নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
৫ম ধাপের (২৮ ফেব্রুয়ারি ) পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন সরগরম লক্ষীপুরের রায়পুর পৌরসভা। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই চড়াচ্ছে ভোটের উত্তাপ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের বিরামহীন প্রচারণায় এখন উৎসব মূখর রায়পুর পৌরসভার নির্বাচনী এলাকা। পৌরবাসীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান আর উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এখন ছুটছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন, নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। অবশ্য ভোটাররা বলছেন, দল কানা হয়ে নয়, যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে, এমন সৎ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যাক্তিদেরকেই এবার বেঁচে নিবেন তারা। এদিকে সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচার কার্যে বাধা ও নেতা-কর্মীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা অভিযোগ করেছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী। একই অভিযোগ রায়পুর নাগরিক ঐক্য ব্যানারে জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনির আহম্মেদেরও। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বলছেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনী মাঠের সুন্দর পরিবেশ নষ্টের মাধ্যমে এখন গোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানা যায়, আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি অনুষ্ঠিতব্য রায়পুর পৌরসভা নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডের ১৩ টি কেন্দ্রে এই প্রথমবার ইভিএম-এর মাধ্যামে ২৩ হাজার ৬’শ ৩১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১১ হাজার ৯শ’ ৯০ জন ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৬শ’ ৪১ জন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, কাউন্সিলর পদে ৫০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট (নৌকা), পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র এবিএম জিলানী (ধানের শীষ), রায়পুর নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জামায়াত সমর্থিত অধ্যাপক মনির আহম্মেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত নেতা মোঃ নাছির উদ্দিন সগির (পানির জগ), স্বতন্ত্র প্রার্থী পৌর শ্রমিকলীগ নেতা মাসুদ উদ্দিন (নারিকেল গাছ) ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাওলানা আব্দুল খালেক (হাতপাখা)। এদিকে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে সবক’টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকলেও সব কয়টি ওয়ার্ডে নেই বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী।
এরই মধ্যে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে রায়পুর পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ওঠান বৈঠক আর গণসংযোগের মাধ্যামে ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন, নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। কেউ কেউ স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে প্রতিশ্রুতি পাশাপাশি ঘোষণা করছেন ইশতেহার। অনেকেই আবার বিগত দিনে দায়িত্বশীলদের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে ভোটারদেরকে ভোট প্রদানে সচেতন থাকার অনুরোধও জানাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে তরুণ প্রার্থীদের সংখ্যাই বেশি। প্রচার-প্রচারণায়ও প্রবীণদের চাইতে নবীনরা অনেক এগিয়ে রয়েছেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কাজী জামশেদ করিব বাক্কিবিল্লাহ বলেন, নৌকাকে বিজয়ী করতে দ্বিধা-দ্বন্ধ ভুলে এখন এক প্লাটফর্মে এসে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তরুণ প্রার্থীকে পেয়ে কর্মী, সমর্থক ও ভোটাররাও উচ্ছসিত। সকল ভেদাভেদ ভুলে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে বিরামহীন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। নান্দনিক পৌরসভা বিনির্মাণে ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার প্রার্থীকের প্রাথীকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, নৌকা হচ্ছে উন্নয়নের প্রতীক। উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নৌকার কোন বিকল্প নেই। আমি নেতা নই, জনগণের সেবক হতে চাই। জনগন ২৮ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত আমার পাশে থাকলে, আমিও জনগনের সেবক হিসাবে সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকবো। ভোটারদের স্বত:স্ফুর্ত সাড়াই বলে দেয় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবারও তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকেই বিপুল ভোটে জয়ী করবে, ইনশাআল্লাহ ।
এদিকে বিএনপিতে রয়েছে দলের অভ্যান্তরীণ কোন্দল। এতে খানিকটা কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী। দলীয় কোন্দলের কারণে যুবদল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের একাংশ নিরব ভুমিকা পালন করায় এর প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী কার্যে। এতে করে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমও চলছে অনেকটা ঢিমেতালে। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক শোডাউন করে তারা কোনো ওয়ার্ডে কর্মী সমাবেশ করতে পারেননি। তবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থীসহ দলের নেতাকর্মীরা।
ধানের শীষের প্রার্থী এবিএম জিলানী বলেন, নেতাকর্মীদের সাথে আমার কখনোই দূরত্ব ছিলনা। সাংগঠনিকভাবেও বিএনপি ও সহযোগি সংগঠন এখানে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। রায়পুর উপজেলা ভোটের হিসেবে এটি বিএনপির দুর্গ বলে বিগত দিনেও প্রমাণিত হয়েছে এবং আগামীতেও ইনশাআল্লাহ হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।
এদিকে মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক মনির আহম্মদ অভিযোগ বলেন, তার প্রচার কার্যে বাধা প্রদানসহ নেতাকর্মীদেরকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এতে দিন দিন নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এঅবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে মোবাইল প্রতীকে মেয়র পদে তিনিই জয়লাভ করবে বলে আশাবাদী।
এষিয়ে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন জানান, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কেউ আচরণ বিধি লঙ্ঘণ করলে তদন্ত করে নির্বাচনী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন
মাধ্যপ্রাচ্য শেখ হাসিনা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান
মন্তব্য করুন
কাতারের আমির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি
মন্তব্য করুন
চুয়াডাঙ্গা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিট এলার্ট জারি
মন্তব্য করুন
নাটোর সিংড়া উপজেলা পরিষদ ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি জুনায়েদ আহমেদ পলক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন