লক্ষ্মীপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুসরাত জামানের নির্দেশে এজলাসের ভেতর কাঠগড়ায় আবদুল্লাহ আল মামুন নামে এক আসামিকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে আদালত ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে নানান সমালোচনা চলছে। আইনজীবীরাও নুসরাত জামানের আদালত বর্জন করেছেন। একই সঙ্গে তাকে লক্ষ্মীপুর থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে আইনজীবীরা। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জামান মামলার শুনানির পর মামুন নামে এক আসামিকে এজলাসে ডেকে নেন। পরে পুলিশের এক কনস্টেবলকে ওই আসামিকে দুটি থাপ্পড় দিতে বলেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে কনস্টেবল আসামিকে থাপ্পড় দেন। মামুনও পুলিশের একজন সদস্য। এই ঘটনায় একটি প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এজলাসের ভেতর থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) আইনগত প্রতিকার পেতে ভূক্তভোগী আবদুল্লা আল মামুন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও অভিযোগটি দিয়েছেন। মামুন চট্টগ্রামরে মিরসরাই থানার মোবারকঘোনা গ্রামের সামছুল হকের ছেলে।
অভিযোগে আবদুল্লা আল মামুন উল্লেখ করেন, স্ত্রী সুমাইয়া সুলতানা বাদী হয়ে মামুনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লক্ষ্মীপুর সদর আদালতে একটি মামলা (সিআর ৭৫/২০২৩) দায়ের করেন। মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য্য ছিল। বাদীপক্ষ ২ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করেন। সাক্ষীর জেরা শেষে মামুন এজলাস থেকে বের হয়ে বারান্দায় যায়। এসময় তাকে বাদী ও তার মা পারুল বেগম মারধর করে। বিষয়টি তিনি আদালতের বিচারক নুসরাত জামানকে জানান। কিন্তু বিচারক একতরফাভাবে কথা না শুনে তাকে এজলাসের কাঠগড়ায় ডেকে নেয়। পরে বিচারক পুলিশ কনস্টেবল কবিরকে নির্দেশ দেয় তাকে দুটি চড় দেওয়ার জন্য। বিচারকের নির্দেশে বিচারপ্রার্থী জনগণের সামনেই কনস্টেবল কবির তাকে দুটি চড় দেয়। এসময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। বিচারক তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে চড় দিয়েছি, এখন আমি নিজে তোকে চড় মারবো’। পরে আদালত পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করলে মামুনকে কোর্ট কাষ্টডিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
আইনজীবী আবদুর রহিম রাজু বলেন, আদালতের এজলাসে ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জামান কনস্টেবলকে দিয়ে আসামিকে থাপ্পড় দিয়েছেন। এটি আইন বহির্ভূত ঘটনা। এ ঘটনায় আইনজীবী সমিতি সাধারণ সভা করেছেন। বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সঙ্গে সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বসবেন। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে—নুসরাত জামানের আদালতে কোন আইনজীবী যাবেন না। তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মন্তব্য করুন
রায় বাতিল হাইকোর্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস
মন্তব্য করুন
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত
সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের
বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে বৃহস্পতিবার
(৩০ নভেম্বর)।
রাষ্ট্রপক্ষ
ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ২২ নভেম্বর রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালত।
মির্জা আব্বাসের
বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং
৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর
রমনা থানায় মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে চার্জশিট দাখিল
করেন।
তদন্তে তার
বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ
আনা হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জুন আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এ মামলার বিচার চলাকালীন আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
আদালত সূত্রে
জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী এ মামলায় সম্পদের মিথ্যা তথ্য বিবরণের
দায়ে ২৬(২) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড এবং জ্ঞাত
আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে ২৭(১) ধারায় সর্বোচ্চ দশ বছর কারাদণ্ড ও অর্জিত সেই
অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্তের বিধান রয়েছে।
সেক্ষেত্রে
অভিযোগ প্রমাণিত হলে মির্জা আব্বাসের সর্বোচ্চ ১৩ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বিলকিস আক্তার বুধবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
গত
১ নভেম্বর মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত
তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক
মো. নুরুল ইসলাম। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর
আগে গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মির্জা
আব্বাসকে প্রধান আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত
৭০০-৮০০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এরপর
গত ১ নভেম্বর এ মামলায় মির্জা আব্বাসকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান ঢাকার মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন।
মামলার
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে নয়াপল্টনে সমাবেশ শেষে বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় আসামিরা দেশীয় অস্ত্রে
সজ্জিত হয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। তারা জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করে শাহজাহানপুর
থানাধীন এলাকায় বিভিন্ন প্রকার নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালায় এবং হত্যার
উদ্দেশে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয় তারা।
এ সময় আসামিরা পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়।
শাহজাহানপুর থানা নাশকতা বিএনপি মির্জা আব্বাস
মন্তব্য করুন
পিস্তল ছিনতাই ও পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ভাঙচুরের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও দলটি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার
(২৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী শুনানি শেষে এ রিমান্ড
মঞ্জুর করেন।
এর
আগে গত ১৯ নভেম্বর
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে দুদুকে হাজির করা হয়। তবে
কারাগার থেকে আসামি স্বপনকে
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত দেখানো হয়। শুনানি শেষে
আদালত তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এছাড়া রিমান্ড শুনানির জন্য ২৭ নভেম্বর
দিন ধার্য করেন। এর আগে এ
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক
মো. আব্দুল হাই তাদের গ্রেফতার
দেখানোসহ পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
মামলার
অভিযোগে বলা হয়, গত
২৮ অক্টোবর বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ঢাকা মহানগর
বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের উসকানি ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায়
এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা পলাতক
আসামিরা পল্টন থানাধীন পুলিশ ক্যান্টিনে ভাঙচুর করে এবং পুলিশের
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ইটপাটকেল মেরে জাদুঘরের গ্লাস
ভেঙে ক্ষতিসাধন করে। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন
গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
চানমারী পুলিশ লাইন্সের ডিউটি পোস্টে অগ্নিসংযোগসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জানমালের নিরাপত্তা
ও সরকারি সম্পত্তির রক্ষার্থে তাদের নিবৃত করতে গেলে তিনদিক
থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো
হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ
আহত হন এবং এএসআই
এরশাদুল হককে হত্যার উদ্দেশ্যে
এলোপাতাড়ি মারধর করে তার পিস্তল
ও আট রাউন্ড গুলিভর্তি
ম্যাগজিন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ
ঘটনায় গত ১ নভেম্বর
খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পল্টন
থানায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৪১৫
জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৫ জনের নাম
উল্লেখসহ ৩০০/৪০০ জনকে
অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
গত
৫ নভেম্বর দিনগত রাত ১২টার দিকে
ঢাকায় বোনের বাসা থেকে দুদুকে
গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ৬ নভেম্বর দুপুরে
তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ
সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচদিনের
রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন
তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড
বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন
করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার
জামিন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ড
মঞ্জুর করেন।
এদিকে
গত ৩ নভেম্বর স্বপনকে
আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তের
স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড
আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তা। ওইদিন শুনানি শেষে আদালত তাদের
ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পিস্তল ছিনতাই মামলা দুদু স্বপন রিমান্ড
মন্তব্য করুন