কালার ইনসাইড

মিশন “স্ট্যান্টবাজি”

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২১


Thumbnail মিশন “স্ট্যান্টবাজি”

আজ আপনাদের একটি মিশনের গল্প শোনাব। যে গল্পটি রোলার কোস্টারের মতো গতিময়।

পাঠক!! তাহলে নিজ দায়িত্বে বেধে নিন আপনাদের সিটবেল্টগুলো। চলুন ভেতরে ঢোকা যাক একটি শ্বাসরুদ্ধ মিশনের।

কয়েক বছর আগের কথা। কোনো এক বাংলা সিনেমার গ্রুপে একজনের একটি ফেসবুক পোস্ট দেখেছিলাম। সেখানে তিনি মুক্তির দৌড়ে থাকা বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী সিনেমার পোস্টারের একটি কোলাজ দিয়েছিলেন। যেখানে সাম্প্রতিককালের দুর্দান্ত পোস্টার ডিজাইনারদের বদৌলতে অসাধারণসব পোস্টারের কল্যাণে মনে হচ্ছিলো আহা এই বুঝি বদলে যেতে শুরু করলো আমাদের বাংলা সিনেমা। আমরা আবারো হয়তো ফিরে পাবো আমাদের হারানো সেই স্বর্ণযুগ। ততদিনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত দুই সিনেমা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর “আয়নাবাজী”, দীপঙ্কর দীপনের “ঢাকা অ্যাটাক” আর রায়হান রাফীর “পোড়ামন ২” সহ বেশ কয়েকটি সিনেমা দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়াতে দর্শকেরাও খুব বেশি আশাবাদী হতে শুরু করেছিলো মুক্তি পেতে চলা সিনেমাগুলো নিয়ে। এরপরে আঘাত হানলো বৈশ্বিক মহামারী করোনা। বন্ধ হয়ে গেলো হলগুলো। ধুকতে থাকা ঢাকাই সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রির অবস্থা চলে যেতে শুরু করলো আরো তলানির দিকে।

করোনা মহামারীর ধাক্কা সামলে উঠলো বাংলাদেশ। ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করলো প্রেক্ষাগৃহগুলো। করোনা ঝড় কিছুটা কাটিয়ে ঊনপঞ্চাশ বাতাস দিয়ে শুরু হয়ে একে একে মুক্তি পেতে শুরু করলো চন্দ্রাবতী কথা, নোনা জলের কাব্য, রেহানা মরিয়ম নূর, পদ্মাপুরানের মতো সিনেমাগুলো। কিন্তু তারপরেও কিছু একটা যেন জমছিলোনা। কারণ ঢাকাই সিনেমাতে অনেক রঙয়ের অনেক ঢঙয়ের গল্প বলা হলেও বাণিজ্যিক বা মাসালা সিনেমাই যে দর্শকদের হলমুখী করতে বড় একটা অবদান রাখে সেটি কারো অজানা না।

চলুন এবার মূলগল্পে ঢোকা যাক।

দীপঙ্কর দীপনের প্রথম সিনেমা “ঢাকা অ্যাটাকের” একদম শেষভাগে পর্দায় লেখা উঠেছিলো “ঢাকা অ্যাটাক এক্সট্রিম” আসছে। যদিও অজানা কারনে সেই সিনেমা আর আলোর মুখ দেখেনি। কিন্তু আগের সিনেমার কাহিনীকার সানী সানোয়ার ও প্রধান সহকারী পরিচালক ফয়সাল আহমেদ এবার একসাথে বসলেন পরিচালকের সিটে। ঘোষণা এলো আরো একটি পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার যার নাম হবে “মিশন এক্সট্রিম”। প্রথমে দর্শক হিসাবে এটা বেশ ভালো লেগেছিলো, কারন আগের সিনেমা থেকে ঢাকা অ্যাটাক ফেলে মিশন শব্দটি যোগ করে হয়ে গেলো সিনেমার নাম। ঢাকাই সিনেমার বর্তমান সময়ের সুপারস্টার আরেফিন শুভ থাকায় দর্শক উৎসাহী হয়ে উঠতে শুরু করলো, কারণ নাম যা ই হোক ঢাকা অ্যাটাকের কারনে আরেফিন শুভর উপরে এতোদিনে ভরসা এসেছে মানুষের যে শুভ আছে তাই ভালো কিছু সম্ভব।

করোনার কারনে কয়েকবার সিনেমাটির মুক্তি পিছিয়ে গেলো। অবশেষে ঘোষণা এলো ডিসেম্বরের ৩ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সিনেমাটি। এবার বুঝি অপেক্ষার পালা শেষ হলো! এরমাঝে মিশন এক্সট্রিমের জন্য আরেফিন শুভর শরীর গঠনের ভিডিও সাড়া ফেলেছিলো বেশ। সিনেমা মুক্তির আগে সিনেমাটির প্রিমিয়ারে নায়ক এলেন তার নির্মিতব্য সিনেমা বঙ্গবন্ধুর লুক নিয়ে। সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে বললেন “মিশন এক্সট্রিম সিনেমাটি অনেক পরিশ্রম করে করেছি। যেখানে একটি সিনেমা এক মাসে কাজ সম্পন্ন করা যায়, সেখানে আমরা ‘মিশন এক্সট্রিম’ দেড় বছরেরও বেশি সময় নিয়ে কাজ করেছি”। তিনি আরো যুক্ত করলেন “মুখে বড় বড় কথা বলার চেয়ে, ‘আন্তর্জাতিক-আন্তর্জাতিক মুখ দিয়ে বলার থেকে একবার করে দেখালাম আন্তর্জাতিক মানে কি। সংজ্ঞা ও উদাহরণসহ”। নায়কের এই আকাশচুম্বী আত্মবিশ্বাস দেখে আশার পারদ তুঙ্গে নিয়ে দর্শকেরা অপেক্ষায় বসলো ৩ ডিসেম্বরের।

অবশেষে মুক্তি পেলো সিনেমাটি। সিনেমার এই দুর্দিনে আর দর্শক ক্ষরার এই সময়ে প্রথমেই ৫০টি হল পাওয়া যেন ছিলো গোটা টিমের জন্য ঈদের মতোই খুশীর উপলক্ষ্য। কারণ সাম্প্রতিককালে ঈদের সময়টাতেই ২০০ হল বিষয়ে সিনেমাপাড়ায় কথা শোনা যায়। 
তবে আসলে কেমন হলো এই বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমাটি? কেমন হলো নায়ক আরেফিন শুভর দ্বিতীয় পুলিশ থ্রিলার অ্যাকশন ইন্টারন্যাশনাল। নামেই বুঝাচ্ছিলো এটি একটি মিশনকে নিয়ে তৈরী গল্পের সিনেমা। হ্যা “মিশন এক্সট্রিম” সত্যিই একটি মিশনের গল্প, তবে গল্পের ভাজে ভাজে আপনি থাকবেন ধোঁয়াশায় পূর্ণ একটি মিশনের গল্পে। হতে পারে এটি একটি হতে চলা জঙ্গি গোষ্ঠীর জঙ্গি দল হয়ে ওঠার গল্পের মিশন। হতে পারে সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদের পরিচালক হয়ে ওঠার মিশন, অথবা এমনও হতে পারে হারাতে বসা বাংলা সিনেমাকে খানিকটা অক্সিজেন দিয়ে আবার বাঁচিয়ে তোলার মিশন।

যদিওবা গল্পের ভাজে ভাজে এতোটাই অগোছালো আর বেক্ষাপ্পা চিত্রনাট্যের খেলা চলছিলো যে দর্শকমাত্রই মিশনের গল্পে চলতে থাকা বড় পর্দার বাম কোনায় কিছুক্ষন পর পর উঠতে থাকা “দিন ৩০০”, “দিন ৬৫” বা “দিন ৯৫” এর চক্করে পড়ে গল্পে মনোযোগ হারেতে হারাতে হিসাব মেলাতে পারেন। ঠিক যখন আপনার মনে হবে ধুর ছাই সময় বাড়ছে না কমছে অথবা আপনার মনে হবে সিনেমাটা হয়তো ৪ ঘন্টার তাই কেটে অর্ধেক করে দেয়াতে সামনের দৃশ্যেই হয়তো মিলে যাবে এই সংখ্যা সাংঘাতিকের হিসাব। না হিসাব মিলে না মধ্যবিরতিতেও। আপনার বিরক্তি কাটাতে ভরে দেওয়া হবে বাংলা সিনেমার সিগনেচার কল্পনার স্বপ্নে চলে যাবার গান। যদিও আরেফিন শুভ আর নায়িকা ঐশীর পরিচয় (একজন পুলিশ আরেকজন সাংবাদিক এই পরিচয় বাদে) নিয়ে কনফিউশনে পড়লেও পড়তে পারেন দর্শকেরা। কখনো মনে হবে তারা ছোটকালের খালাতো ভাইবোন, আবার মনে হবে পাশের ফ্ল্যাটের দুষ্টু মেয়েটা।

ওদিকে এ সময়ের দেশসেরা অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু হয়তো গল্প আর পরিচালকের কথায় বিদেশে বসে নায়কের ফোনের ইন্সট্রাকশনেই কাজ করছেন কিন্তু এই কাজের কোনো শেষ নেই। মুখ বুজে পর্দায় এলেন দেশসেরা আরেক অভিনেতা শহিদুজ্জামান সেলিম। পর্দায় এলেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা শামস সুমন। সেইসাথে এই সময়ের জনপ্রিয় হতে থাকা দ্বীপ, সুমিত, পরীক্ষিত অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু সহ নাটকের পরিচিত অনেক অনেক জনপ্রিয় মুখ। যারা এক একজন চাইলেই অভিনয়গুনে এক একটা সিনেমা টেনে নেবার যোগ্যতা হয়তো রাখতে শুরু করেছেন। ঠিক যেমন পর্দায় দর্শক দেখলো সৈয়দ নাজমুস সাকিবের অসাধারণ অভিনয়। গল্পে এতো এতো চরিত্র দেখে দর্শকরা হয়তো প্রায় ভেবেই ফেলছিলো যে এই বুঝি বর্তমানের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাশার চলে আসবেন পর্দায়। তবে কোথা থেকে এলেন কিভাবে গল্পে চরিত্র হয়ে আগালেন সেটি কাহিনী যিনি লিখেছিলেন তিনি ছাড়া অনেকের পক্ষেই হয়তো বলা খানিকটা কঠিন। কারণ এক দৃশ্যে সীমান্তবর্তী এক রেলস্টেশনে দুজন অভিনেতা নামার পরেই আবার তাদের দেখা গেলো ঢাকা শহরেই । হয়তো সিনেমার এডিটর এবং পরিচালক ভেবেছিলেন গল্প ঠিকঠাকই আছে। পরের সিকুয়ালে আছে বলে এডিটর ভুলে গিয়েছিলেন পুরো সিনেমা তিনি কেটেছেন বলে তিনি নিজে গল্প জানলেও দর্শক কিন্তু গল্প জানে না পুরোটা। তাই সিনেমাকে সেভাবে এগিয়ে নিতে হবে যেভাবে দর্শক পরের কিস্তি ছাড়াই গল্প বুঝতে পারেন।

জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ পুরনো একটি বিষয়। কারন এদেশের মানুষ ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ বা জেএমবির কথা জেনেছিলো ২০০৪ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৪ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমে। বর্তমানের বাংলাদেশে জঙ্গিদের ঠাই নেই। বর্তমান সরকারের কঠোর পদক্ষেপে এখন জঙ্গিবাদের ঘটনা শোনা যায় কালেভদ্রে। আর গুলশান অ্যাটাকের সময়ের পরে এই ডিজিটাল যুগে এসে তরুণ প্রজন্মকে কি এভাবেই ব্রেইনওয়াশ করা যায় কিনা তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরাই হয়তো ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু সিনেমাতে রাইসুল ইসালাম আসাদকে জঙ্গি কোনো গোষ্ঠী মেরে ফেললো। হ্যা মেরে ফেলার দৃশ্য থাকতেই পারে কিন্তু নাস্তিক এই শিক্ষকের টকশোতে কথা বলায় মেরে ফেলার ভুল ঢাকতেই কি নাস্তিক লেখকের ফাঁসি চাই লেখা পোস্টারের ইনসার্ট শট ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিলো কিনা তা পরিচালক সাহেব ও এডিটর ভালো বলতে পারবেন।

ট্রাই নাইট্রো টলুইন (TNT) একটি শক্তিশালী এক্সপ্লোসিভ, যার গাঠনিক সংকেত C6H2(NO2)3CH3। জঙ্গি গোষ্ঠী এটা দিয়েই হয়তো জাতীয় সংসদ ভবনে থার্টি ফাস্ট নাইটে হামলা চালাবার পরিকল্পনা করেছিলেন কিন্তু সিনেমার পর্দায় নায়ক যেভাবে ডিফিউজ না করেই ফাকা মাঠে ছুড়ে দিলেন তাতে টিএনটির শক্তিমত্তার উপরে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস উঠে যাবার কথা। হ্যা আমাদের দেশের সিনেমায় হয়তো পাশের দেশ ভারতের রোহিত শেট্টি নির্মিত “সুরিয়াভানসির” মতো বাজেট নেই যা দিয়ে অনেকগুলো হেলিকপ্টার এনে মিশন এক্সট্রিমে দেখানো সেই থার্টি ফার্স্ট নাইটেই পার্টির বিল্ডিংটি তুলে নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সংসদের পরিকল্পনা পাল্টে গুলশানের এক ক্লাবে শিফট হওয়া প্ল্যান বি এর গল্পের গাঁথুনিটা একটু মজবুত হলেই লোকের বলতে হতো না আমরা কি আর অতো বাজেট পাই নাকি। দেশীয় প্রেক্ষাপটে বিশ্বমানের সিনেমা এটাই অথবা বলতে শোনা যেতনা যে ইহাই ইন্টারন্যাশনাল কিন্তু মুখে বললাম না। শুধু একটু মনে করতে হবে তারেক মাসুদের “রানওয়ে” সিনেমাটির কথা। যারা বলছেন যে জঙ্গিবাদ নিয়ে যেহেতু সিনেমাটি তাই প্রশংসা পাবে মিশন এক্সট্রিম, তাদের “রানওয়ে” সিনেমাটি দেখে নেওয়ার অনুরোধ রইলো।


তবে পরিচালক এবং এই সিনেমা সংশ্লিষ্ট কারো ফোনে যদি কোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সাবস্ক্রাইব করা থাকে এবং ওবেব সিরিজ নামক টার্মের সাথে যদি পরিচিত হয়ে থাকেন তাহলে হয়তো কোনো একতা দিন কোনো একটা সময় তারা নিজে বসে চা খেতে খেতে ভাববেন ওয়েব সিরিজের মতো বিশাল গল্পকে মধ্য থেকে কেটে দিয়ে দুইভাগ করে দিয়ে ইহাই ইন্টারন্যাশনাল বলে গলা ফাটালেই তা ইন্টারন্যাশনাল হয়ে ওঠে না।

আমাদের এই ছোট ও মৃতপ্রায় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কালেভদ্রে দর্শকেরা যে কয়জন মানুষের উপরে আশা নিয়ে বসে থাকেন তাদের মধ্যে আরেফিন শুভ অন্যতম একজন। হয়তো অচিরেই আরেফিন শুভ তার অসাধারণ অভিনয় নিয়ে হাজির হবেন জাতির পিতার উপরে শ্যাম বেনেগালের নির্মিত “বঙ্গবন্ধু” সিনেমা দিয়ে। কিন্তু গল্পে ভরসা না থাকলে শুধু মুখে মুখে সিনেমার ব্যবসার স্বার্থে দর্শকদের সাথে এ ধরনের প্রতারণা আরেফিন শুভর জন্য অবশ্যই মানানসই নয়।

পরিশেষে পরিচালক ও প্রযোজকদেরকে “ মিশন স্ট্যান্টবাজি” শিরোনামের ওবেব সিরিজ নির্মানের আহ্বান জানিয়ে মিশন এক্সট্রিম জার্নি শেষ করছি। কারণ হয়তো ওটিটি প্ল্যাটফর্মের এই যুগে ওয়েব সিরিজে চার পাচ ঘন্টার বড় বড় গল্পে কাজ করা হয় যেখানে ছোট ছোট চরিত্রগুলোও ফুটিয়ে তোলা যায় সময় নিয়ে, কিন্তু পরিচালকের মনে রাখতে হবে এটা সিনেমা!!!! এটা “বিগ স্ক্রিন”।

মিশন এক্সট্রিম   আরিফিন শুভ  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনে নিপুণ-কলি’দের ভরাডুবির যত কারণ

প্রকাশ: ০৬:৩৭ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নানা জল্পনার পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ডিপজলের কাছে পরাজিত হয়েছেন নিপুণ। আর মাহমুদ কলি হেরেছেন মিশা সওদাগরের কাছে। শুধু কলি-নিপুণ নয়, তার প্যানেলের রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট অনেককে অবাক করেছে। নির্বাচনে এমন ভরাডুবির বেশ কয়েকটি কারণ আছে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা।

এর আগের নির্বাচনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনয়শিল্পী শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নতুন করে আলোচনায় আসেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। একই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন জায়েদ খান। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে গেল মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ভোটে এই পদের জটিলতার নিরসন হয়নি। ভোট শেষে এই পদের জটিলতা সমাধানে আদালতের দ্বারস্থ হন নিপুণ ও জায়েদ। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে নিপুণ দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। সমিতির দায়িত্ব পালনের পুরো দুই বছর সময়ে জায়েদ খান সমালোচনা করেন নিপুণের। হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি নিপুণও, তিনি জায়েদের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে শিল্পী সমিতির এসব সদস্যের অসংলগ্ন কথাবার্তায় বিরক্ত ছিলেন জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষেরাও।

গেল মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার এবারও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন নির্বাচনের আগ মুহূর্তে জানান, এই মেয়াদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তিনি আর অংশ নেবেন না। হঠাৎ করে সভাপতির এমন ঘোষণায় বেকায়দায় পড়েন নিপুণ। এমনকি কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সাইমন সাদিকসহ কয়েকজন সদস্যের সরে যাওয়াটা এবারের নির্বাচনে নিপুণ প্যানেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

অন্যদিকে মিশা-ডিপজল তাদের গুছিয়ে ফেললেও নিপুণকে সভাপতি প্রার্থী খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়। অনেক তারকাকে রাজি করানোর চেষ্টার খবর এলেও শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, নিপুণ সভাপতি হিসেবে পান একসময়ের আলোচিত নায়ক মাহমুদ কলিকে। তারপরও যেন নির্বাচনী মাঠ জমাতে পারেননি তিনি। প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা মিশা-ডিপজল প্যানেলের প্রার্থীদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রার্থী ছিল বলেও কেউ কেউ মত দেন, যা নিপুণের জন্য ভালো ফল বয়ে আনেনি।

তা ছাড়া গেল মেয়াদে নিপুণের সঙ্গে যারাই ছিলেন, তাদের মধ্যে শাহনূর, নানা শাহ ও ডি এ তায়েবের মতো অনেকেই যখন তাঁকে ছেড়ে মিশা-ডিপজলের সঙ্গে যোগ দেন, তা সবচেয়ে নেতিবাচক ছিল। এসব নির্বাচনের সময় ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে।

২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে নিপুণ সভাপতি হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী ইলিয়াস কাঞ্চনকে। এ বছরের মার্চে হঠাৎ করে শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন তিনি।

ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে টাকার ছড়াছড়ি হয়। ভোটাররা প্রতিটি প্যানেল থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেন। হঠাৎ করে সভাপতির এমন বক্তব্য সাধারণ সম্পাদকসহ সেই প্যানেলের জন্য মন্দ বার্তা বয়ে আনে, যা ভোটে প্রভাব ফেলেছে।

এবারের মেয়াদের নির্বাচন শুরুর আগ মুহূর্তে নিপুণ তার ক্ষমতাবলে কয়েকজনকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ দিয়েছেন, এমন কথা চলচ্চিত্রের অনেকে বলেছেন। আবার ফেসবুক দেওয়া পোস্টকে ঘিরে সদস্যপদ বাতিলের ব্যাপারটিও নিপুণের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনেনি। প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের সদস্যপদ এবং তার নির্বাচনের বিষয়টিও নিপুণকে সমালোচনায় ফেলে। নিপুণের প্যানেল থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা যখন আসে, তখন চলচ্চিত্র শিল্পীদের নিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বেফাঁস মন্তব্যও নির্বাচনে নিপুণ প্যানেলের জন্য নেতিবাচক হয়েছে।

গেল মেয়াদে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পীরজাদা শহীদুল হারুন। তার সঙ্গে নিপুণের দ্বন্দ্ব ছিল প্রকাশ্যে। দুজন দুজনকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতেও ছাড়েননি। সেই পীরজাদাকে এবার দেখা গেছে কলি-নিপুণ প্যানেলে। হঠাৎ করে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ‘চিরশত্রু’ হিসেবে পরিচিত পীরজাদা হারুনের সঙ্গে হাত মেলানো এবং একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত ভোটারদের মধ্যে নিপুণকে নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। কারও কারও মতে, নিপুণ শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, যা মোটেও ঠিক হয়নি। জোর খাটিয়েছেন।

নিপুণের এমন আচরণের ইঙ্গিত পাওয়া যায় গেল মেয়াদে তারই প্যানেল থেকে নির্বাচিত প্রার্থী চিত্রনায়িকা শাহনূরের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে। এবার তিনি নিপুণের বিপরীত প্যানেল থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। এরপর তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জোর করে কারও মনে স্থান পেতে যাবেন না। আপনাকে যদি তাঁর প্রয়োজন থাকে, তার মনে এমনিতেই আপনার জন্য জায়গা থাকবে।’ অনেকে ফেসবুকে এমনও লিখেছেন বিগত সময়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলন বা অন্য অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা নিপুণ ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আচরণ করেছেন।

কারও কারও মতে, গেল মেয়াদে বিজয়ী হয়ে আসার আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেননি নিপুণ। তারই প্যানেলে সদস্য নানা শাহ এ বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরেছেন এভাবে..

‘আগেরবার আমি এবং ডি এ তায়েব নিপুণের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। ভালো কিছু কাজের আশা করেই তাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। তারা কথা দিয়েছিল সিনেমা নির্মাণ করবে। একটি কথা মনে রাখবেন, শিল্পী সমিতি সিনেমা নির্মাণ করতে পারে না। কিন্তু নিপুণ কথা দিয়েছিল ছয়টি সিনেমা নির্মাণ করবে। আমি তার কথা অনুযায়ী এগিয়ে ছিলাম। দুটি সিনেমায় এন্ট্রি করেছিলাম। কিন্তু তারা আমার পাশে কেউ আসেনি। নিপুণ কথা রাখেনি। তার প্যানেলে গিয়ে ভুল করেছিলাম। আমরা শিল্পীরা সম্মান ও ভালোবাসা চাই। এটা যখন আমরা হারিয়ে ফেলি তখন খুব কষ্ট পাই।সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে আমাদের অনেক শিল্পী এখন বেকার। তাদের জন্য শিল্পী সমিতি দুই বছরে কী করতে পেরেছে? দুই বছরে শিল্পী সমিতির সফলতা দেখছি না।’

অন্যদিকে ডিপজল এবং মিশা সওদাগরদের প্রস্তুতিও এবার তুলনামূল বেশি ছিল। কমিটিতে না থেকেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাধারণ শিল্পী তথা ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। এ ক্ষেত্রেও ঘাটতি ছিল নিপুণ এবং তার প্যানেলের অন্য সদস্যদের। বিশেষ করে সভাপতি পদে মাহমুদ কলির দীর্ঘদিন সংগঠনের কার্যকর যোগাযোগ ছিল না। তাঁকে সচারচর দেখা যেত না কোনো আয়োজনে। পর্দায়ও দীর্ঘদিন তাঁর উপস্থিতি ছিল না। প্রায় বিস্মৃতিতে চলে গিয়েছিলেন এই তারকা।

এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কলি ও নিপুণ প্যানেল থেকে একটি পদ ছাড়া বাকি আটটি পদে বিজয়ী হয়েছেন মিশা-ডিপজল প্যানেল। আর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৯ জন। কলি-নিপুণ প্যানেল থেকে দুজন নির্বাচিত হয়েছেন।


চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন   নিপুণ-কলি প্যানেল  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

নবনির্বাচিত সভাপতি-সম্পাদককে বরণ করলেন নিপুন

প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

অবশেষে টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। গতকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) হয়েছে ভোটগ্রহণ।

আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফল ঘোষণা করা হয়। এবার নির্বাচনে ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে কলি-নিপুন।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক পদে জয় লাভ করেছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ২৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি পেয়েছেন ১৭০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল ভোট পেয়েছেন ২২৫টি। ১৬ ভোট কম পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণ আক্তার। তিনি পেয়েছেন ২০৯ ভোট।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পরাজয় মেনে নিতেই দেখা গেল নিপুনকে। শুধু তা-ই নয়, মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নিয়েছেন তিনি।

নিপুন বলেন, ‘ডিপজল ভাইয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৬ ভোটে হারব, এটা চিন্তাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম ডিপজল ভাইয়ের সঙ্গে যখন দাঁড়াবো, খুব বেশি হলে ৫০টা ভোট পাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০৯টি ভোট পেয়েছি। ডিপজল ভাই পেয়েছেন ২২৫টি। শিল্পী সমিতির ভাই-বোনেরা প্রমাণ করে দিয়েছেন—তারা আমাকে ভালোবাসেন। এ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নিপুণ।

শুক্রবার সকাল ৯টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। শেষ হয়েছে বিকেল ৫টায়। এ দিন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন ৪৭৫ জন শিল্পী। নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৮ প্রার্থী।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের মধ্যে একটি জোটে ছিলেন মিশা ও ডিপজল। আরেক প্যানেলে ছিলেন মাহমুদ কলি ও নিপুণ আক্তার। নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন খোরশেদ আলম খসরু। সদস্য হিসেবে ছিলেন এ জে রানা ও বিএইচ নিশান।


চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি   নিপুন   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

মাত্র ১৬ ভোটে হারব চিন্তাও করিনি : নিপুণ

প্রকাশ: ০১:২৪ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০২৪-২০২৬) মেয়াদের নির্বাচন। এ মেয়াদের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সভাপতি মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

নির্বাচনে অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কাছে সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। শনিবার সকালে ফল ঘোষণার পরে ডিপজলকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন পরাজিত এই প্রার্থী। 

এ সময় সাংবাদিকদের নিপুণ বলেন, ‘ডিপজল ভাইয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৬ ভোটে হারবো সেটা আমি চিন্তাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম ডিপজল সাহেবের সঙ্গে আমি যখন দাঁড়াবো, খুব বেশি হলে ৫০টা ভোট পাবো।’

এই নায়িকা বলেন, ‘আমার ২৬টা ভোট নষ্ট হয়েছে, ২০৯টি ভোট আমি পেয়েছি। যেখানে ডিপজল ভাই পেয়েছেন ২২৫টি ভোট। শিল্পী সমিতির ভাই-বোনেরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তারা আমাকে ভালোবাসেন। আমাকে এত সম্মান দেওয়ার জন্যে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে মন্তব্য করে নিপুণ আরও বলেন, ‘প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই ২০২৪-২৬ নির্বাচন যারা পরিচালনা করেছেন তাদের। আমার মনে হয় আমার টার্মে থেকে আমি খুব সুন্দর একটি নির্বাচন পরিচালনা করেছি।’


নিপুণ আক্তার   অভিনেতা   মনোয়ার হোসেন ডিপজল  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

হেরে গেলেন নিপুন, মিশা-ডিপজলের জয়জয়কার

প্রকাশ: ০৮:৪৯ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাতের অপেক্ষা শেষে ভোর নাগাদ পাওয়া গেলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ফলাফল। গেল দুই বছর দায়িত্ব পালন করা সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার অবশেষে হেরে গেছেন। নতুন সাধারন সম্পাদক হিসেবে পাওয়া গেল আলোচিত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে। এর আগে গতকাল সারাদিন উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি নির্ধারণ করতে ভোট দিয়েছে শিল্পী সমিতির সদস্যরা।

ভোট গ্রহন শেষে টানা ১২ ঘণ্টার বেশি সময় পরে পাওয়া গেলো ফলাফল।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা এবং বিগত দুই মেয়াদের সফল সভাপতি মিশা সওদাগর (২৬৫)। তার বিপরীতে অভিনেতা মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল (২২৫)।

১৭ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়েছেন নিপুণ আক্তার (২০৯)। আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া সহ-সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল (২৩১) ও ডি এ তায়েব (২৩৪), সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান (২৩৭), সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী (২৫৫), আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো (২৯৬), দফতর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর (২৪৫), সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন (২৩৫) এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল (২৩১)।

কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৯ জন।

তারা হলেন সুচরিতা (২২৮), রোজিনা (২৪৩), আলীরাজ (২৩৯), সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন (২১৮), শাহনূর (২৪৫), নানা শাহ (২১০), রত্না কবির (২৬৩) ও চুন্নু (২৪৮)।

কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি (২২০) ও সনি রহমান (২৩০) নির্বাচিত।

বিজয়ী হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ডিপজল বলেন, আমরা সবাই এক। সবাই একসঙ্গে কাজ করব। সবাইকে গ্রহণ করে নেন তিনি।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এর আগে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে নয়টায় এফডিসির শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৫৭০ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৪৭৫টি। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।বিজয়ী হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ডিপজল বলেন, আমরা সবাই এক। সবাই একসঙ্গে কাজ করব। সবাইকে গ্রহণ করে নেন তিনি।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় ভোর গ্রহণ শুরু হয় এবং সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৫৭০ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৪৭৫টি। এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।


বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী নির্বাচন   ফলাফল  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

প্রথম এআই সুন্দরী প্রতিযোগিতা

প্রকাশ: ০৮:০৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে অনেক কাজই সহজ হয়ে গেছে মানুষের জন্য। রান্নার রেসিপি থেকে শুরু করে নিউজ প্রেজেন্টিং, স্কুলে পড়ানো, অফিসের কাজ - সবই এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে করা যায়। এবার আয়োজিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম এআই সুন্দরী প্রতিযোগিতা।

এআই প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি মডেলদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করছে ওয়ার্ল্ড এআই ক্রিয়েটর অ্যাওয়ার্ডস (ডব্লিউএআইসি)। মূলত বিশ্বজুড়ে এআই ক্রিয়েটরদের সম্মান জানাতেই এমনটা করা হচ্ছে।

আয়োজন সংস্থা জানায়, তিনটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে বিচার করা হবে - সৌন্দর্য, প্রযুক্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থিতি। সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে যেমন এআই মডেলের রূপ, তার ডিজাইন, পোশাক ইত্যাদি দেখা হবে।

জানা গেছে, যে মডেল জিতবেন, তাকে মিস এআই শিরোপা দেয়া হবে। পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় মোট ২০ হাজার ডলার পুরস্কার রাখা হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২২ লাখ টাকা।

উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে মিস এআই সুন্দরী প্রতিযোগিতার এন্ট্রি। যারা এই ধরনের এআইভিত্তিক মডেল বানিয়ে থাকেন তারাও এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

তবে এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় তাদের অংশগ্রহণ করতে হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি থাকতে হবে এবং বয়স হতে হবে ১৮ বছরের বেশি। ইতোমধ্যে ডব্লিউএআইসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে শুরু হয়ে গেছে এই প্রতিযোগিতার আবেদন প্রক্রিয়া।

সুন্দরী প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এআইভিত্তিক ফ্যাশন সামগ্রী এবং পুরুষ মডেলের ওপরও জোর দেয়া হবে বলে জানিয়েছে আয়োজক সংস্থা।

এআই সুন্দরী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন