকের এ সুযোগটি গ্রহণ করতে পারেন। ১-৫ বছর মেয়াদি এ লোনের সুদের হার ১৮ ভাগ। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ভিসা, পাসপোর্টেরফটোকপি জমা দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নিয়মটা একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে টিন সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্স এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টের ফটোকপি।
যোগাযোগ: ২৯ রাজউক এভিনিউ, ৪র্থ তলা, ঢাকা-১০০০। ফোন : ৯৫৬৭১৬৫, ফ্যাক্স : ৮৮ ০২ ৯৫৫৯২৫৭।
বাংলা ইনসাইডার/এসএ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে এটাই স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দাম নির্ধারণের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা। ভালো মানের স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও কমানো হয়েছে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম। সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের নতুন দাম হবে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা যা এতদিন ছিল ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।
এদিকে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
গত ৮ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমিয়েছিল বাজুস। যা ওইদিনই বিকেলে কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী আজ ৭টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ৮০ হাজার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে
(ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে
লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম
ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০
কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকালে বেশ কিছু ভালো কোম্পানির শেয়ারের
দাম কমেছে। ডিএসইতে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে এগিয়ে রয়েছে ওষুধ ও রাসায়নিক, প্রকৌশল,
ভ্রমণ, খাদ্য, সিরামিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো।
এ সময় লেনদেনে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রাসায়নিক খাতের কোম্পানি এশিয়াটিক
ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। দেড় ঘণ্টায় এটির ১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। লেনদেনে দ্বিতীয়
অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন সন লিমিটেড।
এ সময় এটির ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তৃতীয়
অবস্থানে থাকা ভ্রমণ খাতের কোম্পানি বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের ৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার
শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনটি সূচকই নিম্নমুখী ছিল। এদের মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে, ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ ছাড়া ডিএস ৩০ সূচক ২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকার।
মন্তব্য করুন
বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে
চাচ্ছেন না সরকারি বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে
একীভূত হওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
একই দাবিতে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
সরকারি বলে স্বীকারই করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
গভর্নরকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলেন, দেশের ক্ষুদ্র শিল্পে অর্থায়নের লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে
বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হয়, যা ১৯৯২ সালে শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন
ব্যাংক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে এটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক
হিসাবে সরকারি আর্থিক সেবা দিয়ে আসছে, যা ২০১৫ সালে পুরোপুরি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক
ব্যাংক হিসাবে রূপান্তরিত হয়। বেসিক ব্যাংক প্রথম দিকে সরকারি খাতের ব্যাংক হিসাবে
অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করেছে এবং সরকারকে বিপুল অঙ্কের মুনাফা
দিয়েছে, যা অন্যান্য ব্যাংকের কাছে ছিল উদাহরণ। শেষের দিকে এসে ব্যাংকটি দুর্ঘটনার
শিকার হয়। বেসিক ব্যাংকে অন্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের অনুরূপ চাকরি বিধিমালা
অনুসরণ করা হয়, যা বেসরকারি মালিকানার ব্যাংকের সঙ্গে পুরোপুরিভাবেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের গ্রেড নির্ধারণ
এবং বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রদান করা হয়।
পাশাপাশি বলবৎ রয়েছে কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের
পেনশন সুবিধা। এছাড়া, বেসিক ব্যাংকে নিয়োগ ও পদন্নোতিতে সম্পূর্ণরূপে সরকারি ব্যাংকের
অনুরূপ বিধিবিধান অনুসরণ করা হয়। এছাড়া বেসিক ব্যাংকে ১২তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীগণের
স্থায়ী চাকরি বিদ্যমান রয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বেসিক ব্যাংকে
সরকারি শ্রম অধিদপ্তর অনুমোদিত ও রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) কার্যক্রম
চলমান রয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যাংকিং
খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত একীভূতকরণের পদক্ষেপকে বেসিক ব্যাংকের
কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি টেলিভিশন, অনলাইন
ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের বরাতে জানতে পারি যে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী
ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাষ্ট্র মালিকানাধীন
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক মার্জারের
পরিকল্পনা করা গ্রহণ করা হয়েছে, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, বেসরকারি মালিকানাধীন সিটি
ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক মার্জারের বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে
তা একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অযৌক্তিক।
যেখানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ
ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক অন্য দুটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন
ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ হতে চলেছে সেখানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে কেন বেসরকারি
খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে মার্জারের আলোচনা চলছে? মার্জার প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই বৈষম্য
কাম্য নয়। এ ধরনের বৈষম্যনীতি পরিহার করে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট
ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মার্জার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে অন্য একটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের
সঙ্গে মার্জারের জন্য আবেদন জানানো হয়।
দেশের অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের ন্যয়
শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা
পরিচালক এবং সিইও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উল্লিখিত বিষয়গুলোর সঙ্গে
বেসরকারি কোনো ব্যাংকের সামঞ্জস্যতা নেই। ইতোমধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অনেকেই
সরকারি ব্যাংকের পদোন্নতির অধীনে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের
গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা
পরিচালক পদে পদায়নের পর কয়েক মাস আগে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি হিসাবে নিয়োগ
দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রূপালী ব্যাংক ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে দুজনকে ডিএমডি হিসাবে, একজনকে
জনতা ব্যাংকে এবং দুজনকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে জিএম হিসাবে পদায়ন করা হয়।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বেসিক
ব্যাংকেরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি নন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও
নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, বেসিক সরকারের কোনো ব্যাংক অর্ডারের দ্বারা
স্থাপিত ব্যাংক নয়। সোনালী ব্যাংকের যেমন ব্যাংক অর্ডার আছে, বেসিকের তেমন নেই। একটা
আইন দ্বারা কিন্তু সোনালী, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত। বেসিক ব্যাংক কোনো আইন
দিয়ে প্রতিষ্ঠিত নয়। সরকার যেমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ড করে, তেমনি বেসিকেরও
শেয়ার হোল্ড করে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি আর বেসিকের মধ্যে
পার্থক্য হচ্ছে সরকার যেটা রেভিনিউ থেকে দেয় সেটাই কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠান আছে সরকারের কমার্শিয়াল কাজের জন্য স্টাবলিস্ট করা। বেসিকও তেমন একটা প্রতিষ্ঠান।
বেসিক স্পেশালাইজ একটা ব্যাংক ছিল যেটা একটা বিশেষ উদ্দেশ্য গঠন করা হয়েছিল। এটা কিন্তু
ব্যাংক হিসাবে সরকারের আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয়।
একীভূতকরণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত উচ্চ
আদালতে: ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। তিনি বলেন, এটা একটা লং টার্ম প্রসেস। এটা
পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া অতিক্রম হতে হবে। বেশকিছু পদক্ষেপের পর
চূড়ান্তের বিষয় আছে। এখানে আইনগত বিষয় আছে, অডিটের বিষয় আছে। মার্জারের বিষয়ে সর্বশেষ
সিদ্ধান্ত হবে আদালতে।
তিনি আরও বলেন, এসব প্রক্রিয়া শেষ না
হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে। মার্জারের আলোচনা বা প্রক্রিয়া চলমান
থাকা অবস্থায় কোনো দুর্বল ব্যাংক যদি সবল হয়, সে যদি চায় তারা মার্জারে যাবে না তবে
চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মার্জারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারবে। কোনো কারণে ব্যাংক
যদি একীভূত না হয়, তবে সেই ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।
পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অডিটর নিয়োগ করেছি। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করবে। এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এজন্য ব্যাংক দুটির সম্পদ মূল্যায়ন করতে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান রহমান রহমান হক’কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে।
একীভূত বেসিক ব্যাংক সিটি ব্যাংক
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সকাল থেকে সূচকের বেশ উত্থান–পতন লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে লেনদেন শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা পরই ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেশ নিচে নেমে যায়। তবে প্রথম ঘণ্টা শেষে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চাচ্ছেন না সরকারি বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই দাবিতে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি বলে স্বীকারই করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।