নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১১ পিএম, ২২ জুলাই, ২০২১
রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকা কাঁচা চামড়ার সবচেয়ে বড় আড়ত। ঈদুল আজহার দিন দুপুর থেকেই জমজমাট হয়ে ওঠে আড়ত। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অন্যবারের তুলনায় এ বছর পোস্তায় কাঁচা চামড়া তুলনামূলকভাবে কম এসেছে। সে জন্য সাভারের হরিণধরায় চামড়া শিল্পনগরের পাশেই অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা আড়তগুলোকে দায়ী করছেন চামড়া খাতের মালিকেরা।
এদিকে গতবারের চেয়ে এবার গরুর কাঁচা চামড়ার দর কিছুটা বাড়লেও ছাগলের কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ে ছিল হতাশা। রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকে ছাগলের কাঁচা চামড়ার দাম না পেয়ে বিনা পয়সায় রেখে গেছেন। কেউ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
গতকাল বুধবার দেশের সবচেয়ে বড় চামড়ার আড়ত রাজধানীর পোস্তা এলাকায় ঘুরে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যবারের তুলনায় এ বছর পোস্তায় কাঁচা চামড়া কম এসেছে। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, ঢাকা ও এর আশপাশে অস্থায়ীভাবে অবৈধ অনেক আড়ত গড়ে উঠেছে। এসব আড়তের বৈধতা নেই। তা ছাড়া গত দুই বছরের মতো এবারও কাঁচা চামড়ার দাম মিলবে না, এমন আশঙ্কা থেকে অনেকে চামড়া বিক্রির চেষ্টা না করে মসজিদ, মাদ্রাসায় ও পঞ্চায়েতে দান করে দিয়েছেন। তাই পোস্তায় চামড়া এসেছে কম।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, হেমায়েতপুরে চামড়াশিল্প নগরের পাশে বিচ্ছিন্ন ও অপরিকল্পিতভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো অনেক আড়ত গড়ে উঠেছে। এগুলো কারও কাছ থেকে অনুমোদনও নেয়নি। রাজধানীতে অস্থায়ী হাট বসিয়ে চামড়া কেনা হচ্ছে। সে কারণে এবার পোস্তায় কাঁচা চামড়া কম এসেছে। তিনি বলেন, কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পদ্ধতি আছে। পোস্তায় যেটা শত বছরের ঐতিহ্য। সরকারের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা করে সবাই। কিন্তু অন্য এলাকায় যেসব আড়ত গড়ে উঠেছে, সেসবের অনুমোদন নেই। টিপু সুলতান বলেন, ‘এসব অবৈধ আড়ত গুঁড়িয়ে দিতে আমরা শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু ফল পাওয়া যায়নি।’
এদিকে সাভার চামড়াশিল্প নগরে সরেজমিন দেখা গেছে, চামড়াশিল্প নগরে ঢোকার আগে হরিণধরা বাজরে অন্তত ৬৫টি আড়ত আছে। রাস্তার দুই পাশে এসব আড়ত গত এক বছরের ব্যবধানে গড়ে উঠেছে। এবার এই প্রথম সেখানে চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব ও কলাবাগান এলাকায় কাঁচা চামড়া কিনতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও চামড়াশিল্প নগরের পাশে লাগোয়া এমন আড়ত নেই। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এসব আড়ত চামড়াশিল্পের পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানসনদ পাওয়ার চেষ্টা করছি। তারা যদি এসে দেখে চামড়াশিল্প নগরের পাশে অবৈধভাবে আড়ত গড়ে উঠেছে, তাহলে মানসনদ পাওয়া কঠিন হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব আড়ত উচ্ছেদ করতে আমরা শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। কিন্তু কিছু হয়নি।’
তবে আড়ত গড়ে তোলার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে হরিণধরা বাজারের সভাপতি আবুল বাসার বলেন, ‘চামড়া রক্ষার জন্য আমরা আড়ত দিয়েছি। দিন দিন আমাদের আড়তের চাহিদা বাড়ছে। পোস্তা থেকে চামড়া সংগ্রহ করে হেমায়েতপুরে নিয়ে আসা অনেক কঠিন। সময়ও লাগে বেশি। আমাদের আড়ত থেকে চামড়া সংগ্রহ করে ট্যানারিতে নিতে সময় লাগবে পাঁচ মিনিট।’ তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর মানুষ চামড়ার দাম পায়নি। চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আমরা অস্থায়ী আড়ত দিয়েছি।’
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ জানালেন, অস্থায়ী এসব আড়ত অনুমোদন নেয়নি।
এদিকে গতকাল চামড়ার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছাগলের কাঁচা চামড়ার দাম মেলেনি। অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। নুরুল করিম হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ১৮টি ছাগলের কাঁচা চামড়ার দাম হিসেবে তাঁর হাতে ২০০ টাকা ধরিয়ে দিয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে প্রতি পিস কাঁচা চামড়ার দাম পড়েছে ১১ টাকা। অথচ সরকার ছাগলের কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা। মমতাজ আহমেদ নামের একজন জানালেন, তিনি ছাগলের কাঁচা চামড়া বিনা পয়সায় ছেড়ে দিয়ে এসেছেন পোস্তায়। কেউ প্রতি পিস ১০ টাকা কেউ ১৫ টাকা করে বিক্রি করেছেন।
অন্যদিকে সরকার লবণজাত কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও কোরবানির পশুর রক্তমাখা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেনি। ফলে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যাঁর কাছ থেকে যে দামে পেরেছেন কিনেছেন। তবে গত দুই বছরের তুলনায় এবার কাঁচা চামড়ার দাম কিছুটা বেড়েছে। চামড়াপ্রতি গতবারের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারের গরুর কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়। মাঝারি মানের চামড়া বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। আর ছোট মানের চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখতে মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা বাংলাদেশের জন্য সম্পদ। মূলত, তাদের পাঠানো কষ্টার্জিত অর্থে সচল রয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের লেনদেনের সুবিধার্থে টাকায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলে ধরা হলো-
মন্তব্য করুন
চলতি অর্থবছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। আর এটিই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা। এই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ১১টি প্রকল্প
অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও অনুমোদন পাচ্ছে আরো ৩০টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল
১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চলতি অর্থবছরের ৮ম একনেক সভা অনুষ্ঠিত
হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের
জন্য এরই মধ্যে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংশোধন এবং নতুন উন্নয়ন প্রকল্প
প্রস্তাব ১১টি।
এর বেশির ভাগই নতুন প্রকল্প। সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে চারটি।
অর্থাৎ নতুন প্রকল্প রয়েছে সাতটি। এর বাইরে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ৩০টি
প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করা হবে।
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভায় যেসব প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থানীয় সরকার বিভাগের। এই বিভাগের
রয়েছে তিনটি প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী
অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়) এবং অবকাঠামো, উন্নত
দক্ষতা এবং তথ্যে অ্যাকসেসের মাধ্যমে দুর্বলদের জন্য স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা (পোভার্টি)
(১ম সংশোধিত)।
এ ছাড়া একটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা
হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স,
আগারগাঁও, ঢাকায় স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি তৃতীয়
বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর বাইরেও একনেক সভার অবগতির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবিত ৩০টি প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ সংশ্লিষ্ট ১৪টি, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৯টি, শিল্প
ও শক্তি বিভাগের একটি এবং কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ছয়টি প্রকল্প।
একনেক জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে আরও কিছুটা কমেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন স্থির হয়েছে ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গণনায় তা দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে। এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।