কালার ইনসাইড

ঢাকাই সিনেমায় নয়া ভিলেনের কেতন

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৯ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail ঢাকাই সিনেমায় নয়া ভিলেনের কেতন

চলচ্চিত্রে একজন খলনায়ক অভিনেতা একজন নায়ক বা নায়িকাদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। শুধু বাংলাদেশের সিনেমাতেই নয়, বিশ্বের সব ধরণের ভাষার চলচ্চিত্রের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে খলনায়কের অভিনয়। ঢালিউডের  সূচনালগ্ন থেকে বাংলা সিনেমায় খলনায়কদের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু নির্মম সত্য যে বেশ লম্বা সময় ঢাকাই সিনেমাতে আর তেমন ভালো মানের খলনায়ক দেখা যায় না।

হুমায়ুন ফরিদী, রাজীব,নাসির খান,মিজু আহমেদ, খলিল, এটিএম শামসুজ্জামান, আহমেদ শরীফ, সাদেক বাচ্চু,  ডিপজল,মিশা সওদাগর, যারা একটা লম্বা সময় চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তবে তাদের মাঝে আজ অনেকেই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গিয়েছেন। হাতে গোনা কয়েকজন চলচ্চিত্রকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন অনেক দিন ধরে।  তিন দশক ধরে মিশা সওদাগর, ডনসহ আরও কয়েকজনকে খল চরিত্রে অভিনয়ে দেখা গেলেও ইদানীং নতুন কয়েকজন খল চরিত্রে ভালো করছেন।

রাশেদ মামুন অপু

সিনেমা কিংবা ওয়েব কনটেন্টে নতুন খল অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন রাশেদ অপু। ‘নবাব এলএলবি’তে প্রথম তাঁকে খল চরিত্রে দেখা গেছে। এর পর ‘জানোয়ার’, ‘দামাল’, ‘কসাই’, ‘অমানুষ’ ছবিতে তিনি খল চরিত্রে নজর কাড়েন। তাঁর অভিনীত আরও আট থেকে দশটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এখন নেতিবাচক চরিত্রে নির্মাতাদের ভরসার নাম তিনি। অভিনয়ের প্রথম দিকে আঞ্চলিক ভাষায় কমেডি চরিত্রে দর্শকদের হাসির খোরাক জুগিয়েছেন। এখন পর্দায় ‘খারাপ মানুষ’ হয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। খল চরিত্রে অভিনয় বেশ উপভোগ করেন বলেই জানালেন তিনি। এ ধরনের চরিত্রে বৈচিত্র্য বেশি, দর্শকের প্রতিক্রিয়াও ভালো। তাই তিনিও বেশ আশাবাদী। ভিলেনদের দর্শকেরা যে জায়গা থেকে দেখে এসেছেন, সেখানে নতুন কিছু করে তাঁদের মনে জায়গা করে নেওয়া কঠিন বলেও মনে করছেন অপু। তিনি বলেন, ‘নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছি। দীর্ঘদিন নাটকে পার্শ্ব অভিনেতার চরিত্র করেছি। যখন “নবাব এলএলবি” সিনেমায় প্রধান খল চরিত্রে সুযোগ পেলাম, অভিনয় করলাম, মনে হলো, এটাই আমার জায়গা।’

নাসির উদ্দিন খান

ওয়েব কনটেন্টের কল্যাণে নাসির উদ্দিন খান এখন পরিচিত মুখ। চট্টগ্রামের তীর্যক নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য নাসির মঞ্চনাটকেই কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের বেশির ভাগ সময়। একসময় চাকরি করেছেন। কিন্তু অভিনয়ের ধ্যান তাঁকে এতটাই আচ্ছন্ন করে রেখেছিল, চাকরি ছেড়ে চলে আসেন ঢাকায়। চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে ওয়াহিদ তারিকের ‘আলগা নোঙর’ সিনেমায় অভিনয় করেন, আর দুটি টিভি নাটক ও পাঁচ-ছয়টি টেলিফিল্ম। ঢাকায় এসে ধীরে ধীরে নাসিরের ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। ‘মহানগর’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে পরিচিতি পান। এরপর নেতিবাচক চরিত্রে বড় চমক দেখান ‘বলি’ সিরিজে। ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘পরাণ’ ও মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘হাওয়া’ সিনেমায়ও আছেন তিনি। শান্ত অথচ ভীষণ নিষ্ঠুর—দেশের শোবিজে খল চরিত্রে অন্য মাত্রা যোগ করেছেন নাসির।

সুমন আনোয়ার

টিভি নাটক নির্মাণ করে পরিচিতি পেয়েছেন সুমন আনোয়ার। তবে তাঁর শুরুটা হয়েছিল মঞ্চে অভিনেতা হিসেবে। পরবর্তী সময়ে কিছু টিভি নাটকেও অভিনয় করেন। নির্মাতা হিসেবে ব্যস্ত হওয়ায় অভিনয়ে আর পাওয়া যায়নি সুমন আনোয়ারকে। ইদানীং আবারও অভিনয়ে সরব হয়েছেন সুমন। বিশেষ করে খল চরিত্রে প্রশংসা পাচ্ছে তাঁর অভিনয়। রায়হান রাফীর ওয়েব ফিল্ম ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’ ও ‘সাত নাম্বার ফ্লোর’ সিরিজ ছাড়াও সুমন আনোয়ার দেখা দিয়েছেন সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘কাইজার’ সিরিজে। মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘হাওয়া’ সিনেমায়ও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন তিনি। নেতিবাচক চরিত্রে তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা পাচ্ছে।

শাহেদ আলী

মঞ্চ, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করছেন শাহেদ আলী। চিত্রনাট্যে খানিকটা অন্য রকম চরিত্র এলেই নির্মাতারা খোঁজেন তাঁকে। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহেদ আলী। পেয়েছেন প্রশংসা। তবে গত কয়েক বছর তিনি আরও ব্যাপকভাবে পরিচিতি পেয়েছেন নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করে। ‘মহানগর’, ‘দৌড়’ ও ‘রিফিউজি’ ওয়েব সিরিজগুলোতে তাঁর অনবদ্য অভিনয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া শাহেদ আলী নেতিবাচক চরিত্রে কাজ করেছেন ‘এবার তোরা মানুষ হ’, ‘চিৎকার’, ‘প্যারাসাইকোলজি’, ‘অমানুষ’, ‘পাষাণ’ ও ‘কালের পুতুল’ সিনেমায়। ‘পুনর্জন্ম’সহ অনেক নাটকেও এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। শাহেদ আলী বলেন, সব ধরনের চরিত্রে তো সব সময় কাজ করার সুযোগ হয় না। ডিফরেন্ট কোনো ক্যারেক্টর হলে নির্মাতারা আমাকে ডাকেন। ডার্ক শেড বা অলটারনেটিভ চরিত্রের মধ্য দিয়ে নিজেকে ভাঙার সুযোগ হয়। এটা বেশ এনজয় করি।

ফারহান খান রিও

মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে ক্যারিয়ার শুরু করেন রিও। অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও ও টিভি নাটকে। অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘কসাই’ সিনেমায় খল চরিত্রে প্রথম দেখা যায় রিওকে। এরপর তিনি অভিনয় করেন একই নির্মাতার ‘অমানুষ’ ও ‘সাইকো’ সিনেমায়। দরাজ কণ্ঠস্বর ও স্বতঃস্ফূর্ত পর্দা উপস্থিতির কারণে তরুণ ভিলেন হিসেবে প্রশংসা পাচ্ছেন রিও। তিনি নিজেও চান ভার্সেটাইল অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে। ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘সাইকো’ সিনেমায় তাঁর অনবদ্য পারফরম্যান্স দর্শকদের মন জয় করেছে। নির্মাতারাও নতুন করে ভাবছেন রিওকে নিয়ে।

রোজী সিদ্দিকী

ঢাকাই সিনেমায় পুরুষদের পাশাপাশি ছিল নারী ভিলেনদেরও আধিপত্য। রওশন জামিল, মায়া হাজারিকা, সুমিতা দেবী, রিনা খান কিংবা শবনম পারভীন—একসময় পর্দায় ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। এখন বাংলা সিনেমার গল্পের নারী ভিলেনরা অনেকটাই নিষ্প্রভ। তবে এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে সম্প্রতি তাক লাগিয়েছেন রোজী সিদ্দিকী। ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘পরাণ’ ও ‘সাইকো’ সিনেমায় প্রশংসিত হচ্ছে তাঁর অভিনয়। রোজী সিদ্দিকী বলেন, খল চরিত্রে আরও বেশি কাজ করতে চাই। ৩২ বছর ধরে অভিনয় করছি। আমার মনে হয়, খল ও কমেডি চরিত্রের মতো কঠিন অভিনয় আর হয় না।

খান সীমান্ত

‘নবাব এলএলবি’র খল চরিত্রে অভিনয় করে নজর কাড়েন এল আর খান সীমান্ত। ছিলেন মডেল। কিন্তু টার্গেট ছিল সিনেমা, চেয়েছিলেন ভিলেন হতে। ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। অনন্য মামুনের ‘সাইকো’তেও তাঁকে খল চরিত্রে দেখা গেছে। তাঁকে খল চরিত্রে দারুণ মানায় বলে মনে করছেন তাঁর সঙ্গে কাজ পরিচালকেরা। সীমান্ত সময়ের ব্যস্ততম খল অভিনেতাদের একজন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর ছবি ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘ক্যাসিনো’, ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’, ‘রিভেঞ্জ’, ‘মাসুদ রানা’ ইত্যাদি। সীমান্ত বললেন, ‘সব কটি ছবিতে নেগেটিভ চরিত্রে কাজ করেছি। শুরু থেকেই ভিলেন চরিত্র টানত। অনেক আগে একটা নাটকে কাজ করেছি। সেখানেও নেগেটিভ চরিত্র ছিল। ছোটবেলা থেকে সিনেমা দেখলে নেগেটিভ চরিত্রগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হতো। তাই খল চরিত্রে অভিনয় করে আনন্দ পাচ্ছি।


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

এবার বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন জয়া

প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ইতোমধ্যে ঢালিউড-টালিউড মাতিয়ে অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন বলিউডেও। পর্দায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তোলেন এই নায়িকা। সাবলীল অঙ্গভঙ্গি আর অভিনয় দক্ষতায় বরাবরই দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যান তিনি।

কাজের পাশাপাশি এই অভিনেত্রীর ঘরের খবর পেতেও মুখিয়ে থাকেন দর্শক। কবে বিয়ে করছেন, কেন একা থাকেন এসব জানার খুব শখ তাদের। বরাবরই তিনি মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তবে এবার সবকিছু নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে জয়া কথা বলেছেন বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়ে।

বিয়ে নিয়ে জয়া বলেন, বর্তমান জীবন খুবই এনজয় করছি। দেখুন, পরিবার তো শুধু স্বামী-স্ত্রীকেই ঘিরে নয়, অথবা পার্টনার হলেই হয় না, পরিবারে আরও অনেকেই আছে। পরিবারে মা-বাবা আছেন, আমার বাড়িতে যেসব লোক কাজ করেন, তারা আছেন। আমি খুবই এনজয় করি।

একাকী জীবনযাপন নিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, আমি তো কোনোকিছু পরিকল্পনা করি না। যদি মনে করি যে সিঙ্গেল থেকে ডাবল হতে চাই, দরকার আছে, তখনই হবো। তবে এই মুহূর্তে আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ, আমি খুবই ভালো আছি, শান্তিতে আছি চারদিকে। আমার আপাতত কোনো প্ল্যান নেই।

এদিকে প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজে কাজ করতে যাচ্ছেন জয়া। এটি নির্মাণ করবেন মহানগর খ্যাত নির্মাতা আশফাক নিপুণ।


জয়া আহসান  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

কবে আসছে ‘অ্যানিমাল-২, জানালেন সিনেমাটির নির্মাতা

প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বহুল আলোচিত সিনেমা 'অ্যানিমাল' দেখেনি এখন খুব কম মানুষ আছে। সেই ছবিতে রণবীর কাপুরের অভিনয় মুগ্ধ করেছে সকলকেই। এই ছবির শেষেই পরিচালক দেখিয়েছিলেন যে এই সিনেমার সিক্যুয়েল আসছে। অনেকেই মুখিয়ে আছেন এই সিক্যুয়েলের জন্য, যার নাম 'অ্যানিমাল পার্ক'।

সম্প্রতি সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা জানিয়েছেন কবে আসছে সেই ছবি। সাম্প্রতিক অ্যাওয়ার্ড শোতে সিনেমাটির পরিচালক শেয়ার করেছেন, ২০২৬ সালে রণবীর কাপুর-অভিনীত 'অ্যানিমাল'-এর সিক্যুয়েলের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি সন্দীপ রেড্ডি সিনেমাটিক ইউনিভার্সের সম্ভাবনার কথাও বলেছেন।

পুরস্কার গ্রহণ করার সময় হোস্টরা তাকে রণবীর কাপুর-অভিনীত 'অ্যানিমাল' সিক্যুয়েল 'অ্যানিমাল পার্ক' সম্পর্কে কিছু বিশদ প্রকাশ করতে বলায় তখনই তিনি জানান, ছবিটি ২০২৬ সালে ফ্লোরে যাবে।

তিনি আরও যোগ করেছেন, 'অ্যানিমাল পার্ক' আসলে 'অ্যানিমাল'-এর চেয়ে বড় এবং আরও বন্য একটি সিনেমা হবে। যদিও এমন দাবি তিনি আগেও করেছিলেন।


অ্যানিমাল   রণবির কাপুর   বলিউড   সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

আদালতের রায়: অভিভাবকত্ব পেয়ে ইতিহাস গড়লেন বাঁধন

প্রকাশ: ০৩:১১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আবারও আদালত প্রাঙ্গণে সগর্বে উচ্চারিত হলো অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মা, যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। বাঁধনের আগে এবং পরে এখনো কোনো নারী সন্তানের অভিভাবকত্ব পাননি।

গত সোমবারের (২২ এপ্রিল) নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করতে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবারের (২২ এপ্রিল) রুলসহ এই আদেশ দেন।

অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯(খ) ধারা অনুসারে কোনো নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারো পক্ষে সেই নাবালকের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই।

আইনটির এই ধারা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এক রুলে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এর পরই আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আইনজীবী সারা হোসেন।

তিনি বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা অর্জন। বাংলাদেশে যদিও নারীরা সন্তানদের হেফাজত (কাস্টডি) পাচ্ছেন, একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তাঁর সন্তানের অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো উদাহরণ নেই যে নারীরা সন্তানের অভিভাবকত্ব পাচ্ছেন।’

উচ্চ আদালতের এই রুল জারির পর ভীষণ উচ্ছ্বসিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ অভিনেত্রী। আজ থেকে ছয় বছর আগে (২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল) ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যাসন্তান মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে।

বাঁধন বলেন, ‘আইনটা পরিবর্তনের একটা প্রক্রিয়া শুরু হলো, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যাঁরা আপিল করেছেন তাঁদের সাধুবাদ জানাই। আমার অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক তা চাই না, আমি চাই বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক তাঁর সন্তানের ওপর।’

তবে, ছয় বছর আগে যখন কন্যা সায়রার অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন, তখনো এই রায়ের মাহাত্ম্য পুরোপুরি বুঝতে পারেননি বাঁধন। সময়ের সঙ্গে এই রায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন তিনি।

বাঁধন বলেন, ‘আমার পক্ষে যখন রায় এলো, তখন এর গুরুত্ব এতটা বুঝতে পারিনি। বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সম্পূর্ণ ভরণ-পোষণ আমিই করতাম, আমি কেন ওর অভিভাবক হতে পারব না! বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্বই কখনো পালন করেননি। আদালতে সেটা প্রমাণও করতে পারেননি, তার জন্য আমাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়েছিল।’

অভিভাবকত্ব আইন নিয়ে দীর্ঘ লড়াই করেছিলেন তিনি। অধিকার আদায়ে লড়াই করে অর্জন করেছেন দীর্ঘ অভিজ্ঞতাও। এই আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উনি (আইনজীবী সারা হোসেন) কিন্তু উল্লেখ করেছেন, সাধারণত মাকে কাস্টডি দেওয়া হয়, শারীরিক জিম্মা যেটাকে বলে। বাবা বেঁচে থাকতে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় না। যদি বাবা না পান সে ক্ষেত্রে দাদা-চাচা, এমনকি নানা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। অনেক পরে আসে মায়ের নাম। যে কারণে আমারটা ব্যতিক্রমী একটা রায় ছিল। আমাদের প্রচলিত আইনে একটা লুপ হোল কিন্তু আছে, মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া যাবে, তবে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সেটা খুবই কঠিন। কাস্টডি আর অভিভাবকত্ব এক নয়। অভিভাবকত্ব পুরো ডিফারেন্ট একটা বিষয়। আমাদের আইনে বাবা ন্যাচারাল গার্ডিয়ান, অভিভাবকত্বের প্রশ্নে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মায়ের অস্তিত্ব নেই আসলে। এসব জায়গায় অনেক সংশোধনী আনা প্রয়োজন।’

ক্লাস ফাইভের ছাত্রী সায়রা সারাক্ষণ মায়ের আশপাশেই থাকে। প্রায়ই মা-মেয়ে একসঙ্গে দেশ-বিদেশ ঘুরতে বেরিয়ে পড়ে। মেয়েকে ঘিরেই কাজের শিডিউল করেন বাঁধন। মেয়ে এখন বড় হচ্ছে, মায়ের এই অর্জন সম্পর্কে তার কি কোনো ধারণা আছে? বাঁধন বলেন, ‘ও বুঝতে পারে।

তবে এত কিছু ওর ধারণায় নেই। শুধু জানে, ওর মা ওকে কাছে রাখার জন্য লড়াই করেছে এবং জিতেছে। এটাও জানে, তাকে কাছে রাখার জন্য তার মা সমাজ ও আইনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। তার মা একজন ফাইটার, এটা সে এখন ভালোই বোঝে। টিচাররা, আশপাশের সবাই যখন ওর সামনে এসব বলে, তখন ও বুঝতে পারে মা ওর জন্য কী করেছে। তবে বিষয়টার গুরুত্ব ওর বোঝার জন্য অনেক কঠিন। সেই ক্ষমতা এখনো তার হয়নি।’


উচ্চ আদালত   আজমেরী হক বাঁধন  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

শিল্পীরা সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে না: রিয়াজ

প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সদ্যই সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এই নির্বাচনে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের ওপর হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিএফডিসিতে শিল্পী সমিতির সদস্য শিবা শানুর সঙ্গে এক সাংবাদিকের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন আশপাশে থাকা উপস্থিত সাংবাদিকরা সেখানে এগিয়ে গেলে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপরই সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের ওপর হামলা চালানো হয়।

এদিকে বিএফডিসির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তাৎক্ষণিক ছড়িয়ে পড়লে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষরা ঘটনাটিকে চরম ন্যক্কারজনক বলে অভিহত করেন। একইসঙ্গে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

অন্যদিকে চিত্রনায়ক রিয়াজও এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাস লিখেন এই তারকা। স্ট্যাটাসে বলেন, ‘প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, একজন চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে আজকে আমি লজ্জিত ও আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

এ নায়ক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজ বিএফডিসিতে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। যদিও আমি ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি।

তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদের কাজের সঙ্গে দর্শকদের মেলবন্ধন তৈরি করেন। তাদের বিএফডিসির ভেতরে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে, যা চরম ন্যক্কারজনক। এ ঘটনার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে খারাপ লাগছে। চলচ্চিত্র শিল্পী ও সন্ত্রাসীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শিল্পীরা কখনো সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে না। আমি আহত সাংবাদিক ভাই-বোন ও তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই’।

এছাড়া এ ঘটনায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিকরা। এই সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধান না হলে শিল্পী সমিতির সব ধরণের সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকবেন সাংবাদিকরা।

এ ব্যাপারে নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগর জানিয়েছেন, গণমাধ্যমকর্মীরা যে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন সেটি তারা মেনে নিয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে আল্টিমেটামটি কার্যকর হবে। একইসঙ্গে এদিন থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে শিল্পী সমিতি। হামলার শিকার সাংবাদিকদের চিকিৎসাভার নিয়েছে সংগঠনটি।

আর এ ঘটনায় যেসব কর্মীদের যন্ত্রাংশের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণ দেবে সমিতি।


চিত্রনায়ক রিয়াজ   বিএফডিসি   চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

সাংবাদিকদের মারধর: চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

প্রকাশ: ০৯:৫৯ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিকরা। বিএফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান না হলে শিল্পী সমিতির সব ধরনের সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকবেন বলে জানানো হয়।

জানা গেছে, সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধিদল চলচ্চিত্র সমিতির ভেতরে গিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

এসময় বর্তমান কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগর জানান, গণমাধ্যমকর্মীরা যে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে, সেটা তারা মেনে নিয়েছেন। বুধবার সকাল থেকে আল্টিমেটামটি কার্যকর হবে।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে শিল্পী সমিতি। হামলার শিকার সাংবাদিকদের চিকিৎসাভার গ্রহণ করেছে চলচ্চিত্র সমিতি। এ ঘটনায় যেসব কর্মীদের যন্ত্রাংশের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার জন্য ক্ষতিপূরণ দেবে সমিতি। 

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল মঙ্গলবার। শপথগ্রহণ শেষে সমিতির অফিসে খবরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মিথুন আল মামুন সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন অভিনেত্রী ময়ূরীর মেয়ের।

এ সময় অভিনেতা শিবা শানু ওই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস থেকে বের করে দেন শানু। এর মধ্যে সেটি থামাতে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা। এ সময় সমিতির আরেক নেতা জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। এতেই শুরু সাংবাদিকদের ওপর হামলা। চেয়ার থেকে শুরু করে গাছের ডাল দিয়েও সাংবাদিকদের পেটানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অভিনেতা শিবা শানু, শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো এই মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল নির্বাচিত হন।


চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি   আল্টিমেটাম  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন