কাঁটাতারের এপাড় থেকে/ দেখছি তুমি আছোই সুখে/ রাজত্বটা তোমার শাসনে/ বসে আছো সিংহাসনে- ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এদিকটায় বসে গিটার হাতে এভাবেই আক্ষেপের সুর ছুঁড়ে দিলেন ঢাকার সংগীতশিল্পী আসিফ আলতাফ। এর জবাবে পশ্চিমবঙ্গের কিংবদন্তি নচিকেতাও কম নন। সুরে সুরে বললেন- দূর থেকে মনে হয়/ সুখেই আছি আমি বোধয়/ সুখ আসলে কার চরণে/ জানে খোদা জানে ভগবানে...!
এমন অসাধারণ সওয়াল-জবাবের মধ্যদিয়ে দুই বাংলার দুজন শিল্পীর কণ্ঠে উঠে এলো বাংলাভাগের আফসোস আর সীমান্তে কাঁটাতারের ক্ষোভ। ‘কাঁটাতার’ নামে বিশেষ এই গানটি সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে ইউটিউবে। কণ্ঠের পাশাপাশি যার কথা ও সংগীত পরিচালনা করেছেন আসিফ আলতাফ নিজেই। সহশিল্পী হিসেবে এতে কণ্ঠ দিয়েছেন নাচিকেতা। গানটি প্রযোজনা করেছে ‘চিরকুট’ সদস্য পাভেল আরিনের বাটার কমিউনিকেশন।
গানটি তৈরি ও প্রকাশ প্রসঙ্গে আসিফ আলতাফ বলেন, ‘প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী, কখনও অহংকারী, বেপরোয়া সত্যভাষী একজন সঙ্গীতজ্ঞ নচিকেতা। সেজন্যই বহুদিন ধরে একটা গান মাথায় ঘুরছিল তাকে নিয়েই। তিনি গাইবেন নাকি গাইবেন না এটা ছিল সবচেয়ে বড় সংশয়। বন্ধু পাভেল আরিন গানটি শোনার সাথে সাথেই সিদ্ধান্ত নিলো- আমি আর নচিকেতা নাকি একসাথে গাইবো সেটা! আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, গাইবার জন্য আলোচনা থেকে শুরু করে রেকর্ডিং শেষ হওয়া পর্যন্ত নচিকেতার আন্তরিকতা আর পেশাদারিত্ব ছিল লক্ষণীয়। আমার লেখা-সুরে, আমায় সঙ্গে নিয়েই তিনি গাইলেন- এটা আমার জন্য একটা বিশাল পাওয়া। তবে এর থেকেও আমি বেশি অবাক হয়েছি তার সাহসিকতা দেখে। তার অবস্থানে বসে এমন লিরিক উচ্চারণ করতে আমি নিজেও দ্বিধা করতাম। এই সাহসী উচ্চারণ নচিকেতাকে দিয়েই সম্ভব।’
‘কাঁটাতার’ গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন মোমিন বিশ্বাস। এতে দেখা যাচ্ছে আসিফ-নচিকেতা দু’জনকেই। দু’জনার পাশাপাশি ভিডিওতে রয়েছে কথার রেশ ধরে পঙ্কজ বর্মণের প্রাসঙ্গিক চিত্রকর্ম।
শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে আসিফ বলেন, ‘গানটি আমার মনের কথা, ক্ষোভের কথা। সঙ্গে নচিকেতার সাহসিকতা, ভালো লাগলে সাথেই থাকবেন বিশ্বাস করি।’
উল্লেখ্য, আসিফ আলতাফ প্রজন্মের প্রতিশ্রুতিশীল গায়ক। সাধারণত নিজের লেখা ও সুরে গান গেয়ে থাকেন তিনি। জীবনমুখী গানের পাশাপাশি আধুনিক প্রেম-বিরহ তার গানে উঠে আসে সময়ের কণ্ঠস্বর হয়ে। এর আগে জুতো শিরোনামের একটি গান সর্বমহলে প্রসংশিত হয়েছে। জুতো গানের কথা, সুর ও সংগীত আয়োজনের পাশাপাশি গেয়েছেন আলতাফ নিজেই। গত বছর লকডাউনে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী লগ্নজিতার সঙ্গে গেয়েছেন দূরত্ব নামের একটি গান। যা ঢাকার পাশাপাশি পশ্চিমবঙেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ন্যান্সির সঙ্গে গাওয়া সুবহে সাদিক গানটি শ্রোতাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতীয় টিভি অভিনেত্রী পল্লবী দের মৃত্যুর পর থেকে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য। কখনো তার পুরোনো প্রেম, কখনো ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তার খবর ছড়িয়ে পড়ছে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। এবার পুরোনো একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে পল্লবীর মায়ের মুখে শোনা যায়, পল্লবীর ব্যক্তিগত জীবনের অজানা তথ্য।
মা সংগীতাকে নিয়ে একাধিকবার রিয়েলিটি শো দিদি নাম্বার ওয়ানে এসেছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রী পল্লবী দে। শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন পল্লবীর বান্ধবী প্রত্যুষা পাল, অভিনেত্রী ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদি নাম্বার ওয়ানের এক এপিসোডে সঞ্চালক রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় পল্লবীর মাকে প্রশ্ন করেছিলেন, পল্লবী নিশ্চয়ই আপনাকে সব বলে, বিশেষ কারো কথা কোনো দিন বলেছে? পল্লবীর মা স্পষ্ট জানান, ‘‘না এখনো বলেনি। আসলে ওর জীবনে তো অনেকেই এসেছে, গিয়েছে। কিন্তু মেয়ে বার বার বলে, হচ্ছে না ঠিক!’ পল্লবীর মায়ের মুখে এ কথা শুনে শুটিং ফ্লোরের সবাই হাসিতে ফেটে পড়েন।
শুধু পল্লবীর মা নয়, পল্লবীও জানিয়েছিলেন, তার সঙ্গে থাকা বেশ কঠিন। কারণ প্রেমিককে তার সব কথা শুনতে হবে। আর তা না শুনলেই বকাঝকা চলবে। পল্লবীর মা বলেছিলেন, পল্লবীর এই ব্যবহারের জন্যই হয়তো তার কোনো সঙ্গী টেকে না!
সাগ্নিক চক্রবর্তী নামে এক যুবকের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন পল্লবী। কলকাতার যে বাসা থেকে পল্লবীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাসায় বসবাস করতেন তারা। হত্যা মামলায় সাগ্নিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন
গানের অ্যালবাম প্রকাশের প্রচলন প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যায়েও সিঙ্গেল গানের পাশাপাশি ৬ষ্ঠ অ্যালবামের কাজ শেষ করেছে শ্রোতাপ্রিয় ব্যান্ড শিরোনামহীন। ৮টি গান নিয়ে সাজানো হয়েছে অ্যালবামটি। এর আগে ৭টি গানের ভিডিও অন্তর্জালে মুক্তি পেয়েছে। অ্যালবামটির শেষ গান ‘পারফিউম’। এ গান নিয়ে নির্মিত হয়েছে ব্যয়বহুল ভিডিও। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মুক্তি পেয়েছে গানটি।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) শিরোনামহীনের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায় গানটি। এর কথা ও সুর করেছেন জিয়াউর রহমান। মিউজিক ভিডিওটি পরিচালনা করেছেন ব্যান্ড প্রধান জিয়াউর রহমান। গানটির দৃশ্যধারণের কাজ হয়েছে হেমায়েতপুরে দেশালের পরিচালক গোলাম মোস্তফা সবুজের বাসভবন ‘সবুজপাতা’য়। যা এ বছর আর্ক এশিয়া স্থাপত্য অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।
শিরোনামহীন প্রধান জিয়াউর রহমান জানান, ব্যয়বহুল এই মিউজিক ভিডিওর পেছনে আড়াই বছর পরিশ্রম করেছেন তারা। যেটাকে বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাজেটের মিউজিক ভিডিও বলতে চাইছেন। যেখানে গ্রিক মিথোলজি নিয়ে নির্মিত গানে শিরোনামহীন সদস্যদের সম্পূর্ণ ভিন্ন আউটলুকে উপস্থাপন করা হয়েছে। গল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য এ রকম স্ক্রিনপ্লে করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গানটি মুক্তির পর থেকে ভূয়সী প্রশংসা করছেন নেটিজেনরা। ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘শিরোনামহীনের এই গানগুলো আমাদের মতো মন ভাঙা মানুষের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। রাত যখন গভীর হয় তখন নিজেকে অনেক একা মনে হয়, তখন এই গানগুলোই আমাদের সঙ্গী হয়ে যায়!’ আসিফ রাহাত লিখেছেন, ‘‘শিরোনামহীনের এই ‘পারফিউম’ গানটি ইতিহাসে আরেকটি রেকর্ড করবে।’’ এমন অসংখ্য প্রশংসাসূচক মন্তব্যে ভরে আছে কমেন্ট বক্স।
শিরোনামহীন’র বর্তমান লাইন–আপ হলো—বেস গিটারিস্ট, চেলিস্ট ও সরোদবাদক: জিয়াউর রহমান। ড্রামস, সরোদ ও বাঁশিতে কাজী আহমাদ শাফিন, লিড গিটারে দিয়াত খান, কণ্ঠে শেখ ইশতিয়াক ও কিবোর্ডে সাইমন চৌধুরী।
মন্তব্য করুন
নানা সমস্যার ইতি টেনে নতুন প্রযোজনা সংস্থার হাত ধরেই কলকাতায় আবারও ‘ফেলুদা’র পথচলা শুরু হচ্ছে আগামী মাসে। সত্যজিত রায়ের ‘হত্যাপুরী’কে সিনেমার পর্দায় তুলে ধরতে পরিচালক সন্দীপ রায়ের সহযোগী প্রযোজনা সংস্থা কলকাতার শ্যাডো ফিল্মস এবং ফ্লোরিডার ঘোষাল মিডিয়া। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কলকাতায়শুরু হতে চলেছে শুটিং।
সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘হত্যাপুরী’ গল্পকে এবার বড়পর্দায় আনতে চলেছেন পরিচালক সন্দীপ রায়। আর ‘ফেলুদা’ চরিত্রে তিনি বেছেছিলেন অভিনেতা ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে। গত মাসেই তিনি নতুন ‘ফেলুদা’র কথা প্রকাশ করেছিলেন। বাঙালির অন্যতম এক আবেগের চরিত্রে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে অনেক মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ইন্দ্রনীল। তবে সব চূড়ান্ত হয়েও মাঝপথে বাধা আসে। জানা যায়, সন্দীপ রায়ের ‘ফেলুদা’ ইন্দ্রনীলকে পছন্দ হয়নি প্রযোজকদের। তাই এই সিনেমার প্রযোজনার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছে টলিউডের অন্যতম নামী প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ।
যার ফলে নতুন ‘ফেলুদা’র পথচলা অনিশ্চয়তার মাঝে পড়ে। কিন্তু বৃহস্পতিবার মিলল সুখবর। ‘বন্ধু’ সন্দীপ রায়ের এহেন সমস্যার খবর শুনে হাত বাড়িয়ে দিলেন ঘোষাল মিডিয়ার অঞ্জন ঘোষাল। ফ্লোরিডার ঘোষাল মিডিয়া ও কলকাতার শ্যাডো ফিল্মসের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হবে ‘হত্যাপুরী’। অন্যতম প্রযোজক অঞ্জন ঘোষাল ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, তাঁর বহুদিনের ইচ্ছা সন্দীপ রায়ের সঙ্গে কাজ করার। কিন্তু বড় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি থাকায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। এবার এসভিএফ নিজে সেই কাজ থেকে সরে দাঁড়ানোয় ঘোষাল মিডিয়ার রাস্তা মসৃণ হল।
‘হত্যাপুরী’কে সিনেমার পর্দায় আনার বহুদিন ধরে ইচ্ছে ছিল পরিচালক সন্দীপ রায়ের। সন্দেশ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় সত্যজিৎ রায়ের এই গল্প। এই গল্পের প্রেক্ষাপট পুরী। সেখানেই লালমোহন বাবু ও তোপসেকে নিয়ে ঘুরতে যাবেন ফেলুদা। হঠাৎ সমুদ্রের পারে একটি মৃতদেহ ঘিরে রহস্যের জাল। সমাধান হবে ‘ফেলুদা’র হাত ধরে। জানা যাচ্ছে, জুন মাসে কলকাতায় শুরু হবে শুটিং। তারপর শুটিং হবে পুরীতে।