ক্লাব ইনসাইড

পুরো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একা লড়াই করে জিতেছি: সামিয়া রহমান

প্রকাশ: ০৮:৪৯ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail পুরো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একা লড়াই করে জিতেছি: সামিয়া রহমান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন জোর করে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। যে প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না সেখানে এককভাবে আমাকে নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আমার কোনো আস্থা ছিল না। কিন্তু আমি জানতাম হাইকোর্ট আমার পক্ষে রায় দেবেন। কারণ, হাইকোর্ট প্রমাণ দেখবেন। সব প্রমাণ আমার পক্ষে ছিল। পুরো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একা লড়াই করে আমি জিতেছি।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) হাইকোর্টের রায়ের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এসব কথা বলেন তিনি।
 
এর আগে, সকালে সামিয়া রহমানের পদাবনতির আদেশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে তাকে সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।

সামিয়া রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ব্যক্তি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আমাকে এ শাস্তির মুখোমুখি করেছে। আমি একা শক্ত হয়ে লড়াই চালিয়ে গেছি। অবশেষে আল্লাহর রহমতে আমি জয়ী হয়েছি। আমার বড় ছেলের অসুস্থতাজনিত কারণে বিনা বেতনে ছুটি চেয়েছি, সেটিও আমাকে দেওয়া হয়নি। মানবিক কারণে হলেও ছুটি দিতে পারত। যেটি আমার বিভাগের অনেক শিক্ষক পেয়ে থাকেন। আমাকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

‘আমি ভেবেছিলাম, আল্লাহ কোনো কারণে আমার ওপর নাখোশ। কিন্তু না, আল্লাহ আমার সঙ্গেই ছিলেন। কিছু মানুষ আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন। বিশেষ করে আমার স্বামী ও আইনজীবী (ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম)। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের এ শিক্ষক আরও বলেন, আমি তৎকালীন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, তৎকালীন উপ-উপাচার্য, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আমি বলেছি, লেখার আইডিয়া আমার। কিন্তু পরে তা জার্নালে ছাপা থেকে কোনো প্রক্রিয়ায় আমি যুক্ত ছিলাম না। প্রতিটি বিষয়ের প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট আমি জমা দিয়েছি। কিন্তু প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আমাকে শাস্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

‘এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আমার সাবেক আইনজীবীও জড়িত। কিন্তু অনেক পরে আমি এটা বুঝেছি। তিনি আমাকে প্রতিনিয়ত মিসগাইড করেছেন। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মুভমেন্ট করতে চেয়েছি, তখনই তিনি বলেছেন, তদন্তাধীন বিষয়ে কথা বলা যাবে না। আমি একটি পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি তা করতে দেননি। অভিযোগ, তদন্ত… এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নানা হুমকি-ধামকি আমাকে শুনতে হয়েছে।’

পরবর্তী করণীয় কী — জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাইকোর্ট আমাকে সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় জানে। বর্তমানে আমি ছেলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছি।
 
সামিয়া রহমান ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তিনি সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। তার বিরুদ্ধে গবেষণায় ‘চৌর্যবৃত্তির’ অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাকে এক ধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। ওই বছরের ৩১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’-তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।

শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের একাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহ্বায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ জমা দিলে সিন্ডিকেটের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৯:৩৭ পিএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার স্থলে পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমিন সিদ্দিককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক অফিস আদেশ এ তথ্য জানিয়েছেন বুয়েটের রেজিস্টার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন।

এতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিককে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো। তিনি অতিরিক্ত এ দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়মানুযায়ী ভাতা ও সুযোগ-সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।

এতে ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমানকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আল আমিন সিদ্দিককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের ৬ দফা দাবির অন্যতম দাবি ছিল— ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে সরানো।

বুয়েট   ছাত্রকল্যাণ পরিচালক  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

জবিতে পহেলা বৈশাখ: ১৮ এপ্রিল বন্ধ থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উদযাপন করা হবে। এতে ঐ দিনে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এ প্রেক্ষিতে আগামী ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।

এছাড়া অনুষ্ঠান সূচিতে বলা হয়, এদিন সকালে  মঙ্গল শোভাযাত্রা জবি ক্যাম্পাস থেকে  শুরু হয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার জবি ক্যাম্পাসে শেষ হবে।

এরপর একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্তর সামনে আলোচনা সভা, সংগীত বিভাগের আয়োজনে সংগীতানুষ্ঠান এবং নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হবে।

পরবর্তীতে বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠির পরিবেশনা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড মিউজিক এসোসিয়েশনের প্রযোজনায় রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হবে। এদিন বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য এসব অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী-কে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে চারিপাশের দেয়ালে পেইন্টিং করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশা চিত্রকে উপপাদ্য করে এ চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রে ফুটে উঠেছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূর, সহ নানা ধরনের চিত্র। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়   পহেলা বৈশাখ  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

রাবিতে বহিরাগতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ০১:৩৩ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ঝুলন্ত অবস্থায় এক বহিরাগতের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত সেই বহিরাগতের নাম ফারুক হোসেন (৩৮) তার বাসা রাজশাহী জেলার চারঘাট থানার নন্দনগাছি উত্তর ভাটপাড়া এলাকায়। তিনি রাজশাহী নগরীতে বাদাম বিক্রি করতেন বলে জানা গেছে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বধ্যভূমি এলাকার হরিজন পল্লি সংলগ্ন এলাকার মেহগনি বাগান থেকে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানতে চাইলে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মোবারক পারভেজ জানান, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেতে এসে দেখেন একটা ছোট গাছে ব্যক্তির দেহ ঝুলছে। এরপর সাড়ে ১১ টার দিকে কয়েকজন ছেলে আসে। তাদের মধ্যে একজন লাশ দেখে বাবা বলে চিৎকার করে ওঠে। পরে ওর কাছ থেকে পরিচয় নিয়ে লাশ থানায় নিয়ে আসা হয়।

মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য সিআইডি বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে বলেও তিনি জানান।


লাশ উদ্ধার   বহিরাগতের লাশ  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

মহাসমারোহে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখ পালন

প্রকাশ: ০৫:০৫ পিএম, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিচ্ছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

চৈত্রের আলো নিভে ভোরের নতুন সূর্যের অপেক্ষায় কোটি বাঙালির প্রাণ; ১৪৩১ বঙ্গাব্দের প্রথম প্রভাতে জীর্ণ-মলিন অতীত আর কূপমন্ডুকতা ঝেড়ে ফেলে মানবের জয়গানে বাজছে বর্ষবরণের সুর।

 

অতীতের সকল ব্যর্থতা, গ্লানি মুছে ফেলার প্রত্যয়ে সমবেত কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে-এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...।'

 

বিশ্বব্যাপী মূল্যবোধের ক্ষয় আর মানুষে মানুষে দূরত্ব ঘুচিয়ে সম্প্রীতির সাধনায় বাঙালি মনুষ্যত্বের জয়গান বাজছে শাহজাদপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে। নতুন বছরের প্রথম সকালে, নতুন দিনের প্রত্যয় আর অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখার বলিষ্ঠ উচ্চারণে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।

 

সকাল সাড়ে ১০ টায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-৩ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজমের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা আরম্ভ হয়। শোভাযাত্রাটি শাহজাদপুরের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে। বর্ষবরণের  দ্বিতীয় অংশে ছিল অতিথিবর্গের সাথে রবীন্দ্র উপাচার্য শাহ্ আজমের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন। 

 

নববর্ষের দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করে  রবীন্দ্র উপাচার্য শাহ্ আজম বলেন, দীর্ঘকাল ধরে নববর্ষ পালনের বাঙালি সংস্কৃতিটি একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসাবে পালিত হয়ে এসেছে। তারপর অশুভ রাজনীতির লক্ষ্য পূরণ করতে আইয়ুব খান এদেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরির জন্য বাঙালির সাংস্কৃতিক আয়োজনকে হিন্দু সংস্কৃতি বলে প্রচার করে বিভেদের দেয়াল তুলতে চেয়েছিলো। ভারতবর্ষে উপনিবেশিক শাসনামলেও এই কাজটি অন্যভাবে করার চেষ্টা করেছিলো ভারতের ব্রিটিশ শাসকেরা। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে দূর্বল করার জন্য বিভাজন নীতি প্রয়োগ করে উপনিবেশিক ইংরেজ শাসকবর্গ। এসব কাজে সমাজে ভাঙন তৈরির জন্য সুবিধা লোভী মোল্লা ও পুরোহিতদের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ বাঙালিকে বিভাজিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সরল বাঙালির প্রকৃত ধর্মচর্চার সীমাবদ্ধতাকে পুঁজি করে একদিকে মনস্তাত্ত্বিক ভাঙন তৈরি করা হয়েছে, অন্যদিকে তাদের আচরণে নিজ নিজ ধর্মের সৌন্দর্য কালিমালিপ্ত হয়েছে। পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ছিলেন ইংরেজদের এই উপনিবেশিক মানসিকতার উত্তরাধিকার।

 

ভাষা আন্দোলনের সাফল্যের ফলে পাকিস্তানি শাসকদের উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হয়নি। তবুও হাল ছাড়েননি আইয়ুব খান। আবার ধর্মকে অপব্যবহার করে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন বাঙালি মুসলমানকে। প্রচার করার চেষ্টা করেছেন বাংলা ‘হিন্দুর’ ভাষা আর উর্দু ‘কুরআনের’ ভাষা বলে।

 

মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে পরাজিত শক্তিগুলো হাত গুটিয়ে বসে নেই। যুগ যুগ ধরে বাঙালি হিন্দু-মুসলমান অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে বাঙালি সংস্কৃতি লালন করে এসেছে। এর ভেতর অন্ধকার ছুড়ে দেওয়ার জন্য আইয়ুব খানের প্রেতাত্মারা হঠাৎ অতি ধর্ম প্রেমী সাজতে, ধর্মের নামে বাংলাদেশের সরল ও প্রকৃত ধার্মিক মানুষদের অপপ্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করেছে।

 

পহেলা বৈশাখ ঘিরে যেসব আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে যুগ যুগ ধরে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিতে দেখা সমীচীন হবে না। এখানে বিশেষ কোনো ধর্মসম্প্রদায়ের সংস্কৃতির প্রতিফলন নেই, বরঞ্চ এর পুরোটাই সম্প্রদায় নির্বিশেষে একটি অভিন্ন বাঙালি সংস্কৃতি।


রবীন্দ্র উপাচার্য প্রফেসর শাহ্ আজম আরও উল্লেখ করেন, পহেলা বৈশাখ উৎসবের অনিবার্য অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। মঙ্গল শোভাযাত্রার সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়েছে। বাঙালি হিসেবে এটি আমাদের জন্য গর্বের এবং পরমানন্দের। 

উৎসবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সুধীজন অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ফখরুল ইসলাম সহ বিভাগ সমূহের চেয়ারম্যানবৃন্দ। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


মঙ্গল শোভাযাত্র   বর্ষবরণ   পহেলা বৈশাখ   রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

ঈদ উপলক্ষে যে বার্তা দিলো ছাত্রলীগ

প্রকাশ: ১১:২৮ এএম, ০৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী। এ সময় ঘরে ফেরা এসব মানুষের নিরাপদ যাত্রা কামনা করে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

রোববার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান এই শুভেচ্ছা বার্তা দেন।

শুভেচ্ছাবার্তায় নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথি, বাংলার মানুষের ভাষা-ভাত-ভোটের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, বৈশ্বিক উন্নয়ন অর্থনীতির রোল মডেল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত-কর্ম-নীতি-আদর্শের উত্তরসূরি, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের’ রূপকার ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ স্বপ্নদ্রষ্টা, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহীদের রক্তস্নাত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছে প্রীতি ও শুভেচ্ছা।’

নেতারা বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্ব ও সুপরিকল্পিত-সামগ্রিক-সমন্বিত-টেকসই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ফলে প্রধান এই উৎসবে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঈদযাত্রা আগের চেয়ে অনেক সহজ, নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন হাইওয়ে, ৪ ও ৬ লেনের মহাসড়ক, নতুন সেতু, সম্প্রসারিত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, জলপথ ও আকাশপথে রুট ও ট্রিপের সংখ্যাবৃদ্ধি, ইন্টারচেঞ্জ, ওভারপাস-আন্ডারপাস, নদীর তলদেশে টানেল ইত্যাদি কারণে কোটি মানুষ স্বল্প সময়ে, আনন্দঘন পরিবেশে তাদের পরিবার-পরিজন-প্রিয়জনের কাছে ছুটে চলেছে।

তারা আরও বলেন, এমতাবস্থায়, নিরাপদ ঈদযাত্রার মাধ্যমে পরিবার-প্রিয়জনের কাছে নিশ্চিন্তে পৌঁছাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ জনতা, ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম সবাইকে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছে। উৎসবমুখর নীড়ে ফেরার এই যাত্রাপথে সড়কে অসচেতনতা-উত্তেজনায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাজনিত কারণে যেন এক বিন্দু রক্তও না ঝরে, একটি জীবনও যেন অকালে শেষ হয়ে না যায়, আনন্দ যেন অশ্রুতে পরিণত না হয় সে কারণে সবাইকে সচেতন-সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। মোটর বাইক চালানোর সময় হেলমেট পরিধান করা, নির্ধারিত গতি মানা, দুইজনের অধিক সংখ্যা না হওয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখা, প্রতিযোগিতা না করা ইত্যাদি নিয়ম পালনের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

ছাত্রলীগের শীর্ষ এই দুই নেতা আরও বলেন, ঈদের ছুটিতে নিজ-নিজ এলাকায় থাকাকালীন ছাত্রসমাজ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা যেন সামাজিক নানামুখী কর্মকাণ্ড যেমন: অসহায়ের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ, খেলাধূলা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, মাদক-জুয়া-সন্ত্রাস বিরোধী সচেতনতা তৈরি ইত্যাদির সাথে জড়িত হয় সে আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।


ঈদুল ফিতর   ছাত্রলীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন