নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৪ এএম, ৩০ জুন, ২০২০
বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থান চট্টগ্রামে হালিশহর এলাকায়। রেলওয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশিক্ষণ এখানেই দেওয়া হয়। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ৩২ কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন সেই রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমিতে (আরটিএ)। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় পরীক্ষা। নিয়ম অনুযায়ী ওই পরীক্ষার খাতা কেটে প্রশিক্ষণার্থীদের দেওয়ার কথা সনদ। কিন্তু ট্রেনিং একাডেমি তাদের কাছ থেকে নেওয়া পরীক্ষার খাতা কাটেনি। খাতা না কেটে তাদের উত্তীর্ণ ঘোষণা করে দেয়।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ৩২ কর্মকর্তা ২০১৮ সালে এখানে প্রশিক্ষণ নেন। ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তারা আরটিএতে। অভিযোগ উঠেছে, ৩২ কর্মকর্তাকে দেড় মাস প্রশিক্ষণের পর কোর্স কোঅর্ডিনেটর আবুল কাসেম তাদের পরীক্ষার খাতা নিজের কাছেই রেখে দেন। খাতাগুলো না কেটেই উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন প্রশিক্ষণার্থীদের।
এরপর এই প্রশিক্ষণের জন্য বিল করা হয় প্রথমে ৪৩ লাখ টাকা। আরটিএর পক্ষ থেকে রেল মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে এ বিল পাঠানো হয়। এতে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন আরটিএ প্রধান (রেক্টর) রুহুল কবির আজাদ। কিন্তু মন্ত্রণালয় ৪৩ লাখ টাকার বিপরীতে ১৯ লাখ দিতে সম্মত হয়। দুটি চেকের মাধ্যমে এ বিল পাঠানো হয় আরটিএ প্রধানের কাছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আরটিএর সংরক্ষিত একাউন্ট ও যৌথ একাউন্টে এ চেক জমা করা হয়।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী যে ১২ জন প্রশিক্ষক পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের ৩২ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন আরটিএর অধীনে, তাদের আর্থিক সম্মানী দেওয়ার কথা। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রশিক্ষণ বিল বাবদ চেক জমা হয়ে গেলেও প্রশিক্ষকদের সম্মানী পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করে আরটিএ। দেবে দেবে বলেই পার করে দেওয়া হয় দেড় বছর।
এর মধ্যে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া লিখিত পরীক্ষার খাতা না কেটেই বিলের প্রক্রিয়া শুরু করে আরটিএর কিছু অসাধু কর্মকর্তা। পাশাপাশি প্রশিক্ষণার্থীদের উত্তীর্ণ ঘোষণা দিয়ে দেয় আরটিএ। ট্রেনিং শেষে স্পেয়ার লেটার (সাময়িক সনদ) দেওয়া হয় প্রশিক্ষণার্থীদের।
এরই মধ্যে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বর্তমান জিএম সরদার সাহাদাত আলী ভারপ্রাপ্ত রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব নেন। এরপর ওই প্রশিক্ষকরা তাদের সম্মানীর বিষয়ে যোগাযোগ করেন। তখন ভারপ্রাপ্ত রেক্টর তাদের সম্মানী পরিশোধ কেন হয়নি তা জানতে চান আরটিএর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
এ সময় জানাজানি হয়, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া লিখিত পরীক্ষার খাতাই কাটা হয়নি। যার কারণে ভারপ্রাপ্ত রেক্টর সরদার সাহাদাত আলী ওই প্রকল্পের চেকের কোনো টাকা উত্তোলনে সম্মত হননি। এর পরপরই তিনি খাতা কাটার নির্দেশনা দেন। প্রশিক্ষণের প্রায় ১ বছর ৩ মাস পর ওই প্রশিক্ষণার্থীদের খাতা কাটা হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে। যদিও তাদের এক বছর আগেই উত্তীর্ণ ঘোষণা দিয়ে দিয়েছিল আরটিএ।
প্রশিক্ষকদের একজন বলেন, ‘২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ কোর্স কো-অর্ডিনেটর আবুল কাসেম প্রশিক্ষকদের ডেকে প্রশিক্ষণার্থীদের খাতাগুলো দেন। পরে তারা কেটে তা জমা দেন। ১ বছর ৩ মাস পর কেন এই খাতাগুলো কাটা হল তা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। কারণ খাতাগুলো না কেটেই প্রশিক্ষণার্থীদের উত্তীর্ণ ঘোষণা করে বিল আত্মসাৎ করাই আবুল কাশেমের উদ্দেশ্য ছিল। যা বর্তমান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জিএম ও ভারপ্রাপ্ত রেক্টর সরদার সাহাদাত আলীর কারণে সম্ভব হয়নি। তিনি যাচাই করার ফলে খাতা যে কাটা হয়নি তা উঠে এসেছে। আবুল কাশেমের উদ্দেশ্য ছিল নতুন যোগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত রেক্টরের স্বাক্ষর নিয়ে বিল তুলে নেওয়া। কিন্তু রেক্টর খাতা না কেটে বিল তোলার সুযোগ দেননি।’
জানা গেছে, কোর্স কোঅডিনেটর দায়িত্বে থাকা আবুল কাসেম গত ৮ জুন ফলাফলে স্বাক্ষর করেন। অথচ খাতা না কেটে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রায় দেড় বছর আগেই উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন আবুল কাশেম।
অভিযোগ উঠেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতেই সব রকম চেষ্টা করেন সাবেক রেক্টর আনোয়ার হোসেন ও সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার আবুল কাসেম। প্রকল্পের পুরো টাকা আত্মসাৎ করার সব আয়োজন সম্পন্ন করেন তারা। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর নেন রেক্টর আনোয়ার। তার কয়েক দিন পর ১৯ লাখ টাকার চেক আসে। অবসর যাওয়ার শেষ দিন রেক্টর আনোয়ার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন উচ্চমান সহকারী মাহমুদা খানমকে। কারণ প্রশিক্ষণের এই ভুয়া বিলসহ, জাল ক্রয় বিল, ফাইল স্বাক্ষর করতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিলেন মাহমুদা। সেই সাথে ৩২ কর্মকর্তার খাতা না কেটে তাদের উত্তীর্ণ ঘোষণা করে বিল আদায়ের বিরুদ্ধেও কথা বলেছিলেন মাহমুদা খানম।
এ বিষয়ে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জিএম ও ভারপ্রাপ্ত রেক্টর সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘তারা বলতে পারতো, প্রশিক্ষণার্থীরা সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। উত্তীর্ণ কথাটা রেজাল্ট প্রকাশের সময় বলতে পারতো। এরা সব পণ্ডিতের পণ্ডিত। এটি কেমন কথা— আগে পাশ করিয়ে দিয়ে, পরে খাতা কাটা?’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা আমার হাতে। টাকা যখন আমার নামে আসবে এই টাকার জবাবদিহিতা আমার। আমার যেহেতু জবাব দিতে হবে আমি টাকা দেখে ও বুঝেই দেবো। আপনি খাতা কেটেছেন পাঁচটা। প্রতিটা খাতা যদি ২০ টাকা করে সম্মানী হয়, আমি সেটার ডকুমেন্ট দেখে আপনাকে ১০০ টাকা দেবো। আমি থাকতে অন্য কোনো উপায়ে বিল নেওয়ার সুযোগ নেই।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি ইউনিয়ন থেকে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করে ৫ দিন আটকে রেখে ধর্ষণেরর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব উদয়কাঠি গ্রামের বাসিন্দা মৃত সামসুল উদ্দিন হাওলাদারের পুত্র মামুন হালাদার (২৮) কে বাকেরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এবিষয়ে বানারীপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল মেয়েটিকে ফুসলিয়ে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রবি পুর গ্রামে মামুনের নিকটতম এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়।
এঘটনায় নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর বাবা প্রথমে বানারীপাড়া থানায় সাধারণ ডাইরি করেন। পরে মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বানারীপাড়া থানা পুলিশ বাকেরগঞ্জ থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং মামুন হাওলাদারকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এবিষয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাইনুল ইসলাম জানান, মামুন হাওলাদারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে বরিশাল আদালতে প্রেরণ এবং ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
নওগাঁয় নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষকের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিজ্ঞ বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।
কারাদণ্ড ছাড়াও আসামীর বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং জরিমানার অর্থ নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায় বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরিয়া গ্রামের ৯ বছর বয়সের শিশু কন্যা গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল হাসান (২৫) এর নিকট আরবি পড়তো। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ৬ টায় আরবি পড়তে শিক্ষক আবুল হাসানের বাড়িতে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র ছাত্রী না আসায় একা পেয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। চিৎকারে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এঘটনায় উক্ত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা থাকায় আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
বিজ্ঞ আদালত এ পর্যন্ত মোট ৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে এই রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্র পক্ষে বিশেষ কৌশলী এ্যাডভোকেট আজিজুল হক এবং আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামলাটি পরিচালনা করেন।
মন্তব্য করুন
‘সুস্থ পরিবেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জামালপুরে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে দিবসটি উপলক্ষ্যে শহরের ফৌজদারী মোড় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে পরিবেশ অধিদপ্তর। র্যালিটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শীতেষ চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউর রহমান, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা, জামালপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুকুমার সাহা, জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইউসুফ আলীসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, উচ্চ মাত্রায় শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনবহুল স্থান ও নিরিবিলি এলাকায় অযথা শব্দ দূষণ পরিহার করার আহবান জানান বক্তারা।
সুস্থ পরিবেশ স্মার্ট বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস
মন্তব্য করুন
কখনও বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট, কখনও পুলিশের বড় কর্মকর্তা পরিচয়ে গত চার বছরে ১৪টি বিয়ে করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের মো. আবু সাঈদ। ৩০ বছর বয়সী সাঈদ বিয়ের পর সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে স্ত্রীর স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। তার নামে একাধিক মামলা হলেও দীর্ঘ দিন ধরে পলাতক তিনি।