ইনসাইড বাংলাদেশ

‘হুইপ বাহিনীর’ টিকা বাণিজ্যের তথ্য ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ০২ অগাস্ট, ২০২১


Thumbnail

সরকারি তদন্তেই পটিয়ায় `হুইপ বাহিনী`র টিকা বাণিজ্যের গোমর ফাঁস হয়েছে। তবে গায়েব হয়ে গেছে উপজেলাটির সরকারি টিকা সংরক্ষণাগারের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ। 

তদন্তে উঠে এসেছে, অনুমতি ছাড়া ও যথাযথ নিয়ম না মেনেই প্রদান করা হয় ২,৬০০ টিকা। টিকা নিরাপত্তার ‘কোল্ড বক্স’ ছাড়াই টিকা স্থানান্তর, রেজিস্ট্রেশন কার্ড জালিয়াতিসহ তদন্তে ধরা পড়েছে ঘোরতর অনিয়ম। বারকোড স্ক্যান করেই মিলল শুভংকরের ফাঁকি দেওয়ার ঘটনা। দুইদিনে দেওয়া ২,৬০০ টিকার উপস্থাপিত রেজিস্ট্রেশন কার্ডের মধ্যে অন্তত ২,২০০ কার্ডই ভুয়া। অনুমতি ছাড়াই এই টিকাদান প্রক্রিয়ায় বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য সহকারীর মতোই হুইপ সামশুলের ভাই মহব্বত নিজেই টিকা মেরেছেন টিকা প্রত্যাশীদের!

সব মিলে হইপপোষ্য- বাহিনীর দ্বারা ভয়াবহ ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি’ তৈরি হয়েছে পটিয়ায় -এমনই তথ্য-উপাত্ত উঠে এসেছে কিছু সরকারি তদন্তে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালকের নির্দেশে গত শনিবার তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। দুইদিন তদন্তের সময় দিয়ে গঠিত এই কমিটি তদন্ত কাজ শেষ করেই সোমবার সন্ধ্যায় পরিচালক বরাবরে রিপোর্ট জমা দেয়।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. অজয় দাশ তদন্ত রিপোর্টের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করলেও একপর্যায়ে স্বীকার করেছেন, ‘তদন্তকালে টিকাদান প্রক্রিয়ার অসংগতি ধরা পড়েছে।’

তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমনটি জানালেও তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে বের হয়ে আসে তদন্তে উঠে আসা পটিয়ায় হুইপ বাহিনীর টিকা বাণিজ্যের ঘোরতর অনিয়মের চিত্র।

কী আছে সরকারি তদন্তে: সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, যথাযথ অনুমোদন না নিয়ে ও নিয়মবহির্ভূতভাবে পটিয়ার শোভনদন্ডী ইউনিয়নে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপির বাড়ি লাগোয়া একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে ওই টিকাগুলো দেওয়া হয়। তদন্তকালে অভিযুক্ত হইপপোষ্য কথিত ছাত্রলীগ নেতা ও ইপিআই কর্মসূচির টেকনোলজিস্ট রবিউল হুসাইন তদন্ত টিমকে মোট ২,৬০০ টিকার রেজিস্ট্রেশন কার্ড উপস্থাপন করেন। কার্ডগুলো সংশ্লিষ্ট বারকোড পরখ করে ধরা পড়েছে ভিন্নতা। ২,৬০০ কার্ডের মধ্যে দুই শতাধিক কার্ড পুরনো রেজিস্ট্রেশনকৃত।

দুই হাজারের বেশি কার্ড রেজিস্ট্রেশনের জন্য ইতোপূর্বে আইডিকার্ড নিয়ে আসা মানুষের, তাদের নামে রেজিস্ট্রেশন কার্ড রবিবার সকালেই পূরণ করা হয়। অর্থাৎ এটি স্পষ্ট যে, পুরনো জমে থাকা আইডিকার্ড দিয়েই তদন্ত কমিটির ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আগেই এসব রেজিস্ট্রেশন কার্ড পূরণ করা হয়।

রাষ্ট্রীয় অপচয় : রেখে যাওয়া আইডি কার্ড দিয়ে শেষোক্ত রেজিস্ট্রেশন কার্ড পূরণ করা এই প্রায় ২ হাজার মানুষ পরবর্তীতে সত্যিকারে যখন রেজিস্ট্রেশন করতে আসবেন, তখন পরিস্থিতিটা কেমন দাঁড়াবে, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তখন কি তাদের জ্ঞাতসারে আবার রেজিস্ট্রেশন হলে, তাদের নামে আবার টিকা বরাদ্দ হবে? এ ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির নামে সরকারি টিকা দ্বিগুণ বরাদ্দ কি রাষ্ট্রীয় অপচয় হবে না? - এমন প্রশ্নও ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের।

শুক্র ও শনিবার দুদিনেই একটি ইউনিয়ন পর্যায়ের ক্যাম্পে এতগুলো টিকা প্রদানের ঘটনা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে তদন্ত কমিটির কাছে। এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান তা স্বীকারও করেন।

সরকারি একটি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের টিকাদান প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সর্বোচ্চ জনবল দিয়ে পরিচালিত হয়। অথচ এখানেও দুই দিনে শোভনদন্ডী ইউনিয়নের সেই ক্যাম্পটির মতো এত বেশি গতিতে টিকা প্রদান সম্ভব হয়নি। ওই ক্যাম্পে দুই দিনে ২,৬০০ টিকা প্রদানের ঘটনা তাই প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া ক্যাম্পটিতে কোনো ইপিআই প্রশিক্ষিত লোকবলও ছিল না।

স্থানীয় সূত্রের ধারণা, প্রশিক্ষণহীন উপজেলার সুইপার-ঝাড়ুদার পর্যায়ের লোকজন দিয়ে এই টিকা প্রদান করা হয়। এই সময়কালের মধ্যেই হুইপ শামসুলের ভাই মহব্বত কর্তৃক টিকাদানের ছবিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসব মিলে স্পষ্ট যে, কী পরিমাণ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে পটিয়ার ওই ইউনিয়নের টিকা গ্রহীতাদের।

সরকারি অভিন্ন সূত্র জানায়, সাধারণত সিভিল সার্জন অফিস থেকে উপজেলা পর্যায়ে স্থানান্তর করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টিকা সংরক্ষণাগার ফ্রিজেই টিকা সংরক্ষণ করা হয়। সেখান থেকেই কোনো ইউনিয়ন বা ক্যাম্প পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে ভ্যাক্সিন ক্যারিয়ারের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শোভনদন্ডী ইউনিয়নে হুইপের বাড়ি লাগোয়া ওই ক্যাম্পে টিকা স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত রবিউল এ ক্ষেত্রে কোল্ড বক্সে টিকা নিয়ে যাননি। এমন অভিযোগে তদন্ত দলের কর্তারা উপজেলার ওই সংরক্ষণাগারের সিসিটিভির ফুটেজ খোঁজ করতে গিয়ে অবাক বনে যান! তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবারের পরে ওই সিসিটিভির ক্যামেরার কোনো ফুটেজের হদিস পাননি।

সরকারি নির্ভরযোগ্য সূত্রটি আরও জানায়, উপজেলাটির হেলথ কমপ্লেক্সেই পূর্ণ লোকবল নিয়ে গোটা দিনে যেখানে (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত) মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ টিকা দৈনিক প্রদান করার সক্ষমতা আছে, সেখানে একটি ইউনিয়নের ওই ক্যাম্পেই প্রশিক্ষিত লোকবল ছাড়া  কীভাবে দুই দিনে ২,৬০০ অর্থাৎ দিনে ১,৩০০ করে টিকা দেওয়া হলো, তাও প্রশ্নবিদ্ধ।

তবে কি টিকার বদলে অন্যকিছু : সংগত কারণেই অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ওই টিকা নিয়ে যাওয়ার পরে তা কি আদৌ কোনো ফ্রিজ বা কোল্ড বক্সে ঠিকমাত্রায় রক্ষিত ছিল?  যদি না থাকে, তবে সেই অরক্ষিত টিকা কীভাবে এলাকার জনগণকে দেওয়া হলো? নাকি সেই টিকা অন্য কারও ভাগাড়ে চলে গেছে? অন্য কোথাও মজুদ বা বিক্রি হয়েছে সেসব? অন্যদিকে কি টিকার বদলে সাধারণ মানুষকে সাদা পানি বা অন্যকিছু দেওয়া হয়েছে? এসব প্রশ্ন উঠেছে এলাকার সচেতন ও সাধারণ মানুষের মনে।

এলাকায় ক্ষোভ-অসন্তোষ : হুইপ শামসুলের এলাকায় টিকা প্রক্রিয়ার অপবাণিজ্য নিয়ে যখন তুমুল অভিযোগ তখন এলাকাটিতে করোনায় ত্রাণ নিয়ে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম ‘টিকা নিয়ে নয়-ছয় বরদাস্ত করা হবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ সেলিম নবীসহ অনেকেই মনে করেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষকে টিকা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগ কোনো লুটেরা দুর্নীতিবাজের গ্রাসে যাতে বিতর্কিত না হয়, সেটি দেখভাল করার দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের।’

হুইপ বাহিনীর এমন টিকা বাণিজ্যে এলাকায় ক্ষোভ-অসন্তোষ বাড়ছেই। পটিয়ায় হুইপ শামসুল ও তার পুত্র শারুন চৌধুরীকে নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদকে লাঞ্ছনা ও হুমকির অভিযোগে অতিসম্প্রতি হুইপ বাহিনীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম শহরের রাজপথেও বিক্ষোভ মিছিল করেন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গাজীপুরে গণপিটুনিতে নিহত ২

প্রকাশ: ০৮:৩০ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে একজন ও একই ইউনিয়নের বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেত অপর একজন নিহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ২টার দিকে কাপাসিয়া থানাধীন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামে মনির উদ্দিনের ছেলে মো. চান মিয়ার বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু লোক গরু চুরির উদ্দেশে প্রবেশ করেন।

এ সময় চান মিয়া গরু চুরির বিষয়টি টের পেয়ে ডাকাডাকি করে এলাকাবাসীকে জড়ো করেন। পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে একজনকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। 

অন্যজনকে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানখেতের আড়ালে লুকান। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে ধান খেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তিনিও নিহত হন।

সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, গরু চুরি রোধে এলাকায় গ্রামবাসী পাহারা বসিয়েছিল। শুক্রবার রাতে গাড়িতে করে একটি কৃষকের গরু চুরি করতে কয়েকজন আসেন। গ্রামবাসী গরু চুরির বিষয়টি টের পেয়ে একজোট হয়ে দুইজনকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নামিলা গ্রামে একজন ও পাশ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে আরেকজন নিহত হন।

তিনি বলেন, আরও চার-পাঁচজন গরু চোর এখনো এলাকায় আছে, গ্রামবাসী তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


গণপিটুনি   নিহত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ যুদ্ধ, বাঙালি সেনাদের বিদ্রোহ

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

যুদ্ধের বাকি দিনগুলোর মতো এদিনও পাক বাহিনীর তাণ্ডবলীলা চলছিল। অন্যদিকে বাঙালীরাও তাদের যৎসামান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাক বাহিনীকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ঢাকায় নৃশংস গণহত্যার রেশ কাটেনি; শহর ছেড়ে গ্রামের পথে মানুষের ঢল। যারা পারছেন, সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পথচারীদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়েছে।

একাত্তরের ২৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে বিছিন্নভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাগুলি হয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রাজশাহী এবং সিলেটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় উদ্বেগে পড়ে হানাদারেরা।

সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে হেলিকপ্টারে করে তেজগাঁও বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। রাতে সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে তাকে করাচি নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর সহচর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ঢাকা থেকে ফরিদপুর পৌঁছান।

২৯ মার্চ রাতে ঢাকায় একশর মত বাঙালি ইপিআর সদস্যকে পাকিস্তানি সেনারা প্রেসিডেন্ট হাউস থেকে তিনটি দলে ভাগ করে রমনা কালীবাড়ির কাছে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

১৯৭১ সালের এদিন রাত দেড়টার দিকে আইনসভার সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে কুমিল্লার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় সেনারা। তাকে ও তার ছেলে দিলীপ কুমার দত্তকে আর কখনো পাওয়া যায়নি।

বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে ‘বিপ্লবী’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। এদিন স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে তিন বেলায় তিনটি অধিবেশন প্রচার করা হয়। মুক্তিকামী জনতার বাতিঘরের রূপ নেয় এই বেতার কেন্দ্র।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। হামলায় শহীদ হন একজন মুক্তিযোদ্ধা। সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনীর অ্যামবুশে নিহত হয় পাক বাহিনীর একটি দল।

মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভৈরব ও নরসিংদীর মধ্যে রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

চুয়াডাঙ্গায় থেকে মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ইপিআর, আনসার, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বাহিনী কুষ্টিয়ায় পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলা করে। পাকিস্তানি বাহিনী মর্টার, মেশিনগান নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালালে মুক্তি বাহিনী তিনভাগে ভাগ হয়ে আক্রমণ চালায়।

মুক্তিযোদ্ধাদের সফল অভিযানে ৪০ জন পাকিস্তানি সৈন্য পাবনা থেকে গোপালপুরের পথে নিহত হয়। জীবিতদের অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে রাজশাহীর দিকে যাওয়ার পথে প্রাণ হারায়।

ময়মনসিংহে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল ব্যাটালিয়নের অফিসার এবং সৈনিকদের টাউন হলে একত্রিত করে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেজর কে এম সফিউল্লাহ।

পাকিস্তানি বাহিনী চট্টগ্রাম সেনানিবাসের বাইরে এসে মেডিকেল কলেজ ও নিকটবর্তী পাহাড়ে সমবেত হয়। সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানিরা প্রথম আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী সেই আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয়।


বিদ্রোহ   মুক্তিযুদ্ধ   সেনাবাহিনী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যের কাছে প্রত্যাশা

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক আজ দায়িত্ব নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, অধ্যাপক, নার্স সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন দিয়ে বরণ করে নেন। এটি একজন উপাচার্যের জন্য বড় প্রাপ্তি। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উপাচার্য হয়েছেন তারা কেউ এরকম রাজসিক অভ্যর্থনা পাননি। তাকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ অনেক উঁচুতে উঠে গেছে। 

দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হকের বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য হওয়াটা ছিল একটা বড় চমক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চমক দেখিয়েছেন এবং একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্যই তিনি দ্বীন মোহাম্মদকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলেই প্রতীয়মান হয়। বিএসএমএমইউ-এ যারা বিগত দিনগুলোতে উপাচার্য হয়েছেন তাদের মধ্যে দু-একজন ছাড়া কেউ এই পদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে পারেননি। 

বর্তমান সরকারের আমলে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য হিসেবে কয়েকজন দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে তাদের কেউই বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে একজন আদর্শ উপাচার্য হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করতে পারেননি। অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত ছিলেন দুই মেয়াদের উপাচার্য। এই সময় তিনি বিএসএমএমইউ এর কিছু কাজ করেছিলেন বটে। তবে চিকিৎসার মান, সেবার মান এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ড দিয়ে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটিকে সেন্টার অফ এক্সেলেন্স করতে পারেননি। রাজনীতিতে জড়িয়ে তিনি উপাচার্যের চেয়ে বেশি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছিলেন। পরবর্তীতে যারা বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য হয়েছেন অধ্যাপক কামরুল কিংবা কনক কান্তি বড়ুয়া তারা প্রত্যেকেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইতিবাচক ছিলেন। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন। 

তবে সবাইকে ছাপিয়ে বিতর্কিত উপাচার্যের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। শারফুদ্দিন আহমেদের উপাচার্য হওয়াটা ছিল যেমন বিস্ময়, তেমনি তিনি তার তিন বছরের মেয়াদে নানা রকম বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন এবং উপাচার্যের পদটিকে ভুলণ্ঠিত করেছেন। শারফুদ্দিন আহমেদ উপাচার্য হওয়ার পর সমস্ত বিএসএমএমইউতে তার ছবি টানিয়ে যে কদর্য আত্মপ্রচারে মেতে ছিলেন, সেটি ছিল অনভিপ্রেত অনাকাঙ্খিত এবং লজ্জাজনক। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সীমাহীন অভিযোগ, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল, যেজন্য শেষ দিনগুলোতে তাকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। 

আমরা কখনই চাই না যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এ রকম করুণ বিদায় হোক। আমরা কখনই চাই না যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠুক। আমরা কখনই চাই না যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার অযোগ্যতা, স্বজনপ্রীতি এবং অপকর্মের জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমর্যাদা তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করুক। আর এরকম বাস্তবতায় অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়েছে। নতুন উপাচার্যের কাছে সাধারণ মানুষের এবং চিকিৎসক সমাজের প্রত্যাশা খুব সোজাসাপ্টা, স্বাভাবিক। অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ যা করেছেন সেটা তিনি করবেন না। তাহলেই তিনি একজন ভাল উপাচার্য হতে পারবেন। তিনি একজন রাজনীতিবিদ নন, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার একজন অভিভাবক হিসেবে নিরপেক্ষ এবং নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। 

বিএসএমএমইউকে তৈরি করা হয়েছিল সেন্টার অফ এক্সিলেন্স করার মানসিকতা থেকে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএসএমএমইউ করেছেন। এটি হবে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসা গবেষণা এবং সর্বাধুনিক চিকিৎসার প্রাণকেন্দ্র এবং আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা প্রদানই হবে বিএসএমএমইউ এর একটি বড় লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে একজন উপাচার্যকে নেতৃত্ব দিতে হবে। অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ একজন দক্ষ ব্যক্তি। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এখন সেই দক্ষতার সঙ্গে তাকে অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। সবকিছুর উর্ধ্বে তাকে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজেকে যদি দুর্নীতি থেকে দূরে রাখতে পারেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে যদি তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারেন তাহলে বিএসএমএমইউ বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি পথপ্রদর্শক কেন্দ্র হিসেবে দাঁড়াতে পারে। অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক সেটি করতে পারেন যদি তার স্বইচ্ছা থাকে, আন্তরিকতা থাকে। ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হককে মনে রাখতে হবে যে, দলীয় পরিচয় নয়, যখন তিনি উপাচার্য হয়েছেন তখন তাকে একজন নিরপেক্ষ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার অভিভাবক হিসেবেই দাঁড়াতে হবে। তাহলেই তিনি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন এবং একটি আর্দশ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএসএমএমইউকে দাঁড় করাতে পারবেন।


বিএসএমএমইউ   অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘ভোটে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা আমি তুলবই’

প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এইটা আমি তুলব, যেভাবেই হোক। এটুকু অন্যায় আমি করব, আর করব না।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার লালপুর উপজেলা অডিটোরিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ। 

ভিডিওতে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালামকে বলতে শোনা যায়, ‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এটা আমি তুলব, যেভাবেই হোক। এটুকু অন্যায় আমি করব। আর করব না।’

আবুল কালাম গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মহিদুল ইসলাম বকুলকে পরাজিত করে এমপি হন। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আবুল কালাম বলেন, ‘আমার সংসদ সদস্য হওয়ার বয়স ১ মাস ২৪ দিন। আপনাদের টাকা তো আমি বাড়ির জমি বিক্রি করে দেইনি। আমার বেতন-ভাতার টাকাও দেইনি। আমার ৫ বছরের বেতন-ভাতার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়া কোনো সম্পদ ছিল না, আগামীতেও থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছি। এক টাকাও খরচ নাই। ২৫ লাখ টাকা তুললাম। পরে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি কিনেছি। আমি ১ কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কিনতে পারতাম। কিন্তু আমার যেহেতু টাকা নাই, সে জন্য ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। খালি এই ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা আমি তুলব, তারপর গাড়ি কিনব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আখতার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত আমান আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সাগর প্রমুখ।

ইউএনও শারমিন আখতার জানান, এমপির বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করা তার সমীচীন হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার এমপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে নিছক মজা করে কথাগুলো বলেছিলাম। এখন এটিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।’


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

১৬ হাজার টিকিটের জন্য এক কোটি ৫৭ লাখ হিট

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ঈদযাত্রায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি চলছে। এবছর শতভাগ অনলাইনে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) টিকিট কিনতে সার্ভারে প্রায় ১ কোটি হিট পড়েছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সরওয়ার। 

তিনি জানান, ৭ এপ্রিলের জন্য ১৬ হাজার টিকিট বরাদ্দ ছিল এবং বেলা ১২টা নাগাদ সকল টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। আর সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হিট পড়েছে ৮২ লাখ। অনেকেই শবে কদরের সঙ্গে মিলিয়ে বাড়ি যেতে চান, তাই ৭ ও ৮ তারিখের টিকিটের জন্য মানুষের আগ্রহ বেশি।

সব টিকেট অনলাইনে বিক্রি করার কারণে কমলাপুর রেল স্টেশন একদমই ফাঁকা। এদিকে ট্রেন ছাড়ার স্টেশনের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভোগান্তি এড়াতে ৩ এপ্রিল থেকে আন্তঃনগর চিলাহাটি ও নীলসাগর এক্সপ্রেস ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে যাত্রা করবে।

৩ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৯টি ট্রেন ঢাকাগামী ফিরতি যাত্রায় বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে না। ট্রেনগুলো হলো একতা, দ্রুতযান, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি, রংপুর, চিলাহাটি, পঞ্চগড় ও বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেন।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি টিকিটের বিপরীতে প্রায় ৬শ' বার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২৪ তারিখ থেকে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ঈদযাত্রা   ট্রেন   আগাম টিকিট  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন