নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০২ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যার অধিকাংশই কৃষির ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩-৪ গুণ বেড়েছে ধান উৎপাদন। পাশাপাশি অন্যান্য শস্য, ফল, সবজি, মাছ ও মাংস উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। গত দুই দশকে চালের দাম জ্যামিতিক হারে বাড়লেও উৎপাদকের কাছে পৌঁছেনি এর সুফল। এতে করে ভোক্তামূল্যে কৃষকের অংশ ৬৫ থেকে নেমে এসেছে ৪১ শতাংশে। ফলে চালের বাড়তি দামের সুফল ধান ব্যবসায়ী, চালকল মালিক ও চাল ব্যবসায়ীদের মতো মধ্যস্বত্বভোগীদের পেটে চলে যাচ্ছে। এতে অবস্থান নাজুক হয়েছে কৃষকের আর চালকল মালিকদের অবস্থান হয়েছে দোর্দণ্ড। এমতাবস্থায় কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় ও সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণে কৃষিমূল্য কমিশন গঠন করা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ফুড প্রাইস ইনডেক্স (এফপিআই) শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারীতে সৃষ্ট সংকটের কারণে চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও উৎপাদন ও সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় গত সাত বছরের মধ্যে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এফএও প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১২০ দশমিক ৭ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে দেশীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশের অভ্যন্তরে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য অর্থনীতির যৌক্তিক কারণ রয়েছে। সেই কারণগুলো হলো, খাদ্যের উৎপাদন হ্রাস ও সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ না করা।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অতীতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল পেঁয়াজ ও তরমুজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। তাছাড়া চালের মূল্য হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া রয়েছে মৌসুমে সবজির মূল্য, যেমন টমেটোর মূল্য ফেব্রুয়ারি ও মার্চে উত্তরবঙ্গে ৩ টাকা কেজিতে উৎপাদনকারীরা বিক্রি করতে পারেন না; অথচ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে ২০ টাকা কেজিতে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি হয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, হঠাৎ করে উৎপাদন বাড়ানো যায় না কৃষিপণ্যের। কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়ানো সময়সাপেক্ষ বিষয়। কৃষকরা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় পরের বছর পেঁয়াজ উৎপাদন করলে দেখা যায়, যখন বাংলাদেশে কৃষক উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারজাত করেন তখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে সরকার। এতে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কমে যায় এবং কৃষকরা পেঁয়াজের ভালো মূল্য পান না। ফলে পরের বছর পেঁয়াজ উৎপাদনে আগ্রহী হন না তারা। এতে দেশে চাহিদার পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় না এবং আমরা নির্ভরশীল থেকেই যাই ভারতের ওপর। তাই দেশে পেঁয়াজ বাজারে ওঠার সময় ভারত থেকে আমদানি বন্ধ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে সরকারকে।
বিশ্লেষকেরা আরো বলেন, খাদ্যপণ্যের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে মাল্টি ন্যাশনাল গ্রোসারি চেইন কোম্পানিগুলো, যেমন ওয়ালমার্ট, আলডি, কারফোরকে বাংলাদেশে কাজ করার জন্য নিয়ে আসতে হবে। এসব মাল্টিন্যাশনাল গ্রোসারি চেইন কোম্পানি ইউএসএ, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারলে যে সুবিধাগুলো হবে তা হলো: (১) ন্যায্যমূল্যে তারা খাদ্য/কৃষিপণ্য বিক্রি করবে; (২) ফরমালিন ও কেমিক্যালমুক্ত স্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য সরবরাহ করবে; (৩) হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে ভেজাল, কেমিক্যাল ও ফরমালিনযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে জনস্বাস্থ্য ব্যাপক হুমকির সম্মুখীন। ফলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দুরারোগ্য ব্যাধিতে মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে এবং সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচ বহুগুণে বেড়ে গেছে।
কৃষকের যৌক্তিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের পাশাপাশি মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে। মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা যাতে ধান মজুদ বা সংরক্ষণ করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও নেয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা বিপণন অধিদপ্তরকেও শক্তিশালী করতে হবে। বাজার থেকে ধান না কেনার কারণে ধানের বাজারে একচ্ছত্র আধিপত্য চালকল মালিকদের কাছেই তুলে দেয়া হচ্ছে। ধানের এত বড় বাজার এককভাবে চালকল মালিকদের কাছে রাখা মোটেও যৌক্তিক নয়। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ পরিবহন ও বাজারজাতের প্রতিটি স্তরে নজরদারি বাড়াতে হবে। ভোক্তামূল্যে কৃষকের যৌক্তিক অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এগ্রিকালচারাল প্রাইস কমিশন দ্রুত গঠন করা প্রয়োজন। প্রত্যাশা থাকবে, কৃষি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মন্তব্য করুন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখতে মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা বাংলাদেশের জন্য সম্পদ। মূলত, তাদের পাঠানো কষ্টার্জিত অর্থে সচল রয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের লেনদেনের সুবিধার্থে টাকায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলে ধরা হলো-
মন্তব্য করুন
চলতি অর্থবছরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। আর এটিই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভা। এই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ১১টি প্রকল্প
অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও অনুমোদন পাচ্ছে আরো ৩০টি প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল
১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চলতি অর্থবছরের ৮ম একনেক সভা অনুষ্ঠিত
হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের
জন্য এরই মধ্যে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংশোধন এবং নতুন উন্নয়ন প্রকল্প
প্রস্তাব ১১টি।
এর বেশির ভাগই নতুন প্রকল্প। সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে চারটি।
অর্থাৎ নতুন প্রকল্প রয়েছে সাতটি। এর বাইরে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ৩০টি
প্রকল্প প্রস্তাব একনেক সভাকে অবহিত করা হবে।
নতুন সরকারের দ্বিতীয় একনেক সভায় যেসব প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থানীয় সরকার বিভাগের। এই বিভাগের
রয়েছে তিনটি প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী
অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (৩য় পর্যায়) এবং অবকাঠামো, উন্নত
দক্ষতা এবং তথ্যে অ্যাকসেসের মাধ্যমে দুর্বলদের জন্য স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা (পোভার্টি)
(১ম সংশোধিত)।
এ ছাড়া একটি মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা
হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স,
আগারগাঁও, ঢাকায় স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি তৃতীয়
বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর বাইরেও একনেক সভার অবগতির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবিত ৩০টি প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
এর মধ্যে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ সংশ্লিষ্ট ১৪টি, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৯টি, শিল্প
ও শক্তি বিভাগের একটি এবং কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ছয়টি প্রকল্প।
একনেক জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন বা দশ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণের স্থিতিছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন (১০ হাজার ৬৪ কোটি) ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। দেশের মোট বিদেশি ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার। বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার।