মন্তব্য করুন
নির্বাচনী সমঝোতা কূটনীতিক পাড়া সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
ডিসেম্বর, ১৯৯০। সবে এরশাদ সরকারের পতন ঘটেছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছে। নির্বাচনী হাওয়া বইছে দেশজুড়ে। সঙ্গে তিন জোটের রূপরেখা বাস্তবায়নের তাগিদ। ‘স্বৈরাচারের দালাল’দের প্রতিহত করার ডাক দিয়েছে সম্মিলিত ছাত্রঐক্য। এর মধ্যেই এক বিকালে দুই সচিব ৩২ নম্বরে ‘বঙ্গবন্ধু ভবনে’ হাজির হলেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তারা দেখা করতে চান। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী নির্বাচন, তিন জোটের কার্যক্রম ইত্যাদি নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। তিনি আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতাকে দায়িত্ব দিলেন ওই দুই আমলার কথা শুনতে। আমলা মহলে জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী ওই নেতা কেরামত আলী এবং এম কে আনোয়ারের সঙ্গে কথা বললেন। দুই আমলা জানালেন তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। এলাকায় তাদের বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। এখন দরকার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। আওয়ামী লীগের ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এই দুই আমলার বক্তব্য দলীয় প্রধানকে জানালেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের প্রস্তাব নাকচ করে দিলেন। দুটি কারণে শেখ হাসিনা এম কে আনোয়ার এবং কেরামত আলীকে ফিরিয়ে দিলেন। প্রথমত, এই দুজনই এরশাদের দোসর হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত। তিন জোটের রূপরেখায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, এরশাদের সহযোগী কাউকে তিন জোটের কোনো দল আশ্রয় দেবে না। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তিন জোটের রূপরেখার প্রতি সম্মান দেখালেন। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক সংগঠন। রাজনৈতিক সংগঠনে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ব্যাপার। রাজনীতিতে মনোনয়ন প্রাপ্তির কোনো শর্টকাট পথ নেই। হুট করে এসে কেউ মনোনয়ন পান না। দুই আমলার জন্য আওয়ামী লীগের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু ঘটনাচক্রে সে সময় বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা এসেছিলেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ‘বঙ্গবন্ধু ভবনে’। তিন জোটের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে। বৈঠক শেষে পেলেন ওই দুই আমলাকে। তাদের আগ্রহের কথা শুনে তাদের নিয়ে গেলেন বিএনপি কার্যালয়ে। বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করালেন। তারা পরদিন সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন। নির্বাচনের জন্য বিএনপির মনোনয়ন পেতেও কষ্ট হলো না এম কে আনোয়ার এবং কেরামত আলীর। বিএনপির রেডিমেড প্রার্থী হিসেবে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন এবং বিজয়ী হলেন। ’৯১-এর ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি সবাইকে চমকে দিয়ে জাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল। জামায়াতের সহযোগিতায় সরকার গঠন করল বিএনপি। এম কে আনোয়ার এবং কেরামত আলী দুজনই বিএনপি সরকারের মন্ত্রীও হলেন। তাদের মধ্যে এম কে আনোয়ার মৃত্যু পর্যন্ত বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শর্টকাটে এমপি এবং মন্ত্রী হওয়ার এটি একটি ক্ল্যাসিক উদাহরণ। আদর্শ চর্চা নেই। রাজনৈতিক চর্চা নেই। দলের প্রতি আনুগত্য নেই। দলের লক্ষ্য এবং আদর্শ সম্পর্কে জানাশোনা নেই। আলাদীনের চেরাগের মতো এক লহমায় এমপি, মন্ত্রী হয়ে গেলেন। এরশাদ জামানায় প্রতাপশালী দুই আমলা রাষ্ট্রের অর্থ খরচ করে এলাকায় উন্নতি করেছিলেন। রেডিমেড প্রার্থীও হয়েছিলেন। ’৯১ সালের নির্বাচনে এম কে আনোয়ার এবং কেরামত আলীর কেরামতি রাজনীতির ‘শর্টকাট’ পথ উন্মোচন করে দেয়। অবশ্য ’৭৫-এর পর থেকে রাজনীতিতে শর্টকাটে এমপি হওয়ার হিড়িক শুরু হয়। জিয়া বিএনপি গঠন করেন বিভিন্ন দল থেকে ভাড়াটে লোক দিয়ে। এখন এই প্রবণতা সর্বব্যাপী। শর্টকাটে এমপি হওয়ার প্রবণতা যেমন ব্যক্তিদের মধ্যে বাড়ছে তেমনি রাজনৈতিক দলগুলোরও দলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী, পরীক্ষিতদের বাদ দিয়ে ‘রেডিমেড’ প্রার্থী খোঁজা এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। ‘রেডিমেড’ প্রার্থী অনেকটাই রেডিমেড জামাকাপড়ের মতো। আপনি দোকানে গেলেন গায়ে চরিয়ে বেরুলেন। আপনি দলে ভেড়ালেন, তিনি টাকার জোরে এমপি হয়ে গেলেন। ’৯১-এর ফলাফল বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগ তার প্রার্থী মনোনয়নের রক্ষণশীল অবস্থা থেকে সরে আসে। ’৯৬-এর নির্বাচন ছিল আওয়ামী লীগের অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আওয়ামী লীগও রেডিমেড এমপি প্রার্থীর খোঁজ শুরু করে। বিএনপি আগে থেকেই রেডিমেড প্রার্থীনির্ভর দল। প্রধান দুটি দল যখন রেডিমেড প্রার্থীর দিকে ঝুঁকতে থাকে, তখন শর্টকাটে এমপি হওয়াটা স্বাভাবিক রাজনৈতিক চর্চা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ব্যবসায়ী, সাবেক আমলা, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এমনকি আদম ব্যবসায়ী শর্টকাটে এমপি হওয়ার দৌড়ে শরিক হন। শর্টকাটে মনোনয়ন ইচ্ছুকদের জায়গা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালের নির্বাচনে প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মোজাফফর হোসেন পল্টুুসহ বহু মাঠের রাজনীতিবিদকে মনোনয়নবঞ্চিত করে। শর্টকাটে এমপি হওয়ার ফর্মুলা কী? আপনি বিপুল বিত্তের মালিক হলেন (বৈধ বা অবৈধ পথে)। এলাকায় গিয়ে মসজিদ, মাদরাসা বানালেন। মানুষের বিয়েতে, অসুখে দান-খয়রাত করলেন। কোরবানির ঈদে এলাকায় ১০০ গরু কোরবানি দিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন। ব্যস, কিছু মানুষ আপনার হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ, বিএনপির কিছু লোকজন প্রকাশ্যে গোপনে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। তাদের আপনি কচকচে নতুন ঘ্রাণযুক্ত টাকা দেবেন। শর্টকাটে এমপি হওয়ার এটাই একমাত্র পথ নয়। আপনি সরকারি কর্মকর্তা। হঠাৎ দেখলেন, এলাকার লোকজন আপনার কাছে আসেন। এলাকায় রাস্তা নেই, ব্রিজ নেই। স্কুল এমপিওভুক্ত করতে হবে। মসজিদের ছাদ ঢালাই করতে হবে। আর এলাকার বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে তো আপনাকে নিয়ে ধন্য ধন্য পড়ে যাবে। একজন আমলা যখন সচিব হন, তখন তার বিস্তর ক্ষমতা। এ আমলে তো সচিবদের ক্ষমতা আকাশ স্পর্শ করেছে। ২০২০ সালে করোনার প্রকোপ শুরু হলে জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় সচিবদের। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জেলার সর্বময় ক্ষমতার মালিক হন সচিবরা। এমপি, মন্ত্রীদের পাত্তা নেই। আমলারাই জেলার সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এলাকায় তাদের কদর বাড়ছে। সুবিধাবাদী চাটুকাররা ভিড় জমাচ্ছে। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, আপনি তো সংসদ সদস্যের চেয়ে জ্ঞানী, বিচক্ষণ। আপনি এলাকার এমপি হলে তো এই এলাকাই পাল্টে যেত। জনগণ আপনাকেই চায়। চারপাশে চাটুকার পরিবেষ্টিত আমলারাও খুশিতে গদগদ। ভাবলেন তাই তো। এমপি এলাকায় কী করছেন। রাস্তা বানিয়ে দিলাম আমি। কাবিখার তালিকা তৈরি করছি আমি। আশ্রয়ণের ঘর কারা পাবে তার সিদ্ধান্ত আমার ওপর ন্যস্ত। তিনি হয়ে গেলেন আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় আওয়ামী লীগার। শর্টকাটে এমপি হওয়ার খায়েশ তাকে পেয়ে বসল। আগে শর্টকাটে এমপি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের সংখ্যা এখন জাতীয় সংসদে ৫০ ভাগের বেশি। এদের বেশির ভাগেরই রাজনীতির অতীত অভিজ্ঞতা নেই। ব্যবসা করছেন। ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে নানা ফাঁকফোকর দিয়ে পরিশোধ করছেন না। আবার ঋণখেলাপিও হচ্ছেন না। তারা এলাকায় নিজস্ব ভাড়াটে বাহিনী তৈরি করেছেন। ‘মাই ম্যান’দের দিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেই আরেক আওয়ামী লীগ বানিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা শর্টকাটে এমপি হয়েছেন বা হওয়ার মিছিলে আছেন, তাদের এক ধরনের ব্যবসায়িক ‘মতলব’ আছে। এমপি বা মন্ত্রী হলে তার ব্যবসা বাগাতে সুবিধা হবে। সচিবালয়ে দেনদরবার সহজ হবে। ঘাটে ঘাটে ঘুষ দিতে হবে না। টেন্ডার পেতে সুবিধা হবে। কাজেই ব্যবসায়ীদের জন্য নির্বাচন ভালো বিনিয়োগ। ’৭৫-এর পর থেকে ব্যবসায়ীরা তাই রাজনৈতিক খাতে বিনিয়োগে ব্যাপক উৎসাহী। তাদের টাকার জোয়ারে জাতীয় সংসদে রাজনীতিবিদরা রীতিমতো কোণঠাসা। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের শর্টকাটে এমপি হওয়ার কারিশমায় মুগ্ধ অনেক উঠতি রাজনীতিবিদও প্রলুব্ধ হয়েছেন। তারা সততা, আদর্শবাদিতা, ত্যাগ ইত্যাদি সেলফে উঠিয়ে রেখেছেন। মনোনয়ন পেতে হলে টাকা লাগবে। নির্বাচন করতে টাকা লাগবে। টাকা বানানোর উপায় কী? টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য ইত্যাদি। রাজনীতিবিদ পরিচয়ের আড়ালে তারা লুটপাটের মিশনে নামছেন কোমর কষে। টাকা ছাড়া এমপি হওয়া যাবে না। তাই শর্টকাটে এমপি হওয়ার জন্য তারা শর্টকাটে বড়লোক হওয়ার দৌড়ে। এদের সংখ্যাও জাতীয় সংসদে কম না। সে তুলনায় জাতীয় সংসদে আমলাদের উপস্থিতি নগণ্য। এ নিয়ে আমলা মহলে কারও কারও অন্তহীন দুঃখ। চাকরিতে থাকতে প্রচণ্ড ক্ষমতাবান। চাকরির মেয়াদ শেষ হলেই আমলাদের ছোটাছুটি শুরু হয়। কেউ চেষ্টা করেন বয়স শেষ হওয়ার পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে। কেউ চান কোনো কমিশন বা সংস্থার অবসরোত্তর চাকরি। কারও প্রত্যাশা নিদেনপক্ষে কোনো ব্যাংকের চেয়ারম্যান হওয়া। এভাবে আমলারা প্রায় সব প্রতিষ্ঠান এবং পদ দখল করে ফেলেছেন। জাতীয় সংসদ এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর প্রধান কারণ অবশ্য আমলাদের ব্যর্থতা নয়। এখন যেভাবে বর্ষার বিলের মাছের মতো ক্ষমতার চারপাশে আমলারা কিলবিল করেন, তাতে সংসদ ভবনে প্রবেশ তাদের মোটেও কঠিন কোনো কাজ নয়। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেন আমাদের করিৎকর্মা আমলারা। কিন্তু বাধা হয়ে আছে একটি আইনে। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২। এই আইনের ১২(১) (চ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে কোনো ব্যক্তি সদস্য হিসেবে (সংসদ সদস্য) নির্বাচিত হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না, যদি-
(চ) তিনি প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগে কোনো চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন বা অবসরে গেছেন এবং তার পদত্যাগ এবং অবসরে যাওয়ার পর তিন বছর অতিবাহিত না হয়।’ বাসি ফুলের যেমন কদর থাকে না, তেমনি অবসরের তিন বছর অতিবাহিত হলে আমলাদের ‘কৃত্রিম ক্ষমতা’ নিঃশেষ হয়ে যায়। তিন বছর অতিবাহিত হওয়ার পর রাজনীতির মাঠে যারা টিকে থাকেন, তারা নিজস্ব শক্তিতে অস্তিত্ব বজায় রাখেন। এ সময় তাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এতে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা আমলা থেকে নেতারা ঝরে পড়েন। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমলারাই (সামরিক এবং বেসামরিক) এ ধারাটিকে চ্যালেঞ্জ করতে চাচ্ছেন। গত ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার এই ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছে। রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে, সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের তিন বছর পর সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিধান কেন সংবিধান পরিপন্থী নয়, হাই কোর্ট তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের ১২ (১) (চ) চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল। কিছু দিন ধরেই আমলাদের পক্ষ থেকে এ ধারাটি বাতিলের চাপ ছিল। প্রথমে কিছু আমলা এ ধারাটি বাতিল করার জন্য সরকারকে প্ররোচিত করতে চেষ্টা করে। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আইন পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এর আগেও কয়েকজন আমলা আইনটি বাতিলের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু আদালতে রিট আবেদন করতে হলে আবেদনকারী সংক্ষুব্ধ হতে হবে- এই যুক্তিতে আবেদন আমলে নেয়নি হাই কোর্ট। এখন রিট আবেদনটি আদালতের বিচারাধীন বিষয়। বিচারকগণ স্বীয় বুদ্ধি এবং আইনগত দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে এ সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এই আইনটির পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের যুক্তি আছে। একজন আমলা অবসরে যাওয়ার পর প্রথম এক বছর থাকেন অবসরোত্তর ছুটিতে। এ সময় তিনি কাজ করেন না বটে কিন্তু বেতন-ভাতাদি ভোগ করেন। পরবর্তী দুই বছরও তার গায়ে ক্ষমতার উত্তাপ লেগে থাকে। নির্বাচনী মাঠে তিনি বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন, এরকম বিবেচনা থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য তিন বছর নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যারা এর পক্ষে তারা মনে করেন, এই বিধান না থাকলে নির্বাচনের মাঠে আমলা প্রার্থীরা বাড়তি সুবিধা পাবেন। রাজনৈতিক দল প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিবেচনা করে নির্বাচনে কারা বেশি দাপট দেখাতে পারবেন। সদ্য অবসরে যাওয়া একজন আমলা নির্বাচন পরিচালনায় মাঠ প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার প্রতি পক্ষপাত দেখাবে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো আমলাদের মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী হবে। তারাই হবে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন রেডিমেড প্রার্থী, যারা শর্টকাটে এমপি হতে পারবে।
আবার এর বিপক্ষের যুক্তিও উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের জন্য আইন সমান। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’ অবসরের পর একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারী আর ১০ জন সাধারণ নাগরিকের মতোই। কাজেই তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
পক্ষে-বিপক্ষে এরকম আরও যুক্তি আছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমলা, ব্যবসায়ী, লুটেরা, কালো টাকার মালিকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার সিদ্ধান্তটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। ’৭৫-এর পর জিয়া ক্ষমতা দখল করে বলেছিলেন, তিনি রাজনীতি ‘ডিফিকাল্ট’ করে দেবেন। সত্যি সত্যি দেশে রাজনীতি, রাজনীতিবিদদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। সংসদ সদস্য হওয়ার মিছিলে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন সত্যিকারের রাজনীতিবিদরা। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যে কোনো ধরনের নির্বাচনে জয়ী হতে চায়। আর জয়ী হওয়ার জন্য তারা রেডিমেড প্রার্থী খোঁজে। আবার বিপুল অবৈধ বিত্তকে আরও স্ফীত করতে এবং তাকে নিরাপদ রাখতে শর্টকাটে এমপি হওয়ার মিছিলও বড় হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলের কথা মনে আছে? টাকার জোরে উড়ে এসে এমপি হয়ে গিয়েছিলেন। স্ত্রীকেও টাকা দিয়ে মহিলা কোটায় সংসদ সদস্য বানিয়ে ছিলেন। অনেক পাপুলই এখন নির্বাচন করে দায়মুক্তি অর্জন করতে চায়। এ পরিস্থিতির মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারাও যদি এমপি হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামেন তাহলে সত্যিকারের রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি আরও কঠিন হয়ে যাবে। দেশের জন্য অবদান রাখার অনেক উপায় আছে। যে যেখানে যে অবস্থানে আছেন সেখান থেকেই দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা যায়। একজন ব্যবসায়ী দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবেন। এটাই তার পবিত্র কাজ। কেন তাকে এমপি হতে হবে? একজন সরকারি কর্মকর্তা সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেই দেশকে এগিয়ে নিতে পারেন। এ জন্য তার এমপি হওয়ার দরকার নেই। সমাজে প্রত্যেক পেশার নাগরিকের আলাদা আলাদা অবস্থান, ভূমিকা এবং দায়িত্ব আছে। ব্যবসায়ী কিংবা আমলাদের যেমন রাজনীতির মাঠ দখল শুভ লক্ষণ নয়, তেমনি রাজনীতিবিদদেরও ব্যবসায়ী হওয়াটা উচিত নয়। দেশের সবাই যদি এমপি-মন্ত্রী হতে চান, তাহলে ভারসাম্য নষ্ট হবে। যে ভারসাম্যহীতা এখনই লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী রাজনীতিবিদদের কাছে রাজনীতি ফিরিয়ে আনার কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন। একাধিক উপনির্বাচনে তিনি দলের ত্যাগী পরীক্ষিত রাজনীতিবিদদের মনোনয়ন দিয়ে একটি বার্তা দিয়েছেন। সংসদীয় দলের সভাতেও আগামী নির্বাচনে দলের পরীক্ষিতদের সামনে আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ঝুঁকিবিহীন, গুরুত্বহীন উপনির্বাচনে তিনি এমনটা করতে পারছেন বটে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ যখন রেডিমেড প্রার্থী খুঁজবে, তখন আওয়ামী লীগ কি শর্টকাটে এমপি হতে ইচ্ছুকদের উপেক্ষা করতে পারবে? ২০১৮’র নির্বাচনে বিএনপিতে দেখা গেল রেডিমেড প্রার্থীর হিড়িক। এহছানুল হক মিলনের মতো জাতীয়ভাবে পরিচিত নেতাকে বসিয়ে টাকাওয়ালা রেডিমেড প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে বিএনপি তার আসল রাজনীতি প্রকাশ করেছিল। আগামী নির্বাচনে বিএনপিতে যে রেডিমেড প্রার্থীর হিড়িক পড়বে তা সহজেই অনুমান করা যায়। আওয়ামী লীগেও অনেক আসনে পরিবর্তনের তাগিদ আছে। ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবেন নাকি শর্টকাটে এমপি বানাতে আওয়ামী লীগও রেডিমেড প্রার্থী খুঁজবে?
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা সংশয়ের কথা বলা হয়। বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি না। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না। কিন্তু আমি মনে করি, আগামী নির্বাচন রাজনীতির জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। শর্টকাটে রেডিমেড এমপিদের হাতে যেন জাতীয় সংসদ জিম্মি না হয়, সেটি এখন এক বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনীতি রাজনীতিবিদের হাতে থাকবে কি না, তা আগামী নির্বাচনের এক বড় পরীক্ষা।
মন্তব্য করুন
ড. গওহর রিজভী প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন উপদেষ্টা
মন্তব্য করুন
বঙ্গভবন রাষ্ট্রপতি ড. মসিউর রহমান আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
গত ৩ জানুয়ারি
মাত্র ১৭ দিন মন্ত্রিপরিষদ
সচিবের দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে গেছেন কবির বিন আনোয়ার। সাবেক ছাত্র লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত এই দক্ষ সরকারি
কর্মকর্তা মাত্র ১৭ দিন মন্ত্রিপরিষদ
সচিব থাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা মুখি আলোচনা হয়েছিলো। যখন তাকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব করা হয়, তখন অনেকেই ধারণা করেছিলো তার চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হবে। কিন্তু বিস্ময়কর ভাবে না বাড়িয়ে মাত্র
১৭ দিনের মাথায় তাকে অবসরে পাঠানো হয়। এরপর নানা রকম গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
কবির বিন আনোয়ারকে অবসরে পাঠানো নিয়ে বিভিন্ন মুখী বক্তব্য পাওয়া যায়। এর দুই দিন পরেই ৫ জানুয়ারি কবির বিন আনোয়ার ধানমন্ডির ৩ নম্বরে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে যান এবং সেখানে আওয়ামী লীগের দুইজন নেতা বিপ্লব বড়ুয়া ও ড. সেলিম মাহমুদ তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সে কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান প্রয়াত এইচ টি ইমামের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় কবির বিন আনোয়ারকে এবং তিনি এইচ টি ইমামের চেয়ারে বসেন। সে সময়ে বিভিন্ন নেতা কর্মীদেকে তিনি বলেন তাকে নির্বাচনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর আগের দিন অবশ্যক কবির বিন আনোয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সপরিবারে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এবং সেখানে আগামী সংসদ নির্বাচনে কাজ করার জন্য তিনি আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আগ্রহে সায় দিয়েছেন এবং তাকে নির্বাচন পরিচালনার কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
এরপর কবির বিন আনোয়ারকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়। সে সময়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েযে প্রয়াত এইচ টি ইমামের জায়গায় তাকে দেওয়া হচ্ছে এবং তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীতে বা নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে কবির বিন আনোয়ারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিলো যে, কবির বিন আনোয়ারকে হয়তো প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা করা হবে। কিন্তু সে ব্যাপারেও এখন পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট ঘোষণা পাওয়া যায়নি। তাহলে কবির বিন আনোয়ারের পরিণতি কি হবে? কি হলো তার?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কবির বিন আনোয়ারের ব্যাপারে কতগুলো সুনির্দিষ্ট আইনগত সমস্যা রয়েছে। প্রথমত, তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা পি আর এল অবসরে আছেন। পি আর এলে থাকা মানে তিনি সরকারের বেতন ভাতা সহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এই সময় তিনি একজন সরকারি কর্মচারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার কারণে এই সময়ে তাকে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সরাসরি যুক্ত করা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে যে, কবির বিন আনোয়ার এখন নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত কিছু দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি কো-চেয়ারম্যান বা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হতে পারবেন না চাকরির বাধ্যবাদকতার কারণে। এজন্য তাকে পি আর এল সমপন্ন করতে হবে এবং সে কাজটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। আবার কোন কোন মহল মনে করছেন যে, গণপ্রতিনিধির আদেশে ১২ এক এর চ ধারা ইতোমধ্যে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং এই ধারাটি যদি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় তাহলে কবির বিন আনোয়ার আগামী সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের একটি আসন থেকে নির্বাচন করবেন। সিরাজগঞ্জের ওই আসনে বর্তমান এমপি ডাক্তার হাবিবে মিল্লাত নানা কারণে আগামী নির্বাচনে তিনি মননোয়ন পাবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সে নির্বাচনের জন্য তিনি প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন পদ দেওয়া না হলেও কবির বিন আনোয়ার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যক্রমের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত আছেন বলেই বিভিন্ন মহল জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণ মূলক করতে, বিশেষ করে বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেটি নিশ্চিত করার জন্য কূটনৈতিক পাড়ায় ব্যাপক তোড়জোড় চলছে। কূটনৈতিক মহল দফায় দফায় বৈঠক করছে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য তারা বিভিন্ন মহলের সাথে দেনদরবার এবং কথাবার্তা বলছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।
আমলা, ব্যবসায়ী, লুটেরা, কালো টাকার মালিকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার সিদ্ধান্তটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। ’৭৫-এর পর জিয়া ক্ষমতা দখল করে বলেছিলেন, তিনি রাজনীতি ‘ডিফিকাল্ট’ করে দেবেন। সত্যি সত্যি দেশে রাজনীতি, রাজনীতিবিদদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। সংসদ সদস্য হওয়ার মিছিলে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন সত্যিকারের রাজনীতিবিদরা।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর ঢাকা আগমন নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল আগামী রাষ্ট্রপতি পদের জন্য তাকে বিবেচনা করা হচ্ছে এজন্যই তাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, ড. গওহর রিজভী রাষ্ট্রপতি হচ্ছে না। বরং প্রধানমন্ত্রী অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্টে তাকে ঢাকায় ডেকে পাঠিয়েছে। গওহর রিজভী বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। তবে কেন তিনি ঢাকায় এসেছেন এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য তিনি জানাননি।
অন্য কোন অঘটন না ঘটলে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান হতে যাচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গভবনে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছেন ড. মসিউর রহমান। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে ড. মসিউর রহমানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তার শারীরিক কোন বড় ধরনের সমস্যা নেই বলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে জানানো হয়েছে। সাধারণত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা একটি বাধ্যবাধকতা। কারণে সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হবেন এমন ব্যক্তির শারীরিক সুস্থতা অত্যন্ত জরুরী বিষয়। এর আগেও আর জিল্লুর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি হন তখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তত্ত্বাবধানে জিল্লুর রহমানের পরীক্ষা করা হয়েছিল। আব্দুল হামিদকেও রাষ্ট্রপতি করার আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। এবার মসিউর রহমানের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরেই ধারণা করা হচ্ছে তিনি হতে যাচ্ছেন বঙ্গভবনের পরবর্তী বাসিন্দার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কবির বিন আনোয়ারের ব্যাপারে কতগুলো সুনির্দিষ্ট আইনগত সমস্যা রয়েছে। প্রথমত, তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা পি আর এল অবসরে আছেন। পি আর এলে থাকা মানে তিনি সরকারের বেতন ভাতা সহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এই সময় তিনি একজন সরকারি কর্মচারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার কারণে এই সময়ে তাকে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সরাসরি যুক্ত করা সম্ভব নয়।